গুডবাই ক্রিকেট গুডবাই! আ উইল সি ইউ ইন মাই ড্রিম!!
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ১৯ মার্চ, ২০১৫, ১১:৫১:৪৭ রাত
৯০ এর দশক এর প্রথম দিক পর্যন্ত ক্রিকেট বাংলাদেশে ফুটবলের চেয়ে অনেক কম জনপ্রিয় ছিল। শুধু চট্টগ্রাম ছাড়া অন্য এলাকায় স্কুল বা গলিতে ক্রিকেট এর বেশি প্রচলন ছিলনা। কারন ফুটবলের তুলনায় ক্রিকেট বেশ ব্যয়বহুল খেলা। ঢাকায় নিয়মিত লিগ এর পাশাপাশি চট্টগ্রামে তখন অনুষ্ঠিত হতো ষ্টার সামার ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। খুবই জনপ্রিয় ছিল সেই টুর্নামেন্ট।
ফুটবল বেশি ভাল লাগলেও ক্রিকেট এর প্রতি ছোট বেলা থেকেই প্রধানত আমার আব্বার প্রভাবে আকর্ষন জন্মে। আমার আব্বা পেশাদার না হলেও পাকিস্তান আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর পক্ষে খেলেছেন। ষ্টার সামার ক্রিকেট এর দর্শক হওয়ার অভিজ্ঞতা আমার প্রথম ষ্টেডিয়ামে ক্রিকেট দেখা্। আর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখা ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম ভারত এর এশিয়া কাপ এর ম্যাচ। ১৯৯৩ সালের আসিসি ট্রফির পরই বাংলাদেশে ক্রিকেট বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠে। সেবার বিশ্বকাপ এর মূল পর্বে খেলতে ব্যার্থ হলেও ১৯৯৯ সালে পাকিস্তান কে হারিয়ে বাংলাদেশ এর ক্রিকেট এর অগ্রযাত্রার সূচনা হয়। মাঝে কয়েকবার হোঁচট খেলেও টেষ্ট,ওয়ানডে এবং টি-২০ সব ক্রিকেটেই মোটামুটি একটা অবস্থান এ পৈীছেছে বাংলাদেশ।
কিন্তু বাংলাদেশ বা জিম্বাবুয়ের মত এই দেশগুলির সাফল্যকে যেন বাঁকা চোখে দেখা শুরু হয়ে গিয়েছে। এর পিছনে একটাই কারন তা হলো ক্রিকেটের বানিজ্যিকিকরন। পৃথিবির সকল খেলাই এখন বানিজ্যিক হয়ে উঠলেও ক্রিকেট এর মত এমন খারাপ প্রভাব আরকোন খেলায় পড়েনি। আইসিসি সদস্য দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার অধিকারি ভারত এর জাতিয় খেলা হওয়ায় ক্রিকেট সেখানের মানুষের মধ্যে বিশাল প্রভাব বিস্তার করেছে। এই সুযোগে সেই দেশের কিছু ধনি ব্যাক্তি আইসিএল ও আইপিএল এর নামে কিছু বানিজ্যিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত টুর্নামেন্ট আযোজন করে। এই টূর্নামেন্ট এর কারনে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে অনেক সমস্যা হলেও কেবল বিপুল অর্থ আয় এর সুযোগ এর জন্য আইিসিসি এই বিষয়ে নিশ্চুপ থাকে। ভারতের বিশাল জনসংখ্যা কে তাদের সকল অভাব-অনটন, ক্রমবর্ধমান অপরাধ এবং দেশের মধ্যে চলতে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলার জন্য ভারত সরকারও এই ক্রিকেট উন্মাদনা কে বিশেষ ভাবে সমর্থন করছে। আর এর প্রভাবে এখন ভারত হয়ে গিয়েছে ক্রিকেটের প্রধান পরিচালক দেশ। যদিও ভারত আগে থেকেই ভাল ক্রিকেট খেলত। কিন্তু গত ৪-৫ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে ভারত কে সব খেলায় জিততে হবে এই ধরনের একটি প্রচারনা ভারতিয় মিডিয়া করে আসছে। এই গন উন্মাদনা সৃষ্টি করে ভারতিয় মিডিয়া চাপ সৃষ্টি করছে আইসিসির উপর।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ এর কোয়ার্টার ফাইনাল এর আজকের খেলাটি হওয়ার আগে থেকেই এই নিয়ে একটি প্রশ্ন উঠেছে যে শুধু ভারত কে কিছু সুবিধা দেওয়ার জন্যই আইসিসি এর ভেন্যু ও তারিখ পরিবর্তন করেছিল। সেই সঙ্গে অনেকে এই আশংকা ও পোষন করেছিলেন যে ভারত জয়ি করার জন্য আইসিসি প্রভাব খাটাতে পারে। খেলার বাজে আম্পায়ারিং সেই সন্দেহ কে সত্য বলে প্রমান করছে বলেই অনেকে মনে করছেন।
সব কিছু মিলিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেট আর এর সেই প্রবাদ "ক্রিকেট ইজ এ গেইম অফ গ্লোরিয়াস আনসারটেইনিটি" কে ভুল প্রমানিত করে এখন "সব খেলায় ভারত অবশ্যই জিতবে" এই প্রবাদ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মনে হয়। হয়তোবা জর্জ অরওয়েল এর "অ্যানিমেল ফার্ম" এর স্লোগান এর মত আমরাও কিছুদিন পর এই স্লোগান ই দেব।
"ভারতিয় সব ক্রিকেটে একমাত্র বিজয়ি"
বিঃদ্রঃ খেলাটি এমন হয়েছে যে খেলোয়াড়ি মনোবৃত্তি দেখানর প্রয়োজন বোধ করছি না।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫২ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
সুন্দর উপস্থাপনায় এবং সার্বিক বিশ্লেষণধর্মী অবয়বে মূল্যবান লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার জন্য প্রাণভরা দোয়া ও শুভকামনা থাকলো।
ক্রিকেট ফুটবল কোনটাই আমি বুঝি না! আপনি সঠিক বলেছেন-
খেলাটি এমন হয়েছে যে খেলোয়াড়ি মনোবৃত্তি দেখানর প্রয়োজন বোধ করছি না।
জাযাকাল্লাহু খাইর!
বুঝেন না কেন???? একজন ব্লগার একবার এলবিডব্লিউ কে বিএমডব্লিউ লিখেছিলেন!!!
সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ
যাই হোক সেই ব্লগার আর আমি আমরা প্রিয় বান্ধবী! সেদিনও আমরা এই প্রসংগটি নিয়ে হাসছিলাম! আপনি আবারো আজ মনে করিয়ে দিলেন!
আপনাকেও শুকরিয়া!
অর্থ জরুরি কিন্তু তার জন্য খেলাকে এই ভাবে ধ্বংস করার প্রয়োজন ছিলনা।
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
ভারত নিজেই অসুস্থ এবং ভদ্রলোকের খেলাটাকে তারা আর ভদ্র থাকতে দিল না ।
যতদিন ক্রিকেটে ভারত থাকবে খেলাটা আর ভদ্রলোকের খেলা হিসেবে ফিরে আসবে না ।
ভারতিয় রা ক্রিকেট কে এমন ভাবে নষ্ট করেছে যে এখন তাদের কাছে খেলা থেকে জয় বেশি জরুরি।
ধন্যবাদ মন্তব্্যটির জন্য্।
১৯৯৭ তে বাংলাদেশ যখন আইসিসি ট্রফি জিতে তখন আমি ঘটনাক্রমে কাজীর দেউড়ি গিয়েছিলাম এক আত্মীয়ের বাসায়। বাংলাদেশে দলের ক্যাপ্টেন আকরাম খানদের বাসাও কাজীর দেওড়ীতেই ছিল। ম্যাচ জয়ের পর লোকজন দেখছি দলে দলে মিছিল আর ফুল/রঙ ছিটাতে ছিটাতে আসছে আকরাম খানদের বাসা।
এমন একটি মিছিলের সাথে আমিও গেলাম কৌতুহল আর উত্তেজনা নিয়ে। আকরাম খানের বাসায় গিয়ে তো চোখ ছাড়াবড়া। ওমা! আকরাম খান তো মালয়েশিয়ায়, এখানে কেন? পরে জানলাম তিনি আকরাম খান নন, তার ভাই আকবর খান, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড়। দুজনের একই রকম চেহারা, ফিগার, উচ্চতা।
আকবর খান নয় আপনি দেখেছিলেন মরহুম ইকবাল খান কে। তামিম ইকবাল ও নাফিস ইকবাল এর পিতা। আকবর খান আকরাম খানের ছোটভাই এবং ক্রিকেট খেলতেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন