আল মাহমুদ। একটি প্রতিবাদের ভাষা।
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ১১ জুলাই, ২০১৪, ০৬:০৭:৩৩ সন্ধ্যা
জানিনা দেশের খবর কিছু পান কিনা?
এশিয়ায় কি ঘটবে এই নিয়ে তর্ক করে আপনার যাওয়ার পর
পৃথিবীর সবকটি সাদা কবুতর
ইহুদি মেয়েরা রেঁধে পাঠিয়েছে মার্কিন জাহাজে।
(আত্মিয়ের মুখ-সোনালি কাবিন)
এই লাইন গুলি যার লিখা তিনি হচ্ছেন বর্তমান বাংলাভাষার শ্রেষ্ঠ জিবিত কবি আল মাহমুদ। জিবনের ৭৮ টি বছর তিনি পর করেছেন। তারুন্যের প্রারম্বে একটি সুটকেস সম্বল করে জন্মস্থান ব্রাম্মনবাড়িয়া থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। লক্ষ ছিল কবি হওয়া। কবিই তিনি হয়েছেন। বর্নাঢ্য জিবন তার। ১৯৩৬ সালে একটি অভিজাত গ্রামিন পরিবারে জন্ম। নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দশম শ্রেনি পর্যন্ত পড়াশুনা শেষে ঢাকায় আসা। তারপর প্রুফ রিডার হিসেবে কর্মজিবন শুরু করে পত্রিকার সম্পাদক পর্যন্ত হওয়া। সরকারি চাকুরি শেষে আবার সম্পাদক। তবে এত কিছুর মধ্যেও যা তিনি কখনই ত্যাগ করেননি তা হল কবিতা। আর এই কবিতাই তাকে দিয়েছে অমরতা। একপর্যায়ে চট্টগ্রামে বইঘর নামক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করার সময় এক রাতে লিখেন কয়েকটি সনেট। নাম দেন "সোনালি কাবিন"। এই "সোনালি কাবিন" ই হয়ে উঠে তার ট্রেডমার্ক।
বিশ্বাসের পরিবর্তন হয়েছে তার কয়েকবার। কিন্তু সত্য অন্বেষন থেকে বিরত হননি কখনও। সত্য কথা বলার অপরাধে বিনা বিচারে জেল খেটেছেন এই কবি। তবুও মানুষের কথা বলে গেছেন "চক্রবর্তি রাজার অট্টহাসি"র ভয় না করে। মায়াবি পর্দার পিছনে বসে থাকা অত্যাচারিকে উপেক্ষা করে।
কবি হয়েও সাংবাদিক হিসেবে তার সচ্ছ যে দৃষ্টি ছিল তা কবির আবেগ দিয়ে কখনও পরাভুত হয়নি। তাই তিনি কবি হিসেবেই পেরেছেন ইহুদিবাদ এর প্রকৃত স্বরুপ কে পৃথিবীর সামনে উপস্থাপন করতে।
অনিষ্টকর অন্ধকারে যখন পৃথিবী
আচ্ছন্ন হয়ে যায়। চারদিকে ডাইনীদের
ফুতকারের মত হাওয়ার ফিসফাস,
আর পাখিরা গুপ্ত সাপের আতন্কে
আশ্রয় ছেড়ে অন্ধকারে ঝাপ দেয়
ঠিক তখুনি ইহুদিরা হেসে উঠে।
(ইহুদিরা- অদৃষ্টবাদিদের রান্নাবান্না)
এই কবিতার জন্য তাকে অনেক আক্রমন সহ্য করতে হয়েছে।পশ্চিমবঙ্গিয় এক গবেষক এটিকে ভয়ংকর কবিতা এবং একটি জাতিকে আক্রমনকারি এই কবিতকে ও কবিকে সমর্থন করা যায়না দাবি করেছিলেন। জানিনা আজকে ইসরাইল এ গাজা আক্রমন সম্পর্কে সেই গবেষক কি মন্তব্য করবেন। কিন্তু আল মাহমুদ তার বিশ্বাস থেকে চুত্য হননি কখনও। বলিষ্ঠ কন্ঠে উচ্চারন করেছেন তার বিশ্বাস এর কথা।
ইহুদিরা হাসুক
তবু সম্পদের সুষম বন্টন অনিবার্য।
ইহুদিরা নাচুক,তবু
ধনতন্ত্রের পতন আসন্ন। আর
মানুষ মানুষের ভাই।
আজকে ১১ই জুলাই,২০১৪ সাল কবির ৭৯ তম জন্ম বার্ষিকি। কবি এখন বৃদ্ধ,প্রায় দৃষ্টিহিন এবং অসুস্থ। কিন্তু এখনও বন্ধ হয়নি তার কাব্যের ভাষা। বন্ধ হয়নি মানবতার গান। আজকে তার জন্ম দিনে আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। আল্লাহর কাছে দোয়া করি তাকে যেন হায়াত এবং সুস্থতা দেন। আসুন আজ আমরা এই বিপ্লবি,প্রতিবাদি কবির কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে বলি
আমার দেশ প্যালেষ্টাইন। শত্রু অধিকৃত একটি শহর। আপনাদের
প্রথম কেবলা। একবার যদি ভাইগন।
আল কুদসের দিকে মুখ ফেরান,একবার।
হাতে হাত। এহরামের শ্বেতবস্ত্র সেলাইবিহিন। একবার শুধু
হাঁটতে হাঁটতেও চলে যান। তবে
সামনেই জেরুসালেম,আমার প্রিয় নগরি,
বিজয়!!
বিষয়: বিবিধ
১৬৬৯ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাকে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে চেপে রাখার জন্য। কিন্তু তার প্রতিভাকে অস্বিকার করার সাহস কারো হয়নি।
Thank you for your beutiful comment.
ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন