রোজনামচা-১, ২, ৩, ৪---
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ২৫ আগস্ট, ২০১৩, ০৩:০৮:১৭ দুপুর
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
২৫শে আগস্ট,২০১৩ রোববার ঃ
আজ সাধারণ ছুটির দিন। তা আমার কর্মস্থল ম্যানিলায়, ঢাকাতে নয়, সেখানেতো আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। আমাদের আবার কালও সরকারী ছুটি। 'রিজাল' নামের অতীত এক বরণীয় নেতার জম্ম কি মৃত্যুদিবস হবে। তাই দিনটি 'রিজাল ডে' নামে পরিচিত। তাই পর পর তিনদিন সাপ্তাহিক ছুটি পাওয়া গেল। সেই সুবাদে ল্যাপটপে বসারও সুযোগ পাওয়া। এমনিতে ল্যাপটপের আসল মালিক হলো আমার আদরের কনিষ্ঠা কন্যা 'মিষ্টি'। তার ইউনির পাঠ তৈরীতে এই ল্যাপিই হলো প্রধাণ ভরসা। তাই ছুটিছাটা না হলে সহজে ল্যাপির নাগাল পাওয়া যায়না।
হঠাৎ করে রোজনামচা-র অবতারণা কেন? প্রশ্নটি অনেকের মনে আসবে নিশ্চয়ই, জবাব দিতে চেষ্টা করবো যথাস্থানে।
ফজরের নামাজ শেষে অন্যদিনের মতো টুডে ব্লগে না ঢুকে গতরাতে ডাউনলোড করে রাখা ফিলিপাইন ষ্টার পত্রিকার একটি নিউজ কলামে মনোনিবেশ করি। কয়েকদিন হয়ে গেল বিগ বস্ আদেশ দিয়েছেন, বিশেষ সেই নিউজটিকে মনোমত এডিট করে হেড অফিসে পাঠাতে। অফিসের দিন অন্যান্য কাজের লোড সামাল দেয়াই কঠিন। তাই ভাবলাম ঘরে বসেই কাজটি সেরে নেই। আদেশ পালনে সামান্য দেরী হয়ে গেলেও সমস্যা নেই। এটি একটি রুটিন ব্যাপার।
টুডে ব্লগ সম্বন্ধে আমার কিছু অপ্রিয় কথা বলে নিতে চাই শুরুতেই্। ব্লগটি কেন জানি এসবি ব্লগের মতো জনপ্রিয় হতে পারছেনা। সেটা কি কর্তৃপক্ষের দোষ, নাকি ব্লগারদের দোষ সে বিতর্কে না গিয়ে বলবো, উভয় পক্ষেরই দোষ আছে। কর্তৃপক্ষ কেন এতোদিনেও এসবি ব্লগের মতো এটিকে যাবতীয় সাপোর্ট সিস্টেম দিয়ে পরিপূর্ণ করতে পারলোনা, সেটা যেমন একটি গবেষণার বিষয় তেমনি, ব্লগাররাও কেন একটি পোস্টে ঢুকে পাঠশেষে নিরবে বেরিয়ে যান, কোন মন্তব্য না করেই, সেটিও বিশাল রহস্যের ব্যাপার। দেখা যায় কোন একটি পোস্ট ১০০ বার পাঠ করা হয়েছে কিন্তু মন্তব্য পেয়েছে মাত্র ২ টি কিংবা ৪ টি। এমন বিশাল বৈষম্য দেখলে না পাঠকের মাথা ঠিক থাকে না পোস্টদাতার মাথা ঠিক থাকে। সেকারণেই মনে হয় দিন দিন একজন প্রতিষ্ঠিত লিখকের পোস্ট সংখ্যাও কমে আসছে। আজ এইক্ষণে ব্লগে আমার প্রিয় অন্ততঃ পনের বিশ জনের নাম করতে পারি, যাঁরা ব্লগে এখন এমন অনিয়মিত যে, তাঁদের পোস্টের অভাবে এই পাঠকও ব্লগের প্রতি ভালোবাসা হারাতে বসেছি। কিন্তু এভাবে কি করে পরম পাওয়া অবসরগুলোর সদ্ব্যাবহার করা যাবে? অনেক ভেবেচিন্তে তাই ঠিক করলাম, দীর্ঘকাল থেকে অন্তরে পুষে রাখ 'রোজনামচা' লিখার ইচ্ছেটাকে কাজে লাগাই। ব্লগেও ঢুকা হবে, এবং দীর্ঘকালের ইচ্ছেটাকেও অবশেষে বাস্তবায়ন করা যাবে।
অনেক বোদ্ধা পাঠকই হয়তঃ রোজনামচার ধরণ দেখে মনে মনে হাসবেন, কিংবা নাক কুঞ্চিত করবেন। কিন্তু সেটা ভাবলে (পাছে লোকে কিছু বলে) যে, আমার মহৎ এ উদ্দেশ্যটি মাঠে মারা যাবে। তাই, ঐ ধরণের দুষ্ট চিন্তাকে কিছুতেই প্রশ্রয় দেয়া যাবেনা বলে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে ফেলি।
আমার নিয়্যত ভালো। ভালো নিয়্যতে কিছু করলে, তা অপরের সামান্য হলেও কাজে আসবে, এ বিশ্বাস আমার আছে। অন্য কারো না হলেও, অন্ততঃ নিজ বৃহত্তর পরিবারের কোন না কোন সদস্য এ থেকে কিছুটা হলেও অনুপ্রাণিত হবে, এটা অস্বীকার করি কিভাবে? আর সেটা হলেই আমি আমার চেষ্টায় স্বার্থক বলে মানতে বাধ্য, সেটাই হবে আমার বড় পাওনা।
কি কি থাকতে পারে আমার রোজনামচায়? অনেক কিছুই। রাজনীতি (যদিও রাজনীতির 'র' ও বুঝিনা), সমাজনীতি, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, শিক্ষা, ভ্রমণ, আদর্শকথা অনেক কিছুই থাকতে পারে। অর্থনীতির কথা ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গেলাম। কারণ অর্থ আর অর্থনীতি এ দুটোই আমার মতো গোবরময় মাথার ধারকের বুঝ জ্ঞানের চাইতে যোজন যোজন দুরে। আমার বংশগত ঐতিহ্যই সম্ভবতঃ এটা। মেট্রিক পরীক্ষায় কোনরকম পাটিগণিতের আর জ্যামিতির সহায়তায় ৪৯ মার্ক নিয়ে পাশ দিয়ে এসেছিলাম, অথচ আমার সহপাঠিদের মতে বীজগণিতই নাকে অনেক সোজা। যাহোক, দু একটা অর্থনীতির কথা যে বর্ণনায় এসে যাবে কথাপ্রসঙ্গে, সেটা বলাই বাহুল্য। সামাজিক জীব হিসেবে রাজনীতি যেমন আমাদের প্রভাবিত করে, অর্থনীতিও তেমনি। তাই কান টানলে মাথা তো আসবেই।
ম্যানিলায় ফিরে আসি। আজো আকাশের অবস্থা খুব খারাপ। গত সপ্তাহে তো টানা চারদিন নিম্নচাপের প্রভাবে এমন বৃষ্টি হয়েছিল যে, ম্যানিলার ৬০ শতাংশ স্থান পানির নীচে তলিয়ে যায়। লাখো মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ১৬ জনের মৃত্যু হয় এবং বেশ কিছু নিখোঁজের তালিকায়ও আছে। অফিস, আদালত, স্কুল কলেজ সব তিনদিন টানা বন্ধ ছিল, সাথে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ৫দিন ছুটি কাটানো। ঈদের ছুটিতে কোন ছুটি না পাওয়ায়, আমরা যেন আল্লাহর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হলাম। বৌ বাচ্চাকে সময় দেয়া হলো। প্রসঙ্গতঃ এবারের ঈদে, একটি মেলায় অংশগ্রহন করতে গিয়ে আমাদের অফিস থেকে ঈদের ছুটি নাই হয়ে যায়। ঈদের দিন ঈদের নামাজ, ছাড়া মাত্র ২ ঘন্টা বাসায় কাটানো হয়েছিল।
মাসের শেষ। তাছাড়া ঈদ ভাঙ্গা মাস। তাই ঘনঘোর কালো মেঘে ছেয়ে যাওয়া প্রকৃতিতে খাবার মেন্যুর স্বাভাবিক যে ছবি (খিচুড়ি, বিরানী) সে দিকে গৃহমন্ত্রীর তেমন কোন ঝোঁক দেখা যাচ্ছে না। তাই অন্যভাবে, মানে নুডুলস এর সাথে ডিম-গোশত মিক্স করে ভেজে অনেকটা দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানোর ব্যবস্থা হলো।
রোজনামচা-২
click here
রোজনামচা-৩
click here
রোজনামচা-৪
click here
বিষয়: বিবিধ
১৭৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন