শিশির জমবে যেমন এখনো জমে, চোখের কোণায় কোণায়
লিখেছেন লিখেছেন রিফায়েত বিন কবির ১৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০৭:১৮:৪৮ সন্ধ্যা
অগ্রহায়ণের শিশির ভেজা কোন এক সকাল । মাকে চমকে দিবো বলে না জানিয়ে রাতের বাসে বাসায় ফিরে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনার সম্মুখীন হবো ভাবতেই পারেনি । কোন খবর না দিয়ে হঠাৎ করে যখন বাসায় উপস্থিত হতাম তখন মায়ের চোখে মুখে যে খুশির ঝিলিক দেখতাম তা দেখার জন্যই আমি প্রায় বাসার কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসায় ফিরতাম । বাবা বকা ঝকা করতেন । কেন না জানিয়ে আসি,পথে যদি কোন সমস্যায় পড়ি । কিন্তু বরাবরের মত এবারো বাবার কথা না শুনে ,না জানিয়ে বাসায় ফিরেছি ।
ফজরের সময় বাস এসে থামে বাসার সামনের রাস্তায় । বাসার সামনে গিয়ে কয়েকবার মাকে ডাকলাম । কোন সাড়া নেই । আরো কয়েকবার ডাকার পর মা দরজা খুললেন । মাকে সালাম জানালাম তারপর কদমবুচি করলাম ( তখনও জানতাম না কদমবুচি করা বিদায়াত,সেই শেষ কদম্বুচি করা এরপর আর কাউকে কোনদিন কদমবুচি করিনি ,আর করবোও না )। আমাকে অবাক করে দিয়ে মা হু হু করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন । কারণ তিনি আমার কন্ঠস্বর চিনতে পারেননি তাই দরজা খুলতে দেরী হয়েছে । মাকে জড়িয়ে ধরে আমিও কাঁদতে লাগলাম ।
সেদিন বুঝতে পারিনি মা আর কোনদিনই আমার কন্ঠস্বর চিনার সুযোগ পাবেন না । সেই মাকেও আর কোনদিন জড়িয়ে ধরতে পারবনা । কেউ আর খোকা ফিরেনি বলে খাবার সামনে নিয়ে বসে বসে কাঁদবে না ,অনেক যত্নে মনের মাধুরী মিশিয়ে বানাবে না নকশী কাঁথা, হরেক রকমের আঁচার, নারিকেলের নাড়ু আর কতো কি ? অনেক অগ্রহায়ণই আসবে তবে কেউ আর গলার স্বর চিনতে পারেনি বলে কাঁদবে না । তবে অগ্রহায়ণের শিশির জমবে আগের মতনই ,যেমন এখনো জমে চোখের কোণায় কোণায় ।
ফুট নোটঃ সাত বছর আগে মা আমাদের ছেড়ে চলে যান তার মহান প্রভুর কাছে । “হে আল্লাহ, তুমি মাকে রহম করো যেমন ভাবে তিনি আমাদের রহম করেছেন আমাদের বাল্য কালে ।“
বিষয়: Contest_mother
১৭৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন