মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের কথাটিকে কি অন্য অর্থে নেয়া যায় না?
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে হাসেম ২৬ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:৪২:৫২ রাত
এ সময় দেশের স্বনামধন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা আলমগীরের একটি উক্তি নিয়ে সারা দেশময় হৈ চৈ শুরু হয়েছে। অনেক বিদগ্ধজন তাঁকে পাগল পর্যন্ত আখ্যা দিয়েছেন। এমন কি তাঁর দলের অনেক সিনিয়র নেতারাও দেখছি তাঁর মন্তব্যে দারুন ব্যথিত এবং বেদনাহত। তাই সভা সেমিনারে আকারে ইঙ্গিতে মন্ত্রী মহোদয়কে সমঝে বুঝে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন। যে যার বুঝ মত মন্তব্য করছেন, টক শোতে বসে কথার ফুলঝুরি ছড়াচ্ছেন। ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ সবখানেই দেখছি তাঁর মন্তব্য নিয়ে তুমুল হৈ চৈ।
কেউ নেই তাঁর সাথে। কেউ তাঁর প্রতি এতটুকু দরদ নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন বোধ করছেন না। বেচারা যে একেবারে একঘরে হয়ে গেল। তাঁর এই দুর্দিনে তাঁর হয়ে দু'টি কথা বলার লোভ সামলাতে পারছিনা। যদি তাতে তিনি মনে কিছুটা প্রশান্তি লাভ করেন, তাহলে শান্তির সুবাতাস বহাবার জন্য আমি যদি পরবর্তীতে তাঁর দল কর্তৃক কিছু একটা উপাধি বা পুরুষ্কার লাভ করতে পারি, তাহলে বা কম কি?
জনাব ম খা আলমগীরের উক্তিটি আমাকে ইসলামের প্রাথমিক যুগের একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিল। যুদ্ধটা ছিল খায়বরের যুদ্ধ। ইহুদী আর মুসলমানদের মধ্যে এক তুমুল যুদ্ধ হয়ে গেল। ইহুদীরা পশ্চাদপসরণ করতে করতে গিয়ে শেষ পর্য্যন্ত খায়বরের দুর্গে গিয়ে তাদের শেষ আশ্রয় নিল। দুর্গটি ছিল খুবই বৃহৎ, অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এবং দুর্গের লৌহকপাটটি ছিল এমন ভারী এবং মজবুত যে দশজন শক্তিশালী যোদ্ধার পক্ষেও তা নাড়াতে কষ্ট ছিল। মুসলমানদের পক্ষের অনেক নামকরা যোদ্ধা দুর্গের কপাট ভাঙ্গার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। অতঃপর আমাদের নবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর আহবানে শেরে খোদা হযরত আলী (রাঃ) পরদিন খায়বরের দুর্গে হানা দিতে প্রস্তুত হলেন। তিনি প্রত্যুষে দুর্গের নিকটবর্তী হয়ে দু বাহুতে লৌহ কপাটটি ধরে এমন জোরে টান দিলেন যে সেটা যেন খেলনা বস্তুর মতো তাঁর হাতে চলে এলো এবং তিনি তা মাথার উপর ঘুরিয়ে দূরে নিক্ষেপ করলেন। সুযোগ পেয়ে এবার মুসলিম যোদ্ধারা অতর্কিতে দুর্গের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে শত্রুপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে পরাজয় বরণে বাধ্য করলেন।
আজকের এই দিনে যদি ইসলামের নিশান বরদাররা ইসলামের জন্য সত্যিকার অর্থে জীবন বাজি রেখে মাঠে নেমে থাকেন এবং জনাব ম.খা. আলমগীর যদি ব্যাপারটি আঁচ করে সত্যিকার অর্থে তাঁর বুদ্ধি বিবেচনা খরচ করে বলে থাকেন যে ইসলামরে হেফাজতকারীদের গেট ধরে বা দালানের খুঁটি ধরে ঝাঁকি দেয়াতে ঐ নয়তলা ভবন ধ্বসে পড়েছে, তাতে তাঁকে কি ভাবে পাগল আখ্যা দেয়া যায়? এমনো তো হতে পারে যে, তিনি তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তিবলে ব্যাপারটি আঁচ করতে পেরেছেন এবং সরল মনেই তা দেশের জনগনের নিকট প্রকাশ করে দিয়েছেন। হয়তঃ বা অন্য কোন হেকমত অবলম্বন করতে গিয়ে তিনি তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জনের কথাটি এ মূহুর্তে সাধারণ্যে প্রকাশ করতে দ্বিধা করছেন। তাছাড়া কেউ যদি আধ্যাত্মিক শক্তি প্রাপ্ত হয়, সেটা নিজ মূখে প্রকাশ করাটাওতো সৌজন্যের বরখেলাপ।
কিন্তু আমাদের দেশের সাধারণ জনগন হতে নিয়ে অসাধারণ মানুষ সকল সবাই মিলে মন্ত্রী মহোদয়কে যে রামধোলাই শুরু করেছেন, তাতে যদি তাঁর বক্তব্যের আসল অর্থটিই ধাঁধাঁর মধ্যে রয়ে যায় তাহলে এতে কি দেশ ও জনগনের কোন কল্যাণ হবে? আমার তো তা মনে হয় না।
তাই আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা বুঝি, মন্ত্রী মহোদয়কে ওভাবে হেয় না করে একবার যদি ভাবেন, এক শেরে খোদা যদি দশজন মানুষের শক্তির সমান লৌহকপাট একাই মাথার উপরে তুলতে পারেন, তাহলে ইসলামের জন্য জীবনবাজি রাখা অনেকগুলো মানুষের ঝাঁকানিতে একটি নড়বড়ে বিল্ডিং ধ্বসে পড়াটা কি অনেক বেশী আজগুবি বা অলৌকিক কিছু? আশা করি, নাদানের এই সামান্য কথাটুকুকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের দেশের একজন নামকরা ডাক্তার মন্ত্রীকে আপনারা এবারের মতো রেহাই দিন, প্লিজ, প্লিজ।
আর ভালো লাগেনা একই ধরনের লিখা বার বার, পাঠ করতে। তাই এবার আমার মতো করে লিখতে অন্য ব্লগারদেরও আহ্বান জানাচ্ছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
বিষয়: বিবিধ
১৬১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন