কাল্পনিক আলাপ এবং সম্পূর্ণ অবাস্তব একটি নাটিকা
লিখেছেন লিখেছেন মুজতাহিদ বাপ্পী ২০ এপ্রিল, ২০১৩, ০৯:২৮:২৭ সকাল
মতি: স্যার, ফেসবুক এখনো বাঁশেরকেল্লা বন্ধ করেনি । ওদের লাইক সংখ্যা আমাদেরকে ছাড়িয়ে যাবে যে কোন মুহুর্তে !
ইনু: আরে নাহ! আমি বলে দিয়েছি । কয়দিন এদের লাইক বাড়তে থাকুক । একসময় এমনিতেই অফ যাবে । জামায়াত-শিবির আর কয়টা আছে দেশে । হেফাজতী গুলাতো আর ফেসবুক ইউজ করে না ।
মতি: স্যার, আপনি বুঝতে পারছেন না । এরা মাল্টি আইডি থেকে লাইক দিচ্ছে । এদের অনেকে আবার ভালো হ্যাকার । বিশ্বাস করা যায় না । এখনি বন্ধ করার ব্যবস্থা করুন ।
ইনু: আপনি কোন চিন্তা করবেন না । আপনাদের জনপ্রিয়তাকে ওরা ধরতেই পারবে না । আপনাদের লাইক সংখ্যা তো চার লক্ষের উপর ! ভুলে গেছেন নাকি । বাঁশের কেল্লা তো মাত্র পৌনে দুই লাখের কাছাকাছি।
মতি: স্যার, আপনি শিবিরের ক্ষমতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাননি বোধহয় । আমাদের ওয়েব পেইজ বারবার আক্রান্ত হয়েছে ওদের সাইবার গ্রুপ দ্বারা । আপনি লক্ষ্য করেছেন ওরা প্রতি ঘন্টায় কয়টা পোস্ট দেয় ?
ইনু: যদি মার্ক জুকারবার্গ আমাদের কথা না- ই শুনে তবে আমি তালা সাহারা কে বলবো ফেসবুকে তালা মেরে দিতে । তাহলেই অফ ।
মতি: এখানেই তো স্যার সমস্যা । আপনি ওদের কে আটকাতে গিয়ে ইউটিউব বন্ধ করে রেখেছেন । আমরা চ্যানেল আই লাক্স সুপারস্টারদের নতুন ভিডিও গুলো দেখিয়ে যে টাকা আয় করতাম সেটার পথ বন্ধ করে দিলেন । কানিস আলমাস আমাকে বললো ওদের পারসোনা ফিমেল স্পা করার গোপন ভিডিও অনেক গুলো জমে আছে । ইউটিউব না থাকায় আপলোড করা যাচ্ছে না ।
ইনু: নতুন ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিতে বলেন ! শাহবাগে সাইবার যুদ্ধ পেইজতো আছেই । ওদের কে বলেন ফটোশপ দিয়ে "জামায়াতি নেতার বাড়িতে পতিতালয়" শিরোনাম ঢুকিয়ে দিতে ।
মতি: স্যার, আপনাকে কিভাবে বোঝাবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা । আপনি কি জানেন শাহবাগের লাকি কে নিয়ে আমাদের পত্রিকায় একটা গল্প ছাপা হয়েছিলো ?
ইনু: ও হ্যাঁ হ্যাঁ । এরকম একটা কিছু শুনেছিলাম বৈকি । আচ্ছা কি হয়েছিলো বলুন তো ? আমি তো ভাবতেই পারিনি আপনারা এমন স্ক্যান্ডালে জড়াবেন । আপনাদের তো সবচেয়ে ভালো প্রোগ্রামার রয়েছে । দুনিয়ার এক দেশের খবর আরেক দেশের নামে জুড়ে দিতে পারেন আপনারা । অথচ আপনাদের পত্রিকায় এমন ঘটনা কিভাবে হলো ?
মতি: সেটাই তো সমস্যা । আমরা যখনই কোন কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেই সবসময় দেখি অমুসলিম পাই কিনা । না হলে কাদিয়ানীদের কে প্রেফার করি । মুসলমান বলতে আছে দুই চারটা । কারণ যে কোন মূল্যে মৌলবাদী রুখতে হবে ।
ইনু: হ্যাঁ, তা তো অবশ্যই । আমি জানি । তো?
মতি: কিন্তু গত কিছুদিন আগে হেফাজতের সমাবেশ দেখে অফিসের দু একটা আবার পাক্কা ঈমানদার হয়ে পড়েছে । আপনি ভাবতেও পারবেন না স্যার । ছাত্রলীগের ভয়ে শিবির যেমন হলের বাথরুমে গিয়ে নামাজ পড়ে । তেমনই এরাও আমাদের আড়ালে নামাজ পড়া শুরু করেছে । গত দিন হাসনাত আব্দুল হাই এর নামে যে লেখাটা সেটা আসলে পুরোটাই এদের কাজ । কিন্তু পত্রিকার অপমান হবে বলে হাসনাত ভাই নিজের কাঁধে দায়ভার তুলে নিয়েছেন । শাহরিয়ার ভাই তো আামাকে ফোন করে বললেন, প্রথম আলোতে জামাত ঢুকেছে । প্রতিহত করতে আসব । তখন আমি তাকে সব ঘটনা বুঝিয়ে বলতেই তিনি বললেন- তাহলে হাসনাত সাহেবের সুশীল সমাজের সদস্যপদ আর কাটা যায় না । তিনি আমাদেরই লোক ।
ইনু: হ্যাঁ । হাসনাত ভাই তো কখনোই এমন লিখতে পারেনা । তা- আপনারা কি ওগুলোকে সনাক্ত করতে পেরেছেন ? বদমাশগুলোকে এখনো বাঁচিয়ে রাখলেন কিভাবে ? ক্রুসেডার হানড্রেড কে নাম ঠিকানা পাঠিয়েছেন ?
মতি: ওখানেই আরো সমস্যা । ওদের কাছে কিছু গোপন ভিডিও আছে । আমাদের অফিসের যেটা বেরিয়েছিলো তার চাইতেও মারাত্মক । এরা কখন বাঁশের কেল্লায় আপলোড করে দেয় সেই ভয় আছে । এদের কাউকে কিছু বললে আরো অনেক ঝামেলায় পড়তে হতে পারে । বিশেষ করে উত্তরা ক্লাবের অনুষ্ঠানে আমরা যারা ছিলাম তাদের সবার ভিডিও ওরা হাতিয়ে নিয়েছে ।
ইনু: হোয়াট ? বলেন কি ? পঙ্কজ দার সাথে ডিনারের অনুষ্ঠান নাকি ? আমি ও তো ছিলাম সেখানে !
মতি: এ জন্যেই তো বলছি স্যার । ফেসবুকে বাঁশের কেল্লায় যদি একটা কিছু আপলোড হয় তাহলে মুহূর্তে লক্ষ মানুষের হাতে পৌঁছে যাবে । ওখানে সুশীল সমাজের চেহারা সবাই চিনবে । ফটোশপ দিয়েও জামায়াত-শিবিরের গোপন সমাবেশ বানাতে পারবো না । এখনই বাঁশের কেল্লা আর সমমনা পেইজ গুলো বন্ধ করেন ।
ইনু: আহা । আপনি এটা কি শুনালেন ? আমি আরো ভাবলাম ওবায়দুল কাদের সহ আওয়ামী লীগের নেতাদের এক এগারোর ভিডিও ফাঁস করে বাঁশের কেল্লা জননেত্রীর কাছে আমাকে আর লেনিন ভাই কে আরো প্রিয় করে তুলবে । এখন যদি ক্লাবের লেট নাইট ভিডিও অন এয়ার চলে আসে তবে তো হেফাজতে ইসলাম আমাদেরকে হত্যার ফতোয়া দিবে । সালমান রুশদির মতো তখন নির্বাসন ছাড়া উপায় থাকবে না ।
মতি: জ্বি স্যার । এবার বুঝতে পেরেছেন শিবিরের সাইবার মুজাহিদদের কেমন ক্ষমতা ? এখনই বাঁশেরকেল্লাসহ সবগুলো পেইজ বন্ধ করুন । প্রয়োজনে শাহবাগের পেইজগুলোকে ও ধর্ম আবমাননার দায়ে বন্ধ করে বাঁশের কেল্লার সাথে সমান উচ্চতায় তুলে দিন । কারণ ফ্যান সংখ্যা দিয়ে ওরা কখনো বাঁশের কেল্লার ধারে কাছেও যেতে পারবে না ।
ইনু: ইয়েস্ ইয়েস । আজকেই করবো । এখুনি বন্ধ করতে হবে ওদের তৎপরতা ।
বিষয়: সাহিত্য
২৬৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন