বাংলাদেশ প্রজন্ম ও বর্তমান বাস্তবতা
লিখেছেন লিখেছেন প্রজন্ম বাংলাদেশ ১৭ মার্চ, ২০১৩, ০২:১২:৩০ দুপুর
শাহির জাহিদী
Know Thyself -পৃথিবীর বিখ্যাত উক্তিগুলর একটা । যে তার নিজেকে জানেনা, তার আত্বপরিচয় জানেনা তার পক্ষে আত্ববিশ্বাসী হওয়া আর সেই বিশ্বাসের বলে বলিয়ান হয়ে কিছু করা ও সম্ভব নয় । একথা ব্যাক্তির জন্য যেমন সত্য তেমন জাতির জন্যও সত্য । জাতিগত ভাবে আমাদের পরিচয় কি আর জাতির সদস্য হিসেবে আমার পরিচয় কি? তা জানা আবশ্যক । আমাদের জাতীয় পরিচয়ের উপাদান গুলো কি? কোনটা কততুকু তাৎপর্যপূর্ণ তা আমাদের সবার কাছে স্পষ্ট থাকা জরুরী । সাথে সাথে এই উপাদানগুলোর মধ্যে Similarities এবং Dissimilarities গুলো কি তা সুস্পস্ট ভাবে জানতে হবে ।
বিশেষভাবে তরুন প্রজন্ম, যারা ভবিষ্যতে দেশ কে নেতৃত্ব দিবে বিভিন্ন ভাবে । এক্ষেত্রে Political নেতৃত্বের তুলনায় Intellectual নেতৃত্ব অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ । কারন তারাই দেশের বিবেক, Policy নির্ধারক । এই Similarities বা ঐক্যমত গুলো জোরদার করে ভিন্নমত গুলো যথাযথ ভাবে Address করার উপর নির্ভর করে জাতির ভবিষ্যত । এই উপাদান গুলোকে সমন্বয় করে একটা Common Identity নির্মাণ, একটা Common Goal Setup করা দরকার । নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই Common Mental Setup (যদিও রাজনৈতিক ও আদর্শিক ভিন্নতা থাকবে)টা সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলোর মাধ্যমে Instill করা জাতির পরিচালকদের একান্ত করনীয় । আজ আমাদের দেশের যে অবস্থা তাতে আমাদের জাতি গঠনের এই প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে হয়নি বলেই মনে হয় । আমাদের Social Fabrics গুলো আলাদাই রয়ে গেছে ।
ইতিহাস হলো এই উপাদানগুলোর অন্যতম । বলা যায় শিকড় । আমাদের ইতিহাস আজ খুবই Shallow ভাবে দেখা হচ্ছে । বিকৃত করা হচ্ছে । বঙ্গবন্ধু আর জিয়ায় বিভক্ত আজ ইতিহাস । তাদের মধ্যে তো ব্যক্তিগত বা স্বার্থের কোনো বিরোধ ছিল না। জাতির প্রয়োজনে যার যার অবস্থান থেকে অবদান রেখেছেন । আজ এটা নিয়ে Politics হচ্ছে ।কেউ বলে জিয়াউর রাহমান পাকিস্থানের Agent ছিল । আবার কেউ অভিযোগ করে মুজিবুর রাহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, চেয়েছিলেন পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী হতে । এই সবকিছুই একান্ত রাজনৈতিক সুবিধাবাদ ছাড়া আর কিছুই নয়।
তাছাড়া বাংলার ইতিহাস শুধু মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । আমাদের স্বাধীকার আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম একটি মাত্র ইভেন্টে ফলাফল নয়। ৭১ সালের বিজয় সূদীর্ঘ আন্দোলনের চুড়ান্ত বিজয়। পাল আর সেন আমলে বাংলার Integration, মুসলিম আগমন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, বঙ্গভঙ্গ, হিন্দু সাম্প্রদয়িক আন্দোলন, Dhaka University প্রতিষ্ঠা ও এর বিরোধীতা, ৪৭, ৫২ সবই এই ইতিহাসের অংশ, বাংলাদেশ গঠনের ধারাবাহিক পরিক্রমা। নবাব নওয়াব আলী, আমীর আলী, শেরে বাংলা, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাষানী এদের অবদান এই প্রক্রিয়ায় অনস্বীকার্য।
আমরা যেমন পাকিস্থানের চোখে ভালো মুসলিম ছিলাম না, তেমন আর্যদের কাছে ও ভালো হিন্দু ছিলাম না। আসলে কথা সত্য । নিম্ন বর্ণের শংকর জাতি আমরা । তাই আমাদের ইতিহাস প্ররিক্রমা ভুলে স্বার্থে অন্ধ হয়ে ইতিহাস নিয়ে রাজনীতি করি । আর নতুন প্রজন্ম কিছু না বুঝে অন্ধের মত পূর্বসূরীদের অনুসরন করি । আমাদের এই সামগ্রীক ইতিহাসকে আস্বীকার করে, জাতীয় পরিচয় পূর্নভাবে উপলব্ধী করতে পারি না।
যে কারনে বঙ্গভঙ্গের বিরোধীতা করা হয়েছিলো, ঠিক সেই কারনেই আমাদের জন্য এর দরকার ছিল। যে কারনে রবীন্দ্রনাথের মতো মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্টায় বাধা দিয়েছিল, ঠিক যে কারনে অবিভক্ত বাংলা স্বাধীন হতে পারেনি-ঠিক একই কারনে Two Nation Theory’র জন্ম হয়েছিল । আবার সেই কারনেই ৫২ তে ভাষা আন্দোলন, ৬৬ তে আসহযোগ, সেই কারনেই ৭১এর সংগ্রাম। আমরা সব ভুলে খন্ডিত ইতিহাস নিয়ে চলতে পারিনা।
কয়েকদিনের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আমরা এক জাতির সদস্য নয়, কতগুলো Conflicting Ethnic Group এর এক জনপদ । অথবা প্রাগৈতিহাসিক যুগের জংলী মানুষের Tribe গুলো নিজর স্বার্থ আর অস্তিত্ব রক্ষায় সংগ্রাম করছে । সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল এই সংঘাতে নতুন প্রজন্মের Response। তারা শুধু নিজের পক্ষকে সমর্থনই করে নাই বরং খুব Extremely React করেছে । উদ্বেগের ব্যাপার এটাই যে, ভবিষ্যতে যারা Intellectually জাতিকে নেতৃত্ব দিবে সেই শিক্ষিত অবস্থা। Facebook, blog ও অন্যান্য Electronic media তে যে সব মন্তব্য এসেছে সেখানে ঘৃনা আর বিদ্বেষ ছড়ানো ছাড়া আর কিছু হবে বলে মনে হয় না । আমাদের নতুন প্রজন্ম যে আগের অন্ধ গোড়া সংকীর্ণ দলীয় চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি তা আরো স্পষ্ট, ভিন্ন মত সহনশীলতা যে আমরা শিখতে পারিনি তা আবার ও প্রমান করেছি, এবং অসহিষ্ণুতার উগ্র প্রকাশ ঘটিয়েছি । মনে হয় আমাদের Political Socialization হয়েছে not National Socialization । যেন আমরা আওয়ামীলীগ, বি এন পি আর জামায়াত হিসেবে জন্মেছি, এভাবেই হয়েছে আমাদের মানষিক বিকাশ ।সামান্য শ্রদ্ধাবোধ, নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করা, Information এর সত্যতা যাচাই এর বিন্দুমাত্র আগ্রহ আমাদের নেই। আমার পক্ষের মিডিয়া বলেছে তো এটা মিথ্যা হয় কি করে । pre determined concept নিয়ে সব কিছু চিন্তা করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমারা ।
আমাদের জাতীয় পরিচয়ের একটি অপরিহার্য উপাদান যেমন ইসলাম তেমন তেমন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল আমাদের বাঙ্গালীত্ব ।এই ইসলাম বা বাঙ্গালীত্ব ছাড়া জাতি হিসেবে বাংলাদেশী জনগন কখনই পূর্ণতা পেতে পারেনা। বঙ্গবন্ধু এই কথাটা খুব সুন্দর করে বুঝেছিলেন- আমাদের বাঙ্গালীর মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হল 'আমরা মুসলমান, আর একটা হল আমরা বাঙ্গালী।' পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে রয়েছে। বোধহয় দুনিয়ার কোন ভাষায়ই এই কথাটা পাওয়া যাবেনা, 'পরশ্রীকাতরতা'। পরের শ্রী দেখে যে কাতর হয়, তাকে পরশ্রীকাতর বলে। ঈর্ষা, দ্বেষ সকল ভাষায়ই পাবেন, সকল জাতির মধ্যেই কিছু কিছু আছে, কিন্তু বাঙ্গালীদের মধ্যে আছে পরশ্রীকাতরতা। ভাই, ভাইয়ের উন্নতি দেখলে খুশি হয় না। এই জন্যই বাঙালি জাতির সকল রকম গুণ থাকা সত্ত্বেও জীবনভর অন্যের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। সুজলা, সুফলা বাংলাদেশ সম্পদে ভর্তি। এমন উর্বর জমি দুনিয়ার খুব অল্প দেশেই আছে, তবুও এরা গরীব। কারণ, যুগ যুগ ধরে এরা শোষিত হয়েছে নিজের দোষে। নিজকে এরা চেনেনা, আর যতদিন চিনবেনা, বুঝবেনা, ততদিন এদের মুক্তি আসবে না ------- শেখ মুজিবুর রহমান।
এই মুসলনিত্ব ও বাঙ্গালীত্বের সমন্বয় ছাড়া আমাদের জাতীয় ঐক্য সম্ভব নয়। যারা বাঙ্গালীত্ব কে ধারণ করতে চাই তারা ইসলাম কে শ্ত্রু বানিয়ে ফেলেছে। আবার যারা ইসলাম কে represent করতে চাই তারা বাঙ্গালীত্বের প্রশ্নে সংকীর্ণতার উর্দ্ধে উঠতে পারেনি। যার ফলে আজ আমদের জাতি দুটি শিবিরে স্পষ্টতঃই বিভক্ত। দেশের দুইটি রাজনৈতিক ধারা এই আদর্শিক গ্রুপের সাথে রাজনৈতিক স্বার্থেই সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়েছে। যার ফলে এই আদর্শিক দন্দ্ব আরো সংঘাতময় হয়ে উঠেছে ।
সুশীল সমাজ ও তরুন প্রজন্মের যারা পুলিশের আজকের ভূমিকাই খুশি (রাজনৈতিক অবস্থান ও স্বার্থের কারনে) তারা বোধ হয় এর দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব ভুলে যাচ্ছেন । ভুলে যাচ্ছেন যা শুরু হয়েছে তা আর শেষ হবে না । এই পুলিশ, এই gun, এই পরিবেশ---শুধু পালটে যাবে target,,বার বার......বার বার । যারা শুরু করেছে...যাদের কারনে শুরু করেছে তাদের কিছু হবেনা । তারা একসাথে Politics করবে, সমঝোতা করবে (যেমন আগে অনেকবার হয়েছে), স্বার্থে বাধলে আলাদা হবে । পায়ে হাত দিয়ে সালাম করবে, বুকে বুক লাগিয়ে কোলাকুলি করবে ।আর আমরা শালার Public.........বার বার গুলি খাব । রক্ত দিব, জীবন দিব । আর আমদের এক চোখা (নিজের দলের অন্যায় দেখে না) সুশীলরা ক্ষ্মমতাই থাকলে একই কাজ কে স্বাধীনতা রক্ষা বলবে আর ক্ষ্মমতা না থাকলে সন্ত্রাস বলবে । যেমন আজ আইন রক্ষাকারীর পোশাকে দলীয় ক্যাডার দের স্বাধীনতার চেতনার ধারক বলা হচ্ছে তেমন দৃশ্যপট বদলালে জাতীয়তাবাদের রক্ষক হয়ে যাবে, আবার হয়ত ইসলামের বাহক । তখন ও একদল সুশিল তাদের সন্ত্রাসী বলবে এখন যেমন বলছে ।
মানবাধীকার......? যুদ্ধের সময়ের অপরাধের বিচার হচ্ছে। আর যাদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে তাদের মানবাধীকার? তারা তো এদেশেরই নাগরিক। তারা কতটা সন্ত্রাসী, যার কারণে এভাবে গুলি করে মারা যায় মিডিয়া তার সাক্ষী হয়ে থাকছে (যদি কেউ রাজনৈতিক অবস্থানের কারনে এক চোখ বন্ধ রাখেন তাহলে ভিন্ন কথা) । নতুন প্রজন্মের এই মানুষ গুলো স্বাধীনতায় বিরোধীতাকারিদের এর কাছে কেনো গেছে? তথাকথিত স্বাধীনতার ধারক-বাহকেরা স্বাধীনতার সুফল জনগনের কাছে পৌছাতে পারেননি বলেইতো? Social Justice তো দুরের কথা, বরং আকন্ঠ দূর্নীতিতে ডুবে আছেন সবাই। নৈতিক পরিবেশ নেই, ধর্ষনের Century উদযাপন করি আমারা, সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে সারা দেশে ।আমরা যতই বলি যারা কাছা কাছি থাকে তারা তো জানে কে কেমন? দুজন মন্ত্রীর মন্ত্রনালয়ে দুই পয়সার দুর্নীতি খুজে পাওয়া যায়নি, Court বলছে তারা বর্তমানের দেলোয়ার আর আজমের বিচার করছে না। তাহলে কি এটা মেনে নেওয়া হচ্ছে যে আজকের সাঈদী আর আযম ঠিক জায়গায় আছে???? চারিদিকের এই আদর্শিক শুন্যতা দেখে যদি কেউ তাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে তাহলে তাকে গুলি করে মারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে??? একে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে আর পার পাওয়া যাবে না । একদল যদি তাদেরকে রাজনৈতিক পূর্ণবাসন করে থাকেন তাহলে অন্য দল তাদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভাবের ব্যবস্থা করেছেন ।জনগন বুঝতে শুরু করেছে এ সবই স্বার্থের রাজনীতি। এই সব বাস্তবতাকে Emotion আর Media’র Propaganda দিয়ে রিপ্লেস করা যাবে না । আমরা নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার চেতনা কারো কাছে ইজারা দেবো না । কারো রাজনৈতিক হাতিয়ার ও হতে দিব না । আমরা বিচার করবো কে কি ভুমিকাই আছে?
যারা Islamist বলে দাবী করে তাদের ও গোড়ামী গোয়ার্তুমী ছাড়তে হবে, Conservativeness, Traditional চিন্তা ছেড়ে Tolerance & সহবস্থানের জায়গায় আসতে হবে। আমরা ছাড়া সবাই ভুল এই চিন্তা ছাড়তে হবে। অন্যকে সম্মান দেখানোর অভ্যাস গড়তে হবে । বাংলাদেশের সকল সাংস্কৃতিক Properties এবং বাস্তবতা মেনে এদেশের উন্নয়নে চিন্তা করতে হবে । শুধু সংকীর্ণ দলীয় দৃষ্টিকোনের বাইরে এসে ১৬ কোটি মানুষের কাছে আসতে হবে , তাদের জন্য কাজ করতে হবে । সবাই নিজের আদর্শে আনার চিন্তা নয় বরং ইসলামের সার্ব্জনীন কল্যান সবার কাছে পৌছানই হবে লক্ষ।
সাম্প্রদয়ীকতার কথা বলবেন!! বাংলার এই জনপদে শুধু ধর্মের কারনে কারো উপর অত্যাচার হয়েছে, বিশেষ করে বাংলাদেশ আমলে, এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবেন কি? এই কারনেই আমরা ভালো মুসলমান আর ভালো হিন্দু ছিলাম না। হতে পারিনি। যাকিছু ঘটেছে তা একান্ত রাজনৈতিক, কোন বিশেষ Group করেনি । দলীয় স্বার্থে বড়ো দল গুলই করেছে । এজন্য বিশেষ কাউকে সাম্প্রদায়িক দল বলার সুযোগ নেই।আমি আমার আদর্শের বিকাশ চাইতেই পারি। সেটা অন্যের ক্ষতি না করে হলেই হয়। আমরা নতুন প্রজন্ম যদি সচেতন হই এই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির খেলা রুখে দেওয়া সম্ভব । যদি রাজনীতির অন্ধ গাধা বাহক না হই, রাজনীতির Victim হওয়া থেকে সচেতন থাকি । এক্ষেত্রে অন্য ধর্মের (যারা সংলঘু) তরুনদের এগিয়ে এসে প্রমান করতে হবে আমরা সচেতন, কারো রাজনৈতিক স্বার্থের অন্ধ গিনিপিগ নই ।
Facebookয়ের এই সাম্প্রতিক Post টি এমনই একটি চিত্রের.... (দেশে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগার প্রবল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি । যেটা সম্পূর্ণ ইচ্ছা করেই লাগানো হচ্ছে । প্রথম আঘাতটা যাচ্ছে হিন্দুদের উপর । কিছু হিন্দু বাড়ীতে আগুন দেয়া হল । আর আজকে একটা কাঁধের নিচে ক্ষত বিক্ষত শিশুর ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে এইটা গতকালে নিহত হিন্দু শিশুর ছবি । অথচ গুগল ইমেজ এ সার্চ দিয়ে দেখলাম এইটা ৬ - ৭ মাস আগের একটা ছবি, এই একই ছবি বার্মায় রোহিঙ্গা নিধনের ছবি হিসেবেও চালান হয়েছিলো । বুদ্ধমূর্তি ভাঙ্গার ঠিক একই রকম একটি ছবিও প্রচার করা হয়েছে যেটিও বাংলাদেশের নয় । সবার প্রতি আকুল আবেদন, ফেসবুক এ যে কোন কিছু শেয়ার দেবার আগে একটু যাচাই করে নিতে । নয়ত এই কারণে যদি কিছুদিন আগের রামুর মত ঘটনা শুরু হয় তবে আপনি ই দায়ী থাকবেন ।)
এ বিষয়ে Media'র প্রমানহীন একতরফা প্রচার খুবই বিপদজনক ও Miss-guiding ।
আমরা আর অন্ধ থাকব না। আমরা ইতিহাস জানবো । আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিব । যার যার প্রাপ্য সম্মানন দিব । শুধু দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে নয় সত্য কে সত্য বলে বিচার করবো । সত্যকে সত্য বলা যদিও তা নিজের বিপক্ষে যায়, এটই সততা, মানবিকতা । সামাজিক ন্যায়বিচারের এটাই মূলমন্ত্র । সামাজিক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সূখী সম্মৃদ্ধশালী একটা জাতির জন্যই প্রান দিয়েছিল ৩০লক্ষ মানুষ, সম্ভ্রম হারিয়েছিলো আমাদের মা ও বোনেরা । ৭ কোটি মানুষ গুনে ছিলো অসহ্য যন্ত্রনার প্রহর দীর্ঘ ৯ মাস ।
নতুন প্রজন্মের প্রতি আহবান-আসুন স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা ধারণ করি । কোন দলীয় স্বার্থ আর অন্ধত্ব নয় । ভিন্নমত থাকবেই । সেটাকে শ্রদ্ধা করি । একসাথে এগিয়ে নিই দেশকে । দলের ঘরে নয়, স্বাধিনতার সুফল পৌছে দিই সব মানুষের ঘরে ঘরে ।
শেষ করবো একটি বিখ্যাত কবিতায় আহবানে সাড়া দিয়ে----
"আমাদের দেশে কবে সেই ছেলে হবে ।
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে । "
সেই ছেলের অপেক্ষার দিন শেষ
আজ আমি আপনি আমরা সেই ছেলে হয়ে যাব
বদলে যান বদলে দিন নয়, আসুন আমরা বদলে যাই বদলে দিই আমাদের চারপাশ।
আমরা Pro-Indian কিংবা Pro-Pakistani নয়, চীন বা মস্কো পন্থী নয়,
আমরা কারো স্বার্থের বাহক কিংবা রাজনৈতিক দাবার গুটি তরুন নয়।
আমরা কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু- কেউ, বাঙ্গালী আবার কেউ অন্য ভাষী, কিন্তু আমরা সবাই বাংলাদেশি...... ১০০% BANGLADESHI।
আমরা অন্ধ নয়। আমদের চোখ খোলা।
আমরা বধির নয়-আমরা শুনতে পায়
আমরা senseless নয়-আমাদের অনুভূতি আছে।
আমাদের যা-ইচ্ছে বোঝানো যাবে না, যা ইচ্ছে করানো যাবে না।
আমরা সোনার বাংলা গড়েই ছাড়বো-ইনশা-আল্লাহ
সিদ্ধান্ত আপনার, আপনি অন্ধ সাপ্রদয়িক(হিন্দু, মুস লিম, নয়-আওয়ামীলীগ-বি এন পি-জামায়াত) থাকবেন? স্বার্থের গোলামী করবেন? নাকি বাংলাদেশের পক্ষে সব কিছুর উর্দ্ধে উঠে কাজ করবেন।
বিষয়: বিবিধ
১৮০৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন