রোজনামচা-৫; ২৯শে আগস্ট

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ২৯ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:৫৬:০৫ সন্ধ্যা

পরম করুণাময় আল্লাহর নামে।

আজকে বসতে পারার কথা ছিল না, তবুও বসতে পেরেছি ল্যাপিতে। তাই আলহামদুল্লিাহ বলে আল্লাহর শোকর আদায় করছি। হঠাৎ করে সময়টা পেলাম, প্রস্তুতি ছাড়াই লিখতে বসেছি। কয়েকটা পোস্ট পাঠে বুঝলাম, আমাদের দেশে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ২২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অপরাধ, তারা নাকি হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করছিল। মনটা খুবই খারাপ লাগছিল, আবু জারীর ভাই আর নতুন মস নামের একজনের এ ব্যাপারে দুটো লিখা দেখলাম। পাঠ করে মনটাতে কিছু সান্ত্বনা অনুভব করছি। আবু জারীর ভাই আমার চাইতে রাজনীতির দিক দিয়ে কিছু অগ্রসর মনে হয়, তাই তিনি তাঁর পোস্টে যা বলেছেন, তা আমি সঠিক বলেই মেনে নিচ্ছি। এ গ্রেফতারের মাধ্যমে শেখ হাসিনা তার পায়ে আবার একটা কুড়ালের ঘা দিয়েছে।

আল্লাহ যেন আমার নিরীহ, পবিত্রা বোনদের সত্ত্বর তাঁদের মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দেন, তাঁর দরবারে এই প্রার্থনা।

কি জঘন্য নাটক শুরু করেছে এই আওয়ামী সরকার আবার। এতোদিন যারা জঙ্গী দমনে সরকারের সফলতার গুন গাইতো, তারাই আবার কেন জঙ্গী ইস্যুকে পরিকল্পনা মাফিক নাটকীয় ভঙ্গীতে সামনে নিয়ে এসেছে, তা দেশের ছেলে বুড়ো, পাগল সবাই বুঝে। ভোটের সময়ে, এরা আসলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের জঙ্গীবাদের উন্থানের নাটক করে প্রকারান্তে আমেরিকানদেরই সহানুভূতি কুড়াতে চাচ্ছে। তবে এতেও যে আওয়ামীরা চরম মার খাবে, তা আশা করছি।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দীকী সাহেবের একটা মন্তব্য দেখলাম দু চোখ ভরে। তিনি বলেছেন, "স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জামায়াতীরা ভবিষ্যতের যেই ধর্মহীন সমাজের কল্পনা করে যুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল, আজকে বাঙলাদেশে ধর্মের যে অবমাননা হচ্ছে, তাতে করে, তাদেরকে আর দোষী ভাবতে পারছিনা।" কত মূল্যবান কথাটিই না বলেছেন তিনি। আল্লাহ তাঁকে সত্য দ্বীনের পথে বাকী জীবন কাটাবার তৌফিক দিন এই দোয়া করছি অন্তর থেকে। যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের কিংবদন্তীতূল্য বীর, তিনিই যখন একথা উপলব্ধি করেছেন, তাহলে আমরা নিদ্বিধায় বলতে পারি যে, জামায়াতে ইসলামী সেদিন ভারতের সহায়তায় স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করে আসলেই ভূল করেনি সঠিক কাজটিই করেছিল। বঙ্গবীরের মতো একদিন বাংলার আপামর জনগন সবাই একইভাবে, জামায়াতে ইসলামীর সেদিনের ভূমিকাকে পজিটিভলি নিবেন, এই কামনা করছি।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক হালচাল দেখে ও শুনে একথা সাধারণ যে কেউ বলে দিতে পারে যে, আওয়ামী সরকার তার মেয়াদকালীন গর্ভের নয় মাস পূর্ণ করে এখন লেবার রুমে নীত হয়েছে, সরকাররূপ গর্ভধারিনীর কিন্তু মূমূর্ষ অবস্থা, গর্ভধারিনীর বাঁচার সম্ভাবনা ১০ পার্সেন্ট ও নেই। কিন্তু গর্ভস্থিত বাচ্চা তথা গণতন্ত্রও যে বাঁচবেনা, সেই আশংকাও ৯০ ভাগ। অর্থাৎ উভয়দিকেই শংকা। এমন আশংকাজনক অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধারে এখন একমাত্র মহান আল্লাহর দরবারে মাথা ঠুকে জারজার হয়ে কেঁদে কেঁদে তাঁর রহমত কামনা করা ছাড়া আবালবৃদ্ধবণিতার দ্বিতীয় কোন পথ আছে বলে মনে হয় না।

গণতন্ত্রকে সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে রক্ষায় যাদের ভূমিকা রাখার কথা ছিল সেই বিরোধীদল বিএনপি-র প্রতি দেশের জনগনের কোন আস্থা আছে বলে মনে হয়না। সরকারকে অপ্রস্তুত করার ডজনে ডজনে ইস্যু হাতে আসার পরেও যারা আন্দোলনকে চাঙগা করতে পারেনা, তারা যে আগামীতে ক্ষমতায় এলেও বেশীদিন সে ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করতে পারবে, তার আলামত দেখছিনা। তাই মনটাতে শংকার ভাগ কেবল বাড়ছেই। আওয়ামীরা তাদের বিগত প্রায় ৫ বছরের শাসনকালে, অন্য সবদিক দিয়ে ব্যর্থ হলেও, শুধুমাত্র একজায়গায় তারা শতভাগ সফল হয়েছে, আর তা হলো, নানা চাল চেলে, ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে বিএনপি এবং জামায়াতকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা। যে বিএনপি, তার ব্যাকআপ শক্তি হিসেবে হেফাজতে ইসলাম এর কোটি জনতাকে রাজপথে পেয়েছিল, তারপরেও স্বৈরাচারী অত্যাচারী সরকারকে গদি থেকে নামাতে কোন কার্যকর ভূমিকাই রাখতে পারেনি, কেবল হম্বিতম্বি করেই সার, সেই বিএনপি-র নিকট জাতি আর কিইবা আশা করতে পারে??

ওহ। মনে হয় আমি ভূল বলছি, আওয়ামীরা আর একটি জায়গাতেও বেশ সফল হয়েছে, তা হলো মিডিয়ার একটি বৃহদাংশকে নিজেদের কব্জায় এনে কাবু করে রাখা। একটি দেশের মিডিয়াকে তাঁবেদার করে রাখার যে সাফল্য, তা সত্যিই ভীষণ ঈর্ষা করার মতো কাজ। মিড়িয়াকে তারা এমনই বন্ধ্যা করে রেখেছে, মিড়িয়ারই এক দম্পতির নৃশংস খুনের বিচার বা কূল কিনারা করতে, সেই খূনের বদলা নিতে তাদের স্বগোত্রীয় মিড়িয়া চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলতে হবে। একদিন যেই কপালে সেজদার চিহ্ন আঁকা নেতাকে বিচারের দাবীতে সরকারের জাদরেল মন্ত্রীর সাথে পাঙ্গা নিতে দেখেছিলাম, সেই নেতাকেও দেখছি বিশাল একটা পদ গিলিয়ে সরকার এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। তাই বাংলাদেশের মিডিয়ার প্রতি আগামীতে সাধারণ জনগনের আর শ্রদ্ধা ভালোবাসার কোন স্থানই থাকবে বলে মনে হয় না।

চলবে......

বিষয়: বিবিধ

১৬২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File