পাঠকদের জন্য পাঁচটি বুদ্ধিমত্তা যাচাই প্রশ্ন

লিখেছেন লিখেছেন মুজতাহিদ বাপ্পী ১৫ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:২৩:৫১ দুপুর

ধাঁধা ১ ।।

এক দেশে ছিলো এক রাজা । রাজার ছিলো তিন পুত্র । রাজার বার্ধক্যের কারণে তিনি ভাবলেন তিন রাজপুত্রের মধ্য হতে একজনকে পরবর্তী রাজা নির্বাচন করে তিনি অবসরে যাবেন । তিনি এজন্য একটি পরীক্ষা করতে চাইলেন । রাজপুত্রদেরকে একটা কক্ষে চোখ বেঁধে বসিয়ে রাখলেন । তারপর তিনজনের মাথায় তিনটি টুপি পরিয়ে দিলেন । রাজা এরপর সবার চোখ খুলে বললেন, আমার কাছে পাঁচটি টুপি ছিলো । তিনটি সাদা টুপি এবং দুইটি কালো টুপি । তোমাদেরকে তিনটি টুপি পরিয়ে দিয়ে আমি বাকি দুইটি পাশের কক্ষে রেখে এসেছি । তোমরা প্রত্যেকে দেখতে পাচ্ছো তোমাদের বাকি দুই ভাইয়ের মাথায় কি রংয়ের টুপি আছে । কিন্তু নিজের মাথায় কি রংয়ের টুপি তা তোমরা দেখতে পারবেনা । বরং সেটাই তোমাদেরকে বলতে হবে । যে আগে বলতে পারবে তার নিজের মাথায় কি রংয়ের টুপি তাকেই আমি আমার রাজত্বের উত্তরাধিকার মনোনীত করবো ঠিক করেছি । কিছুক্ষণ পর একজন রাজপুত্র দাঁড়িয়ে তার মাথার টুপি কোন রংয়ের সেটি ঠিকমতো বলে দিলো । সে কিভাবে পেরেছিলো ?

ধাঁধা ২ ।।

জলদস্যুদের একটি দলে তিনজন দুর্ধর্ষ জলদস্যু । তারা যথাক্রমে কাল্লু, মাল্লু, ভাল্লু । তাদের মধ্যে কাল্লু সবচেয়ে সিনিয়র হওয়ায় তাকে ক্যাপ্টেন কাল্লু বলা হয় । এরপরে মাল্লু হলো ভাইস ক্যাপ্টেন । ভাল্লুকে কোন পদবী দেয়া হয়নি । তারা তিনজনে একটি জাহাজ থেকে একশোটি স্বর্ণমুদ্রা ছিনতাই করলো । এখন ভাগ বাটোয়ারা করার দায়িত্ব স্বাভাবিক ভাবেই ক্যাপ্টেন নিজের কাঁধে তুলে নিলো । ভাগ করার জন্য জলদস্যুদের মধ্যে দুটি আইন প্রচলিত । যথা-

১। ক্যাপ্টেন প্রথমে ভাগ করার ফর্মূলা দিবে এবং তারপরে এই ভাগের বিষয়ে ক্যাপ্টেন সহ সকল জলদস্যুর ভোট নেয়া হবে । যদি তারা ক্যাপ্টেনের প্রস্তাবে রাজি থাকে তাহলে “উগা” (জলদস্যুদের ভাষায় ইয়েস) বলবে । আর যদি রাজি না থাকে তবে “মুগা” (নো নেভার) বলবে । যদি ক্যাপ্টেনের ফর্মূলা অধিকাংশ উগা ভোট পায় তবে সেভাবেই ভাগ বাটোয়ারা হবে । আর যদি ক্যাপ্টেনের ফর্মূলা অধিকাংশ মুগা ভোট পায় তবে ক্যাপ্টেনতো ভাগ করতে পারবেই না বরং উল্টো তাকে ধরে সাগরে ফেলে দেয়া হবে । আবার উগা ভোট এবং মুগা ভোট সমান হলে ক্যাপ্টেন যেহেতু সিনিয়র লোক অতএব তার প্রস্তাবই পাস বলে ধরে নেয়া হবে ।

২। যেহেতু জলদস্যুরা সর্বদা বেশি পেতে চায় তাই তারা চাইবে বেশির ভাগ সম্পদ নিজের জন্য পেতে । তবে নিজের জীবন রক্ষা করতেই তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবে । আর এজন্যেই কোন ক্যাপ্টেন চাইবে না তাকে সাগরে ফেলে দেয়া হোক । তবে যদি কোন কারণে ক্যাপ্টেন মরে যায় তবে ভাইস ক্যাপ্টেন তার স্থান দখল করবে এবং সকল ভাগাভাগির ফর্মূলা দিবে ।

এখন প্রশ্ন হলো নিজের ভাগে সর্বোচ্চ স্বর্ণমুদ্রা রেখে এবং জীবন রক্ষা করে জলদস্যু ক্যাপ্টেন কার জন্য কতোটা স্বর্ণমুদ্রা ভাগাভাগি করবে ? সোজা কথায় কাল্লু পাবে কয়টা? মাল্লু পাবে কয়টা ? ভাল্লু পাবে কয়টা ?

ধাঁধা ৩ ।।

মৃত্যুর পর একজন লোক স্বর্গ ও নরকের মাঝামাঝি একটি জায়গায় উপস্থিত হলো । সেখানে দুটি গেইট দিয়ে দুটি পথ চলে গেছে । গেইটের নাম উত্তর গেইট ও দক্ষিণ গেইট । উভয় গেইটের সামনে একজন করে প্রহরীকে দেখা গেলো যারা স্বর্গ অথবা নরকের পথ বলে দেয় । উত্তর গেইটের প্রহরী হলো A এবং দক্ষিণ গেইটের প্রহরী হলো B । এই গেইট দুটির যে কোন একটি নিয়ে যাবে নরকে আর অপরটি নিয়ে যাবে স্বর্গে । একবার কোন গেইট দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়লে আর বের হবার সুযোগ নেই । প্রহরীদের কাছ থেকে তথ্য জানার জন্যে নিম্নোক্ত শর্ত প্রযোজ্যঃ

১। শুধুমাত্র একটি প্রশ্ন করা যাবে । যার উত্তর হ্যাঁ অথবা না হবে । অন্য কোন প্রশ্নের উত্তর প্রহরীরা দেবে না ।

২। প্রহরীদের দুইজন সত্যবাদী নয় । আবার দুইজন মিথ্যাবাদীও নয় । একজন সত্যবাদী । অপরজন মিথ্যাবাদী । কিন্তু কোনজন সত্যবাদী তা নিশ্চিত নয় ।

উপরোক্ত শর্ত মেনে একবাক্যে কোন প্রশ্নটি করে আপনি নিশ্চিতভাবে স্বর্গে যেতে পারবেন ? আপনার প্রশ্নটি এই ধাঁধার উত্তর । যদি আপনি স্বর্গে যেতে না চান তবে নরকে যাবার প্রশ্নটি করলেও উত্তর গ্রহণযোগ্য হবে ।

ধাঁধা ৪।।

শেক্সপীয়ার রচিত মার্চেন্ট অব ভেনিস থেকে এবারের বুদ্ধিমত্তা যাচাই পরীক্ষা হবে । সেখানে নাটকের নায়িকা পোর্শিয়া তার জীবনসঙ্গী বাছাই করার জন্যে এটা করেছিলো । যারা এই ধাঁধার সঠিক উত্তর দিতে পারবেন তারা নিজ দায়িত্বে পোর্শিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন । যাইহোক, এখানে তিনটি সিন্দুক রয়েছে । একটি স্বর্ণের তৈরি, একটি রৌপ্যের তৈরি এবং একটি তামার তৈরি সিন্দুক । যে কোন একটি সিন্দুকের ভিতরে সুন্দরী পোর্শিয়ার একটি সুন্দর পোর্ট্রেইট (১৮+ না আবার !) রয়েছে । হবু হাবিদেরকে কি করতে হবে তা নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন । কোন সিন্দুকের ভিতরে পোর্শিয়ার ছবিটি আছে তা নির্ণয় করতে হবে । প্রত্যেক সিন্দুকের উপর একটি করে কথা লেখা আছে । যথাক্রমেঃ

গোল্ড সিন্দুকঃ- {এ সিন্দুকেই আছে পোর্শিয়ার ছবি}

সিলভার সিন্দুকঃ- {এই সিন্দুকে পোর্শিয়ার ছবি নেই}

কপার সিন্দুকঃ- {স্বর্ণের সিন্দুকে কোন পোর্ট্রেইট নেই}

উপরের কথা গুলো থেকে যদি সর্বোচ্চ একটি কথা সত্য হয় তবে খুব সহজেই বলে দেয়া যায় কোন সিন্দুকে আছে পোর্শিয়ার ছবি । আপনি কি পারবেন পোর্শিয়ার কাছে যোগ্যতা প্রমাণ দিতে ? তাহলে বলুন দেখি কোনটাতে আছে ছবিটি ।

ধাঁধা ৫ ।।

তিনবন্ধু গেলো রেস্টুরেন্টে কফি খেতে । তিনজনের বিল হলো তিরিশ টাকা । কেউ বিল দিতে চাচ্ছে না । একজন প্রস্তাব করলো সবাই দশ টাকা করে দেয়া যাক । যেই ভাবা সেই কাজ । তিরিশ টাকা নিয়ে ওয়েটার গেলো ম্যানেজারকে পরিশোধ করতে । ম্যানেজার দেখলো তিন বন্ধু হচ্ছে এলাকার যুবলীগের নেতা । ম্যানেজার ভাবলো তাঁদেরকে উল্টো ম্যানেজ করে চলতে হবে । বিশটাকা বিল রেখে বাকি দশ টাকা ওয়েটার কে দিয়ে পাঠালা টেবিলে ফেরত নিতে । এদিকে ওয়েটার হচ্ছে শ্রমিক লীগের কর্মী । সুযাগমতো তিনিও যুবলীগের নেতাদেরকে গিয়ে বললেন আপনাদেরকে দুই টাকা করে বখশিশ দিলো ম্যানেজার । বাকি চার টাকা গেলো ওয়েটারের পকেটে । তিন বন্ধু দুই টাকা করে ফেরত পেয়ে শেখ সিগারেট টানতে টানতে বেরিয়ে গেলো । এখন প্রশ্ন হচ্ছে – যুবলীগের তিন বন্ধু সর্বসাকুল্যে পরিশোধ করলো তিন আটে চব্বিশ টাকা । শ্রমিকলীগের ওয়েটার মেরে দিলো চার টাকা । চব্বিশ আর চার মিলে আঠাশ হলো । বাকি দুই টাকা কার পকেটে গেলো ?

উত্তর দিতে কমেন্ট করুন । ধন্যবাদ ।

বিষয়: বিবিধ

৫৪৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File