গাজীপুর ও চার সিটি নির্বাচনে নাস্তিক ও সেক্যুলারবাদীদের পতন হয়েছে

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ০৯ জুলাই, ২০১৩, ০৪:৫১:৪৯ রাত

গাজীপুর ও আগের চার সিটি নির্বাচনে দেশের নাস্তিক ও সেক্যুলারবাদী তথা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের পতন হয়েছে। ফলে এ কথা বলতে আর দ্বিধা নেই যে দেশের আগামী সাধারণ নির্বাচনেও (যদি তা আদৌ সংগঠিত হয়) ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারী আওয়ামী লীগের পতন অনিবার্য্য। এবং সে হার হবে একেবারে ঐতিহাসিক হার যাকে একটু রসিয়ে বললে বলতে হয় 'ভূমিধ্বস পতন'।

গাজীপুরের এ নির্বাচন ছিল মূলতঃ আস্তিক ও নাস্তিকদের মাঝের যে বিরোধ ধর্মনিরপেক্ষ বাল সরকার দেশে চেগিয়ে তুলেছিল, তারই এক প্রতিবাদী জবাব সরকারকে। সবার জানা আছে, বাল সরকার কিছুদিন আগে শাহবাগে কিছু ঘোর ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক ব্লগারদের দিয়ে (যারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদের (সাঃ) বিরুদ্ধে চরম কুৎসা রটনা করেছিল এবং ব্লগে এখনো তা করছে) একটি নাটকের আসর বসিয়েছিল আর সেটিকে নাম দিয়েছিল প্রজম্ম চত্ত্বর। অতঃপর সেটাকে ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে দেশে জম্ম দিয়েছিল তাদের ভাষায় 'দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ'। চরম নাস্তিক শাহবাগী ইমরান এইচ সরকারকে সরকারের সমান্তরালে খাড়া করে সবরকমের প্রটোকল, নিরাপত্তা এবং আর্থিক সাহায্য দিয়ে তাকে দিয়ে ইসলামপন্থী আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগার করানো হচ্ছিল,তাদের ফাসিঁ দাবী করা হচ্ছিল এবং সব ইসলামী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সেগুলো বন্ধের প্রচারণা চালানো হচ্ছিল। ইমরানের এক নাস্তিক সহকর্মী রাতের আঁধারে কুকর্ম করতে গিয়ে তার বিরোধীদের হাতে নিহত হলে, অন্যায়ভাবে বাল সরকার সে হত্যার দায় ইসলামপন্থীদের ঘাড়ে চাপিয়ে তাকে দ্বীতিয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ(???) বলে ঘোষণা দেয় এবং তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। সংসদে তার জন্য শোক প্রস্তাব পঠিত হয়। এসবের প্রতিবাদে দেশে শুরু হয় গণজাগরণ এবং সব ইসলামপন্থীদের সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলে। মাদ্রাসার ভাইয়েরা তাদের চিরপরিচিত অহিংস রূপ ছুড়েঁ ফেলে প্রিয় নবীর মর্যাদা রক্ষায় রাজপথে নেমে আসে, শুরু হয় নাস্তিক আর আস্তিকদের চূড়ান্ত লড়াই। বাল সরকার সেই লড়াইয়ে চরম মার খাবার ভয়ে রাতের আঁধারে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের উপর চালায় গণহত্যা, যা একাত্তরে পাকিদের করা গণহত্যার সমান্তরালে প্রচার পায় দেশে বিদেশে। হেফাজতে ইসলামের নিরীহ নেতাকর্মীদের উপর সেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞে নাকি প্রতিবেশী দেশ হতে হেলিকপ্টারে প্যারাট্রুপার এনে তাদের ব্যবহার করা হয়েছিল, যাতে দেশীয় র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা স্বজাতিদের এ জঘন্য হত্যাযজ্ঞের সময় নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেও, ওরা যাতে তা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারে। সরকার রাতের আঁধারে কাজ সারতে চাইলেও মহান আল্লাহর রহমতে সেই হত্যাযজ্ঞের কাহিনী অলৌকিক উপায়ে ভিডিও হয়ে দেশ বিদেশে প্রচার হয় এবং দেশবাসীর হৃদয়ে গেঁথে দেয় বাল সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ এবং প্রতিরোধের এক মহা প্রতিশ্রুতি।

গাজিপুর ও অন্য চার সিটির নির্বাচনে সেই প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন হয়ে গেল আল্লাহর অশেষ রহমতে। তাই আমি বলছিলাম গাজিপুরসহ পাঁচ সিটি নির্বাচন ছিল আসলে আস্তিক জনগন ও নাস্তিক্যবাদী বাল সরকারের মধ্যকার নির্বাচন আর সে নির্বাচনে আস্তিক জনগন ধর্মনিরপেক্ষ নাস্তিক বাল সরকারকে পাঁচ পাঁচটি লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে।

নির্বাচনে আমরা কি বুঝলাম/শিখলামঃ

এ নির্বাচন হতে সবার জন্য যে শিক্ষা রয়েছে তার মধ্যে প্রধান হলো - শাহবাগের প্রজম্ম চত্ত্বর কখনোই দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধাদের নয় বরং তা ছিল নাস্তিক্যবাদী সরকারের একটি চাল, যা তারা আমদানী করতে চেয়েছিল দেশে ইসলামের জাগরণকে ঠেকাতে, ইসলামপন্থী আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে তারা যে অন্যায় বিচার ও ফাসিঁ দেয়ার খেলা শুরু করেছে তাকে জায়েজ করণার্থে। আর এ কথার প্রমাণ হলো যে, গাজীপুর বা চার সিটি নির্বাচনে ঐ ইমরান সরকারদের কোন ভূমিকাই কেউ লক্ষ্য করেনি। তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে কোন নির্বাচনী প্রচারণার কাজে তাদের দেখা যায়নি। সেসময় দূরবীন দিয়েও তাদের কোন অস্তিত্ব কেউ খুজেঁ পায়নি। অথচ যেই হেফাজতে ইসলামকে জঙ্গী, মধ্যযুগীয় ধ্যাণ ধারনার প্রতীক আখ্যা দিয়ে সরকার রাতের আঁধারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নিস্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল, তারাই সেসব নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের পক্ষে সরগরম ছিলেন। সুতরাং এসব সিটি নির্বাচনে শাহবাগী ইমরান সরকার তথা 'প্রজম্ম চত্ত্বর' অলাদের কবর রচিত হয়েছে,একথা নির্ধিদ্বায় বলা চলে।

এ নির্বাচন এ কথারও সাক্ষী যে, ইসলামের বিরুদ্ধে সরাসরি গিয়ে এদেশে কখনো কোন সরকারই তার গদি রক্ষা করতে পারবেনা, সেটা বাল সরকারই হউক কিংবা বিএনপি সরকারই হউক, কিংবা জাতীয় পার্টিই হউক। অবশ্য জাতীয় পার্টির কথা এখানে না আনাই ভালো, যতক্ষণ তার কর্ণধার হিসাবে মহা-পল্টিবাজ হু,মু, এরশাদ বর্তমান আছে।

এ নির্বাচন এ কথারও জানান দিয়ে গেল যে, হেফাজতে ইসলাম দেশের রাজনীতিতে একটি বেশ বড় ফ্যাক্টর। যদিও তাদের নেতারা সব সময় বলে আসছেন যে, তারা রাজনীতিতে জড়াতে চান না। কিন্তু একটি দেশের নাগরিক হয়ে, দেশের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না হয়ে থাকা যায়

না, এটাও ধীরে ধীরে তাদেঁর বুঝে আসবে বলে মনে করি।

ইসলামপন্থীদেরো বুঝতে হবে যে, দেশের ইসলামপন্থীদের যে কোনভাবে হউক, এক মঞ্চে এসে কাজ করতে হবে; যদি তাঁরা আন্তরিকভাবে দেশ থেকে নাস্তিকদের অস্তিত্বকে ঝেঁটিয়ে দূর করতে চান। নাস্তিকরা যদি ইসলামের সাথে শত্রুতায় একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারে তাহলে ইসলামপন্থীরা কেন তা পারবেনা? অবশ্যই পারতে হবে।

বাল শিবিরেও সবাই এখন এ নির্বাচনের রেজাল্টে হতাশ এবং দিশেহারা। তারাও বুঝতে পারছে যে হেফাজতে ইসলামের সাথে তারা যে জঘন্য আচরণ করেছে, তারই মাশুল গুনতে হচ্ছে আজ তাদেরকে। কিন্তু এখন বুঝে কোনই লাভ নেই। পদ্মা মেঘনা দিয়ে পানি বহুদূর গড়িয়ে গেছে। এখন ভূল শোধরানোর আর কোন উপায় নেই, সময় নেই। এটা এই অধমের কথা নয়। গত দু একদিনের পত্রিকায় চোখ রাখলেই দেখতে পাবেন এটা সেই রাম বাম শিবিরের বড় বড় নেতাদেরই মূখের কথা।

তাই, আসুন, ইসলামপন্থীদের এ মহান বিজয়ের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানিয়ে, আগামীর লড়াইয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণ করি।

শপথ গ্রহন করি, এদেশ একমাত্র ইসলামপন্থীদের জন্য, এদেশে নাস্তিক, ধর্মনিরপেক্ষদের কোন স্থান নেই।

বিষয়: রাজনীতি

১৬০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File