বুনইয়ানুম মারসুস্ কিংবা শীসাঢালা প্রাচীর, কখন হবে ক্বুল মুসলিমের সম্পর্ক এতো গভীর?

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ১৮ আগস্ট, ২০১৩, ০৫:২৪:৩৮ সকাল

সারা বিশ্বে জায়নবাদী, সাম্রাজ্যবাদী ও সেক্যুলার শক্তি দ্বারা ইসলাম ও মুসলমানের উপর চলছে দলন, নিপীড়ন, অন্যায় আর অত্যাচারের ষ্টীম রোলার। অন্যায় ভাবে শহীদ হচ্ছে হাজার হাজার তরুন তরুনী ইসলামী শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাবার অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে, সেক্যুলার রাষ্ট্রব্যবাস্থার ধারকদের উম্মুক্ত বন্দুকের নালা ও ট্যাংকের সামনে নিজের বুক পেতে দিয়ে। ওদের একমাত্র অপরাধ ওরা আল্লাহর জমীনে মানুষের প্রভূত্ব খতম করে এক আল্লাহর প্রভূত্ব কায়েমের সংগ্রামের সাথী।

বিশ্ব সন্ত্রাসী জর্জ বুশ আর তার ধামাধরা মার্কিন সরকারের প্রত্যক্ষ আর পরোক্ষ মদদে দেশে দেশে ইসলামী সরকার ও ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠাকল্পে গড়ে উঠা আন্দোলনগুলোর উপর তাদের লেজুড়বৃত্তি করা সেক্যুলার সরকারগুলো প্রচন্ড মারমূখী হয়ে উঠেছে।

ওরা তাই ৫ই মে-র গভীর রাতে যেমন শান্তিপ্রিয়, নিরস্ত্র জনগনের উপর বন্দুক কামান নিয়ে লেলিয়ে দেয় পালিত সেনাবাহিনীকে বাংলাদেশে, তেমনি করে মিশরেও আমরা দেখি একই রকমের চিত্র, শান্তিকামী, নিরস্ত্র লাখো জনতা, যারা সমগ্র রমজান মাস রাজপথেই কাটিয়ে দিয়েছে তাদের নির্বাচিত সরকারকে পুনঃ ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত দেখার যুক্তিসংগত দাবী নিয়ে, তাদের উপরও ঐ মার্কিন আজ্ঞাবহ সামরিক বাহিনী ইতিহাসের নির্মম গণহত্যা চালায় রাতের আঁধারে। হাজার হাজার নিরীহ, নিরপরাধ মানুষের বুকের তাজা রক্তে লালে লাল হয় রাজপথ।

কিন্তু তার পরবর্তী ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া গুলো ছিল আরো মর্মান্তিক, আরো শোকাবহ। মুসলিম বিশ্বের কোন প্রান্ত হতেই এই নিদারুণ গণহত্যার বিরুদ্ধে কোন সরব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। মুসলমানদের দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বলে কথিত সৌদী রাজতন্ত্রের বর্তমান রাজাও মিশরের ঐ জালিম সামরিক বাহিনীর নৃশংসতম কর্মকান্ডকেই নাকি সমর্থন করেছে। I Don't Want To See I Don't Want To See I Don't Want To See I Don't Want To See. হায় কোথায় যাবো আমরা।

এরপরেও কি আমরা আশা করতে পারি যে, জীবনের মধ্যগগন পেরিয়ে আসা এই হতভাগার দল, তাদের জীবনেই বিশ্বের কোন না কোন প্রান্তে সত্যিকারের একটি ইসলামী রাষ্ট্র দেখে যাবে, দেখে যাবে হজরত ওমরের (রাঃ) শাসনব্যবস্থা?

রাসূল (সাঃ) এর এই বাণী "মূসলমানগন পরস্পর একে অপরের রক্তসম্পর্কীয় ভাই, তাদের কোন ভাই যদি তার কোন অঙ্গে ব্যাথা অনুভব করে, তবে দূরবর্তী তার অপর ভাইও সমভাবে সে ব্যাথা অনুভব করে", যে বর্তমান সময়ে কত অসহায় হয়ে আমাদের অস্তিত্বের সাথে মশকরা করছে তার জ্বলন্ত প্রমাণ আমরা।

এবারের ঈদ যেমন মিশরের লাখো ইসলামপ্রেমীদের জন্য ছিল এক অগ্নিপরীক্ষা, তেমনি তা বিশ্বের অন্য প্রান্তে অবস্থিত বাংলাদেশের জন্যও ছিল একটি কঠিন সময়ের প্রেক্ষাপট। দেশের অবস্থা ক্রমেই সংকটাপন্ন হয়ে চলছে। বিভীষিকাময় এক কঠিন সময়ের অপেক্ষায় দেশবাসী।

এসময়ে যদি ব্লগে ঈদ নিয়ে, ঈদের আনন্দ নিয়ে লেখালেখি দেখি, তখন সেটা আমার কাছে সৌদী রাজতন্ত্রের ঐ মিশরীয় সেক্যুলার সামরিক জান্তাকে সমর্থন দানের মতোই বিচ্ছিরি এবং বৈপরীত্য নিয়ে হাজির হয়। আমাদের ঈমান যদি সত্যিকার অর্থে পাকা হতো, তাহলে ঈদ নিয়ে এমন উচ্ছাস বর্তমান সময়ে আমাদের মাঝে দেখা যেতোনা। বরং আল ক্বোরআনে বর্ণিত সেই বুনইয়ানুম মারসুস এর অনুপ্রেরণায় আমরা আমাদের মিশরীয় ভাই-বোনদের দুঃখ-কষ্ট-বেদনায় সমভাবে সমব্যাথী হতে পারতাম, ঈদের আনন্দের বদলে ঈদ বাবত যাবতীয় বাজেটকে ভবিষ্যতের ইসলামী আন্দোলনের স্বার্থে কোরবান করতে উদ্যোগী হতাম।

অবশ্য লিখক নিজেও যে এ ব্যাপারে খুব একটা বড় উদাহরণ রাখতে পেরেছি, তা নয়, একই ঘুণে ধরা পঁচা সমাজের বাসিন্দা তো!

তবে মনটা আমার সারাবেলাই পড়ে থাকে মিশরের সেই শহীদী কাফেলার পাশে, সেখানকার ইসলামী আন্দোলন এবং দেশীয় ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মীদের আশেপাশে....।

বিষয়: বিবিধ

১৮৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File