যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা!

লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ০৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১০:১০:১৪ রাত

বিশ্বের অতি জনপ্রিয় জেমস বন্ড সিরিজের একটি মুভি "টুমরো নেভার ডা্ইস"। একই নামে উপন্যাস ও আছে এই সিরিজের। মুভিটির গল্প এলিয়ট কার্ভার নামে এক মিডিয়া ব্যারন কে ঘিরে( অনেকের মতে এই চরিত্র অষ্ট্রেলিয় মিডিয়া ব্যারন রুপার্ট মারডক এবং সিএনএন এর মালিক টেড টার্নারকে বেস করে তৈরি)। নিজের নতুন স্যাটেলাইট ভিত্তিক টেলিভিশন নিউজ চ্যানেল কে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য এই ব্যাবসায়ি দুরপ্রাচ্যে হংকং কে কেন্দ্র করে চিন ও বৃটেন এর মধ্যে যুদ্ধ বাধাবার পরিকল্পনা করে। যখন উভয়দেশের যুদ্ধবাজ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতারা যুদ্ধের জন্য উন্মত্ত তখন বৃটিশ সিক্রেট সার্ভিস এর প্রধান এম জেমস বন্ড কে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এর জন্য পাঠান। একই ভাবে চিনের ও উদ্যোগি নেতারা এক মহিলা এজেন্ট কে পাঠান ও দুজনের যেীথ চেষ্টায় ব্যার্থ হয় এলিয়ট কার্ভার এর ষড়যন্ত্র। এই মুভিটিতে জেমস বন্ড এর ভুমিকায় অভিনয় করেছেন পিয়ার্স ব্রসনান। চৈনিক এজেন্ট ওয়েলিন এর ভুমিকায় মিচেলি হিউ এবং অন্য একটি নারি চরিত্র প্যারিস কার্ভার এর ভুমিকায় টেরি হ্যাচার। যিনি একসময় বিটিভিতে প্রচারিত তুমুল জনপ্রিয় দুটি সিরিজ "ম্যাকগাইভার" এর ম্যাক এর বান্ধবি পেনি পার্কার এবং "সুপারম্যান" এ সুপারম্যান এর সহকর্মি লুই লেন এর অভিনয় করেছিলেন। এই মুভিটির থিম অ্যাডাপ্ট করে লিখা হয়েছে মাসুদ রানা সিরিজের ২৭১ তম বই "টার্গেট বাংলাদেশ"।

যারা এই মুভিটি দেখেছেন বা মাসুদ রানার বইটি পড়েছেন তারা বোধহয় এই ভুমিকাটির অর্থ অনেকটাই বুজেছেন। চলমান পাক-ভারত উত্তেজনার পিছনে বিভিন্ন মিডিয়ার চাপ অনেকাংশেই কাজ করছে বলে এখন বিশেষজ্ঞ রা মনে করছেন। উড়িতে ভারতিয় ঘাটিতে হামলার পর প্রথমে ভারত সরকার বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করতে না চাইলেও প্রধানত মিডিয়ার চাপে পরে পাক সীমান্তে কিছু আক্রমন চালায়। সার্জিক্যাল ষ্ট্রাইক নাম দিয়ে এই নিয়ে নিজের দেশে প্রচুর প্রচারনা চালালেও ভারতিয় সরকার এর দাবির পিছনে কোন নির্ভর যোগ্য প্রমান বা নিরপেক্ষ স্বিকৃতি এখনও দেখাতে পারেনি। কিন্তু মাঝখানে দুদিন এই বিষয়ে একটু নিরব থাকলেও আজকে আবার দেখলাম পুনরায় যুদ্ধ নিয়ে উস্কানি দেওয়া শুরু করেছে ভারতিয় মিডিয়া। ভারতিয় মিডিয়ার তুলনায় একটু কম হলেও এই নিয়ে পাকিস্তানি মিডিয়া এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও বিশেষ পিছিয়ে নেই! আজকে একটি ভারতিয় দৈনিক এর নেট এডিশনে দেখলাম পাক ভারত সামরিক শক্তি তুলনামূলক বিশ্লেষন দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে ভারত এতবেশি এগিয়ে আছে যে পাকিস্তান কিছু ই করতে পারবে না! বিষয়টি বিশেষ ভাবে হাস্যকর।

আয়তনে পাকিস্তান এর প্রায় ৭ গুন বড় এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে ৬ গুন ভারত সামরিক লোক গুনতিতে অনেক এগিয়ে থাকলেও বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে পাকিস্তান এর বিরুদ্ধে কত শক্তি নিয়ে নামতে পারবে তার কোন হিসাব কিন্তু এতে নাই। স্রেফ ভারতিয় শক্তির বহর দেখিয়ে জনগনকে যুদ্ধের জন্য উত্তেজিত করার চেষ্টাই যে এটা তা সুষ্পষ্ট।

ভারতিয় মিডিয়ার কান্ড দেখে মনে হচ্ছে ইনারা যুদ্ধকে ক্রিকেট খেলার মতই মনে করেন। বল লেগে আহত হলেও খেলোয়াড় রাই হবে। বাউন্সার কেন খেলতে পারল না সেটা নিয়ে বরং উনারা খেলোয়াড় এর চেীদ্দগুষ্টি উদ্ধর করে ফেলবেন! মিডিয়ার তাতে কোন ক্ষতি নেই।

উপমহাদেশে যুদ্ধের উস্কানি দেওয়া এই এলিয়ট কার্ভার দের ঠেকাবে কোন বন্ড???

বিষয়: বিবিধ

১৪২৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378252
০৩ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১০:১৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহু শ্রদ্ধেয় ভাইয়া।


পাকিস্থান ও ভারতের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা নিয়ে আপনার উদাহরণ আপাতঃ দৃষ্টিতে যথার্থ বলেই মনে হয়।

শেষ দৃশ্যের অপেক্ষায় এখন দর্শক!
০৪ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:১৬
313477
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ওয়ালাইকুমআসসালাম।
সমস্যা হচ্ছে এখানে দর্শকদের বিপদই বেশি।
378256
০৪ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৩:১০
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :

চমৎকার লেখা,চালিয়ে যান।
০৪ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:১৭
313478
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
378270
০৪ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০৩:৩৫
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : ছোটখাট সীমান্ত যুদ্ধ হবে, কথার ফুলঝুড়ি ফুটবে, স্নায়ুযুদ্ধ হবে কিন্তু ব্যাপক আকারে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে পরিণতির কথা চিন্তা না করে গোমূত্রখেকো গোঁয়াররা হয়তো অবিবেচকের মতো কিছু করতেও পারে। কাশ্মীর মুসলিম অধ্যূষিত এলাকা না হলে আমেরিকা আর জাতিসংঘ এতদিনে গণভোটের মাধ্যমে এ ইস্যূটি সমাধান করে ফেলতো।
০৪ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৮:১৮
313483
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : কাশ্মির নিয়ে বিরোধের পিছ তথাকথিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর ব্যবসায়িক স্বার্থ ও কম নয়। ভারতিয় মিডিয়া এখন যে লাগামছাড়া আচরন করছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমনকি ১৯৭১ সালেও এতটা অশ্লিলভাবে যুদ্ধের উসকানি দেয়নি তারা। খুশবন্ত সিং এর মত সাংবাদিক রা আর নেই। যারা প্রচন্ড ভারতপ্রেমি হওয়া সত্বেয় বাস্তববাদি ছিলেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File