বালাকোট থেকে পেশওয়ার। রক্ত আর বিশ্বাসঘাতকতা।

লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১১:১১:১১ রাত

ফাটা!!!

শুনলেই মনে হয় ভয়ংকর শব্দ। সেটাই বোমাই ফাটুক বা বল।

কিন্তু এই শব্দটিই একটি এলাকার পরিচয়। আর সত্যিই সে এলাকা এখন এগিয়ে ফাটাফাটিতে!

ফাটা(FATA) অর্থ ফেডারেলি এডমিনিস্ট্রেটেড ট্রাইবাল এরিয়া। এটি পাকিস্তান এর উত্তর-পশ্চিম কোনায় অবস্থিত আফগানিস্তান সিমান্তের একটি অত্যন্ত দুর্গম ভুখন্ড। এই এলাকার অধিবাসিরাই প্রকৃত পাঠান বা পাখতুন। এরা বিভক্ত বিভিন্ন উপজাতি বা গোত্রে। আফ্রিদি,ওরাকজাই,সাদোজাই,মোমন্দ,মাসুদ প্রভৃতি গোত্রে ব্ভিক্ত এই উপজাতিদের খ্যাতি আছে বিরত্বের এবং অথিতিপরায়নতার। এই এলাকায় ই অবস্থিত পৃথিবীর ইতিহাসের এক নিরব সাক্ষি খাইবার গিরিপথ। যা এশিয়ার অন্য এলাকা থেকে ভারতিয় উপমহাদেশে প্রবেশ করার একমাত্র স্থলপথ ছিল গত শতাব্দির শুরু পর্যন্ত। এই এলাকার এই সরল মুসলিম মানুষেরা আজকে মুখোমুখি বিভিন্ন সমস্যার। একদিকে তালেবান নাম নিয়ে কিছু উগ্র মানুষের বিদ্রোহ অন্যদিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনি এবং আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ড্রোন হামলায় তারা হারাচ্ছে তাদের জিবন এবং সম্পদ।

দশ হাজার বর্গমাইল আয়তন এর এই অঞ্চলটির বর্তমান জনসংখ্যা ত্রিশ লাখের বেশি। এই অঞ্চলটি পাকিস্তান এর কেন্দ্রিয় সরকার সরাসরি নিয়ন্ত্রন করে। এখানে নিজস্ব কোন নির্বাচিত স্থানিয় কর্তৃপক্ষ নাই। প্রত্যেকটি গোত্র স্বাধিনভাবে নিজস্ব বিচার ও শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতে পারে। শুধু শহর অঞ্চলগুলিতে কেন্দ্রিয় শাসন চলে। এই নিয়ম বৃটিশ আমল থেকেই চলে আসছে। সাইয়েদ আহমদ বেরিলভির আন্দোলন এই অঞ্চল কে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল। কিন্তু শিখদের হাতে বালাকোট এ তার শাহদাতের জন্য এই অঞ্চলের কিছু গোত্রিয় প্রধান ও দায়ি ছিলেন। যারা তাকে সহায়তার কথা দিয়েও রাখেনি। ১৮৬১ সালে শেষ পাঞ্জাবি রাজা দিলিপ সিং এর হাত থেকে এই অঞ্চল এর নিয়ন্ত্রন নেয় বৃটিশরা।

কিন্তু স্থানিয় সায়ত্বশাসন দিয়ে তারা তাদের প্রধান লক্ষ আফগানিস্তান এর দিকে বেশি নজর দেয়। তখন একটা কথা প্রচলিত ছিল যে পেশোয়ার থেকে খাইবার পাশ এর রাস্তা বৃটিশ দের কিন্তু দুইপাশের জমি পাঠানদের। এখানে গোত্রিয় দন্দ্ব ছিল পূর্ব থেকেই। বৃটিশরা সেই দন্দ্ব কে জিউয়ে রাখে নিজেদের স্বার্থেই। স্থানিয় নিরাপত্তা এবং আফগান সিমান্ত রক্ষায় বৃটিশ সরকার স্থানিয় লোকদের নিয়ে কয়েকটি আধা-সামরিক বাহিনি গঠন করে। যার মধ্যে ছিল বিখ্যাত খাইবার রাইফেলস,মাসুদ রাইফেলস,থাল স্কাউট, তোচি স্কাউট,বাজাউর স্কাউট প্রভৃতি। এই ভাবে তাদের মধ্যে এক হওয়ার প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে রাখত তারা। এমনকি এই এলাকার যারা নিয়মিত সামরিক বাহিনিতে ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্ট এ নিয়োজিত থাকত তাদেরও গোত্র ভিত্তিক কোম্পানিতে বিভক্ত রাখা হতো। এই অঞ্চলে শিক্ষার ব্যাবস্থা প্রায় ছিলইনা। কেউ কেউ উচ্চতর ইসলামি শিক্ষা অর্জনে কাবুল কিংবা পেশোয়ার সর্বোচ্চ দেওবন্দ যেতেন কিন্ত স্থানিয় ভাবে বিশেষ কোন সাধারন বা ধর্মিয় শিক্ষার ব্যবস্থাও ছিলনা। বর্তমান পাকিস্তান এর খাইবার-পাখতুনওয়ালা প্রদেশ সহ এই এলাকা তখন বৃটিশ নর্থ ওয়েষ্টার্ন ফ্রন্টিয়ার এজেন্সি নামক সংস্থা নিয়ন্ত্রন করত। প্রত্যেকটি উপজাতির সাথে একজন বৃটিশ রেসিডেন্ট বা স্থায়ি প্রতিনিধি বৃটিশ স্বার্থ দেখতেন এবং তিনিই মূলত তাদের রাজনিতি পরিচালনা করতেন। স্থানিয় সমস্যা ও সামাজিক কাজ পরিচালনা করতেন গোত্রিয় সর্দার বা মালিক রা। ছিল পাঠানদের এতিহ্যবাহি পার্লামেন্ট বা লয়া জির্গা। যখন উপমহাদেশে বৃটিশ বিরোধি আন্দোলন বিশেষ গতি লাভ করে তখন এই এলাকার নেতা হিসেবে আবির্ভুত হন খান আবদুল গাফফার খান বা বাদশাহ খান। "সিমান্ত গান্ধি" নামে পরিচিত এই নেতা ছিলেন চরম পাকিস্তান বিরোধি এবং ভারতিয় জাতিয়তাবাদে বিশেষ ভাবে উদ্বুদ্ধ। তিনি ভারতিয় জাতিয় কংগ্রেস এর অন্যতম নেতা ছিলেন। ১৯৩৭ সালের ভারত শাসন আইনে বিভিন্ন প্রদেশের মত নর্থ ওয়েষ্টার্ন ফ্রন্টিয়ার এজেন্সির অধিনস্ত অঞ্চল এর বেশিরভাগ নিয়ে নর্থ ওয়েষ্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স গঠিত হয় এবং এখানে প্রাদেশিক নির্বাচন হয়।কিন্তু এই অঞ্চলটিকে এই নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়। ১৯৪৬ সালে কেবিনেট মিশন পরিকল্পনা যখন বাতিল হয়ে পাকিস্তান নিম্চিত হয় তখন খান আবদুল গাফফার খান এই প্রদেশে গনভোটের দাবির তিব্র বিরোধিতা করেন। কিন্তু তথাপি গনভোটে পাকিস্তান অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়। এই সময় ভারতিয় জাতিয়তাবাদি নেতা গাফফার খান হঠাত করেই পাঠান জাতিয়তাবাদি বনে যান! তার চেষ্টায় আফগানিস্থান এর তৎকালিন বাদশাহ জহির শাহ এই এলাকা আফগানিস্তান এর অন্তর্ভুক্ত করা চেষ্টা করেন। এই অবস্থায় নবগঠিত পাকিস্তান সরকার এখানে বৃটিশ নিয়ম বজায় রাখতে বাধ্য হয়। আফগানিস্থান এর সাথে পাকিস্তান এর এই সিমান্ত বিরোধ প্রায় ১৯৫৭ পর্যন্ত চলে। গাফফার খান এই সময় পাকিস্তানে বিরোধি দলিয় নেতা হিসেবে আবির্ভুত হন। তিনি ১৯৮৮ সালে ইন্তেকাল করেন।

১৯৭৮ সালে শুরু হয় এই অঞ্চল এর নতুন সংঘাত এর ইতিহাস। এর সিমান্তবর্তি আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করে কমিউনিষ্ট পার্টি এবং সেখানে প্রবেশ করে সোভিয়েট সৈনিক। তাদের অত্যাচারে আফগানিস্থান থেকে পালিয়ে আসে কয়েক লক্ষ উদ্বাস্তু আফগান। স্নায়ু যুদ্ধের একটি প্রক্সি যুদ্ধ শুরু হয় এই অঞ্চলে একদিকে আফগান মুজাহিদ অন্যদিকে সোভিয়েট ও অাফগান সরকারি সৈনিকরা। কমিউনিজম এর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপি বিরোধিতার অংশ হিসেবে মুজাহিদদের সহায়তা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সাথে যোগ দেয় বিভিন্ন মুসলিম দেশের মুজাহিদরা। প্রায় ১৫ বছর এর সংগ্রাম শেষে আফগান মুজাহিদ রা জয়লাভ করলেও তাদের মধ্যে শুরু হয় ক্ষমতার দন্দ্ব আফগানিস্তানে এই অবস্থায় একটি নতুন গ্রুপ তালেবান এর সৃষ্টি হয়। এ্ই গ্রুপটি উত্তর আফগানিস্তান এর তাজিক ও উজবেগ অধ্যুষিত এলাকা ছাড়া অবশিষ্ট এলাকার নিয়ন্ত্রন নেয়। প্রাথমিক ভাবে এদের প্রধান পৃষ্টপোষক ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

২০০০ সালের বিখ্যাত সেই টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর যুক্তরাষ্ট্র ওসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানে আছেন এই অযুহাতে আক্রমন করে। এই সময় পাকিস্তানে ক্ষমতায় ছিলেন সেনা শাসক পারভেজ মুশারফ। জনসমর্থনহিন এ্ই শাসক তাদেরকে বিশেষ সহায়তা করেন। আফগানিস্থান দখল করলেও বিশেষ কারনেই পাকিস্তানে সরাসরি প্রবেশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। পরাজিত তালেবান এর অনেকেই পাকিস্তানের এই অঞ্চলে তাদের গোত্রিয় ভাইদের কাছে আশ্রয় পায়।

এই সময়ই এখানে কিছু গ্রুপ গড়ে উঠে। যারা তালেবান নাম নিলেও প্রকৃত আফগান তালেবান দের সাথে তাদের বিশেষ কোন সম্পর্ক ছিলনা। ২০০১ সালেই প্রথম ফ্রন্টিয়ার কোর এবং সিমান্ত নিরাপত্তার বাইরে পাকিস্তান সেনাবাহিনি এখানে প্রবেশ করে। এ্কই সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনি এবং মার্কিন ড্রোন বা দুর নিয়ন্ত্রনিত পাইলট বিহিন বিমান এর সাহাজ্যে বোমা ও মিজাইল আক্রমনে এই এলাকার মানুষগুলি পতিত হয় প্রচন্ড দুর্দশায়। অসংখ্য নারি ও শিশু সহ প্রায় ৫০০০০ মানুষ এ পর্যন্ত প্রান হারিয়েছে বলে অনুমান করা হয়।

কিন্তু এই এলাকার তথাকথিত সন্ত্রাসি বা তালেবান দের প্রকৃত পরিচয় নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আফগানিস্থান এর তালেবান সরকার কে যে তিনটি দেশ স্বিকৃতি দিয়েছিল তার একটি পাকিস্তান। পাকিস্তান সেনাবাহিনির সাথেও এই তালেবান দের সম্পর্ক ভাল ছিল। এছাড়া আফগান তালেবানদের দৃষ্টি শুধু আফগানিস্থানেই সিমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু পাকিস্তান যেখানে একটি নির্বাচিত সরকার আছে এবং এর শাসকরাও নাম মাত্র হলেও মুসলিম যেখানে অন্ততপক্ষে ইসলাম প্রচারে বাধা সৃষ্টি করা হয়না সেখানে কেন এদের ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য অস্ত্র হাতে নিতে হলো এটি একটি বড় প্রশ্ন। এদের সন্ত্রাস এর শুরু ২০০২ সালের মে মাসে পাকিস্তান নেীবাহিনির সাবমেরিন প্রকল্পে কর্মরত ফরাসি বিশেষজ্ঞদের করাচিতে বোমাবিস্ফোরন এ হত্যার মাধ্যমে। ২০০৭ সালে করাচিতেই বেনজির ভুট্টোর সমাবেশে বোমা হামলায় ১৩৯ হত্যা ছিল আরেকটি ঘটনা। এছাড়া পাকিস্তান নেীবাহিনির বিশেষায়িত অস্ত্র নির্মান কারখানা ধ্বংস করার চেষ্টা, শ্রিলংকা ক্রিকেট দলের বাসে বোমা হামলা, পাকিস্তান বিমান বাহিনির রাডার বেস এ হামলা চালানর চেষ্টা ইত্যাদি দেখে এদের প্রকৃত উদ্দেশ্য ও লক্ষের ব্যাপারে সন্দেহ সৃস্টি করে। এরা যা করছে সেটাতো পাকিস্তান সেনাবাহিনিকে আধুনিক প্রযুক্তি থেকে বঞ্চিত এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে পাকিস্তান কে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা। এটাতো ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নেয়া কিংবা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা হতে পারেনা।

সর্বশেষ গত ১৬ ই ডিসেম্বর পেশোয়ার এর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এ ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনা এটি প্রমান করে যে এরা ইসলাম এর পক্ষে কোন ভাবেই লড়ছে না। নিরিহ নিরস্ত্র অল্প বয়সি স্কুল ছাত্র-ছাত্রি ও শিক্ষকদের হত্যা কোন ভাবেই সমর্থন করা যায়না। তারা দাবি করছে তারা নাকি তাদের উপর চলা অত্যাচারের প্রতিশোধ এবং পাক সেনাবাহিনিকে শিক্ষা দিতেই এই কাজ করেছে। কিন্তু এই নিরিহ ছাত্ররা তাদের উপর কি অত্যাচার করেছে? যদি তাদের পিতারা সেই অত্যাচার করেও থাকে তার জন্য তাদের কি দায়ি করা যায়?

এই জঘন্য কর্ম কোন যুক্তিতেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাদের আরেক দাবি যে এই স্কুল এর ছাত্ররা নাকি সবাই পরে সামরিক অফিসার হবে সেটা অতিশয় হাস্যকর! এ যেন অপরাধ এর আগেই শাস্তি। এভাবে যারা পাকিস্তান কে অস্থিতিশিল করছে তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য কি সেটা এখনও পরিস্কার না হলেও এই বিষয়ে নিশ্চিত বলা যায় যে এরা ইসলামের পক্ষের কেউ নয়।

বরং একটি মুসলিম রাষ্ট্রকে উন্নত প্রযুক্তি অর্জন এ বাধা দিয়ে এবং নিরিহ শিশুদের হত্যার মাধ্যমে তারা তাদের কাপুরুষ এবং ষড়যন্ত্রি হিসেবেই উপস্থাপন করছে।

বিষয়: বিবিধ

২০৮৩ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

295598
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৩২
আফরা লিখেছেন : এটা ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে সুগভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয় এরকম জগন্য কাজ ইসলামের পক্ষের কেউ করতে পারে না ।

ভাইয়া আপনার লেখা গুলো আমার কাছে অনেক ভাল লাগে কারন আপনার লেখা গুলো অনেক তথ্য সমৃদ্ধ থাকে আমি জানি না এমন অনেক কিছু জানতে পারি ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৫০
239178
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শতভাগ সহমত।
কোন মুসলিম এই রকম হত্যাকান্ড করতে বা সমর্থন করতে পারেনা। যারা এই কাজ করেছে তাদের উদ্দেশ্য ইসলামের কল্যান নয়।
সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
295615
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৩৬
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : গতকাল থেকে এত খারাপ লাগছে টিভিতে খবরটা দেখে! এক্সট্রিমিস্ট সব ধর্মে আছে কিন্তু মুসলমানদের ঘটনাগুলো হাইলাইট করা হয় বেশি। কিছুদিন আগে আমেরিকার এক স্কুলেও এমন ঘটনা ঘটে গেল। শিশুদের কেন টার্গেট করা হয় বুঝিনা। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৫২
239179
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ঠিকই বলেছেন। এই ধরনের শিশু জিম্মি বা হত্যাকান্ড মাসখানেক আগেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটেছে। কোন মুসলিম দেশে হলে কিন্তু তা নিয়ে বেশি প্রচারনা হয়। যারা এই কাজ করেছে তারা আদেী মুসলিম কিনা সেটাও সন্দেহ রয়েছে।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
295617
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৪০
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনি লিখেছেন :
”এই জঘন্য কর্ম কোন যুক্তিতেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাদের আরেক দাবি যে এই স্কুল এর ছাত্ররা নাকি সবাই পরে সামরিক অফিসার হবে সেটা অতিশয় হাস্যকর! এ যেন অপরাধ এর আগেই শাস্তি। এভাবে যারা পাকিস্তান কে অস্থিতিশিল করছে তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য কি সেটা এখনও পরিস্কার না হলেও এই বিষয়ে নিশ্চিত বলা যায় যে এরা ইসলামের পক্ষের কেউ নয়। “

আপনার এই কথা পড়ে হাসলাম । বাস্তব অবস্হা হলো : এরা সবাই সহিহ মুসলিম । তাদের ভাষায় আমরা তাগুত বা মডারেট মুসলিম । ফেসবুকেই দেখলাম তাদের বাংলাদেশি প্রচারকরা এসব বলছেন ।


কিছু মনে করবেন না । দয়া করে বলবেন কি :

১। ইসলাম প্রতিশোধপ্রবণ হওয়ার শিক্ষা দেয় কি ?

২। ইসলাম প্রতিশোধ নেওয়ার বিষয়টাকে ইতিবাচক হিসেবে নিতে শিক্ষা দেয় কি ? না নেতিবাচকভাবে ?

৩। ইসলাম শব্দের অর্থ কি ? ইসলাম শব্দের অর্থ যদি আত্মসমর্পণ করাও হয়, তাহলে যার উপর আত্মসম্পর্ণ করার কথা বলা হয় তিনি কি ইসলাম পছন্দ লোকদের এমন প্রতিশোধপরায়ণ হতে বলেছেন না তার বার্তাবাহককে বলেছেন ?




দেখুন, প্রতিশোধ নিয়ে কেহ মহৎ হতে পারে না ।

আমার এক ভাই মারা যাওয়ার কারণ আমি দেড় বছর পর জানতে পারি । আমি এই ব্যাপারটা বাড়িতে বলি । আমার এই কথা শুনে আমার বাবা বলেন আমি জানতাম । আমরা অবাক হলাম ।

ব্যাপারটা আমি ফেসবুকের গ্রপ Justice For Dr. Shamarukh Mahjabin এ তুলে ধরেছিলাম আর একটা স্যাটাসেও তুলে ধরেছিলাম । আমি বলেছিলাম :
” ফেসবুক অনেক সময় সত্য কথাকে প্রকাশ করে দেয় । আমার এক ভাই ছিল ডাক্তার । এফসিপিএস ফাস্ট পার্ট শেষ করেছিলো আটাশ বছর বয়সে । বিএসএস পরীক্ষার মৌখিক অংশটা সে দিয়ে যেতে পারেনি । কারণ তার কয়েক দিন আগে সে মারা যায় কক্সবাজারে ।

তার মৃত্যুর সময় ও মৃত্যুর কারণ বন্ধুদের কাছ হতে যা আমরা জেনেছিলাম তা পরে আমার অনুসন্ধানে ভুল প্রমাণিত হয় ।

তার মৃত্যুর কারণ ফেসবুকে জানলাম প্রায় দেড় বছর পর । কিন্তু যখন জানলাম তখন আমাদের কিছুই করার ছিল না ।


আমি আমার ফেসবুকের তরুণ বন্ধুদের অনুরোদ করছি :

১. বন্ধুদের সাথে চলাফেরা করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন ।
২. বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা হলো সবচেয়ে কাছের বন্ধু । তাদের সাথে সব বিষয় শেয়ার করুন ।
৩. অন্য ধর্মের লোক এবং অসম্ভব আদর্শ ধারণকারী লোকদের হতে দুরে থাকুন । কারণ তাদের সাথে সামান্য মত-পার্থক্যই আপনার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটতে পারে ।
৪. আপনি আপনার বিপরীত লিঙ্গের ফ্রেন্ডদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন । তারা আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে । উপরন্তু এধরণের সম্পর্কের কোন দায়িত্ববোধ নেই এবং বৈধতার দিক থেকেও দুর্বল । ”





আপনাদের বলছি :
১। আমরা মুসলিম । ইসলাম ধর্মের লোকদের সংখ্যা পৃথিবীতে ক্রমবর্ধমান । এক সময় ইসলাম ধর্মের লোকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে । অমুসলিমরা আমাদের সব কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গিকে নিরীক্ষণের দৃষ্টিতে দেখে । তাদের কিছু অংশ সন্দেহ ও প্রতিপক্ষ ভেবে সব কিছু বিচার করে ।

২। আমরা সব কিছুই শান্তিপূর্ণপন্হায় করতে পারি । শান্তিপূর্ণপন্হায় যা কিছু করা হোক না কেন তাতে সবারই সমর্থন থাকে ।

৩। বাংলাদেশে ইসলাম অশান্তির মাধ্যমে আসেনি । শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলাম এসেছে । ১৩০৩ সালে শাহজালাল রহ অত্যাচারীদের অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়ন দুর করার জন্য বাংলাদেশের এক কোনায় এসেছিলেন । .. তার পরের ইতিহাস আমাদের জানা । আমরা কি এসব ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবো না ।


আমাদের অবশ্যই তালেবান-আল কায়দা - আই এস - বোকো হারাম - আহলে হাদিস .. ইত্যাদি ইত্যাদি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হতে ‍দুরে থাকতে হবে । এব্যাপারে সহিহ হাদিস পর্যন্ত রয়েছে । তাতে বলা হয়েছে যে পূর্ব দেশ হতে এক দল লোক উদয় হবে তাদের দেখে চরম পরহেজগার মনে হবে , তাদের পরহেজগারী বা কুুরআন তেলোয়াত.. ইত্যাদি ইত্যাদি তাদের গলার নিচে নামবে না । আর এই হাদিসটাতে আমাদের এসব দল হতে দুরে থাকার উপদেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের লোকদের হত্যা করার নির্দেশ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে । আমরা তাদের হত্যা করবো কি - তারাই আমাদের অস্তিত্ব ও সম্মানের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে ।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৫৩
239180
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : তারা যে সহিহ না সেটা তারা তাদের কর্ম দিয়েই প্রমান করেছে। যেমন আপনিও সেটা প্রমান করেছেন উদ্ভট পোষ্ট দিয়ে!!!
295670
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৩৯
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : আল্লাহ প্রত্যেককে তার কর্মফল দিবেন। তবে দুর থেকে কোন পক্ষ অবলম্বন করা ঠিক হবে না মনে হয়। ধন্যবাদ।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৫৪
239182
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : দূর থেকে পক্ষাবলম্বন নয় কিন্তু ঘটনার বিশ্লেষন করা সম্ভব। এটিকে কোনভাবেই সমর্থন করা যায়না।
ধন্যবাদ।
295749
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৫
হতভাগা লিখেছেন : শিশুদের উপরই কি এখন সন্ত্রাসীরা তাদের পাশা ফেলছে ? আজ অস্ট্রেলিয়াতে ৮ জন শিশুকে খুন করা হয়েছে যাদের বয়স ১৫ মাস থেকে ১৮ বছরের মধ্যে । এবং এই ৮ জনই একই পরিবারের।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৩৪
239291
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ঘটনাটি সম্পর্কে কিছু জানিনা তাই বলতে পারছিনা।
শিশুদের টার্গেট করা সন্ত্রাসিদের জন্য সহজ কারন তারা প্রতিরোধ করতে পারেনা।
অনেক ধন্যবাদ।
295771
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২১
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম!

ইতালীর জাতীয় পত্রিকায় প্রথম পতায় শিরোনামতা এসেছিলো এভাবে- তালেবানদের হাতে পাকিস্থান মুসলিমশিশু হত্যা এতো খারাপ লেগেছিলো পড়ে! মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয় কিন্তু যখন নিরীহ শিশুদের হত্যা করে সব মানুষদের ইসলামের বিরুদ্ধে অন্ধ বিশ্বাস ঢুকানো হয় তখন খারাপ লাগে!

তথ্যভিত্তিক পোস্টটির জন্য আন্তরিক শুকরিয়া! Good Luck Angel Praying
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৩৬
239292
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
মুসলিম শিশুদের হত্যা করে কেউ কিভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারে!! এটা পশ্চিমা প্রচারনাকেই শক্তিশালি করছে।
295772
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৫
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : রিদওয়ান কবির সবুজ ভাইয়া, প্রথমত আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, একটি যৌক্তিক এবং জ্ঞাবগর্ব পোস্ট লেখার জন্য। যেটা আমার সামনে অনেক গুলো সত্য উম্মচিত করেছে। আপনার সাথে একমত হয়ে আমার দুটো পয়েন্ট উল্লেখ করলাম।

৭ম শতকে মুসলমানরা যখন দুর্বার গতিতে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। ঠিক তখন কিছু নামদারি মুসলমান( আসলে মুনাফেক) সেটার লাগাম টেনে ধরেছিল। এর পর ১৪০০ সালের দিকে কিছু মুনাফেকের জন্য ইউরোপে মুসলমানদে রেনেসাঁর সূর্য অকালে অস্তমিত হয়ে যায়।
আজ আবারও, যখন ইউরোপ জুড়ে মুসলমানদের রেনেসাঁর সোনালী সূর্য উদিত হয়ার সন্ধিক্ষণে, ঠিক তখন চরমপন্থি SISI এবং তালেবান নামক কিছু গোষ্ঠী নিজেদের অজান্তেই, কাফেরদের হাতের কিড়ণক হিসাবে কাজ করছে। রুখে দিচ্ছে ইসলামের বিজয়।
১/১১ যতই না ক্ষতিকর ছিল তার চেয়েও ১০ গুণ দেশি উপকার করেছে। কিন্তূ সিসি এবং তালেবানদের এই সব আত্নঘাতি কর্ম কান্ড তার চেয়েও বেশি ক্ষতি করছে। সেনা ক্যাম্পের ভিতরেই যখন ডুকতে পেরেচ, তখন নিষ্পাপ শিশুদে না মেরে, পারলে আমেরিকান সেনাদের উপর হামলা করতে পারতে। সেটাই হত বীরপুরুষের কাজ কিন্তু তা না করে কাপুরুষের মত নিরীহ শিশুদের ------ ছি ছি ছি----- তোমাদের মুসলমান বলতে আমার আপত্তি আছে।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৩৯
239296
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার শিক্ষনিয় মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। আইসিস ও পাক-তালেবান এর পিছনে আসলে আছে পশ্চিমা ষড়যন্ত্র। কারন এদের উদ্দেশ্য ও আদর্শ কোনটা পরিস্কার নয়। বোমা বিস্ফোরন কিংবা এভাবে শিশু হত্যার মত কাপুরষচিত কাজ কিন্তু তাদের খারাপ উদ্দেশ্যকেই প্রমান করে।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১১:২০
239302
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : এই বছর ফিলিস্তিনের গাজায়, ইসরাইল যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল। তাতে পুরা পৃথিবী জুড়ে নিন্দার ঝর উঠেছিল। এবং এতে সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ হয়েছিল ইউরোপ, আমেরিকায় জুড়ে। এমনকি হলিউডের নায়ক-নায়কিরা পর্যন্ত এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আমার হিসাবে গাজাতে জিহাদ মুসলমান হিসাবে আমাদের কর্তব্য ছিল। সেখানে এই গাজা ইস্যুতে তথাকথিত আইএসআইএস বা তালেবানরা মৃত ব্যাক্তির ভূমিকায় ছিল। তখন কেন জিহাদের ডাক আসে নাই?? তখন কেন রক্ত ঠাণ্ডা হয়েছিল?? এটাকি প্রমান করে না ?? এটা কি প্রমানের জন্য যথেষ্ট নয়!! যেখানে হিসবুল্লাহরা শিয়া সুন্নি মতবেদ ভুলে গাজার পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছিল। সেখানে তোমার সুন্নি হয়েও চুপচাপ বাঁশি বাজাচ্ছিলা কি কারনে ?? ধন্যবাদ রিদওয়ান কবির সবুজ ভাইয়া।
295774
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৭
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : এই বিষয়ে নিশ্চিত বলা যায় যে এরা ইসলামের পক্ষের কেউ নয়। ১০০ ভাগ একমত।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৩৯
239297
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ১০০% সহমত।
296020
২০ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২১
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ভাইয়া আপনার লিখাটা মনযোগ দিয়ে পড়লাম, অনেক ভাল লাগলো, আপনি সঠিক পরিচয় টাই তুলে ধরেছেন, যার অনেক কিছুই আমার জানা ছিল না।ধন্যবাদ আপনাকে।
২০ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৪
239533
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১০
296090
২১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:২১
আয়নাশাহ লিখেছেন : ধারাবাহিক ইতিহাস বর্ণনা করে ঐ অঞ্চলের বাস্তবতা তুলে ধরছেন। খুঁটিনাটি জানার আগ্রহ ছিল, তা জানলাম। ধন্যবাদ।
তবে আমার ধারনা, একমাত্র মুসলিম দেশ যাদের হাতে পারমানবিক শক্তি রয়েছে, তাদেরকে শেষ করে দিতে সারা দুনিয়া ঐক্যবদ্ধ ষড়যন্ত্রে মেতেছে আর মাথা মোটা ইস্লামিস্টারা তাদের হয়ে খেলছে। এজন্য সারা মুসলিম জাহানকে পস্তাতে হবে।
আল্লাহ সহায় হোন।
২১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:২৪
239616
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
আপনার ধারনার সাথে একমত। সেনাবাহিনি যতই ইসলাম বিরোধি হোক পাকিস্তানে ইসলামি আন্দোলন স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। এই ধরনের হামলাকারিরা ইসলামের পক্ষে নয়।
১১
296266
২১ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪২
আবু আশফাক লিখেছেন : খুঁটিনাটি অনেক কিছু জানলাম। শেষোক্ত মন্তব্যটিও ভালো লাগলো। জাযাকাল্লাহ খাইরান ফিদদুনিয়া ওয়া আখেরাহ।
২১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৪৯
239780
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File