গত সপ্তাহের হিসাব নিকাশ
লিখেছেন লিখেছেন মুজতাহিদ বাপ্পী ২৮ মার্চ, ২০১৪, ০৪:৪৩:৪২ বিকাল
দীর্ঘদিন ব্লগ লেখা হয়নি । আজ শুক্রবার । একটু ফ্রী থাকাতে লেখার সুযোগ হলো । গত কয়েকদিনে আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে । গত সপ্তাহের ঘটনাগুলো আগামী দিনের জন্য কি কি শিক্ষনীয় বিষয় রেখে গেলো তা একটু হিসাব করা প্রয়োজন মনে করছি ।
প্রথমেই আসা যাক উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে । বিএনপি-জামায়াত অনেক ঝড় ঝাপ্টার মধ্যেও কিছুটা ভালো করেছে বলতে হবে । কিন্তু সমস্যা হলো আওয়ামী লীগের প্ল্যান বি তে চলে যাওয়া । সরকার এখন নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের নিশ্চিন্হ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলেই মনে হচ্ছে । আমার কথা হলো- নির্বাচনে জিতে আসার পরেও উপজেলা চেয়ারম্যান মার খাবে, ভাইস চেয়ারম্যানদের বাড়ি ঘরে আগুন লাগবে, এটাই যদি হবে তাহলে জিতে এসে লাভটা কি হলো ? মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুড যেমন ক্ষমতায় গিয়েও ইতিহাসের জঘন্য হত্যাকান্ডের শিকার হয়ে আজকে পথে পথে ঘুরছে, তার মিনি সংস্করণ যেনো দেখতে পাচ্ছি উপজেলা নির্বাচনগুলোতে ।
অতএব হে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিগণ, আপনারা এখন আর সংগ্রাম যুগে নেই । বিজয় যুগে পদার্পন করেছেন । অতএব বিজয় যুগে যে ধরণের কৌশল নেয়ার কথা ছিলো তাই গ্রহণ করুন । নয়তো জনগণ যে বিশ্বাস নিয়ে আপনাদেরকে নির্বাচিত করেছে তা যদি একবার আপনাদের অপরিণামদর্শিতার কারণে ভেঙ্গে যায়, অন্তত পঞ্চাশ বছর পিছিয়ে যাবেন । অধিকাংশ জনতার ভোটে বিজয়ী হয়ে কয়েকটা মাস্তানের হাতে মার খাওয়া আপনাদের আর সাজে না । এবার অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিন ।
দ্বিতীয় প্রসঙ্গ ছিলো জাতীয় পতাকার পরে জাতীয় সঙ্গিতের বিশ্বরেকর্ড । গোপন সূত্রে খবর পেলাম পাকিস্তান এবং ইনডিয়া উভয় দেশ আগামী আগস্টে জাতীয় সংগীতের রেকর্ড ভাঙার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে । বিশ্বাস না হইলে এখনি গুগল মামাকে জিগান । মাথায় বুদ্ধি থাকলে ঠিকই ধরে ফেলতে পারবেন কেনো পাকিস্তান গত ফেব্রুয়ারীতে তাদের জাতীয় সংগীতের অনুষ্ঠান স্থগিত করেছিলো । মাঝখান থেকে এশিয়াটিক মামায় শতকোটি হাতিয়ে নিলো । এবার তাহলে আগস্ট মাস হবে শোকের রেকর্ড গড়ার মাস । বাংলাদেশের মানুষের জন্য এই যুগে টাকা পয়সা কোন বিষয় না । শুধু কষ্ট লাগে যখন দেখি তরুণ প্রজন্মকে পড়াশুনার বাইরে হৈ হৈ রৈ রৈ করিয়ে করিয়ে এতোটাই নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে যে "আমরা তাদের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী রেখে যাবো" এমন অনুপ্রেরণাও আজকাল পাইনা ।
তবে ভালোই লাগত যদি দেশের মানুষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারতো যে- বৃহত্তম জাতীয় পতাকার রেকর্ড, বৃহত্তম জাতীয় সংগীতের রেকর্ডের পরে বৃহত্তম মানচিত্রের রেকর্ড গড়তে হবে । ইনডিয়াকে বলা হবে তোমরা ক্রিমিয়ার মতো গণভোটের আয়োজন করে আমাদের সাথে যোগ দাও । না হলে আমাদের নতুন ব্যাজ পরা বিজিবি পাঠিয়ে দেবো তোমাদের দেশে সেনা অভ্যুত্থান করে বাংলাদেশী দালাল সরকার ক্ষমতায় বসাবে । ছাত্রলীগ পাঠিয়ে বাসে-ট্রামে ধর্ষণের টি টুয়েন্টি খেলা হইবে । বিএনপি নেতাদের পাঠিয়ে পুরো ইনডিয়াতে এমন আন্দোলন তৈরী করা হইবে যে আন্না হাজারে অনশন করতে করতে মরেই যাবে । ইমরান সরকার-লাকি আক্তার তাজমহলকে পবিত্র করার জন্য জয় শিখা বলে আগে বাড়বে । তখন দেখবা ফ্ল্যাশ মব কাকে বলে ! খালি গুন্ডে দেখতে থাকবা দুই চোখে !! কিন্তু সেটি কখনোই হতে দেখি না ।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ধরা যেতে পারে টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেট । এক্ষেত্রে হোম গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের পারফরমেন্স দেখে আমার মনে হয়েছে- ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলংকা কিন্তু এমনি এমনি ভালো দলে পরিণত হয়নাই । সৌরভ গাঙ্গুলী- ইনজামাম উল হক- জয়সুরিয়া- কতো যে পাবলিকের জুতার বাড়ি খাইলো, সেই আমলের খেলা যারা দেখেছেন তারা বলতে পারবেন । তাদের বাড়ি ঘর পর্যন্ত আক্রান্ত হইতো ক্রিকেট খেলার কারণে । শেষ পর্যন্ত পিঠ বাঁচানোর জন্যে হলেও তারা ভালো পারফর্মেন্স করতে বাধ্য হইতো । ফেয়ার এন্ড লাভলী অথবা লাইফবয় এর বিজ্ঞাপন তারা স্বপ্নেও ভাবতে পারতোনা । এমনকি খেলার জন্য বিয়ে করা পর্যন্ত অনেকের নিষিদ্ধ ছিলো । তখন থেকে ক্রিকেট খেলায় সাউথ এশিয়া পুরোপুরি প্রফেশনাল হতে শুরু করে । এভাবে একদিন তারা বিশ্বকাপও ছিনিয়ে নেয় । অতএব..............যা বুঝার বুইঝা লন ।
আশা করি আগামী দিনে এই সপ্তাহের জীর্ণতা মুছে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে বাংলাদেশ ।
বিষয়: রাজনীতি
১২১৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ফালতূ ব্লগে আইছেন যে দাদা ভাই। সহীহ ব্লগে যান, না হলে একটা সহীহ ব্লগ নানা
মন্তব্য করতে লগইন করুন