১৮ ই রমজান। পৃথিবির ইতিহাস এ সত্য প্রতিষ্ঠার দিন।
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ২৪ জুন, ২০১৬, ০৪:০৩:১৫ বিকাল
৮ম হিজরি সালের ১৮ ই রমজান মোতাবেক ৬৩০ খৃস্টাব্দের জানুয়ারি মাসের সম্ভাব্য ১১ তারিখ এই পৃথিবির ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন দিনগুলির একটি। এই দিন মক্কা নগরি এবং মুসলিম জাতির কিবলা কাবা মুক্ত হয় মুশরিকদের নিয়ন্ত্রন থেকে। আর এই বিজয় আল্লাহর দ্বীন কে পরিপুর্ন করে তোলে এই পৃথিবিতে।
সেইদিন প্রায় বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পন করে মক্কার এককালের শক্তিশালি মুশরিক সম্প্রদায় ও কুরাইশ রা। যদিও তখন সামরিক শক্তিতে তারা যথেষ্ট এগিয়ে ছিল মুসলিমদের চেয়ে। প্রয়োজনে তৎকালিন পরাশক্তি রোম ও ইরান ও তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসত। কিন্তু তারা হারিয়ে ফেলেছিল তাদের সাহস। আল্লাহতায়লা তাদের হৃদয়কে করে দিয়েছিলেন ভিত। হুদায়বিয়ার সন্ধিচুক্তি লংঘন করে তারাই এই অবস্থা করেছিল নিজেদের।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সেদিন মক্কা বিজয় করে কারো উপর প্রতিশোধ নেননি। ক্ষমা করেছিলেন সকলকে। সকল এর জন্য ঘোষনা করেছিলেন ক্ষমা। যারা তাকে কষ্ট দিয়েছিল তাদের সকল এর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন "আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। তোমরা সবাই মুক্ত।"
আজ সেই দিন আমরা ফিরিয়ে আনতে পারি। বিশ্বের সকল প্রান্তের মুসলিম জনতা যদি সেই দিনের মত এক হয়ে দাড়ায়। সে দিন এর মতই শত্রুদের মনে সঞ্চার হবে ভিতির। আর এই জমিনে প্রতিষ্ঠিত হবে আল্লাহর আইন।
বিষয়: বিবিধ
১৫১৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্ত মুসলমানদের একজন নেতার বড় অভাব যে এই শতবিভক্ত মুসলমানদের মাঝে ঐক্য গড়ে তুলবে ।কবে আসবে সেই নেতা !!
তবে আমার বিস্বাস অবশ্যই আসবে ।
ধন্যবাদ ভাইয়া পৃথিবির ইতিহাসে সত্য প্রতিষ্ঠার দিনটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য ।
ধন্যবাদ অত্যন্ত সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
মক্কা বিজয়: মহাবিশ্বের ইতিহাসে এক রক্তপাতহীন সফল বিপ্লব-
পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বিপ্লব আর কখনো ঘটবে বলে আশা করতে পারি না। এক রক্তপাতহীন বিপ্লব, যা রাসূলুল্লাহর নেতৃত্বে ৮ম হিজরীতে সংগঠিত হয়েছিল। হুদাইবিয়ার সন্ধি চুক্তি ভঙ্গ করে কুরাইশরা নবীজী (সা)এর অনুসারী খোজায়া গোত্রের লোকদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করতে লাগল। এমনকি তারা কাবা শরীফেও আশ্র্রয় গ্রহণ করে রক্ষা পায় নি। বনু খোজায়া গোত্র তাদের দুরবস্থা পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহর রাসূল (সা)এর সাহায্য চাইলেন। রাসূল (সা) কুরাইশ ও বনু বকর গোত্রদেরকে এ অন্যায় কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখার অনেক চেষ্টা করেছিলেন। সব চেষ্টা বিফলে যাওয়ার পর রাসূল (সা) সিদ্ধান্ত নিলেন মক্কায় অভিযান চালাবেন। ১০ই রমজান থেকে গোপনে অভিযান শুরু করলেন তিনি। ১৮ই রমজান মক্কাবাসী অবাক বিস্ময়ে ১০,০০০ হাজার মুসলিম সেনাবাহিনী দেখে ভড়কে গেলেন। প্রতিরোধ করার কোন স্পৃহা বা প্রচেষ্টা দেখা গেল না মরু মুষিকদের। কুরাইশ দলপতি আবু সুফিয়ান অবশেষে আত্মসমর্পণ করলেন। যে মুহাম্মদ একজন সঙ্গী নিয়ে গোপনে মক্কা ত্যাগ করে মদীনায় হিজরত করলেন। আজ সমগ্র মক্কা তার করতলে। কিন্তু দয়ার নবী কোন প্রতিশোধ নিলেন না। অথচ নুবুওয়াত লাভের পর থেকে নবীজী এবং তার সাহাবীদের যে অবর্ণনীয় নির্যাতন, নিষ্পেষণ, দেশ থেকে বের করে দেওয়াসহ এহেন কোন অপরাধ বাকি ছিল না, যা কুরাইশরা করে নি। বিশ্বনবী (সা) মক্কাবাসীদের উদ্দেশ্যে বললেন, “হে কুরাইশগণ! তোমরা কি জান আমি তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করব? ভীত কম্পিত কুরাইশরা বলল, আমরা আপনার নিকট কল্যাণ ও সদ্বব্যবহারের আশা করি। কারণ আপনি আমাদের সম্মাণিত ভ্রাতা এবং সম্ভ্রান্ত ভ্রাতার পুত্র। আজ আপনি সমুচিত শাস্তি প্রদানে সমর্থ। যদিও আমরা অপরাধী, তবুও আপনার নিকট আমরা সদ্ব্যবহারের আশা রাখি।” শান্তির দূত ও মানবাধিকারের প্রবক্তা মহানবী (সা) বললেন, “আজ তোমাদের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। যাও, তোমরা মুক্ত ও স্বাধীন।” এই যে, চিরশত্রুদের ক্ষমা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক ঘটনা বিশ্বে আর কখনো কি ঘটবে? বিজয়ের মাসে ক্ষমা করে বিজয় সুসংহত করে মহানুভবতার পরিচয় দিলেন। এই বিজয়ের মহত্ত্ব বা শ্রেষ্ঠত্ব কোন দেশ বা রাষ্ট্রকে দখল করে নয়, বরং শত্রুভাবাপন্ন মানুষের হৃদয়কে বিজয় করার মধ্যে।
ধন্যবাদ আপনাকে..
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
মক্কা বিজয়ের মধ্যে রয়েছে মুসলিম জাতির জন্য মহান শিক্ষা। সঠিক নেতৃত্য যেমন প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন প্রাণ উৎমর্গকারী ঈমানদিপ্ত কর্মী বাহিনীও। সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া। জাযাকাল্লাহ খাইর
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন