আসুন বিশ্বযুদ্ধ নিয়া বাজি ধরতে থাকি ! এবার কিন্তু যুদ্ধ করতেই হবে !!
লিখেছেন লিখেছেন মুজতাহিদ বাপ্পী ২৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:২১:৩১ দুপুর
আমার সারাজীবনের আফসোস হলো সোভিয়েত ইউনিয়নের যুগ দেখতে না পাওয়া । বিশেষ করে দুই দুইটা বিশ্বযুদ্ধ একই শতাব্দীতে চলে গেলো আমরা দেখতেই পারলাম না । বোমারু বিমান সাঁই সাঁই করে মাথার উপ্রে দিয়া উড়ে যাইতেসে ভাবতেই কেমন থ্রিল হয় ! কুমিল্লার ওয়ারসিমেট্রিতে গেলেই মনে হইতো নিজের দিব্যচোখে বিশ্বযুদ্ধ অবলোকন করতেসি । এতোদিনে স্ট্যাটিসক্যাল ক্যাওস থিওরী অনুযায়ী একবিংশ শতাব্দীতে প্রায় পনের বছর পার হয়া গেলো, এখন পর্যন্ত কোন বিশ্বযুদ্ধ হইলো না- এটা কি মেনে নেয়া যায় ? মানুষ তো সাত বিলিয়ন পার হয়া গেলো ! এখনি যদি দুই-তিন বিলিয়ন না কমানো যায়, তবে মহাসংকট অপেক্ষা করতেসে পৃথিবীতে !
যখন আফগান যুদ্ধ শুরু হয়, কিছু বেকুবের দল বুদ্ধির বালতি নিয়া আসছিলো । তারা বুঝাইলো এটা কিন্তু সাধারণ কোন যুদ্ধ না । এটা বিশ্বযুদ্ধে রুপ নিবে । আমেরিকা হবে রাশিয়া, আফগান হবে ভিয়েতনাম । আমরা তরুন প্রজন্ম কিছুই না বুঝিয়া দর্শক গ্যালারীতে উৎসুক নয়ন মেলিয়া বসিয়া রহিলাম । বিশ্বযুদ্ধ হইলো না । আমেরিকা এবং ন্যাটো বেশ মজা করিয়া মুসলিম সম্ভোগ করিয়া গেলো ।
যখন ইরাক যুদ্ধ শুরু হয়, তখন আরো বেকুবের দল বুদ্ধির কলসি নিয়া প্রচার করিল, এবার আমেরিকা ধ্বংস হইয়া এমন ভাবে মাটির নিচে ধসিয়া যাইবে, প্রত্নতাত্ত্বিকেরাও খুঁজিয়া পাইবে না । এরপরেও আমরা আশাহত হইলাম । তারপর ইরান আক্রমণ নিয়া বহুত কাহিনী হইলো, আরব বসন্ত শেষ পর্যন্ত গ্রীষ্মরুপ ধারন করিলো, ভারত-পাকিস্তান বহুত অগ্নি আর ঘোরী ক্ষেপনাস্ত্র দেখাইয়া প্রাসের গতিবেগ শিখাইলো, কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ দেখা হইলো না ।
এদিকে অস্ত্র ব্যবসায়ীদেরও মাথায় হাত পড়ে গেসে ! চায়না-জাপান তাদের দ্বীপ লইয়া মারামারির বহুত ধান্দা করেও অস্ত্র ব্যাবসা চাঙ্গা করতে পারলোনা । বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ভারতে নরেন্দ্র মোদী আসতেছে ক্ষমতায় । ওনার আবার কামান-গোলাবারুদ লাগেনা । কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারতেই বেশি আনন্দ পান । অন্যদিকে সাউথ কোরিয়া-নর্থ কোরিয়া নিয়ে যাও একটু আশার বাণী দেখা যাইতেসিলো তাতে তেমন সাড়া মিলতেসে না । মুসলিমরা ঘুরে দাঁড়াবে আশা করেও অস্ত্র ব্যবসায়ীরা সিরিয়া-মিশরে কোন ফল পায়নাই । ইসরাঈল যতোই চাইতেসে দাঙ্গা বাঁধুক, ফিলিস্তিনিরা ততোই শান্তির পথে পায়রা উড়ায়া যাইতেসে । এইডা কিছু হইলো ?
যাইহোক, বহুদিন পর নতুন আশার আলো দেখা যাইতেসে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ান ফেডারেশন নিয়া দুই পরাশক্তির গণমাধ্যমগুলো বেশ কামড়া-কামড়ি করতেসে । প্রাভদা এবং সিএনএন তাদের কলামগুলোতে কে কতো হিউমার দিয়া রিউমার ছড়াইতে পারে তার প্রতিযোগিতা লাগাইসে । বিশেষ করে ইউক্রেন ইস্যুকে কেন্দ্র করে এই গরমের দিনে পুরানা কোল্ড ওয়ার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতেসে দেখে মজাই লাগে । জন কেরি এবং জো বাইডেনকে বলা হইতেসে Cheap-talking, slanderous guttersnipe, অপরদিকে গোল্ডেন কান্ট্রি লিডারদের পথ হলো International isolation of Russia. এখন সময় যুদ্ধ দেখার । যারা যারা আমার মতো দর্শক গ্যালারী থেকে একটা বিশ্বযুদ্ধ দেখার অপেক্ষায় আছেন, আসুন আমরা বাজি ধরতে শুরু করি !!
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৪৫৬ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক স্নায়ু যুদ্ধের পর ক্রিমিয়া-ইউক্রেনকে নিয়ে যখন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল , গত কয়েকদিনকার খবর হতাশাই বাড়িয়েছে ।
এই জীবনে আর আমেরিকা-রাশিয়ার যুদ্ধ দেখার সৌভাগ্য হবে কি না আল্লাহই ভাল জানেন ।
কিন্তু আমার মনে হয় আপনি অচিরেই তা দেখবেন, ইনশাল্লাহ।
পাপ যা কামানো হয়েছে - লোভ যে পরিমান বাড়ানো হয়েছে - অপরাধ যে পরিমান করা হয়েছে - ইয়াজুজ মাজুজ যে পরিমান প্রস্তুতি নিয়েছে - হোয়াইট হাউজ ও ক্রেমলিন কোটি টাইম চেষ্টা করলেও এ যুদ্ধ থামাতে পারবেনা।
দুঃখ শুধু এটা যে বিশ্বাসীরা যথাযথ প্রস্তুতি নিচ্ছে না, তারা মোহাম্মদ সঃ এর ভবিষ্যতবানী মালহামা, দুখান ইত্যাদিকে আমলে নিচ্ছে না। তারা কষ্ট করে ফেতনা সৃষ্টি কারী ইয়াজুজ মাজুজ এর দেয়াল ছিদ্র করার হাদীস কিংবা দজ্জালের প্রথম দিন বছরের ন্যায় ইত্যাদি হাদীসকে আমলে নিয়ে গবেষনা করছেনা। মনে হয় আমরা আসলেই হতভাগা - হঠাৎ করে বিপদকে আকড়ে ধরতে চাইছি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন