মনীষার মুখ সৈয়দ আলী আহসান
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ২৫ মার্চ, ২০১৭, ০৮:৪৯:৫৪ রাত
কিছু কিছু মানুষ আছেন যাদের অভাব সবসময় অনুভূত হয়। তেমনই একজন মানুষ সৈয়দ আলি আহসান। এই মনিষার অভাববোধ আজকের বৈরি পরিবেশে যেন আরো অনেক বেশি অনুভব করা যাচ্ছে। কবি,সাহিত্যিক শিক্ষাবিদ সৈয়দ আলি আহসান ছিলেন জাতির অভিভাবক। সন্দেহাতিত ভাবে তিনি ছিলেন এক বিষ্ময়কর প্রতিভা। সব কিছুর উপর একজন কবি।
২৬্ এ মার্চ ১৯২২ সালে মাগুড়া জেলার আলোকদিয়ায় জন্ম সৈয়দ আলি আহসান এর। ছোটবেলাতে ঢাকায় আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাষ্টার্স করেন তিনি ১৯৪৪ সালে। ঢাকা ও হুগলি ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ এ শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্ম জিবন শুরু করেন। মাঝখানে কিছুদিন অল ইন্ডিয়া রেডিও কোলকাতা এবং সদ্য স্বাধিন পাকিস্থান এর রেডিওতে চাকরি করার পর ১৯৪৯ সালে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর বাংলা বিভাগে। ইংরেজির ছাত্র হয়েও অধ্যাপনা করেছেন বাংলা সাহিত্যে। এটা ছিল কবি ও সাহিত্যিক হিসেবে তার যোগ্যতার স্বিকৃতি। ঢাকা ও করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার অধ্যাপনা করার পর ষাটের দশকের মাঝামাঝি বাংলা একাডেমির পরিচালক হন। তার সময় বাংলা একাডেমি হয়ে উঠে একটি উন্নতমানের গবেষনা কেন্দ্র। বাংলা একাডেমি থেকে তিনি আসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রধান রুপে। আর এখানে থাকতেই যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। বাংলাদেশ স্বাধিন হওয়ার পর প্রথমে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হন। কিন্তু অন্যায় এর কাছে মাথা নত না করায় সেই পদ থেকে অপসারিত হন। পরবর্তিতে পুর্নাঙ্গ মন্ত্রির মর্যাদায় রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এর চেয়ারম্যান হন। তার বিবিধ কর্মক্ষেত্রের মধ্যেও তার কবিতা ও সাহিত্যের সাথে সম্পর্কহিন হননি কখনও।
সম্ভবত ক্লাস সিক্স বা সেভেনের বাংলা বইতে তার কবিতা প্রথম পড়েছিলাম। সেসময়ই পাক্ষিক পালাবদল এবং মাসিক অঙ্গিকার ডাইজেষ্ট এর মাধ্যম নিয়মিত তার লিখা পড়ার সুযোগ হয় আমার । দৈনিক ইনকিলাব এও নিয়মিত লিখতেন তিনি। বিশেষ করে পালাবদল এ বিচিত্র বিষয়ে তার নানা স্বাদ এর লিখা আকর্ষন করত সবসময়। তার বিষয়গুলির মধ্যে ছিল সদ্য নোবেল বিজয়ি উপন্যাসিক এর সাহিত্য কর্ম থেকে বেগুন রান্নার বিভ্ন্নি পদ্ধতি পর্যন্ত! এভাবেই আমাদের জাতিয় মনন এ তার অপরিসীম অবদান রেখে গেছেন তিনি। ১৯৮৯ সালে জাতিয় অধ্যাপক এর সন্মান লাভ করেন তিনি।
অসংখ্য আন্তর্জাতিক সন্মাননা ও তিনি অর্জন করেছিলেন। এরমধ্যে ফ্রান্স প্রদত্ত “Officer De Lordre Des Arts Des Letter" ও ভারতের বিশ্ব হিন্দি সম্মেলন থেকে বিশ্বের ১৭ জন হিন্দি ভাষাবিদ এর একজন হিসেবে দেওয়া সন্মাননা উল্লেখযোগ্য। স্বাধিনতা দিবস পদক ও একুশে পদক সহ একাধিক রাষ্ট্রিয় সন্মাননাও তিনি অর্জন করেছেন।
আজ ২৬ এ মার্চ তার ৯৫ তম জন্মবার্ষিকিতে আমরা তাঁরপ্রতি সন্মান প্রদর্শন করছি।
বিষয়: বিবিধ
১০৩৪ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
৮৮ এর বন্যার সময় তার লিখা(!) একটি গান গেয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর (উনিও বিরাট অভাবী লোক )।
মন্তব্য করতে লগইন করুন