মাথায় কত প্রশ্ন আসে দিচ্ছেনা কেউ জবাব তার
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ১২ মে, ২০১৩, ১০:০০:০৮ রাত
গত ৫ই মে রাতে বাংলাদেশের ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম গণহত্যার পর মাথায় একে একে অনেক প্রশ্নই আনা গোনা করছে, কিন্তু কারো নিকট হতে, কোন সোর্স থেকেই এসব প্রশ্নের কোন জবাব পাচ্ছি না। নিকট ভবিষ্যতে পাবো কিনা তারো কোন সম্ভাবনা দেখছি না। প্রশ্নগুলো নিশ্চয়ই আমার মতো আরো অনেকের মাথায়ও ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখি এই ব্লগের মাঝে যদি সেগুলোর কোন সদুত্তর পাই, এ চিন্তা থেকে মনের কথাগুলো এখানে তুলে ধরলাম।
কোন ভাইয়ের জানা থাকলে জানানোর অনুরোধ রইল।
১। মাওলানা আহমদ শফি সাহেব এখন হাটহাজারীতে নজরবন্দী আছেন। কিন্তু অন্যান্য নেতাদের কি খবর? হেফাজতের পরবর্তী কর্মসূচী কি? প্রধান নেতার অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় কি অন্য কেউ নেই তাঁর দায়িত্ব কাঁধে নেয়ার?
২। তাহলে কি এই যে বিশাল গণজাগরণ ফুঁসে উঠেছিল তা কি ৫ই মে'র সরকারী তান্ডবের কারণে বুদবুদের মতো হাওয়ায় মিলিয়ে গেল? এই আন্দোলন কি তাহলে আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবেনা?
৩। হেফাজতে ইসলাম তো শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত তাদের ঘোষিত শান্তিবাদী নীতিতে বিশ্বাসী ছিল, আন্দোলনও সেই আলোকে চলছিল, তাহলে কেন সরকার তাদেরকে সন্ত্রাসী, জংগী এবং তান্ডবসৃষ্টিকারী রূপে চিহ্নিত করছে? আর সরকারী প্রচারযন্ত্রের এই মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ মূখে কুলুপ এঁটে বসে আছে কেন? অন্যান্য রাজনীতিকরা ও কেন চুপচাপ আছেন। ভালো কোন একটা কলাম ও দেখছিনা বড় বড় কলামিষ্টদের এই ব্যাপারটা নিয়ে।
৪। এত বড় একটা গণহত্যা হয়ে গেল রাতের আঁধারে ঠান্ডা মাথায় হত্যাকান্ড যাকে বলে, অথচ, বিশ্ব মিড়িয়া ও হিউম্যান রাইটস সংগঠনগুলোর তেমন উল্লেখযোগ্য প্রতিবাদ তো চোখে পড়ছেনা, কারন কি?
৫। ১৯৮৯ সালে ঠিক একই মাত্রায় চীনের রাজধানী বেইজিং এ কম্যুনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গণজাগরণ হয়েছিল এবং সে সরকারও রাতের আাঁধারে সাাঁজোয়া বাহিনী দিয়ে রাস্তায় বসে থাকা আন্দোলনকারীদের উপর গণহত্যা চালিয়েছিল। কিন্তু সে গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ব মিড়িয়ায় যে হইচই হয়েছিল, সে অনুপাতে বাংলার এ গণহত্যার বিরুদ্ধে মিড়িয়াকে তার দশ ভাগের এক ভাগ ও কথা বলতে দেখছিনা। ব্যাপারটা আজব নয় কি?
৬। মাত্র ৫/৬ দিনের আগের এ ঘৃণিত ঘটনা। কিন্তু দেশের মিড়িয়াগুলোর খবর শুনতে গেলে মনে হয়, ৫ই মের কালোরাত বলে দেশে কিছু ছিল না। ব্যাপারটি অদ্ভূত মনে হয় বই কি।
৭। বিএনপি-র রাজনীতির দিন কি শেষ হয়ে যাচ্ছে? ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম এর পরে তাদের কি করণীয় ছিল আর তাঁরা কি করছেন? যেখানে জামায়াত শিবিরের জনশক্তির বৃহদাংশ কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে পড়ে থাকলেও যে কোন হরতাল বা আন্দোলনে এখনো তাদের অবস্থান সবার চোখে পড়ে, সেখানে বিএনপির মত বড় দল, যারা পরবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাবার স্বপ্ন দেখে, তারা কোন হরতাল কর্মসূচী দিলে তাদের দলের লোকজনকে একস্থানে বসে থাকা ছাড়া আর কিছুই করতে দেখা যায় না। আর ছাত্রদলই বা কোথায় গিয়ে লুকালো? আমার তো মনে হয় জামায়াত বা অন্যান্য দলগুলোর বিএনপির সাথে আর জোট গড়ে থাকার প্রয়োজন নেই। আপনাদের কি মতামত?
৮। হেফাজতে ইসলাম কি এখনো তাদের আগের স্ট্যান্ড এ অটল থাকবে, অর্থাৎ, আমরা রাজনীতি করি না বা করবোনা। শুধু তের দফা দাবী মানলেই আমরা ঘরে ফিরে যাবো। একটি স্বৈরাচারী ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের নিকট এমন দাবী কি তারা আরো করবেন, নাকি এবার আগের ভূল বুঝে তৌবা করে রাজনীতিতে নামার সিদ্ধান্ত নিবেন?
৯। এত বড় একটা চপেটাঘাত খাওয়ার পরেও কি তাঁরা রাজনীতি করাকে ঘৃণার চোখে দেখবেন নাকি রাসূলের(সাঃ) মদীনা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজনীতির যে সবক দিয়ে গিয়েছিলেন, ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের খেদমত করার যে পথ দেখিয়ে গেছেন সেদিকে প্রত্যাবর্তন করবেন?
১০। মাওলানা হাফেজ্জী হুজুর ও আশি বছর বয়সে ভূল বুঝতে পেরে রাজনীতিকে সঙ্গে করে শেষ দিন গুলো অতিবাহিত করেছিলেন। আশা করি আমাদের হেফাজতী ভাইয়েরাও তাঁদের ভূল বুঝতে পারবেন।
বুঝতে পারবেন যে রাজনীতির অলিগলিতে বিচরণ না করলে, রাজনীতি সচেতন না হলে, বর্তমানের দুষ্ট রাজনীতির চ্যালাদের সাথে পেরে উঠা কঠিন হবে এবং একমাত্র রাজনীতির মাধ্যমেই একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
মহান আল্লাহর দরবারে তাঁদের এই বোধদয়ের জন্য কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি। আমিন
বিষয়: বিবিধ
১৪৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন