সুইজারল্যান্ড কি বাঙলাদেশীদের জন্য সেকেন্ড হোমল্যান্ড হতে পারেনা?
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ২০ জুলাই, ২০১৩, ১১:৪৯:৩২ সকাল
সেই হুঁশজ্ঞান হয়েছে অব্দি শুনে আসছি, আমাদের দেশের বড় বড় নেতাগন, মন্ত্রী, পাতিমন্ত্রীগন এবং টাকার কুমিরগন এবং অবৈধ পথে অর্থ উপার্জনকারীগন তাদের আয় ইনকামের এক বৃহৎ অংশ সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত সুইস ব্যাংকে নিয়ে জমা করে আসেন। সেখানে অর্থসম্পদ জমা করে রাখাকে তাঁরা দুর্দিনের সাথী হিসেবে বিবেচনা করেন বিধায় তাঁরা ঐ সুকর্মটি(?) করে থাকেন বলে সবার ধারণা। সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত সেই বিশেষ ব্যাংকটি নাকি বিশ্বের অন্যান্য দেশের টাকার কুমীরদের অর্থও নিজেদের সেফ ভল্টে ধারণ করে থাকে। বিনিময়ে অর্থ লগ্নীকারীগন এই ব্যাংক হতে বিশেষ সুবিধা কি কি পেয়ে থাকেন তা অবশ্য আমাদের মতো সাধারণ জনগনের জানবার কথা নয়। তবে, সেখানে অর্থ রাখা যে তাদের জন্য অতি সেফ, তা অবশ্য স্বীকার না করে উপায় নেই। তা না হলে কি আর তাঁরা নিজ দেশের ডজনে ডজনে ব্যাংক বীমা-র বিভিন্ন সুবিধাদির লোভনীয় বিজ্ঞাপনকে উপেক্ষা করে সেই সাত সমুদ্দুর তের নদীর পারে কি সম্পদ পাচার করতেন?
অবশ্য মন্ত্রী মিনিস্টার কিংবা অবৈধ পথে অর্থ উপার্জনকারীগন যে কারণে বেশী বেশী বিদেশী ঐ ব্যাংকে অর্থ জমা করতে স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেন, তা হলো, ভাগ্যচক্রের ফেরে পড়ে যদি নিজ দেশে অবাঞ্ছিত হয়ে পড়েন, টিকতে না পারেন, তখন সেই দুর্দিনে যাতে অর্থকষ্টে না পড়তে হয়। বিদেশে পাড়ি জমালে যাতে দুটো খেয়ে পরে বাঁচতে পারেন।
আমাদের বর্তমান সরকারের শেষ দিকে যখন তারা বুঝতে পারছে, আগামী নির্বাচনে তাদের দলের জামিন হবার সম্ভাবনা জিরো, তখন চারদিকে হতে গুঞ্জন শুনতে পারছি, অনেক নেতা, পাতিনেতাই দেশ থেকে পাততাড়ি গুটাতে গোপন আয়োজন শুরু করেছেন, অনেকে আগাম প্লেন বুকিং ইত্যাদিও দিয়ে ফেলেছেন। কারণ সরকার বদল হলে যে তাদের পিঠের চামড়া আর আস্ত থাকবেনা। যেই অত্যাচার আর অনাচারের স্টীম রোলার চালিয়ে তারা দেশের জনগনকে বিগত সাড়ে চার বছর যাবৎ পিষে মেরেছেন, তার ফল যদি সুদে-আসলে ফিরে আসে তাহলে তো বাঁচার কোন উপায় নেই। আর ইনাদের আয় ইনকামের এক বৃহৎ অংশ যে ইতোমধ্যে সেই বিখ্যাত সুইস ব্যাংকের হাই সিকিউরিটি ভোল্টের লকারে গিয়ে আসন গেড়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
তো, যা বলছিলাম, আমার পোস্টের শিরোনামার কথায় আসি এবার। আমাদের জনগনের রক্ত চোষা টাকা ও সম্পদে সুইস সরকারের ব্যাংক গুলো আবাদ হচ্ছে, ঐ টাকার সুবাদে সে দেশের ফরেন কারেন্সী আয়ের সূচকে আসছে বিশাল পরিবর্তন, দেশটা সমৃদ্ধির চূড়ায় থাকছে বছরের পর বছর। দেশটি নাকি ভীষণ সুন্দর, আমাদের আত্মীয় পরিজনের মধ্যে যারা সে দেশে গিয়েছেন, তাঁদের মূখে শোনা। তো তাদের দেশের এই সৌন্দর্য্য বর্ধণে আমাদের মতো গরীব দেশের মানুষের এই রক্তচোষা টাকার অবদানও অনেক, এটা কি তারা অস্বীকার করবে? সভ্য জাতি হিসেবে তা না করারই কথা। তাহলে কি আমরা সাধারণ জনগণ সেই দেশের সরকারের নিকট দাবী জানাতে পারি না এই ভাবে যে,
'হে সুইজারল্যান্ড সরকারের প্রধান, একটি মানবিক আবেদন নিয়ে আমরা বাংলাদেশী কিছু হতভাগার দল আপনার সরকারের নিকট এসেছি। আমাদের দেশের সরকার পরিবর্তনের সময়গুলোতে আপনার দেশের সুইস ব্যাংকগুলো কোটি কোটি টাকা ইনকাম করে থাকে, যা কিনা আমাদের দেশের হতভাগা জনগনের টাকা, যা নেতাগন লুটপাট করে নিয়ে ওখানে জমা করেন। তা যেভাবেই হোক, আপনারা এতে ফি বছর লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশ দিন দিন গরীব হচ্ছে, এদেশের জনগনের আজো সেই আগের দশা মানে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর কাহিনী আর শেষ হয় না।
তাই মহামহিমের দরবারে আমাদের কিছু হতভাগা বাংগালীর আব্দার, আমাদেরকে আপানার এই সুন্দর দেশের রেসিডেন্ট ভিসা দিয়ে সেখানে চিরদিন থেকে যাবার একটি সুবন্দোবস্ত করে দিলে আমরা আপনার ও আপনার সরকারের নিকট চির কৃতজ্ঞ থাকবো। আমাদের দেশে আমাদেরকে অলস, কলহপ্রিয় ও চোগলখোর বলে দুর্নাম থাকলেও, বিদেশে গেলে আমরা যে কঠিন কায়িক পরিশ্রমে অন্য সবার চাইতে এগিয়ে থাকি, তা আমাদের চিরশত্রুরাও স্বীকার করেন। তাই আমাদেরকে আপনার দেশের নাগরিকত্ব দিলে, ইনশাআল্লাহ আপনার দেশের মিল কারখানাগুলো সচল রাখতে এবং বাগ বাগিচাগুলোর যত্ন নিতে আমরা একাই একশ হয়ে এগিয়ে যাবো, আপনাদেরকে এ জন্য বাড়তি খরচ ও করতে হবেনা।
তাই সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে, আমাদের এই হতদরিদ্র বাঙালীদেরকে আপনার সুন্দর, চিরসুন্দর এবং উন্নত দেশের নাগরিকত্ব দিয়ে একদিকে আমাদের অভাবক্লিষ্ট ওভারপপুলেটেড বাংলাদেশের দীনতা ঘুচাতে যেমন সহায়ক হবেন, তেমনি, আপনার দেশের উন্নতিতেও আমাদের সহায়ক হিসেবে পাবেন।
ধন্যবাদান্তে,
আমরা অভাগা বাংলাদেশী"
কি মনে হয়, প্রিয় ব্লগারগন, আমি কি ভূল কিছু দাবী করলাম নাকি?
বিষয়: বিবিধ
১৮৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন