শৈশব!! স্মৃতিতে ফিরে আসে বারবার।
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৮:২১:৩০ রাত
শৈশব! শব্দটা মনে আসলে বা চোখে পড়লে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েননা এমন মানুষ কেউ যদি থেকে থাকেন তবে তিনি মানুষ নামের অনুপযুক্ত। শৈশব কে মনে পড়ে সততঃ । বিশেষ করে যখন এই সময় এর শিশুদের দেখি বদ্ধ ঘরে একাকি শৈশবে।
আমার জন্ম ও বেড়ে উঠা শহরেই। তবে সেই সময় এর শহর আর গ্রামের পার্থক্য অন্তত সামাজিক ক্ষেত্রে বেশি ছিলনা। সেই সময় চট্টগ্রাম শহর যথেষ্ট আধুনিক ছিল কিন্তু যা ছিলনা আধুনিকতার বাড়াবাড়ি। আমাদের বাসাটাও ছিল অনেকটা গ্রামের মত। সামনের কয়েকটি ইটের দেয়াল দেয়া টিনের চালা। আর কিছু বেড়ার ঘর টিনের চাল। পাকঘর, বাথরুম, টয়লেট সব আলাদা। ছিল আমগাছ। কাঁঠাল, সুপারি, নারিকেল,পেয়ারা এর সাথে বেলি,কামিনি,গোলাপ ফুল গাছ ও ছিল। সত্যিই হাইস্কুলে উঠার আগে কখনও ডাব বা নারিকেল কিনে খাইনি। আম অবশ্য কিনতে হতো কারন বাসার গাছের আমগুলি ছিল টক জাতের। তবে এগুলি দিয়ে হতো উন্নতমানের আমসত্ব! বাসায় তখন শিশু বলতে আমি আর আমার বড় ভাই। চাচাদের মধ্যে কেবল একজনের বিয়ে হয়েছে। আমাদের বাসা টা ছিল একই সিমানার মধ্যে আমার দাদাদের দুই ভাই এর ভিন্ন সংসার। রান্নাবান্না আলাদা হলেও কখনও মনে হয়নি আমরা আলাদা। মনে হতো ঘরভর্তি মানুষ। আমার দাদা ছিলেন সেই আমলের একজন গ্র্যাজুয়েট। প্রথমে কিছুদিন স্কুল শিক্ষক থাকলেও বেশিরভাগ সময় চাকুরি করেছেন সেই সময় এর একটি মার্চেন্ট অফিস এ। যাকে আজকের দিনে বলা হয় মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি। কোম্পানি টি এখনও আছে। দাদার ছিল বই পড়ার বাতিক। আর তার বিরাট বই-পত্রিকার এর সংগ্রহ কেন যেন আমাকে বেশ আকর্ষন করত। কলকাতার দেশ পত্রিকা তখন সাপ্তাহিক। সেখানে প্রকাশিত হতো লি ফক এর ফ্যান্টম কমিকস এর বাংলা অনুবাদ অরন্যদেব। স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরই বানান করে ”অরন্যদেব” পড়া দিয়েই আমার বাংলা পড়া শুরু। আরবি শিক্ষা অবশ্য শুরু হয়েছিল আগেই। স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় বাসায় বড় ভাই ছাড়াও ছিলেন দুই ফুপাত ভাইবোন। সবাই মিলে খেলাধুলা করাই ছিল নিয়মিত বিকালের রুটিন। সেটা গোল্লাছুট থেকে ক্রিকেট সবই। স্কুল ছিল সকাল দশটা থেকে একটা। ক্লাস থ্রি থেকে চারটা পর্যন্ত। সকালে উঠে নাস্তা খেয়ে প্রথমে আরবি পড়া তারপর স্কুলের পড়া সামান্য পড়েই স্কুলে যাওয়া। স্কুল থেকে ফিরেই নাস্তা খেয়ে খেলা। মাগরিব এর পর পড়াশুনা শেষে ভাত খেয়ে টিভি দেখা বা গল্পের বই পড়া। তারপর ঘুম। অনিয়মিত ভাবে নামাজ পরতাম। সাধারনত দাদির সাথে। সরল রুটিন। আমরা যদিও খুব ধনি কখনই ছিলামনা কিন্তু প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগামি ছিলাম সবসময়। ১৯৮৬ সালেই আমাদের বাসায় ২১ ইঞ্চি রঙ্গিন টেলিভিশন এবং ডাবল ক্যাসেট সেট ছিল। তবে টেলিভিশন নিয়ে খুব আকর্ষন ছিলনা কখনও। কেবল বিকাল বেলা কার্টুন ছবি আর বুধবার রাত্রের ইংরেজি ধারাবাহিক দেখা ছাড়া। নাইট রাইডার,দ্য এ টিম, দ্য ফলগাই, বায়োনিক ওম্যান,লিটল হাউজ অন দ্য প্রেয়ারি, এলিয়াস স্মিথ এন্ড জোন্স, কেরামবোর্ড ডাবলডেকার,এয়ার উলফ, স্টারট্র্যাক, ব্যাটলস্টার গ্যালাকটিকা সিরিজগুলি আকর্ষন করত প্রচন্ডভাবে। তবে যেটা সবচেয়ে মনে দাগ কেটেছিল সেটা আরো বড় হলে ম্যাকগাইভার! এখনও সেই সিরিজটার সিডি পেলে দেখি। স্টারট্র্যাক বা ব্যাটল স্টার গ্যালাকটিকাও এখন দেখি নতুন চোখে। তখন বুঝিনি অনেক কিছুই তবে রস আহরনে সমস্যা ছিলনা। তখন প্রতি সপ্তাহে মুভি অফ দ্য উইক নামে ইংরেজি ছায়াছবি প্রচার করত বিটিভি। আমার আব্বা কখনও কখনও দেখতে বলতেন সেই ছবি। মনে আছে সেখানে দেখেছিলাম দ্য লংগেষ্ট ডে, গান্স অফ নাভারন, এরাউন্ড দ্য ওয়ার্লড ইন এইটি ডেইজ,রোমান হলিডে বা দ্য বার্ডস এর মত ছবিগুলি। আব্বার তত্বাবধানে দেখা এই ভাল ছবিগুলি পরবর্তিতে মুভি সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বনে সাহাজ্য করেছিল। বাংলা ছবিও দেখেছিলাম কিছু। হিন্দি ছবির মধ্যে মনে আছে সুনিল দত্ত এর ”দর্দ কা রিশতা” ছবিটির কথা। এটি দেখেছিলাম হলে। নাটক এর মধ্যে যেটি সবচেয়ে প্রভাব বিস্তার করেছিল মনে সেটি হুমায়ুন আহমদ এর "এইসব দিনরাত্রি"”। এই একটি টিভি নাটকই ছিল হুমায়ুন আহমদ এর জন্য ভিনি,ভিসি,ভিডি! হুমায়ুন আহমদ এই নাটকটির মাধ্যমেই বাংলাদেশের ঘরে ঘরে হয়ে উঠেছিলেন পরিচিত। তারই ”বহুব্রিহি” ছাড়া আর কোন নাটকই আমার বিশেষ ভাল লাগেনি এরপর। আরেকটি নাটকের কথা মনে আছে সেটা হলো আশকার ইবনে শাইখ এর "কন্যা,জায়া,জননি" । এই নাটকটি ছিল ইতিহাস ভিত্তিক। এটা মুলত বড়দের হলেও ভাল লাগত কারন দাদার দেওয়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর কার্টুন বইগুলির সাথে এই সিরিজটির বেশ মিল ছিল। জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ছিল তখন ফজলে লোহানির ”যদি কিছু মনে না করেন”। তার ”কইন্চেন দেহি”অংশটি সবচেয়ে আকর্ষন করত। এর একটি পর্বের কথা বিশেষ ভাবে মনে আছে। সেই পর্বটি ছিল ফিলিস্তিন এর উপর। মনে আছে সেই পর্বটি শুরু হয়েছিল উদ্বাস্তু শিবিরে ফিলিস্তিনি শিশুদের স্কুল দেখিয়ে। যেখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি তারা সামরিক প্রশিক্ষন ও নিচ্ছিল। শৈশবের সেই ফিলিস্তিন এখন মধ্যযেীবনেও রয়ে গেছে আগের মতই। যেখানে প্রতিটি শিশু বর্নপরিচয় এর সাথেই পরিচিত হয় অস্ত্র আর অত্যাচার এর সাথে। মনে আছে সেই পর্বটির শেষে হানিফ সংকেত এর কন্ঠে একটি গান ছিল। ”ফিলিস্তিন আহা ফিলিস্তিন”।
আমার আব্বা-আম্মা ই যদিও দেখাশুনা করতেন আমাদের তবে কখনই তাদের জন্য বেশি কাতর হইনি। দাদা-দাদির কাছে বা চাচিদের কাছে আমাদের রেখে তারা বেড়াতে যেতেন। তারা আছেন কি নাই সে চিন্তাও মাথায় আসত না। পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন ছিল তখন এমনই অটুট। ভাল ছাত্র কখনই ছিলাম না আমি। কোন মতে পাশ করে যেতাম। কিছুদিন পরপরই বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে যাওয়া হতো নানা বাড়ি। কখনও খালা, ফুফুদের বাড়িতেও । এখন মনে হয় তখন সরল জিবনে ছিল অনেক বেশি আনন্দ। ফেসবুক বা মোবাইল এ সার্বক্ষনিক যোগাযোগ থাকতনা। আমার এক চাচা ঢাকায় থাকতেন। তিনি চিঠি লিখতেন। কদাচিত ফোন করতেন দাদার অফিসে।
শৈশবের প্রথম যে আনন্দর কথা মনে আছে তা হলো একটি বই পাওয়া। খেলনাও আমার প্রচুর ছিল। কাঠ,বাঁশ দিয়ে নিয়েও বিভিন্ন খেলনা বানিয়ে নিতাম। বইটি আমাকে কিনে দিয়েছিলেন আমার দাদা। এখন মনে সঠিক কোন বইটা ছিল কিন্ত সেটা ছিল ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি কার্টুন বই। তখন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল মাঠে হতো ইসলামি সমাজ কল্যান পরিষদের উদ্যোগে তাফসিরুল কুরআন মাহফিল। সেই মাহফিল থেকেই বইটি দাদা কিনে দিয়েছিলেন। তখন সদ্য নিজের নাম লিখতে শিখেছি। বইটির ভিতরে বড় অক্ষরে নিজের নাম লিখেছিলাম। দাদার সংগ্রহে কিছু শিশুদের বই ও ছিল। সেগুলি ও পড়তাম। স্কুল এর ক্ষেত্রে আমার ভাগ্য একটু খারাপ! ক্লাস টু থেকে ফাইভ পর্যন্ত তিনটি স্কুলে পড়তে হয়েছে। সরাসরি ক্লাস টু তেই ভর্তি হয়েছিলাম আমি। এবং আমিই পরিচিতজনদের মধ্যে শেষ জন যে সরাসরি ক্লাস টুতে ভর্তি হয়েছিল। এখন ক্লাস ওয়ান দুরে থাক পারলে জন্মের পরেই বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়! ক্লাস ফোরে উঠে দিগন্তটা বিস্তৃত হলো আরো। বাসার কাছেই হওয়ায় স্কুল মাঠে বিকালে খেলতে যাওয়ার অনুমতি ছিল। তখন পরিবেশ এমন হয়নি যে ৯ বছর বয়সি একটি ছেলে কে মাঠে পাঠিয়ে মা-বাবা চিন্তায়ই মরে যাবে!! বন্ধু দের সাথে তখনওই বাইরে খাওয়া শুরু হয়। আটআনা দামের আইসক্রিম,চারআনার বাদাম কিংবা বুট। কখনও একটাকার চটপটি। বলতে পারি গর্ব করে এগুলি খেয়েও কোনদিন পেট খারাপ করেনি। তখন ভেজাল দেওয়া যদিও শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে নিয়মিত পরিশ্রম করতাম বলেই বোধহয় পেট বেশি গোলমাল করেনি। আর একটি জগত এর সন্ধান ও তখন পেয়ে গিয়েছি। সেবা প্রকাশনি থেকে প্রকাশিত তিন গোয়েন্দার জগত। নিজেকে কিশোর পাশা ভাবতে খুব ভাল লাগত তবে একটু মোটাসোটা হওয়ায় বন্ধুরা মুসা আমান বলেই বলত!
প্রথম যে শোকের কথা মনে আছে তা দাদার ইন্তেকাল এর দিন। ইন্তেকালের মাত্র আগের দিন দাদা আমার জন্য একটি স্কুলে পানি নেওয়ার ফ্লাস্ক আর ফররুখ আহমদ এর ”সাত মঞ্জিল এর কাহিনি” বইটি দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য! আমার শৈশবের সংগ্রহ করা বেশিরভাগ বই থাকলেও এই বইটিই কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে। সেইরাত আমরা তারাতারি শুয়ে পড়েছিলাম কারন পরের দিন আমার বড় ভাই এর ক্যাডেট কলেজ এ ভর্তি পরিক্ষা দিতে যাওয়ার কথা। মধ্য রাতের দিকে হঠাত ঘুম ভেঙ্গে যায়। দেখি আম্মা-আব্বা কেউ পাশে নাই। একটু পর জানতে পারি দাদা আর নাই। সেই রাত এর অনুভুতি ছিল অদ্ভুত। কান্নাকাটি করার বয়স হয়নি। কিন্তু পরদিন দাদাকে কবর দেওয়ার পর বুঝেছিলাম তাকে আর কোনদিনও দেখবোনা।
দাদার মৃত্যুর পর দিনগুলি অন্য রকম হয়ে যায়। যেখানে আগে দাদা থাকতেন সেই ঘরটা ভেঙ্গে নতুন ঘর তুলা হয়। আমরা সেখানে চলে যাই। আমি ভর্তি হই চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাই স্কুলে। হাই স্কুলে উঠে আরো বিস্তৃত হলো পরিসর। স্কাউট, বিএনসিসি, রেডক্রিসেন্ট সব কিছুর সাথেই জড়িত হয়েছিলাম আমি। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় আমার শৈশব। কারনটা বলছি।
১৯৯১ সালে আমি ষষ্ঠ শ্রেনির ছাত্র। তখন দেশের মধ্যে একটি বড় পরিবর্তন এসেছে। এরশাদের পতনের পরে ২৭ শে ফেব্রুয়ারি একটি নির্বাচনে ক্ষমতায় এসেছেন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি। সেই নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ আসনে একজন প্রার্থি ছিলেন আমার ছোট দাদা অর্থাত দাদার ছোট ভাই। কাছে থেকেই দেখেছি সেই নির্বাচন। তার অল্প কিছুদিন পরেই এল সেই ভয়াবহ ২৯ শে এপ্রিল। আমরা তখনও থাকি বাঁশের বেড়া দেওয়া টিনের ছাউনি ঘরে। রাত আটটা থেকে শুরু হয় প্রচন্ড বাতাস। সেই সঙ্গে চলে যায় বিদ্যুত। বেড়ার ফাঁক দিয়ে যতটুক বাতাস আসছিল তাতেই মাঝে মধ্যে হারিকেন নিভে যাচ্ছিল। আমার আম্মা খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। কয়েকবার প্রচন্ড শব্দে চাল উড়ে যাওয়ার আশংকা হলেও আল্লাহর রহমতে কিছু হয়নি। একটি আমগাছ আরেকটি ঘরের চালের উপর ভেঙ্গে পড়েছিল। আল্লাহর কি অপরুপ মহিমা! আমাদের ঘরগুলির মধ্যে কেবল সেই ঘরটির চালের একাংশ তখন বেঁকে গিয়েছিল। আরেকটি জোড়ে বাতাস আসলেই চালটি উড়িয়ে নিয়ে যেত। কিন্তু আমগাছটি ভেঙ্গে চালের উপর পড়ায় আর উড়ে যায়নি। শেষ রাতের দিকে ঝড়ের তান্ডব কমলে একটু ঘুমিয়ে পরদিন উঠি। কিছুক্ষন পর আমার ফুফা যিনি কৃষি ব্যাংক এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন তিনি আসেন। তার সাথে জিপে করে অন্য আত্মিয়দের খবর নিতে বের হই আমি ও আমার আব্বা। এয়ারপোর্ট এর দিকে যাত্রা করেও বেশিদুর যেতে পারিনি। অসংখ্য মানুষের আহাজারি আর সড়কের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাশ দেখে গাড়ি ঘুড়িয়ে চাক্তাই যাই। সেখান থেকে ভেঙ্গে যাওয়া কর্নফুলি ব্রিজ দেখতে গিয়ে দেখি পানিতে ভাসছে অসংখ্য লাশ। ঘরে ফিরি। সেইদিন থেকে প্রায় দশদিন কোন বিদ্যুত ছিলনা চট্টগ্রামের বেশিরভাগ জায়গায়। দুইদিন পর স্থানিয় ক্লাবের সাথে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা আনোয়ারা থানায় যাই। ছোট হলেও কিছু কাজ করতে দেওয়া হয় আমাকে। আমার আব্বা কখনই আমাদের আগলে রেখে বড় করতে চাননি। বাস্তব এর সাথে পরিচিত করতে চেয়েছেন। আরো কয়েকদিন পর স্কুল এর বিএনসিসি থেকে যাই মহেশখালি তে। ভেরিবাধ এর পুর্ননির্মান এ পাথর ফেলে সহায়তা করি। শ খানেক স্কুল ছাত্র কতটুক সহায়তা আসলে করতে পেরেছিল জানিনা কিন্তু সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত লেফটেনান্ট কর্নেল উচ্চ প্রসংশা করেছিলেন।
২৯ এ এপ্রিল এর সেই রাত টি আমার জিবন থেকে শৈশব এর সমাপ্তি টেনে দেয়। মাত্র দুই সপ্তাহে অসংখ্য লাশ আর অসহায় মানুষের আহাজারি শৈশবের রঙ্গিন সপ্ন মুছে দিয়ে আমাকে জিবনের কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি হতে শিখায়।
বিষয়: বিবিধ
৩৫২৫ বার পঠিত, ৯৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হ্যা, ১৯৯১ ইং এর সেই ২৯ এপ্রিল এর প্রলংকারি সাইক্লোনের কথা মনে আছে। তখন চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ সি ডি এ কলোনির ১৪ নং রোডের বাসায় আমরা ছিলাম। আমি চট্টগ্রাম ভার্সিটির প্রথম বর্ষের ছাত্র। সকল বন্ধুরা মিলে সাইক্লোন দুর্গত হালিশহর এর উপকূলের মানুষদের জন্য ত্রাণ বিতরণ করেছিলাম। আবারো আপনার লেখায় সেই সময়ের কথা মনে পড়ে গেলো।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
আপনার শৈশবের কিছু ধারনা ১৫ই আগষ্ট আর আপনার আব্বাকে নিয়ে দেওয়া পোষ্ট এর পেয়েছি। এখন একটি পুর্নাঙ্গ পোষ্টের জন্য আশায় আছি।
তবে কারটা লিখবেন সেটা নিজেরাই ঝগড়া করে নির্ধারন করে নিন।
ধন্যবাদ ভালো লাগলো
অাপনারটা পড়ার অপেক্ষায়।।।
ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ।
শৈশব ফিরে আসেনা বটে কিন্তু তার স্মৃতিই থাকে সম্বল।
ভাই আমার শিশু কালের ছবি দিলাম -- এবার বুজা লন আমার শশৈব কেমন ছিল -- আপনার টা পড়ে ভাল লাগল
তখনকার সময়ে আমারও অনেক স্মৃতি এখন মনে টলটলায় মান। আমি বটতলী রেলওয়ে স্টেশন মসজিদের ওখানে থাকতাম। চৈতন্য গলি নামটি কেন হয়েছিল আজো জানতে পারিনি।
১৯৯১ সালের ঘৃর্ণিঝড় টি লক্ষ লক্ষ পরিবারের সাথে আমার জীবনকেও তছনছ করে দিয়েছিল। ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত আমরা ধনী মানুষ ছিলাম আর ৩০শে এপ্রিল থেকে আমরা গরীব মানুষের কাতারে দাঁড়িয়েছিলাম।
দেখেছিলাম চট্টগ্রামের আকর্ষনীয় চাকুরীর অর্থ দিয়ে ঘুর্ণঝড়ের ব্যাপক ক্ষতি পোষানে সম্ভব নয়, তাই বাধ্য হয়ে অনিচ্ছায় বিদেশ ধরেছি। আজো হৃদয় থেকে দেশ, গ্রাম, জনপদের মায়া ছাড়তে পারিনি এমন কি ইউরোপোর ভাল চাকুরীও আমাকে ধরে রাখতে পারিনি। তারপরও নিজের দেশটা যেন পিছনের দিকে যাবার জন্য প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ
২৯ এ এপ্রিল যারা দেখেছেন তারা কোনদিন ভুলতে পারবেন না সেইদিনটিকে। দেশের অবস্থা যা হচ্ছে তার পিছনে অাছে পরিকল্পনা ও নেতৃত্বের অভাব।
চৈতন্য গলি নামটি সম্ভবত কবর স্থান এর উত্তর দিকের রেয়াজয়ুদ্দিন বাজারে ঢুকার গলি টির নামে হয়েছে। কবরস্থানের পুর্বে রফিউদ্দিন সিদ্দিকি সাহেবের বাড়ির পর বর্তমান রেয়াজুদ্দিন বাজারের প্রথম গলিটির নাম ছিল রেয়াজুদ্দিন গলি।
সম্পাদক সাহেব ও মেধাবী ব্লগার ভিশু ভাই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য । তাঁহাদের উদ্যগে ভাল কিছু পোস্ট পাচ্ছি।
জাযাকাল্লাহ খায়ের
অপেক্ষায় রইলাম আপনর লিখাটির জন্য।
খুব ভালো লাগলো আপনার সম্বন্ধে জেনে ...
বেশি ভাব ধরার চেষ্টা কখনই করিনাই।
আপনার সম্পর্কেও জানার অপেক্ষায় রইলাম।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
আমি তখন জনতা ব্যাংকে কর্মরত। সেই ভয়াল রাতে দেখা কিয়ামতের সামান্য স্মৃতি আজও ভূলতে পারিনা।
বন্ধু সুফিয়ানকে বলেছিলাম আজান দিতে। বাতাতের প্রচন্ড ধাক্কায় ও আজানে ছেড়ে পালিয়েছে। আর ও কত কিছু। তারপর ১৯৯১ এর জলাই এর এক তারিখ বিদেশ পাড়ি দেই।
ধন্যবাদ। ভাল লাগল আপনার শৈশব পড়ে।
১৯৯১ থেকে ২০১৪! আপনার তাহলে প্রবাসের রজত জয়ন্তি হতে চলছে শ্রিঘ্রই। সেই ভয়াল রাতের স্মৃতি সহযে মুছে যাবেনা কখনই।
অনেক ধন্যবাদ সু্দর মন্তব্যটির জন্য।
এদ্বারা বুঝা যায় আপনার ফেমেলি বস্তবতা সম্পর্কে খুবই সচেতন ছিল। যা এখনো ২০১৪ তে এসেও অনেক ফেমেলি হতে পারেনি।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
অাপনার পিছনের কথাগুলিও লিখে ফেলুন আরেকটু সংগঠিত করে।
ছবিটা কি আপনার শৈশবের???
এমন বান্দর ছিলেন!!!!১
আপনারাও ভাল থাকুন।
অপেক্ষায় রইলাম।
দারুন একটা মুর্হুত!
আপনার লিখার অপেক্ষায় রইলাম।
আপনার স্মৃতিটাও পড়ার অপেক্ষায়।
আপনার স্মৃতিচারনটাও পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
আনোয়ারার সেই মর্মান্তিক অবস্থার কথা এখনও মনে আছে।
আপনার অভিজ্ঞতা ও লিখুন।
আমার সাথে কিছু মিল আছে বলে কোট করলাম। আমি ক্লাস ওয়ানে পড়লেও ক্লাস টু আর থ্রি একসাথে পড়েছি। আম্মা ৬ মাসে আমাকে ক্লাস টু এর পড়া শেষ করে থ্রি এর সকল বইও পড়িয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ, ৬ মাস পড়েই ক্লাস ফোরে ফার্স্ট হয়েছিলাম। আমাদের সময় ক্লাস টু পর্যন্ত মাত্র দুটি বই ছিল আর থ্রি হতে ফাইভ পর্যন্ত ৬টি করে বই। এখন বই এর ভাড়ে প্লে নার্সারীর শিশুদের পিঠ বাঁকা হয়ে যায়।
প্রতি বুধবার রাত নয়টায় ম্যাকগাইভার দেখার জন্য বসে পড়তার টিভির সামনে। দ্য ফল গাইও বেশ এনজয় করেছিলাম। আপনার মরহুম দাদাকে আল্লাহ বেহেশতে নসীব করুন।
অনেক সময় দেখি শিশুদের স্কুল ব্যাগ এর ওজন তার দৈহিক ওজন এর চেয়ে বেশি! কথাটা রসিকতা নয় বরং আক্ষরিক অর্থেই। এখন তাই শিশুদের শৈশব বলে কিছু আছে বলে মনে হয়না।
নতুন প্রজন্মকে বই এর নামে এখন চাপান হচ্চে বিশাল ওজন। আর বঞ্চিত করা হচ্ছে শৈশব থেকে।
লিখে ফেলুন না আপনার স্মৃতিগুলি।
ধন্যবাদ মন্তব্যটির জন্য।
আপনার শৈশব এর কথা পড়ার অপেক্ষায় খাকলাম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন