আরেকটি মহাযুদ্ধের পদধ্বনি
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ০২ মার্চ, ২০১৪, ০১:২৭:০৬ রাত
রাশিয়া ইউক্রাইন এর ক্রিমিয়া প্রদেশে অভিযান চালানর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিন পার্লামেন্ট এর অনুমোদন পাওয়ার সাথে সাথে রুশ সশস্ত্রবাহিনী ক্রিমিয়ার সিমান্তে অভিযান শুরুকরেছে। অবশ্য ক্রিমিয়ার রাজধানি সিমাফরপোল এর বিমান বন্দর সহ অনেক জায়গা ইতঃমধ্যেই ক্রিমিয়ার রুশপন্থি দের দখলে। কৃষ্ন সাগরের একটি উপদ্বিপ ক্রিমিয়া।দশহাজার বর্গমাইল আয়তনের এই অঞ্চলটি ইতিহাসে বির হিসেবে স্বিকৃত তাতার দের একটি আবাসভুমি ছিল। এই অঞ্চলটি তার স্ট্র্যাটেজিক অবষ্থান এর কারনে রাশিয়ার নিকট খুবই গুরুত্বপুর্ন। সোভিয়েট আমলে এর সেবাস্তপোল ছিল রাশিয়ার একমাত্র বন্দর যা সারা বছর জাহাজ চলাচলের উপযোগি থাকে। এই অঞ্চলে রুশ আগ্রাসনের পুর্বে "ক্রিমিয়ান খানেট" নামক একটি মুসলিম রাজ্য ছিল যা ছিল তুর্কি খিলাফতের অনুগত কিন্তু স্বাধিন। ১৮৫৪ সালে তৎকালিন জার সরকার ক্রিমিয়ার অনুগত অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের রক্ষার নামে সেখানে অভিযান চালায় যা দির্ঘদিন ব্যাপি ঐতিহাসিক ক্রিমিয়ার যুদ্ব নামে পরিচিত। যুদ্ধের পর এটি রাশিয়ার প্রভাবিত একটি সায়ত্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে স্বিকৃতি পায় যার মুসলিম নাগরিকরা তুর্কি ও অর্থোডক্স খৃষ্টানরা রুশ নাগরিক হতো। ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের পর এটি অনেকদিন কমুনিষ্ট বিরোধি জার সমর্থকদের নিয়ন্ত্রনে ছিল। ১৯২০ সালে এটি সোভিয়েট সরকারের দখলে আসে। নিয়ন্ত্রনে নেওয়ার পর প্রায় ৫০০০০ মানুষকে মৃত্যদন্ড দেয়া হয়ে এবং অনেক মানুষকে নির্বাসনে দেয়া হয় সাইবেরিয়ায়। পরিকল্পিত রুশ বসতি গড়ে তুলা হয় এই অঞ্চলে কারন এশিয়ার সাথে যোগাযোগের জন্য এই বন্দরটি ছিল গুরুত্বপুর্ন।প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরুস্ক পরাজিত হলেও জার সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ি বসফরাস প্রনালীর নিয়ন্ত্রন রাশিয়ার কাছে দিতে অস্বিকার করে মিত্রপক্ষ। তবে তুরুস্ক তার স্বাধিনতা বজায় রাখতে সমর্থ হওয়ায় এই অঞ্চলটি রাশিয়ার বিশেষ কাজে আসেনি। প্রথমে সোভিয়েট ইউনিয়নে এই অঞ্চলটি একটি স্বশাসিত রিপাবলিক থাকলেও প্রথমে এটিকে রুশ ও ১৯৫৪ সালে ইউক্রাইন প্রদেশের অধিন্সত একটি ওব্লাস্ত বা জিলার মর্যাদা দেয়া হয়।১৯৯১ সালে সোভিয়েট ইউনিয়ন এর ভাঙ্গন এর পর এটি ইউক্রাইন এর অধিনে একটি স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে থাকে। দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধের পর ষ্টালিন ক্রিমিয়ার আদি অধিবাসি তাতারদেরকে ক্রিমিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। এভাবে সেখানে রুশ জনসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে ক্রিমিয়ার মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫৯ ভাগ রুশ। ১২ ভাগ তাতার যাদের সবাই ইসলাম ধর্মাবলম্বি অবশিষ্ট ইউক্রাইনি।
ই্উক্রাইনে সংকট এর শুরু কয়েকমাস আগে থেকে। রুশ পন্থি রাষ্ট্রপতি ভিক্টর ই্য়ানুকভিচ একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রি ইউলিয়া তিমশেন্কা কে আটক করেন। ইয়ানুকভিচ এর রুশ সমর্থন এবং রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা গত জানুয়ারি মাস থেকৈ ইউক্রাইন এর মানুষদের মধ্যে প্রতিবাদের জন্ম দেয়। এই প্রতিবাদ কে রুশ সমর্থনপুষ্ট প্রেসিড্নেট শক্তি প্রয়োগে দমন এর চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে গত ২৪ এ ফেব্রুয়ারি পালিয়য়ে যান। এদিকে ক্রিমিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ রুশ নাগরিকরা রুশ পন্থি প্রেসিডেন্ট এর সমর্থনে মাঠে নামেন। গত ২৭ এ ফেব্রুয়ারি রুশ সমর্থনপুষ্ট একদল অস্ত্রধারি ক্রিমিয়ার আঞ্চলিক বিধান সভা দখল করেন এবং ক্রিমিয়ার স্বাধিনতার জন্য ভোট দিতে সদস্যদের বাধ্য করেন। আরো কিছু অস্ত্রধারি বিমানবন্দর সহ অন্যান্য স্থান দখল করেছে। মনে করা হচ্ছে এরা মুলত রাশিয়ান সৈনিক। ইতঃমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ইউক্রাইন এ রুশ হস্তক্ষেপ এর বিরেধিতা করেছেন। রুশ নেীবাহিনি ইতমধ্যে ক্রিমিয়ার বন্দরগুলি অবরোধ করেছে। ক্রিমিয় রুশ পার্লামেন্ট সদস্যরা রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত হওয়ার প্রস্তাব গ্রহন করেছে। ক্রিমিয়ার উপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রন ভুমধ্যসাগরিয় অঞ্চলে রুশ প্রভাব বৃদ্ধি করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যেও তাকে সুবিধা দেবে। কিছুদিন আগে সিরিয়াতে সামরিক হস্তক্ষেপ এর সিদ্ধান্ত নিয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে আসে প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রধান মিত্র সৈীদি আরব এর ইচ্ছায়। কারন সিরিয়াতে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করছে তারা কেীশলগতভাবে সৈীদি সরকারেরও বিরোধি। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পশ্চাদপসরনকে নিজেদের সুবিধা মনে করে রাশিয়া তার সোভিয়েট আমলের ক্ষমতায় আবার ফিরে যেতে চাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এই ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয় তার উপর নির্ভর করছে ইউক্রাইন ও ক্রিমিয়ার অবস্থা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে সহজে ছাড় দেবে বলে মনে হচ্ছেনা। অনেকেই নতুনু বিশ্বযুদ্ধের পদধ্বনি শুনা যাচ্ছে বলে মনে করছেন। এছাড়াও আরেকটি বিষয় ও এখানে জড়িত বলে শোনা যাচ্ছে। 'দৈনিক আমারদেশ" এর থেকে সংবাদের এই অংশটি উদ্ধৃত করছি।
"ইউক্রেনের সহিংসতায় ইসরাইলি সেনারা জড়িত
ইউক্রেনের সম্প্র্রতি সহিংসতায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর সাবেক কয়েকজন সেনা সদস্য জড়িত বলে খবর বের হয়েছে। এসব সেনা ইউক্রেনের একটি গেরিলাগোষ্ঠীর হয়ে সরকারি সেনা ও পুলিশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে।
ইসরাইলের দৈনিক হারেত্জ ও টাইমস অব ইসরাইল গত শুক্রবার সাবেক সেনা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের রাস্তায় সহিংসতায় নেতৃত্ব দিয়েছে ডেল্টা নামে এক সেনা সদস্য। কিয়েভে এ ইউনিট ‘ব্লু হেলমেট অব দ্যা ময়দান’ নামে পরিচিত ছিল। এ ইউনিটে মোট ৪০ জন নারী-পুরুষ ছিল যার মধ্যে কয়েকজন ছিল ইসরাইলের সাবেক সেনা। এ ইউনিটের সঙ্গে ইউক্রেনের উগ্র জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর যোগসাজশ ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ইউক্রেনে জন্ম নেয়া ডেল্টা ইসরাইলের জিভাতি ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের শু’ আয়েলি শিমশোন গোয়েন্দা ইউনিটে কাজ করে দক্ষতা অর্জন করেছে। এদিকে, ডেল্টা জানিয়েছে, কিয়েভের ব্লু হেলমেট অব দ্যা ময়দান ইউনিটে ৩৫ জন সদস্য ছিল আর পাঁচ ইসরাইলি সেনা এতে নেতৃত্ব দিয়েছে।"
রাসুল (সাঃ) ইসলামের বার্তানিয়ে মদিনার বাসিন্দাদের কাছে যাওয়ার পুর্বে সেখানে আওস আর খাজরাজ গোত্রের মধ্যে চলছিল ভাতৃঘাতি যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধে উভয় পক্ষকেই উত্তেজিত করছিল মদিনার ইহুদিরা।
কবি আল মাহমুদ এর ভাষায়।
অনিষ্টকর অন্ধকারে যখন পৃথিবী
আচ্ছন্ন হয়ে যায়।চারদিকে ডাইনিদের
ফুৎকারের মত হাওয়ার ফিসফাস,
আর পাখিরা গুপ্ত সাপের আতঙ্কে
আশ্রয় ছেড়ে অন্ধকারে ঝাপ দেয়
ঠিক তখুনি, ইহুদিরা হেসে উঠে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৭ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ
ধন্যবাদ।
নাইলে বেীদি যদি কিছু করে!!!
ধন্যবাদ আপনাকে।
ওরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করেই মুসলিমদের হত্যা করবে। একটা প্রবাদ আছে "রাজায়রাজায় যুদ্ধ হয়,উলু খাগড়ার প্রান যায়"।
মানে লিখাটি বিশেষজ্ঞ সুলভ দুর্বোধ্য ও ভারি হয়নাই!
রাজনিতি না বুঝলেও কিন্তু তার আপনার উপর প্রভাব বিস্তার করবেই।
ধন্যবাদ মন্তব্যটির জন্য।
দিকে দিকে আজি বাজিছে দামামা
প্রাণ ভয়ে পালায় মুসলমান,
আপন জনপদ রেখে ঘুরে বেড়ায়
বাচাতে মিছে নিজের প্রাণ।
বার্মা মিশর সিরিয়ায় দেখো
আফ্রিকায় কিংবা ফিলিস্তিন,
আগুণে ভুলেটে জ্বুলে পুড়ে চাই
নিষ্ঠুর মানবতা যে হৃদয়হীন।
আর্তনাদ আর আহাজারীতে
জােগেনা মুসলিম জাগেনা প্রাণ,
শৃগালের পালে ভরা মুসলিম
নেই কোন লাজ নেই কোন মান।
নির্যাতিত রোদে পাঠাও হে প্রভূ
আববকার আলী ওসমান,
মদিনার ইসলাম ফিরিয়ে দিতে
পাঠাও আবার দ্বীনের প্রাণ।
কিন্তু ভাই আমরা নিজেরা যদি কিছু চেষ্টা না করে শুধু বসে থাকি আল্লাহর সাহাজ্যের আশায় তাহলে তো হবেনা।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন