১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর শেষ সময় এবং আমাদের প্রত্যাশা।

লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০২:৫৪:৪১ দুপুর

১৯৭১ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর এর রাতটি ছিল ঘটনা বহুল। যদিও তখনও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিভিন্ন অবস্থানে যথেষ্ট শক্ত অবস্থায় ছিল কিন্তু নৈতিকভাবে তাদের অবস্থা ছিল করুন। ১৫ ই ডিসেম্বর যখন জুলফিকার আলি ভুট্টো জাতিসংঘের যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে প্রস্তাব টি ছিড়ে অধিবেশন থেকে বের হয়ে যান তখন ভারতিয় সমর বিশেষজ্ঞরা সস্তির নিশ্বাস ফেলেন। কারন সেই সময় প্রধান শহরগুলির মধ্যে যশোর ছাড়া আর কোনটা ভারতিয় ও মুক্তিবাহিনি দখলে ছিলনা। অন্য শহরগুলিতে মুক্তিবাহিনির নিয়ন্ত্রন থাকলেও পাকিস্তানি সামরিক অবস্থান অটুট ছিল। ভারতিয় জেনারেল জ্যাকব এর মত এই যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব গৃহিত হলে বাংলাদেশের স্বাধিনতা অনেক পিছিয়ে যেত। কারন বাংলাদেশ তখনও জাতিসংঘ স্বিকৃত রাষ্ট্র নয়। যুদ্ধ বিরতি হলে ভারতিয় বাহিনিকে পিছিয়ে যেতে হত আন্তর্জাতিক সিমান্তের কাছাকাছি আর মুক্তিবাহিনির পক্ষে যশোর বা চাঁদপুর এর মত জায়গা নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হতোনা। ভুট্টোর এই আচরন মূলত বাংলাদেশের স্বাধিনতা কে তরান্বিত করেছিল।

১৫ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর মধ্যে দেশের বেশিরভাগ আভ্যন্তরিন গ্রামাঞ্চল থেকে পাকিস্তানি বাহিনি সরে গিয়েছিল। সেই সব জায়গা মুক্তিবাহিনির পুর্ন নিয়ন্ত্রনে ছিল। কিন্তু সিমান্ত থেকে পিছিয়ে এলেও পাকিস্তানি বাহিনি আগে থেকে নির্ধারিত তাদের দুর্গ অবস্থান গুলি ধরে রেখেছিল। যেমন রংপুর,কুমিল্লা, সিলেট,বগুড়া,মাগুড়া, খুলনা এবং চট্টগ্রাম এর সেনানিবাস অঞ্চল গুলি। যুদ্ধবিরতি হলে ভারতিয় ও মুক্তিবাহিনি কে তাদের ফ্রন্ট অবস্থা থেকে সরে যেতে হত। যার সুযোগে পাকিস্তানি বাহিনি অবরুদ্ধ অবস্থান থেকে মুক্ত হয়ে তাদের প্রতিরক্ষা পরিধি বাড়ানর সুযোগ পেত। দেশের ভিতর যে কয়েকটি মুক্তাঞ্চল ছিল যেমন টাঙ্গাইল,রৈীমারি, চুয়াডাঙ্গা ইত্যাদি তে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা সে সময় বিপদ এর সম্মুখিন হতে পারতেন। কারন যুদ্ধ বিরতি হলেও আন্তর্জাতিক আইনে পাকিস্তানিরা নিজের দেশের ভিতরে যে কোন স্থানে হামলা চালানর অধিকার রাখত তা যদি ভারতিয় বাহিনির বিপক্ষে না হয়।

পাক বাহিনির সদর দপ্তর ঢাকাও সেসময় নিরাপদ ছিল অনেক টাই। যদিও যুদ্ধের প্রথম ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই রানওয়ে বিকল হয়ে পাক বিমানবাহিনি সম্পুর্ন অকার্যকর হয়ে যায়। কিন্তু বিমান বাহিনি ছাড়াই ঢাকা ছিল দুর্ভেদ্য একটি এলাকা। আসলে চারদিকে নদি ও জলাভূমি দিয়ে ঘেরা ঢাকা-সোনারগাঁও অঞ্চল কে প্রাচিন কাল থেকেই তার এই প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষার সুবিধার জন্য রাজধানি করা হয়েছিল। ঢাকার অভ্যন্তরে বেশকিছু গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও তাদের কাছে ঢাকা শহর দখল বা পাকিস্তানি বাহিনিকে পরাজিত করার উপযুক্ত অস্ত্র ছিলনা। ভারতিয় ও মুক্তিবাহিনি ১২ই ডিসেম্বর এর মধ্যে ঢাকাকে ঘেড়াও করতে সক্ষম হয় অনেকটা। কিন্তু তখন ঢাকায় সামরিক-আধাসামরিক মিলিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যর সংখ্যা ২০০০০ এর বেশি। তাই ভারতিয় সমর অধিনায়করা ঢাকায় আক্রমন করার জন্য আরো দুই সপ্তাহ সময় এর প্রয়োজন বলে ঠিক করেছিলেন। তবে ভারতিয় অধিনায়ক দের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে মুক্তিবাহিনির ২ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং আরো কয়েকটি স্বাধিন প্লাটুন মেঘনা পার হয়ে ডেমরার কাছে অবস্থান নেয়। যথেষ্ট ঝূঁকি নিয়ে একটি মর্টার প্লাটুন আরো এগিয়ে গিয়ে ঢাকা সেনানিবাস এর কাছে শেলিং ও করে। মুক্তি বাহিনির এই অগ্রযাত্রা ভারতিয় বাহিনি বিশেষ পছন্দ করতে পারেনি। কিন্তু এই অগ্রযাত্রাই পাকিস্তানি আত্মসমর্পন কে তরান্বিত করে।

রাজনৈতিক সমাধান এর সমস্ত সম্ভবনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনির দুটি মাত্র পথ অবশিষ্ট থাকে। এক আত্মসমর্পন করে জিবন বাঁচান আরেক শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করে জিবন দেওয়া। উল্লেখযোগ্য এই বাহিনির সবাইই ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি। পূর্বপাকিস্তান তথা বাংলাদেশের জন্য জিবন দেওয়ার কোন কারন তারা খুঁজে পাননি। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানে যুদ্ধের চাপ সামলানোর জন্যও পাকিস্তান সেনাবাহিনির হাই কমান্ড পূর্বপাকিস্তানের বাহিনির আত্মসমর্পনে সম্মতি দেয়। ভারতিয় কর্তৃপক্ষ ও চাচ্ছিল যথা সম্ভব যুদ্ধ এড়িয়ে সমস্যার সমাধান করা। কারন তৎকালিন বাইপোলার বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সোভিয়েট প্রভাব বৃদ্ধি না করার জন্য আগেই বাংলাদেশের দিকে তার সপ্তম নৌবহর কে রওনা করিয়ে দিয়েছিল। কিন্ত সোভিয়েট সরকার এর ভারতকে এভাবে কোন সরাসরি সহায়তা করার সুযোগ ছিলনা। অন্যদিকে ভারতের আরেক প্রতিবেশি চিন ও ভারত বিরোধি ছিল।

এই অবস্থায় পাকিস্তান সেনাবাহিনির ইষ্টার্ন কমান্ড আত্মসমর্পন এর সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও তখনও খুলনা,রংপুর,কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় প্রচুর গোলাবারুদ সহ যথেষ্ট শক্তিশালি অবস্থানে তারা ছিল এবং প্রয়োজনে ভারতিয় জেনারেল দের বিশ্লেষন অনুসারে তারা এই অবস্থান গুলি আরো দুই মাস সময় ধরে রাখতে সক্ষম ছিল। কিন্তু একদিকে নৈতিক পরাজয় আর জনগনের সমর্থন হারিয়ে তাদের পক্ষে আর কোন বাধা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ১৫ ই ডিসেম্বর রাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং রেডক্রস ও জাতিসংঘের মাধ্যমে ভারতিয় কমান্ড কে জানান হয়।

১৫ ই ডিসেম্বর রাত্রে পাকিস্তানি সেনাবাহিনি গুরুত্বপূর্ন দলিল পত্র নষ্ট করে এবং সেই রাত্রেই পাকিস্তান সেনাবাহিনির হেলিকপ্টার ও কিছু পরিবহন বিমান এর সাহাজ্যে কয়েকজন আহত উচ্চপদস্থ অফিসার সহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট বার্মায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তান নৌবাহিনির একটি ছোট জাহাজ পিএনএস রাজশাহি ভারতিয় নৌ অবরোধ কে এড়িয়ে প্রথমে মালয়শিয়া ও তারপর পাকিস্তান পেীছতে সমর্থ হয়। পরদিন ১৬ ই ডিসেম্বর সকাল বেলা ভারতিয় ইষ্টার্ন কমান্ড এর প্রধান ষ্টাফ অফিসার জ্যাক ফার্জ রাফায়েল জ্যাকব এবং ইর্ষ্টান কমান্ড এর প্রদান ইন্টেলিজেন্স অফিসার কর্নেল খারা হেলিকপ্টারে ঢাকায় আসেন। তারা পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আত্মসমর্পন এর শর্তাবলি ঠিক করেন এবং সেই দিনই বিকাল চারটা বাজে ভারতিয় ইষ্টার্ন কমান্ড এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিত সিং অরোরার কাছে পাকিস্তানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি তার বাহিনি সহ আত্মসমর্পন করেন।

দুর্ভাগ্যজনক সত্য হচ্ছে এই আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে মুক্তিবাহিনি সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানি উপস্থিত ছিলেন না। একমাত্র চিফ ষ্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে খন্দকার সাহেব উপস্থিত ছিলেন। যেীথ কমান্ড এর কাছে আত্মসমর্পন করলেও বাংলাদেশ এর পক্ষে কেউ সেই দলিলে সাক্ষর করেননি। জেনারেল জ্যাকব এর আত্মজীবনি থেকে আরো জানা যায় যে ভারতে বন্দি অবস্থায় থাকার সময় এই দলিল নতুন করে লিখা হয় এবং নিয়াযি তাতেও সাক্ষর করেন।

বাংলাদেশের স্বাধিনতার সময় ভারতিয় প্রধানমন্ত্রি ইন্দিরা গান্ধি সংসদে দাড়িয়ে অতিশয় গর্বের সঙ্গে ঘোষনা করেন যে "টু নেশন থিওরি ইজ ড্রাউনড ইন বে অফ বেঙ্গল"। তিনি সম্ভবত আশা করেছিলেন যে বাংলাদেশের স্বাধিনতা অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ হবে। কিন্তু তার সেই ইচ্ছা পূরন হয়নি। অল্প কিছুদিন এর মধ্যেই বাংলাদেশের অবিসংবিদিত নেতা শেখ মুজিবর রহমান এসে যান এবং তিনি বাংলাদেশ কে স্বাধিন দেশ হিসেবেই ঘোষনা করেন। ভারতকে তিনি ধন্যবাদ দেন কিন্তু ভারতিয় আধিপত্যকে অস্বিকার করেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বাধিনতা যুদ্ধে সাফল্য ইন্দিরা গান্ধিকে করে তুলে স্বৈরাচারি শাসক। ১৯৭২ থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের নির্বাচনে অবৈধ প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে ইন্দিরা গান্ধির কংগ্রেস দল বিজয়ি হতে থাকে। একপর্যায়ে এলাহাবাদ হাই কোর্ট ইন্দিরা গান্ধির নিজের আসনে বিজয় কে অবৈধ ঘোষনা করলে তিনি সারা ভারতে জরুরি অবস্থা জারি করে জোর করে ক্ষমতায় থাকার প্রয়াস পান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ১৯৭৭ সালে নির্বাচনে পরাজিত হন। ১৯৭৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরলেও বিভিন্ন বিতর্কিত কাজ করে যেমন শিখ স্বর্নমন্দিরে অভিযান চালিয়ে পুনরায় সমস্যার সৃষ্টি করেন। শেষ পর্যণ্ত তার শিখ দেহরক্ষি দের গুলিতে মৃত্যুবরন করেন।

পাকিস্তানি ও ভারতিয় উভয় আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত থেকে বাংলাদেশ পৃথিবির বুকে একটি স্বাধিন উন্নত মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে থাকবে বিজয় দিবস এর প্রাক্কালে এটাই হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা।

বিষয়: বিবিধ

২০৯৬ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

354134
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:২৭
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : স্বাধীনতার আকাঙ্খা মানুষের মানবিক অধিকার...কিন্তু স্বাধীনতাই যদি একদলের অধীনে হয় তাইলে স্বাধীনতার পুরো স্বাদ কি পাওয়া যায়....,পাকিস্থানিরা গোয়ার বর্বর এবং অহংকারি একাত্তুরে হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ...না হলে এই প্রজন্ম নিশ্চই বসে থাকতো না...নতুন প্রজন্ম অনেক উদার এবং জ্ঞ্যান সমৃদ্ধ, অনেক ধন্যবাদ।
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৪২
294016
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ। স্বাধিনতার প্রধান অর্থ মানুষের জিবনের নিরাপত্তা ও বলার অধিকার। সেটাই যেখানে নাই স্বাধিনতা সেখানে হাস্যকর!
354137
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৩৮
আবু জান্নাত লিখেছেন : দেশ স্বাধীন হয়ে ভালো হলো নাকি খারপ হলো, তা এখনো বুঝতে পারতেছি না। তবে খারাপের দিকটাই ভারী মনে হচ্ছে। কাদের সিদ্দিকীর মত মানুষ যদি বলতে পারেন, এমন হবে জানলে দেশ স্বাধীনের জন্য যুদ্ধ করতাম না।

১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৯
294017
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : দেশ স্বাধিন না হলেও যে ভাল হতো তার কোন নিশ্চয়তা নাই। সমস্যা হচ্ছে আমাদের মধ্যে। নিজেদের নিয়ে যত ব্যাস্ত দেশ নিয়ে চিন্তা করিনা তার শতাংশ!
354154
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৩৯
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ভারতের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রাম পাকিস্তানের বাংলাদেশে ক্র্যাকডাউনের পর প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, "ঈশ্বর প্রদত্ত এই সুযোগকে কোন অবস্থাতেই হাতছাড়া করা উচিত হবে না।" (দি লিবারেশন অব বাংলাদেশ, মেজর সুখবন্ত সিং, পৃ-১৮)...
-ধন্যবাদ, অনেক কিছু জানা হল।
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:২৩
294071
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ। এপ্রিল মাসেই ভারত এই সুযোগ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ যিনি একজন অত্যন্ত বাস্তববাদি মানুষ ছিলেন তিনি প্রস্ততি ছাড়া সামরিক অভিযান চালাতে রাজি হননি।
বইটি মেজর জেনারেল সুখবন্ত সিং এর লিখা।
354156
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৪২
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : দ্বিজাতি তত্ব সম্পর্কে ইন্দিরা গান্ধী সঠিক বলেন নি...বঙ্গবন্ধুর অনন্য ভুমিকায় ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হন।
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:২৫
294072
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ইন্দিরা গান্ধির উদ্দেশ্য তাই ছিল। এমনকি এখনও এই দেশে অনেকে দ্বিজাতিতত্ব ভুল এই কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু তা হলে স্বাধিন বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকে কি করে!
354160
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০৫
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : অনেক আগে একটা লেখায় পড়েছিলাম এখানের মানুষের কষ্ট দেখে-শুনে মানবিকভাবে নিয়াজি ভেংগে পড়েছিলেন। ভুট্টর উগ্র মেজাজটাও আমাদের স্বাধিনতাকে ত্বরান্নিত করেছিল।
কিন্তু ভারতের আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত থাকতে পারলাম না কেন? এই প্রশ্ন খুব ভাবাই।পরবর্তি সিপাহী বিপ্লব যে সুযোগ আমাদের এনে দিয়েছিল তাহাও আমাদের অবহেলাই হারিয়ে ফেলেছি।

পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৩১
294073
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : নিয়াজি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরেননি। তবে তিনি নিম্চিত ছিলেন দির্ঘমেয়াদি যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনির পরাজয় এর সম্ভাবনা আছে। তার লক্ষ ছিল যথা সম্ভব বেশি সময় ঢাকা সহ কয়েকটি অবস্থান ধরে রাখা যার মাধ্যমে কূটনৈতিক সমাধান এর সময় পাকিস্তান সুবিধা পাবে। সে ক্ষেত্রে তিনি সফল। কিন্তু ভুট্টোর উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতা দখল করা।
354178
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:২৮
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : সুন্দর একটি পোস্ট। আপনার কলাম জাতীয় দৈনিকগুলোতে পড়তে পারলে আমার ভীষণ ভালো লাগবে। নয়াদিগন্তসহ বিভিন্ন পত্রিকায় আপনার কলাম পড়ার অপেক্ষায়!
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৩২
294074
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমার তো লিখতে সমস্যা নাই। কিন্তু উনারা ছাপাবেন কি???
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৮
294085
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : অবশ্যই! আমার ১০০% কনফিডেন্স
354179
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৩৩
শেখের পোলা লিখেছেন : ত্বরান্বিত না বিলম্বিত, ভালো না মন্দ হয়েছে, তার জন্য আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে৷
সেই কথা মনে করিয়ে, 'রোগীর উন্নতি হয়েছে, আগে বাইরে হাগতো এখন ঘরে হাগে৷'
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৩৪
294075
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ৪৪ বছর পরেও অপেক্ষার কোন সুযোগ নাই!! এটা ঠিক যে স্বাধিনতার পর অামাদের অর্থনিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু গত ৭ বছর তার বেশিরভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে!!
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:২৮
294124
শেখের পোলা লিখেছেন : লক্ষ্য লক্ষ্য দেশবাসী পুরুষ ও মহীলাদের ভিটা মাটি বিক্রীর টাকায় বিদেশে চাকর খাটার সাথে মিসকীন হয়ে জীবন কাটানোর বিনিময়েই পাওয়া গেছে এই অর্থ নৈতীক স্বচ্ছলতা,যা দিয়ে ক্ষমতাসীনরা ইউরোপ আমেরিকায় ভবিষ্যতের আস্তানা বানাচ্ছে৷ এতে সরকারের কোন কৃতৃত্ব নেই৷ বরং দেশের সোনালী আঁশ পাটশিল্প, তাঁতশিল্প, চিনি কাগজ শিল্প ধ্বংস হয়ে লক্ষ্য লক্ষ্য শ্রমিক ঐ খখয়রাতী দলে যোগদিতে বাধ্য হয়েছে৷শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বললামনা৷ আগে আমাদের এক টাকায় ভারত দুটাকা দিত এখন সমানেরও নীচে৷ এই উন্নতি হয়েছে৷ধন্যবাদ৷
354183
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৪৬
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : পড়লাম, ভাল লাগল।
বিজয় নিয়ে স্ফুর্তি আসে না মনে, কেন আসবে, স্বাধীনতার সুখ যে আমি পাচ্ছিনা।
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৩৫
294076
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভাল লাগার জন্য।
যেহেতু আমরা প্রকৃত স্বাধিন নই তাই সুখ পাওয়ার কোন সুযোগ নাই।
354223
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:৩৯
আয়নাশাহ লিখেছেন : পাকিস্তানি সৈন্যরা সারেন্ডার করল ভারতীয় বাহিনীর কাছে যেখানে কোনো বাঙালী স্বাক্ষর করেন নাই এমনকি সাক্ষীও হতে পারেন নাই। পরে জানা গেলো কি? এ নিয়ে লেখা আপনার আশা করি। ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটার জন্য।
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৩৭
294077
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
প্রশ্ন টি ঠিক বুঝিনি। পরে আত্মসমর্পন এর দলিল টি নতুন করে লিখা ও সাক্ষর করা হয়। সেখানে সম্ভবত যেীথ কমান্ড বাদ দেওয়া হয়।
১০
354243
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৭
হতভাগা লিখেছেন :
পূর্বপাকিস্তান তথা বাংলাদেশের জন্য জিবন দেওয়ার কোন কারন তারা খুঁজে পাননি।


০ পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা কি ভেবেছিল তারা বিনা রক্তপাতে পূর্ব-পাকিস্তানকে কব্জা করতে পারবে ?

উনারা বাংলাদেশীদের কাছে আত্মসমর্পন না করে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে সেটা করলেন কেন ?

যদিও তখনও খুলনা,রংপুর,কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় প্রচুর গোলাবারুদ সহ যথেষ্ট শক্তিশালি অবস্থানে তারা ছিল এবং প্রয়োজনে ভারতিয় জেনারেল দের বিশ্লেষন অনুসারে তারা এই অবস্থান গুলি আরো দুই মাস সময় ধরে রাখতে সক্ষম ছিল।


০ এত কন্ট্রোলে থেকেও তারা কেন আত্ম সমর্পন করতে গেল ?

পাকিস্তানী সৈন্যরা সে সময়ে পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী সেনাবাহিনী ছিল । তারা মনেই করেছিল যে তারা পূর্ব পাকিস্তানে আসবে , দেখবে আর জয় করে নেবে ।

কিন্তু তারা এটা মাথায় রাখে নি যে তারা অন্য আরেকটি দেশে এসেছে যুদ্ধ করতে । বেশীদিন লড়াই চললে বাইরে থেকে আসা সৈন্যরা হতোদ্যম হয়ে যাবে । এবং যুদ্ধে ৭/৮ মাস পরে এসে এটা টের পাওয়া যাচ্ছিল , কারণ বাংলাদেশী গেরিলা যোদ্ধারা একে একে সব দিক দিয়ে ধেঁয়ে আসছিল । কারণ এটা যে তাদেরই দেশ । একজন গেলে ১০০ জন আসবে । যেটা ইরাক আফগানিস্তানে আমেরিকা গত ১৪-১৫ বছর ধরে টের পাচ্ছে । দখল করলেও হজমই করতে পারছে না । না পারছে গিলতে , না পারছে ফেলতে । এখন বাংলাদেশ সহ একে ওকে ডাকছে ডলারের লোভ দেখিয়ে শান্তিবাহিনী হিসেবে আসতে।

যত ভারী ভারী অস্ত্র থাকুক না কেন সেটা চালাতে হলে তো মানুষ লাগবে , লাগবে তার মন মানসিকতাও । সাফল্য যেখানে আশার কোন লক্ষণই ছিল না সেখানে তাদের দেশে ফেলে আসা আপনজনের কথা মনে পড়ার কথাই বেশী ।

মূলত এটাই পাকিস্তানী বাহিনীকে আত্ম সমর্পন করতে আগ্রহী করে তুলেছিল - অনেকটা ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা ।

এই পোস্ট পড়ে মনে হল এখানে পাকিস্তানী বাহিনীর বীরগাঁথাই গাওয়া হয়েছে পরোক্ষভাবে ।

১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০২
294114
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আপনার যদি বিকৃত অর্থ করতে ইচ্ছা হয় সেটা করতেই পারেন। আত্মসমর্পন এর কারন এর যে বিশ্লেষন আমি করতে চেয়েছি সেই সেই বিশ্লেষন ভারতিয় সামরিক বাহিনি এবং বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা যারা প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তারাই লিখেছেন। তথাকথিত চেতনা সম্বৃদ্ধ কারও লিখা থেকে আমি উদ্দৃত করিনি। আর তাই আবেগ থেকে আমার লিখায় বস্তনিষ্ঠতা প্রাধান্য পেয়েছে।
১১
358708
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০২:৫২
আহমদ মুসা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ বিকাল ০৪:০৬
297615
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File