মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ । সত্য ও মিথ্যার মাঝে।
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৩:৪৫:৫৪ দুপুর
মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ। যতই অস্বিকার এর চেষ্টা হোক। যতই মুছে ফেলার চেষ্টা করা হোক বাংলাদেশের এবং উপমহাদেশের ইতিহাসে এই মানুষটি সবসময় থাকবেন তার স্বমহিমায়। এই উপমহাদেশ এর মুসলিম জনসাধারন এর মধ্যে ইসলাম যে একটু হলেও টিকে আছে সেটার পিছনে তার অবদান কে কেউ অস্বিকার করতে পারবেনা। তথাকথিত গনতন্ত্রের ফাঁদে যে মুসলিম জাতির অস্তিত্ব ভারতিয় উপমহাদেশ থেকে মুছে যেত সেই সত্য এখন ভারতে বিজেপি সরকার এর কর্মকান্ডে প্রমানিত। দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতিতে উপমহাদেশ তথা ভারতের স্বাধিনতা ছিল অনিবার্য কিন্তু মুহাম্মদ আলি জিন্নাহর সুকেীশলি নেতৃত্ব ও দৃড়তা ছাড়া পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এর জন্ম অসম্ভব ছিল বলেই যুক্তি বলে।
উপমহাদেশ এর মুসলিম জনতার নেতৃত্বদান কারি এই ব্যাক্তি জন্ম সুত্রে ছিলেন ইসমাইলিয়া খোজা। অনেকেই হয়তো জানেন না বৃটিশ ভারতের আইন অনুসারে ইসমাইলিয়া খোজা সম্প্রদায় হিন্দু গোষ্ঠির অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হতেন। অবশ্য জিন্নাহ পরবর্তি জিবনে জাফরি শিয়া মতের অনুসরন করতেন তবে তার ব্যাক্তিগত জিবনে ধর্মের প্রভাব খুব বেশি ছিলনা। তবে কোনভাবেই তিনি ধর্মবিরোধি ছিলেন না। জিন্নাহর জন্ম ১৮৭৬ সালে বর্তমান করাচিতে। তার পারিবারিক নিবাস ছিল বর্তমান ভারতিয় গুজরাট এর কাথিয়াবার অঞ্চলে। কাকতালিয় বিষয়টি হচ্ছে উপমহাদেশের দুই প্রধান নেতা গান্ধি ও জিন্নাহ মূলত একই বংশের মানুষ। জিন্নাহ তার পারিবারিক উপাধি ঝিনাভাই এর পরিবর্তিত রুপ। তার শিক্ষার শুরু হয় করাচির মাদ্রাসাতুল ইসলাম এ। পরবর্তিতে করাচি ক্রিশ্চান মিশনারি স্কুল এ পড়াশোনা শেষে ১৮৯১ সালে মাত্র ১৬-১৭ বছর বয়সে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড রওনা হন। অল্প বয়সেই তিনি ব্যারিস্টারি পড়া শুরু করেন এবং ইংল্যান্ডেই তার রাজনৈতিক জিবনের শুরু হয়। ইংল্যান্ডবাসি ভারতিয় নেতা দাদাভাই নেীরজির নির্বাচনি কাজে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে জিন্নাহর রাজনিতি শুরু। ১৮৯৬ সালে দেশে ফিরে বোম্বে হাইকোর্ট এ আইন ব্যবসা শুরু করেন জিন্নাহ এবং যোগ দেন ভারতিয় জাতিয় কংগ্রেসে।
রাজনিতির প্রথম থেকেই জিন্নাহ ছিলেন বিশুদ্ধ ভারতিয় জাতিয়তাবাদি। ইংল্যান্ড থেকে ফিরে এসে তিনি একজন অতি আধুনিক মানুষ এর মত জিবনযাপন করতেন। ওয়াইন পান করতেন নিয়মিত। ধর্ম বিষয়ে পুর্ন উদাসিন ছিলেন তবে ব্যাক্তিগত জিবনে ছিলেন সৎ এবং সংযত। সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য তাকে এই সময় কংগ্রেস এর বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়। জিন্নাহ পরিচিত হয়ে উঠেন ভারতের রাজনৈতিক পরিমন্ডলে। ১৯০৬ সালে ঢাকায় যখন নওয়াব সলিমুল্লাহ মুসলিম লিগ গঠন এর উদ্দেশ্যে সম্মেলন আহব্বান করেন তখন প্রস্তুতি কমিটির অন্যতম সদস্য শেরে বাংলা একে ফজলুল হক কে পাঠিয়ে নওয়াব সলিমুল্লাহ তাকে দাওয়াত করেন। সম্মেলনে যোগ দিলেও জিন্নাহ মুসলিম লিগ গঠন এর বিরোধিতা করেন এবং মুসলিম লিগে যোগ দেননি। ভারতিয় জাতিয়তাবাদের প্রতি ছিল তার অকুণ্ঠ আস্থা। ধর্ম ভিত্তিতে কোন সংগঠন এর বিরোধি ছিলেন তিনি।
কিন্ত সময় এর সাথে মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ কংগ্রেস এর ব্রাম্মন্যবাদি হিন্দু নেতৃত্ব এবং কংগ্রেস এর পিছনের কায়েমি স্বার্থবাদি বনিক গোষ্ঠির সরুপ বুঝতে পারেন। ব্যাক্তিগত জিবনে ও মাওলানা মুহাম্মদ আলি ও আল্লামা ইকবাল এর প্রভাবে পরিবর্তিত হন তিনি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনিতির অনুসারি জিন্নাহ অসহযোগ আন্দোলন ও সত্যগ্রাহ প্রশ্নে কংগ্রেস এর সাথে ত্রিব্র মতবিরোধ এর কারনে ১৯২১ সালে চুড়ান্তভাবে কংগ্রেস ত্যাগ করেন। এরপর কিছুদিন একক রাজনিতি করার পর জিন্নাহ যোগদেন মুসলিম লিগে। কিন্তু তখনও তিনি ভারতিয় জাতিয়তাবাদকে আদর্শ হিসেবে পরিত্যাগ করেননি। এমনকি ১৯২৯ সালে যুক্ত ও সতন্ত্র নির্বাচন প্রশ্নে যখন মুসলিম লিগ বিভক্ত হয়ে যায় তিনি তখন যুক্ত নির্বাচনবাদিদের কলকাতা অধিবেশনে অংশ নেন। যেখানে তার অন্যতম গুরু মহাকবি আল্লামা ইকবাল, স্যার মুহম্মদ শফির দিল্লি অধিবেশনে যোগ দেন। জিন্নাহ খিলাফত আন্দোলন এর ও তিব্র বিরোধি ছিলেন। যদিও মাওলানা মুহাম্মদ আলির সাথে তার ছিল সুসম্পর্ক। ১৯৩০ সালে ইংল্যান্ডে ভারতিয় স্বাধিনতা ও শাসন এর প্রশ্নে গোল টেবিল বৈঠকে জিন্নাহ যোগ দেন। সেই অধিবেশনের পর মাওলানা মুহাম্মদ আলি ইন্তেকাল করলে জিন্নাহ নেতৃত্ব ও ভারতিয় রাজনিতির প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে লন্ডনে আইন ব্যবসার উদ্দেশ্যে থেকে যান। নেতৃত্বহীন ভারতিয় মুসলিমরা যখন দিকভ্রান্ত তখনই আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল এই প্রকৃত নেতাকে মাওলানা মুহাম্মদ আলির উত্তরাধিকারি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন এর আহব্বান জানান। ১৯৩৪ সালে জিন্নাহ ফিরে আসেন এবং মুসলিম লিগ পুনর্গঠন করেন। ভারতিয় মুসলিম জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে জিন্নাহর নতুন জিবন শুরু হয়।
দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতেই এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে পৃথিবিতে সরাসরি ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার সময় ফুরিয়ে আসছে। ১৯৪০ সালে মুসলিম লিগ এর লাহোর অধিবেশনে উপমহাদেশের মুসলিমদের জন্য সতন্ত্র আবাসভুমির দাবিতে প্রস্তাব পাস হয়। কিছুদিন পর এই প্রস্তাব পাকিস্তান আন্দোলন এর রুপ নেয়। এই সময় জিন্নাহ আক্রান্ত হন যক্ষা রোগে। কিন্তু নিজের রোগ গে গোপন রেখে জিন্নাহ মুসলিম দের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে যান। ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন জিন্নাহর ইন্তেকাল এর পর যখন তার পুর্বের বিভিন্ন এক্সরে রিপোর্টগুলি দেখেন মন্তব্য করেন যে জিন্নাহ এত অসুস্থ জানলে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর পিছিয়ে দিতেন এবং এর ফলে পাকিস্তান হতোনা। শেষ পর্যন্ত জিন্নাহর সুযোগ্য নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট স্বাধিন মুসলিম আবাসভুমি পাকিস্তান এর জন্ম হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই দেশ তার নেতৃত্ব হতে বঞ্চিত হয় অল্প সময় এর মধ্যেই। মাত্র ১৩ মাস পর ১৯৪৮ সালের ১১ই সেপ্টম্বর ইন্তেকাল করেন তিনি।
মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ এর ব্যাক্তি জিবন ও রাজনৈতিক জিবন এর বিভিন্ন সময় এর বৈপরিত্য দেখে অনেকই বিভিন্ন মন্তব্য করেছিলেন। বিশেষ করে ভারতিয় রাজনিতিবিদ ও মিডিয়ার প্রচারনায় তিনি হয়ে উঠেছিলেন একজন কুচক্রি ও বৃটিশ দালাল। জন্মগত শিয়া মতাবলম্বি হওয়ায় গোঁড়া মুসলিম নেতারাও তাকে দেখতেন না ভাল চোখে। নিজের জিবনেও ধর্মের বিশেষ প্রভাব ছিলনা তার। একরোখা ও রগচটা বলেও তাকে চিত্রিত করা হয়েছে। কিন্তু এতসব অপপ্রচার সত্বেয় জিন্নাহর প্রকৃত জিবন কে আড়াল করা যায়নি। তাকে অনেকেই সাহিত্য শিল্প ইত্যাদি বিষয়ে অজ্ঞ বলে প্রচার করেছেন। কিন্তু এরা জানতেন না যে ইংল্যান্ড এ থাকতে তিনি শেক্সপিয়ার এর নাটকে অভিনয় করতেন। নিজের আবেগ কে প্রায় সময় গোপন করতেন তিনি। কিন্তু একজন মানুষের মতই মানবিক দুর্বলতা তার ছিল। গত শতাব্দির বিশের দশকে যাকে হিন্দু-মুসলিম মিলনের অগ্রদূত বলে বলা হতো সেই তিনিই পরের দশক গুলিতে ঘৃন্য সাম্প্রদায়িক(!) ব্যাক্তি হিসেবে চিত্রিত হয়েছেন। কিন্ত লক্ষে অবিচল জিন্নাহ তার লক্ষে পেীছাতে পেরেছিলেন সকল অপপ্রচার সত্বেয়।
ব্যাক্তিগত জিবনে জিন্নাহ তার স্ত্রি রতনবাই তথা মরিয়ম জিন্নাহ কে ভালবাসতেন খুবই। কিন্তু দেশের জন্য সময় দিতে গিয়ে তিনি তরুনি স্ত্রিকে সময় দিতে পারতেন না। মাত্র দশবছর এর বিবাহিত জিবন শেষে যেদিন মরিয়ম জিন্নাহ ইন্তেকাল করেন সেইদিনই তিনি প্রকাশ্যে তার আবেগ প্রদর্শন থেকে বিরত হতে পারেননি। অশ্রুসজল জিন্নাহর সেই দিন ছিল জিবনের দুঃখের দিন। কিন্তু আরো বড় আঘাত তিনি পেয়েছিলেন তার একমাত্র কন্যা দিনা জিন্নাহ যখন পারসিক ব্যাবসায়ি নেভিল ওয়াদিয়া কে বিয়ে করে। জিন্নাহ কন্যার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করেন। তার সে সময় এর সহকারি করিম চাগলা (পরবর্তিতে ভারতিয় শিক্ষামন্ত্রি, তার ইচ্ছা অনুসারে তাকে হিন্দু পদ্ধতিতে দাহ করা হয় মৃত্যুর পর) লিখেছেন এই বিয়ের ইচ্ছার কথা শুনে জিন্নাহ তার কন্যাকে বলেন যে এই দেশে লক্ষলক্ষ মুসলিম যুবকের মধ্যে কি সে বিয়ের উপযুক্ত কাউকে পাচ্ছেনা। দিনা একই ভাবে উত্তর দেন যে লক্ষ লক্ষ মুসলিম যুবতির মধ্যেকি তিনিও বিয়ের উপযুক্ত কাউকে পাননি যে তার মা রতনবাঈ যিনিও একজন পার্সি ছিলেন তাকে বিয়ে করেছিলেন। জিন্নাহ নির্দ্বিধায় উত্তর দেন যে সে ইসলাম গ্রহন করেছিল। একাকি নিসঙ্গ জিন্নাহ কে তার ছোটবোন ডাঃ ফাতিমা জিন্নাহ পরবর্তি জিবনে দেখাশুনা করতেন।
মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ একসময় ভারতিয় জাতিয়তাবাদ এর সমর্থক হয়েও এবং পাকিস্তান পরবর্তিতে পাকিস্তানে সকল সম্প্রদায় এর সমানাধিকার দেওয়ার কথা বললেও কেন পাকিস্তান আন্দোলন এর অবিসংবিদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন এই প্রশ্নটির উত্তর কঠিন কিছু নয়। জিন্নাহ তার দির্ঘ কংগ্রেসি রাজনিতির অভিজ্ঞতায় সুস্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন যে ব্রাম্মন্যবাদি মানসিকতার হিন্দু কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ একক ভারতিয় সংস্কৃতি ও সমাজ বলতে হিন্দু সমাজ কেই মনে করে। সেখানে মুসলিম বা অন্য সম্প্রদায় এর সতন্ত্র অস্তিত্ব কেও তারা মানতে চাইবে না। বর্তমান ভারতের দিকে তাকালেই তার চিন্তার সত্যতা বুঝা যাবে। যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে মুসলিম সম্প্রদায় কে বঞ্চিত রাখা হয়েছে চাকরি ও ব্যবসা বানিজ্য থেকে। অন্যদিকে গনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায় এর ইচ্ছাকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায় এর উপর। যারা একক ভারতেও মুসলিম রা প্রতাপ এর সাথে বসবাস করত বলে মনে করেন তারা কখনও কি গনতন্ত্রের এই ফাঁকটির কথা বিবেচনা করে দেখেছেন?
বাংলাদেশের ইতিহাসে মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ কে চিত্রিত করা হয় তার বাংলাভাষা বিরোধি বক্তব্যের জন্য বাঙ্গালি বিরোধি রুপে। কিন্তু সেই ভাষনে তিনি কেবলমাত্র তৎকালিন গনপরিষদ অধিবেশনের প্রস্তাব এর কথাই বলেছিলেন। ঘটনার পর কিন্তু তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন এবং এই বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলন এর সৃষ্টি কিন্তু তার ইন্তেকাল এর পরে। আর স্বাধিন বাংলাদেশের জন্য তার অবদান কে অস্বিকার করা ব্যাক্তিরা এটাও গোপন করতে চান যে ১৯৪৭ সালেই যুক্ত স্বাধিন বাংলাদেশের জন্ম হতে পারত তার সক্রিয় সমর্থনে। হুসাইন শহিদ সুহরাওয়ার্দি ও শরৎ বোসের পরিকল্পিত সেই স্বাধিন বাংলা কে কঠোর ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছিল কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভা। আজকে এপাড়-ওপার বাংলা নিয়ে মায়াকান্নাকারি রা তথাকথিত শাশ্বত এক বঙ্গকে খন্ডিত করার জন্য দায়ি কংগ্রেস এর ব্রাম্মন্যবাদিদের দোষ টা চাপিয়ে দিয়েছেন এই নিরপরাধ মানুষটির ঘাড়ে!
বর্তমান ভারতে আবার পুনর্মুল্যায়িত হচ্ছেন মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ। শৈলেশকুমার বন্দোপাধ্যায়,বিমলানন্দ শাসমল এবং সাবেক ভারতিয় পররাষ্ট্র মন্ত্রি যশোবন্ত সিনহা উপমহাদেশের ইতিহাসে তার অবদান কে স্বিকৃতি দিয়ে গ্রন্থ লিখেছেন। বাংলাদেশেও তার অবদান এর পুর্নমুল্যায়ন হওয়া উচিত। এই দেশের ইতিহাসে তিনি কোন ভিলেন নন। বরং একজন প্রধান নায়ক। গতকাল ১১ই সেপ্টম্বও তার ৬১ তম মৃত্যুবার্ষিকি অতিবাহিত হলো।
[img]
লাহোর প্রস্তাব এর সময় মুসলিম লিগ এর ওয়ার্কিং কমিটি। মুহাম্মদ আলি জিন্নাহর ডানপাশে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক।
তথ্যসুত্র-
* কায়েদে আযম মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ- মির আবুল কাশেম।
* জিন্নাহ/পাকিস্তান নতুন ভাবনা-শৈলেশকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।
* জিন্নাহ। ধর্মনিরপেক্ষতা বনাম সাম্প্রদায়িকতা-শ্যামাপ্রসাদ বসু।
* জিন্নাহ; ভারত বিভাগ ও স্বাধিনতা- যশবন্ত সিংহ।
* আমার দেখা রাজনিতির পঞ্চাশ বছর-আবুল মনসুর আহমদ।
* ইন্ডিয়া উইন ফ্রিডম- মাওলানা আবুল কালাম আযাদ।
* বাঙ্গালনামা-তপন রায় চেীধুরি।
* স্মৃতি সাগরের ঢেউ- আব্বাস আলি খান।
* জিবনে যা দেখলাম-গোলাম আযম।
* এক জিবন এক ইতিহাস- সিরাজুর রহমান।]
* পাকিস্তান। দেশ ও কৃস্টি।
* মহাকবি ইকবাল-আবু সাইদ নুরউদ্দিন।
* ইন্টারনেট সাইট ও এনসাইক্লোপিডিয়া ও উইকিপিডিয়া।
বিষয়: বিবিধ
৬০৬৪ বার পঠিত, ৮৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তখন ব্রাম্মন্যবাদি হিন্দু যা শুরু করেছিল তাতে কি দেশ ভাগ না হয়ে অন্য কোন উপায় ছিল?
অনেকে কায়েদে আযম এর বাংলা অর্থ করেন জাতির পিতা যা সম্পূর্ণ ভুল। কায়েদে আযম এর সঠিক অনুবাদ হচ্ছে মহান নেতা।
মজার বিষয়টি হচ্ছে কায়েদ আযম এর বিপরিতে বাংলায় প্রথম জাতির পিতা ব্যবহার করেছিলেন সুফিয়া কামাল একটি কবিতায়!!
সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
তবে ধন্যবাদ একজন মহান নেতাকে নিয়ে লিখার জন্য।
নেতা তো নেতাই, নেতা যদি বাবা হয়, বাবা হবে কি!
অসম সাহসিক এক কাজ করেছেন। আর আপনার চাইতেও দুঃসাহসিক কাজ করেছেন ব্লগ সম্পাদক সাহেব পোষ্টটিকে স্টিকি করে।
ধন্যবাদ সবুজ ভাই অসাধারণ একটি লেখা উপহার দিবার জন্য।
মহান ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানতে গিয়ে দেশের ইতিহাসও জানা হয়ে যায়।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ শ্রমলদ্ধ পোষ্টটি শেয়ার করার জন্য।
ব্লগ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ স্টিকি করার জন্য।
পাকিস্তান স্বাধীনের সে সময় মুসলিমদের কে যে রক্ত নদী পেরিয়ে পাকিস্তান পৌছাতে হয়েছিল, সেদিনই প্রমান হয়ে গিয়েছিল দ্বিজাতিতত্ত্বটা কতটা জরুরী এবং আবশ্যকীয় ছিল।
ইতিহাস নির্ভর শ্রমলব্দ মুল্যবান পোষ্টের জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ!
কর্তৃপক্ষ কে ধন্যবাদ স্টিকি করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ।
অতীত ইতিহাস ভূলে যাওয়া জাতি ধ্বংশের চূড়ায় আরোহন করে আস্তে আস্তে,যদিও সহজে তা বুঝা যায় না!
চেতনার মহাস্রোতে ভেসে যাওয়া আমরা প্রকৃ্ত ইতুহাস জানার চেষ্টাও করি না!
অনেক ধন্যবাদ মহান এই নেতা কে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যে!
একটি জাতি যখন তার মূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন তার ধবংস অনিবার্য।
সোজা কথা পাকিস্তান না হলে কখন বাংলাদেশ হত না। দ্বিজাতিতত্ত্বই স্বাধিন বাংলাদেশের বীজ।
ধন্যবাদ।
নিঃসন্দেহে ইতিহাসকে রিভিজিট করা ও তার মধ্যস্থিতি মানুষগুলোকে মূল্যায়ন ও পূনর্মূল্যায়ন করা - শিক্ষার সম্প্রসারন, জ্ঞান বিস্তারে প্রভূত কাজ করে। আপনার এই চেষ্টা ও প্রয়াসকে স্বাগতম জানাই - এবং প্রত্যাশা করি আল্লাহ আপনাকে আপনার সৎ উদ্দেশ্যের জন্য উত্তম প্রতিদান দিক।
ব্যাক্তিগতভাবে আপনার উপরের লিখাটি পড়ে, এবং তারপর জিন্নাহ সাহেবের বন্ধনামূলক - যে মন্তব্যসমূহ দেখলাম তাতে আমার ব্যাক্তিগত মতামত দিতে দ্বিধা করছিলাম।
তারপরও শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি, মুসলিমদের স্রোতের সাথে গাঁ এলিয়ে চলায় হ্রাস টানার ইচ্ছা হতে - কয়েকটি পয়েন্টকে হাইলাইট করলাম। আশা করি এ নিয়ে আপনি ভাববেন এবং আপনার লিখার পাঠকেরাও।
১। মোহাম্মদ আলি জিন্নাহর - মুসলিমলীগ পূর্ব রাজনৈতিক দর্শন (স্যেকুলার, ইসলাম নয়) ও মুসলিমলীগ পরবর্তী রাজনৈতিক দর্শন (স্যেকুলার, ইসলাম নয়)কি পরিষ্কার করেন নি। স্বভাবতঃই বেশিরভাগ পাঠকের কাছে ওনাকে - মুসলিমদের জন্য অন্তঃপ্রান ছিলেন বলে প্রতীয়মান হবে। অথচ তিনি তা ছিলেন না।
২। নিঃসন্দেহে ওনাকে পাকিস্থানীদের কাছে যে ভাবে 'মুসলিম লাভার' হিসাবে হাইফ করে তাদের মনে ও প্রানে স্থান দেওয়া হয়েছে, ঠিক সমরূপভাবে কামাল আতাতুর্ককে 'জাতীয়তাবাদী' হিসাবে হাইফ করে তার্কিসদের মনে ও প্রানে স্থান দেওয়া হয়েছে আর বাংলাদেশীদের কাছে শেখ মুজিবকে সমরূপে 'বাংগালীর বন্ধু' হিসাবে হাইফ করে মনে ও প্রানে স্থান দেওয়া হয়েছে। অথচ ফ্যাক্টস ও ফিগার ও রিয়ালিটি বলে এবং ক্লিয়ারলী প্রমান করে কামাল আতাতুর্ক ও জিন্নাহ জেনে কিংবা না জেনে, বুঝে কিংবা না বুঝে 'বৃটিশ'দের স্বার্থ সংরক্ষনে কাজ করেছে - কোনভাবেই তার্কিস কিংবা পাকিস্থানীদের ট্রু স্বার্থ সংরক্ষনে কাজ করেনি একইভাবে মুজিব 'ভারত'এর স্বার্থ সংরক্ষনে কাজ করেছে - কোনভাবেই বাংলাদেশীদের স্বার্থ সংরক্ষনে কাজ করেনি।
৪। একজন মুসলিম হিসাবে, আমি একজন ঐতিহাসিক নেতাকে 'মুসলিম' ছাতার নিচে তখনই আনবো 'মুসলিম' ক্রেডিবিলিটি তখনই দিতে পারি - যদি সে নেতা কোরান ও সুন্নাহকে স্টাবলিশ করার জন্য কাজ করে এবং সে কাজে স্বার্থক হয়। কিন্তু কোনভাবেই মুসলিম জনমানুষকে উস্কে দিয়ে নেতার আকাংক্ষা, নেতার ইগো কিংবা নেতার ইচ্ছার মিশনের সাফল্যকে মুসলিম সাফল্য হিসাবে দেখাতে পারি না। যদি তা করি তবে অবশ্যই মুসলিম গনমানুষকে প্রতারিত হবে এবং অন্যায়ভাবে একজন মানুষের বন্ধনা করবে ঠিক যেমন এ লিখার অনেক মন্তব্যকারী জিন্নাহ সাহেবকে 'মহান নেতা' বলে সম্ভোধন করেছেন। অথচ জিন্নাহ কোনভাবেই একজন মুসলমানের কাছে 'মহান' নেতা হতে পারেন না।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি - মুসলিম চিন্তাবিদদের উচিত ইতিহাসের এই সব প্রতাপ পুরুষদের কাজ কর্ম - ইসলাম ও ইসলাম অনুসারীদের ইসলামিক্যালী কতটুকু লাভ কিংবা লোকসান করেছে তা বিচার করা। স্যেকুলার চিন্তাভাবনার আলোকে বিচার করা স্যেকুলারদের জণ্য যথার্থ কিন্তু ইসলাম মনস্কদের জন্য ক্ষতি বই লাভ নিশ্চিত করবে না।
দয়া করে আমার মন্তব্যকে নেগেটিভলী নেবেন না।
প্রথম কথা হচ্ছে এটা কোন বন্দনামূলক পোষ্ট নয় বরং ইতিহাস বিষয়ক পোষ্ট।
১.তৎকালিন পরিস্থিতি এবং মুহাম্মদ আলি জিন্নাহর ব্যাকগ্রাউনড পর্যালোচনা করলে আপনার মতামতটি অর্ধ সত্য বলেই বিবেচিত হয়। ইসলামি শাসন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন তখনও হয়নি। তার শিক্ষা ও বোঝার ভিত্তিতে তিনি একটি আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার পক্ষপাতি ছিলেন। কিন্তু তার সেকিউলারইজম এর অর্থ ধর্মহীনতা কখনই ছিলনা।
২. এই অভিযোগ সম্পুর্ন ভুল। জিন্নাহ ছিলেন জাতিয়তাবাদি এটা ঠিক কিন্তু পাকিস্তান না হলে ভারতবর্ষের মুসলিম রা আসলে কি অবস্থায় থাকত সেটা বর্তমান ভারতের অবস্থা দেখেই অনুমান করা যায়। পাকিস্তান এর অধিবাসি তথা ভারতের মুসলিমদের স্বার্থই এতে সংরক্ষিত হয়েছে। বৃটিশ এর স্বার্থ এতে কোনভাবেই সংরক্ষিত হয়নি। মাউন্টব্যাটেন এর উক্তি টির দিকে খেয়াল করুন।
৪(বোধহয় ভুল করেছেন ৩ হবে) তিনি নিজেকে মুসলিম বলই পরিচয় দিতেন। তিনি শিয়া মতাবলম্ববি হলেও মাওলানা শিব্বির আহমদ উসমানি তার জানাজায় ইমামতি করেছিলেন।
আপনার প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর দিলাম পরবর্তিতে এর পুর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দিয়ে পোষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করব।
স্বাধীনতার জন্য চেষ্টা করেছেন সে জন্য তাকে ধন্যবাদ। কিন্তু মুসলমানদের সাথে বেইমানী করার কারণে তিনি মুনাফেক।
@ মীর ফরিদ, রাসুল সঃ নির্যাতন নিষ্পেষন স্বত্তেও 'মক্কা'কে ভেংগে কোন মুসলিম রাষ্ট্র করেন নি। সো স্যেকুলার দৃষ্টিকোন হতে ভারত ভেংগে ২টি মুসলিম রাষ্ট্র হয়েছে - এতে ভাল হয়েছে বলা যাবে। কিন্তু ইসলামিক্যালী তা বলার অবকাশ নেই। যদি তাই হত তবে আমরা দেখতাম রাসুল বর্ডার সমৃদ্ধ আজকের রাষ্ট্রের কথা নূন্যতম একটা হাদীসে বলতেন কিংবা এ্যাটলিস্ট ওমর, ওসমান কিংবা আলী অসংখ্য রাষ্ট্র বানাতেন।
জিন্নাহ সাহেবের প্রতি আমার কোন অশ্রদ্ধা নেই, ওনার কাজ ও সাকসেস কে স্যেকুলার দৃষ্টিকোন হতে আমি ও বাহাবা দেই। কিন্তু আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি এখন সময় হয়েছে ইসলামের দৃষ্টিকোন হতে এসব মহীরূহদের বিচার বিশ্লেষন করার। কারন এখন আমাদের হাতে প্রচুর তথ্য উপাত্ত এবং সহজসাধ্য ইসলামিক নলেজ ভান্ডার ও আছে।
ধন্যবাদ।
বি. দ্র. আমার মন্তব্যটি গতকালই টাইপ করেছিলাম। পোস্ট করার পূর্বক্ষণেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতে সুযোগ হয়নি। আজ ব্লগে ডুকেই দেখি আপনার ব্লগটি স্টীকি করা হয়েছে। অভিনন্দন জানাচ্ছি আপনাকে এবং ব্লগ কর্তৃপক্ষকে সুন্দর একটি পোস্ট স্টীকি করার জন্য।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে, বঙ্গের কয়েকজন বিখ্যাত হিন্দু ব্যক্তি বহু মামলায় জড়িয়ে পড়েন। মামলা চালাতে গিয়ে ফতুর হয়ে পড়েন। এ্সব মামলা পরিচালনা করতেন দেশ বন্ধু চিত্ররঞ্জন দত্ত। শেষ দিকে অর্থ ফুরিয়ে আসলে চিত্ররঞ্জন দত্ত মামলা মাঝ পথে বন্ধ করে দেন। এতে আসামীরা আর বিপদে পড়ে যান। অবশেষে তারা বোম্বেতে জিন্নাহর সাথে মোলাকাত করেন। জিন্নাহ উল্লেখ করেন, দেশ ও জাতীর আজাদীর জন্য লড়াই করতে গিয়ে আসামী হয়েছ, ফলে তোমাদের পক্ষে লড়াই করা আমার মৌলিক কর্তব্য হয়ে উঠেছে, কেননা এটাতে আমারও স্বার্থ আছে। তাদেরকে মুক্ত করা অবধি জিন্নাহ আদালতে লড়েছেন এবং বিনিময়ে একটি মুদ্রাও গহণ করেন নি।
পৃথিবীতে বহু ভাল মানুষ আছে............ কিন্তু
পৃথিবীতে ভাল মনের মানুষ খুবই বিরল.......
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদনিন
সুন্দর পোষ্টের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইরান।
আসক্ত হয়ে যায়। এ ধরনের নেতা ইসলামী
বিপ্লবের নেতা!!!!। আবু জারীর ভাইয়ের দেওয়া
ভিডিও ক্লিপের গান হৃদ্ধয় ছুয়ে যায়!!।
পুনরায় জানা এবং চর্চা হয়ে গেলো ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নিয়ে। ইতিহাস আমরা ভুলতে বসেছি। সেখানে আপনার এই চমৎকার লিখনী অজ্ঞতা দূর করে এবং জানার পিপাসা জাগিয়ে দেয় আলহামদুলিল্লাহ!
স্টিকি পোস্টে অভিনন্দন। মডারেশনকে আন্তরিক শুকরিয়া সুন্দর লিখাটি নির্বাচিত করার জন্য!
সুন্দর উৎসাহমূলক মন্তব্যটির জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আমাদের ইতিহাস কে ভুলিয়ে দেওয়ার যে চেষ্টা হচ্ছে তার বিপরিতে সকলের দাড়ান উচিত।
https://www.youtube.com/watch?v=sAaWOx0ym-I
অনেকেই বলেন গান্ধী না থাকলেও ভারত ব্রিটিশমুক্ত হত।
কিন্তু জিন্নাহ না থাকলে পাকিস্থান হত কি না সন্দেহ।
পাকিস্থান না হলে স্বাধীন বাংলাদেশও হত না।
জিন্নাহর এটা গুণ ছিল তিনি না বলতে পারতেন যখন প্রয়োজন ছিল।
আপানার সুন্দর ও তথ্যবহুল পোষ্টের জন্য জাজাকাল্লাহু খায়রান।
সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। মানুষ ভুল করবেই কারন সে মানুষ। কিন্তু মানুষের নিয়ত বা উদ্দেশ্যটি দেখতে হবে তার মুল্যায়ন এর জন্য। জিন্নাহ যতদিন জাতিয়তাবাদি ছিলেন সেটাও মানুষের উপকারের উদ্দেশ্যেই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন