বিহারে গো-মাতা বুমেরাং!!
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ০৮ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:৫৬:৪৪ রাত
ভারতের বিহার প্রদেশের নির্বাচনে প্রচন্ড পরাজয় হয়েছে কেন্দ্রিয় শাসক দল বিজেপির। ২৪৩ আসনের প্রাদেশিক বিধান সভায় বিজেপি বিরোধি লালু প্রসাদ যাদব এর রাষ্ট্রিয় জনতা দল এবং মুখ্যমন্ত্রি নিতিশ কুমার জনতা দল ইউনাইটেড এর সাথে কংগ্রেস ও যুক্ত হয়ে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৭৮ টি আসনে বিজয়ি হয়েছে বা এগিয়ে আছে। যেটা দুই-তৃতিয়াংশ এর ও বেশি! ২০১৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে যেখানে বিহারের ৪০ টি আসনের মধ্যে ৩১ টিই বিজেপি জোট পেয়েছিল সেখানে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির এই চরম পরাজয় নিয়ে এখন চলছে বিশ্লেষন। নির্বাচনি জরিপ এমনকি বুথ ফেরত জরিপেও যেটা কল্পনা করা যায়নি।
ভারতের অনগ্রসর ও দরিদ্র প্রদেশগুলির মধ্যে অন্যতম বিহার। যেখানে শিল্পায়ন পশ্চিমবাংলা থেকেও অনেক কম। তার চেয়েও খারাপ অবস্থা সেখানের জাতপাতের বিভাজন। বিহারে অনেক এলাকায় নিচু জাতিয় হিন্দুরা এখনও সামাজিক বাধায় আক্রান্ত। স্কুলে এক বেঞ্চে বসতে না দেওয়া থেকে শুরু করে একই কুয়া থেকে পানি নেওয়া নারিদের উপর অত্যাচার এর ঘটনাও এখানে প্রতিনিয়ত শোনা যায়। শুধু উঁচু নিচু জাত নয় একই জাতের মধ্যেও রয়েছে গোত্র ও গোষ্ঠি দন্দ। এই অবস্থায় ও বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রি লালু প্রসাদ যাদব ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রি নিতিশ কুমার যথেষ্ট সাফল্যের সাথেই ছিলেন। নিতিশ ইতঃপূর্বে বিজেপিরই জোট সঙ্গি ছিলেন তবে গত নির্বাচন এর আগে জোট ত্যাগ করেন। উভয়ে পুনরায় একত্র হয়ে এই বিশাল সাফল্য আবার অর্জন করলেন। নিতিশ কুমারই মুখ্যমন্ত্রি থাকছেন এবং তার নিতিমালাই অনুসৃত হবে বলে লালু প্রসাদ যাদব ঘোষনা দিয়েছেন। এই সাফল্যে কংগ্রেস ও খুশি। লোকসভা নির্বাচনে বিশাল সাফল্যের পরপরই প্রথমে দিল্লি ও পরে বিহারে এই বিশাল পরাজয় বিজেপিকে নিশ্চিতই সমস্যার মুখে ফেলেছে। প্রশ্ন বিদ্ধ করেছে বিজেপি প্রধান অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রি নরেন্দ্রমোদির নিতিকে। লোক সভা নির্বাচনে উভয় প্রদেশেই বিজেপি সর্বাধিক আসন ও ভোট লাভ করেছিল। মনে করা হচ্ছে ক্ষমতায় যেয়েই হিন্দুত্ব নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি বেশিরভাগ ভারতিয়ই পছন্দ করছে না। বিশেষ করে নির্বাচনের ঠিক আগেই গরু খাওয়ার অভিযোগে হত্যাকান্ড এবং নিচু জাতের কয়েকজন কে থানায় জনসম্মুখে উলঙ্গ করার ঘটনা মানুষের মধ্যে প্রচুর প্রভাব ফেলেছে। জাতপাত আক্রান্ত বিহারে বিজেপির হিন্দুত্ব কে অনেক হিন্দুই শুধু ব্রাম্মনত্ব হিসেবেই দেখছে। ভারতের অন্য কয়েকটি প্রদেশেও আগামি এক বছরের মধ্যে নির্বাচন আসছে। যেটা বিজেপির জন্য চিন্তার বিষয়ই বটে।
আখলাখ হত্যাকান্ড নিয়ে নরেন্দ্র মোদির চুপ থাকার পিছনে বিহারের নির্বাচনই ছিল বলে অনেক বিশ্লেষক বলেছিলেন। বিহারের অন্যতম বাসিন্দা "যাদব" রা সহ অনেক গোষ্ঠির মধ্যে গরু পূজা ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি প্রচলিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে গো-মাতা বিজেপির জন্য বুমেরাং হয়ে গেছে!
বিষয়: বিবিধ
১৫০০ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লোকসভা ও বিধানসভা এগুলো কি? তাতো বুঝি না।
সত্যিই গরুর আশির্বাদে মোদির তরী ডুবে যাবে।
দুনিয়ার নিকৃষ্ট জাতি এই গো পুজারীর গোষ্টিরা।
কারণ তারা গাভীকে মাতা বললেও বলদকে বাবা স্বীকার করে না। মানে মাকে স্বীকার করে, বাবাকে নয়। এতেই বুঝা যায় তারা কেমন জাতির লোক।
ধন্যবাদ আপনাকে
রাজনীতি কম বুঝি !
পড়েছি কিন্তু
শুকরিয়া!
তবুও রাজনিতিই আমাদের অনেক কিছু নিয়ন্ত্রন করে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন