বই মেলা ও বই পড়া। একটি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা।
লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান কবির সবুজ ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১২:২৮:১৯ রাত
বইমেলার সাথে আমার পরিচয় যখন থেকে পড়তে শিখেছি তখন থেকেই। যদিও ঠিক বইমেলা নয়।ইসলামি সমাজ কল্যান পরিষদ চট্টগ্রাম এর উদ্যোগে প্রতিবছর চট্টগ্রামে হতো তাফসিরুল কুরআন মাহফিল। যার প্রধান বক্তা ছিলেন মাওলানা দেলওয়ার হুসাইন সাঈদি। তখন এই অনুষ্ঠান হতো আমার বাড়ির পাশেই চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল মাঠে। মাহফিল এর অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল মাহফিল এর মাঠের একপাশে সারি করা বই এর ষ্টল। তখন ইসলামিক ফাউন্ডেশন সহ প্রায় সকল ইসলামি ধর্মিয় পুস্তক বিক্রেতাই আসতেন এই মাহফিলে। বিক্রিও ছিল প্রচুর। আমার দাদা প্রতিদিন আমাকে নিয়ে যেতেন আসরের নামাজের পর সেই মাহফিল এর মাঠে আর কিনে দিতেন একটি করে বই। তখন ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশ করত শিশুদের উপযোগি কমিকস এর ষ্টাইলে ইসলামের ইতিহাসের গুরুত্বপুর্ন ব্যাক্তিদের নিয়ে কার্টুন বই। মুহাম্মদ বিন কাসিম, সিরাজউদ্দেীলা, শেরে বাংলা,তিতুমির এর মত মানুষদের এই জীবনি টিনটিন বা নন্টে-ফন্টের চেয়ে কম আকর্ষনিয় ছিলনা। এই জন্য আমাদের ঘরে সেসময় টেলিভিশন এবং আধুনিক ক্যাসেটপ্লেয়ার এর মত জিনিস থাকলেও পড়ার অভ্যাস শুধূ নয় বরং নেশাই হয়ে উঠে। ক্লাস থ্রি বা ফোর এ প্রথম সন্ধান পাই তিন গোয়েন্দার। আর পরিচিত হই সেবা প্রকাশনির সাথে। তখন থেকে শুরু করে এখনও এই সিরিজ এর আকর্ষন কাটাতে পারিনি। সম্ভবত ১৯৯০ সালে চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরিতে একটি বড় বইমেলা হয় সরকারী উদ্যোগে। সেখান থেকে আমরা দুইভাই প্রায় ৫০০ টাকার বই কিনেছিলাম। লক্ষ করুন ১৯৯০ সালে! তখন একটা পরোটা ছিল ৫০ পয়সা। আর সেবা প্রকাশনির তিন গোয়েন্দা বই এর দাম হতো ১৫-১৬ টাকা। সে সময় ৫০০ টাকার মত বই মানে ৩০-৪০ টা বই। এতবড় বইমেলা চট্টগ্রামে আর হয়নি। সেই বইমেলায় প্রথম পরিচিত হয় মুক্তধারার বইগুলির সাথে। বাংলা একাডেমি বই মেলার সাথে প্রথম পরিচয় ১৯৯৩ সালে। তখন বইমেলায় বই এর পাশাপাশি অন্য ষ্টল ও থাকত। প্রথমবার সেবার ষ্টলে গিয়ে ইচ্ছা হচ্ছিল যেন সব বই কিনে নিই! তিন গোয়েন্দা ছাড়াও তখন পরিচয় হয়েছে কিশোর ক্লাসিক এর সাথে। শিকার কাহিনীগুলিও আকর্ষনিয় ছিল। পরের বছর থেকে নিয়মিতই বাংলা একাডেমির বইমেলাতে গিয়েছি। কিন্তু ১৯৯৬ সাল থেকে বিরক্তি বোধ করতাম ভিড় আর ঝামেলা দেখে। বরং তখন জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত জাতিয় গ্রন্থমেলা বেশি ভালো লাগত। প্রথমে সামরিক মিউজিয়াম এর পাশের খোলা জায়গাটিতে(যেখানে এখন নভোথিয়েটার। আমার একসময় এর কর্মস্থল) পরে বানিজ্য মেলার মাঠে। সুপরিসর বিশাল জায়গা নিয়ে পরিচ্ছন্ন এই মেলা বাংলা একাডেমির ভিড় আর অশালিনতার তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষনিয় লাগত। আরো ছিল বিদেশি প্রকাশনা। ভারতিয় বই ছাড়াও বিভিন্ন দেশিয় দূতাবাসের ষ্টলে বই না পেলেও বিনামুল্যে বিভিন্ন লিফলেট ও তথ্য পাওয়া যেত যেগুলি কাজে আসত। এখানেই পরিচিত হই প্রকাশনার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাক্তির সাথে। কাজী আনওয়ার হোসেন কে এখানেই প্রথম দেখি। এই বই মেলাতে তখন ইসলামি বই প্রকাশ করেন এধরনের প্রকাশনিগুলিও ষ্টল পেত । বাংলা একাডেমি যাদেরকে বিভিন্ন অদ্ভুত কারন দেখিয়ে যায়গা দিতনা। বাংলা একাডেমির সম্ভবত ১৯৯৮ সালের বইমেলাটি হয়ে উঠে কুখ্যাত। ইভ টিজিং, অশ্লিল গান, বই চুরি ইত্যাদির জন্য সেই বইমেলা বইপ্রেমিদের জন্য হয়ে উঠে দুঃসপ্ন। অনেক স্টল মালিক যাদের কাছে নিয়মিত ক্রেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছি তাদের কাছে শুনি তাদের দুঃখের কথা। যাই হোক পরের বছর অবশ্যই বই ছাড়া অন্য ষ্টল বন্ধ করে দিয়ে এবং ভিড় নিয়ন্ত্রন এর ব্যবস্থা করে মোটামুটি সহনযোগ্য করা হয়। কিন্তু সেই বছরই উদ্দেশ্যমুলক ভাবে আগুন লাগিয়ে পুরিয়ে দেয়া হয় বাংলা সাহিত্য পরিষদ সহ কয়েকটি ষ্টল। ২০০২ সালের বইমেলার সময় আমি ঢাকাবাসি এবং চাকুরিজীবি। নিজের টাকায় প্রচুর বই কিনেছিলাম তখন। সেই বইমেলা তে আবার ষ্টল পেয়েছিল জাতিয়তাবাদি এবং ইসলামি ভাবধারার প্রকাশনি গুলি। তখন ঘনিষ্ট পরিচয় হয়েছে প্রীতি প্রকাশনি, আহসান পাবলিকেশন্স, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, কো অপারেটিভ বুক সোসাইটির মত প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে। সেবার এবং তারপর ২০০৬ পর্যন্ত নিয়মিত ছিলাম বই মেলাতে। ২০০৭ থেকে আবার অনিয়মিত হয়ে গিয়েছি। এখন খুব বেশি আকর্ষন ও বোধ করিনা। কারন জানি উ্ন্নত প্রকাশনা থাকলেও অনেক প্রকাশনি বইমেলাতে নাই। সেবা কিংবা ঐতিহ্য এর মত প্রকাশনি গুলি সারাবছরই বই প্রকাশ করে বলে বইমেলাতে বই কিনার তারাহুড়া নাই। তবুও সুযোগ পেলে যাই। কিন্তু বই হাতে নিলে চমকে উঠতে হয়। ২৫০ পৃষ্টার বই এর দাম যখন দেখি ৭০০ টাকা লিখা। বেশি হলে দুই তিনটি বই কিনা হয়। একমাসেরও খোরাক হয়না।
বাংলাদেশে শিশু পাঠক সৃস্টির জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর কার্টুন বই এবং শিশু একাডেমির ছোটদের জন্য ছড়া-কবিতার বই এর অবদান অনেকখানি। এখন পাঞ্জেরি পাবলিকেশন ও এই ধরনের কিছু বই প্রকাশ করেছে। কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি এবং ঝিনুক ও এই ধরনের বই বের করত। এখন অনেক প্রকাশনি ছোটদের জন্য বই বের করলেও সেই বই গুলি বেশিরভাগই বিদেশি বই এর অনুকরন। সেখানে দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির স্থান খবই কম। কিশোর বয়সে প্রথম আকর্ষন পেয়েছিলাম তিন গোয়েন্দায় তারপর সাইমুম সিরিজে। সল্পমুল্যে পেপারব্যাক বই প্রকাশ করে বাংলাদেশে পাঠক সৃষ্টির জন্য সেবা প্রকাশনি এবং এর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেন এর অবদান চির দিন স্মরনিয় থাকবে। তিন গোয়েন্দা বা মাসুদ রানা নিয়ে প্রায়ই শুনা যায় এগুলিতে শিখার কিছু নাই। কিন্তু এই কথা যারা বলেন দেখা যায় তারা অর্থহিন সিরিয়াল দেখে যাচ্চেন বছরের পর বছর ধরে। বই শুধু জ্ঞান নয় বিনোদন এর ও মাধ্যম এটা অনেকেই মানতে চাননা। এমনকি যখন আধুনিক প্রেস আবিস্কৃত হয়নি তখনও বই বিনোদন এর জন্য ছিল। তিন গোয়েন্দা থেকে শিকার কাহিনী হয়ে সেবার অনুবাদ এবং কিশোর ক্লাসিক এর মাধ্যমেই প্রথম পরিচিত হই বিশ্ব সাহিত্যের ভিক্টও হুগো, চার্লস ডিকেন্স, এরিক মারিয়া রেমার্ক, হেনরী রাইডার হ্যাগার্ড এবং জুল ভার্ন এর সাথে। সহজ সরল অনুবাদ এবং সল্প দাম এই দুটির সুবিধা না পেলে বিশ্ব সাহিত্যের একটি বড় অংশ সম্পর্কেই বোধ হয় অপরিচিত থাকতাম্ এই জন্য ধন্যবাদ ও চির কৃতজ্ঞতা সেবা প্রকাশনি কে। কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি,বাংলা সাহিত্য পরিষদ এবং প্রীতি প্রকাশনির মাধ্যমে পরিচিত হই নসীম হিজাজীর লেখার সাথে।উপমহাদেশে এই ধরনের ঐতিহাসিক উপন্যাস আর কেউ লিখেননি। ঐতিহাসিক উপন্যাস মানেই ইতিহাস বিকৃত করে মিথ্যাকে প্রচারের যে ঐতিহ্য বঙ্কিমচন্দ্র বাংলা সাহিত্যে শুরু করেছিলেন নসীম হিজাজীর উপন্যাসগুলি না পড়লে বোধ হয় ঐতিহাসিক উপন্যাসের প্রতি চির অশ্রদ্ধা থেকে যেত। আর আবুল আসাদ এর সাইমুম সিরিজ ভুলবার নয়। আমার মনে হয় বাংলাদেশে অনেক বেশি কিশোর তরুন ইসলামের প্রতি আকৃস্ট হয়েছে এই সাইমুম সিরিজ পড়ে। যেখানে মাসুদ রানার মত রোমাঞ্চ ও অ্যাডভেঞ্চার এর পাশাপাশি রয়েছে ইসলামের সরল ব্যাখ্যা এবং ইসলামের ইতিহাসে ভুলে যাওয়া ঘটনাগুলির পুনর্উল্লেখ। সাইমুম পেরিয়ে ক্রুসেড এবং আরো কয়েকটি সিরিজ চালু হলেও সাইমুম কে অতিক্রম করতে পারেনি কেউ। ঐতিহ্য প্রকাশনি বই এর ক্ষেত্রে একটি ভাল উদ্যোগ এনেছে সেবার মতনই। ভাল বাধাই হলেও মোটামুটি গ্রহনযোগ্য মুল্যে খুশবন্ত সিং ও আইজাক আজিমভ এর মত লেখকদের অনুবাদ পাঠকদের জন্য জরুরি। নওরোজ,আহমদ পাবলিশিং,মাওলা ব্রাদার্স, অ্যাডর্ন,সন্দেশ,পাঠক সমাবেশ এর মত প্রকাশনিগুলিও ভাল বই প্রকাশ করছে। বই মেলাতে গেলে এই প্রকাশনিগুলির দিকেই বেশি নজর দিই তবে অনেক সময় দেখেছি ছোটছোট প্রকাশনি তে ভাল বই পাওয়া যায় কখনও কখনও। বই মেলার সুবিধা সেটাই।
বাংলাদেশের ষোলকোটি মানুষের জন্য বেশিরভাগ বই ছাপা হয় ১০০০ কপি! এটি কতটা লজ্জার কতটা যন্ত্রনার। ষোল কোটির মধ্যে এক শতাংশও যদি বই পড়েন তাহলে পাঠক দাড়ায় ষোল লক্ষ তার এক শতাংশ যদি একটি বই কিনেন তাহলে ক্রেতা দাড়ায় ষোল হাজার। খুব ভাল বই ও এখানে পাঁচহাজার এর বেশি ছাপান হয়না। সৈয়দ মুজতবা আলি প্রায় ষাট বছর আগে বলে গেছেন বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয়না। কিন্তু আমাদের তরুন সমাজ এখন প্রতি মাসে হাজার টাকা শুধু মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তাদের অভিবাবকরা দশ-পনের হাজার টাকা দিয়ে মোবইল সেট কিনে দেন কিন্তু বই এর কথা তুললে বলেন অনেক দাম! কিংবা পড়ার ক্ষতি হয়। বই কিনে দেউলিয়া হওয়ার ভয়ে আমরা এখন জাতিগত ভাবেই দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছি বই না কিনে ও না পড়ে।
বিষয়: বিবিধ
২৬৯২ বার পঠিত, ৬৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসুন একটি করে বই কিনে প্রতি মাসে।
প্রত্যেকে যদি তার সামর্থ অনুযায়ি বই কিনে তাহলেও বই এর একটি ভাল বাজার হবে।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
ভাল লাগলো,ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ।
আমার পড়তে অনেক বিরক্তি লাগে
এটাই তো কমন ডায়ালগ বাঙ্গালির।
মোবইল এর সাথে বইএর কোন প্রতিযোগিতা নাই কারন দুইটা ভিন্ন মাধ্যম। আমি নিজে বাংলাদেশে যখন মোবাইল এর ইউজার ১ লক্ষ হয়নি তখন থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করি। চাকরি করেছি মোবাইল কোম্পানিতে। তবুও বই পড়তে অসুবিধা হয়না।
তাফসিরুল কোরআন মাহফিলকে কেন্দ্র করে প্যারেড মাঠে যেভাবে একটি সুন্দর বইমেলার আসর জমে উঠতো প্রতি বছর তাতে আমি প্রতিদিন কোন না কোন স্টলে গিয়ে একটি বই পড়ে ফেলতাম। দোকানদের মানসিকতা বুঝে হয়তো বইয়ের কিছু অংশ পাঠ করে অন্য স্টলে গিয়ে বাকী অংশ পড়ে ফেলতাম। এভাবে পাচঁ দিন ধরে চলা বই মেলাতে আমার উপস্থিতি থাকতো বরাবরের মত। অবশ্য নিজের সামর্থানুযায়ী কিছু কিছু বই ক্রয় করতাম। ১৯৯৯ সাল থেকে যখন কর্ম জীবনে পা রাখলাম তখন অবশ্য নিজের টাকা দিয়েই বই পুস্তক কিনতাম। অবশ্য আমি একটু হাড় কিপ্টা স্বভাবের কারণে বই পুস্তুক ক্রয়েও তার প্রভাব পড়তো।
বই ক্রয়ের স্বভাব থাকলেও ক্রয় করে পড়ার অভ্যাস মোটামোটি মাঝারী ধরনের। এখনো ক্রয়কৃত অনেক বই পড়া হয়নি।
পড়তে পড়তে পাঠক হওয়ার ধর্য্য আমার মধ্য আছে। কালের পরিক্রমায় ও প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে বই পুস্তক ও লেখালেখিটাও ডিজিটালাইজ হয়ে গেছে। বর্তমানে অনলাইনে বসে অনেক কিছুই পড়া যাচ্ছে। অনেক কিছুই সংগ্রহ করা যাচ্ছে। পেশাগত কারণে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ পাওয়াতে চিন্তাভাবনা এবং পড়াশুনার স্টাইলেও পরিবর্তন এসেছে নিজের মধ্যে। কিন্তু কোনদিন চিন্তাই করিনি আমি কিছু লিখতে পারবো। ছাত্র জীবনে মধ্য প্রাচ্যে প্রবাসী বড় ভাইয়ের প্রতি পাক্ষিক চিঠির উত্তর দিতাম আমি ত্রৈমাসিক কিংবা আরো দেরীতে। এর মূল কারণ হচ্ছে কিছু লিখতে অভ্যস্ত না হওয়া। তাছাড়া মনস্তাত্তিক একটি হীনমন্যতাবোধ তো ছিলই আসলে মনের ভাবকে চিঠির ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো কি না! ইদানিং ব্লগিং জগতে প্রবেশ করার ফলে পাঠক হওয়ার পাশাপাশি নিজেও কিছু অনুভূতি জাহির করার চেষ্টা করি নিজের অদক্ষ হাতের অগোচালো ভাষা দিয়ে।
মনে হয় মন্তব্যটা একটু বেশী লম্বা হয়ে যাচ্ছে। পড়তে পড়তে বিরুক্তিও আসতে পারে। তাই এখানেই শেষ করছি।
আপনি লিখেছেন, "তিন গোয়েন্দা থেকে শিকার কাহিনী হয়ে সেবার অনুবাদ এবং কিশোর ক্লাসিক এর মাধ্যমেই প্রথম পরিচিত হই বিশ্ব সাহিত্যের ভিক্টও হুগো, চার্লস ডিকেন্স, এরিক মারিয়া রেমার্ক, হেনরী রাইডার হ্যাগার্ড এবং জুল ভার্ন এর সাথে। সহজ সরল অনুবাদ এবং সল্প দাম এই দুটির সুবিধা না পেলে বিশ্ব সাহিত্যের একটি বড় অংশ সম্পর্কেই বোধ হয় অপরিচিত থাকতাম্ এই জন্য ধন্যবাদ ও চির কৃতজ্ঞতা সেবা প্রকাশনি কে। কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি,বাংলা সাহিত্য পরিষদ এবং প্রীতি প্রকাশনির মাধ্যমে পরিচিত হই নসীম হিজাজীর লেখার সাথে।উপমহাদেশে এই ধরনের ঐতিহাসিক উপন্যাস আর কেউ লিখেননি। ঐতিহাসিক উপন্যাস মানেই ইতিহাস বিকৃত করে মিথ্যাকে প্রচারের যে ঐতিহ্য বঙ্কিমচন্দ্র বাংলা সাহিত্যে শুরু করেছিলেন নসীম হিজাজীর উপন্যাসগুলি না পড়লে বোধ হয় ঐতিহাসিক উপন্যাসের প্রতি চির অশ্রদ্ধা থেকে যেত। আর আবুল আসাদ এর সাইমুম সিরিজ ভুলবার নয়। আমার মনে হয় বাংলাদেশে অনেক বেশি কিশোর তরুন ইসলামের প্রতি আকৃস্ট হয়েছে এই সাইমুম সিরিজ পড়ে। যেখানে মাসুদ রানার মত রোমাঞ্চ ও অ্যাডভেঞ্চার এর পাশাপাশি রয়েছে ইসলামের সরল ব্যাখ্যা এবং ইসলামের ইতিহাসে ভুলে যাওয়া ঘটনাগুলির পুনর্উল্লেখ। সাইমুম পেরিয়ে ক্রুসেড এবং আরো কয়েকটি সিরিজ চালু হলেও সাইমুম কে অতিক্রম করতে পারেনি কেউ।গফরতিন গোয়েন্দা থেকে শিকার কাহিনী হয়ে সেবার অনুবাদ এবং কিশোর ক্লাসিক এর মাধ্যমেই প্রথম পরিচিত হই বিশ্ব সাহিত্যের ভিক্টও হুগো, চার্লস ডিকেন্স, এরিক মারিয়া রেমার্ক, হেনরী রাইডার হ্যাগার্ড এবং জুল ভার্ন এর সাথে। সহজ সরল অনুবাদ এবং সল্প দাম এই দুটির সুবিধা না পেলে বিশ্ব সাহিত্যের একটি বড় অংশ সম্পর্কেই বোধ হয় অপরিচিত থাকতাম্ এই জন্য ধন্যবাদ ও চির কৃতজ্ঞতা সেবা প্রকাশনি কে। কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি,বাংলা সাহিত্য পরিষদ এবং প্রীতি প্রকাশনির মাধ্যমে পরিচিত হই নসীম হিজাজীর লেখার সাথে।উপমহাদেশে এই ধরনের ঐতিহাসিক উপন্যাস আর কেউ লিখেননি। ঐতিহাসিক উপন্যাস মানেই ইতিহাস বিকৃত করে মিথ্যাকে প্রচারের যে ঐতিহ্য বঙ্কিমচন্দ্র বাংলা সাহিত্যে শুরু করেছিলেন নসীম হিজাজীর উপন্যাসগুলি না পড়লে বোধ হয় ঐতিহাসিক উপন্যাসের প্রতি চির অশ্রদ্ধা থেকে যেত। আর আবুল আসাদ এর সাইমুম সিরিজ ভুলবার নয়। আমার মনে হয় বাংলাদেশে অনেক বেশি কিশোর তরুন ইসলামের প্রতি আকৃস্ট হয়েছে এই সাইমুম সিরিজ পড়ে। যেখানে মাসুদ রানার মত রোমাঞ্চ ও অ্যাডভেঞ্চার এর পাশাপাশি রয়েছে ইসলামের সরল ব্যাখ্যা এবং ইসলামের ইতিহাসে ভুলে যাওয়া ঘটনাগুলির পুনর্উল্লেখ। সাইমুম পেরিয়ে ক্রুসেড এবং আরো কয়েকটি সিরিজ চালু হলেও সাইমুম কে অতিক্রম করতে পারেনি কেউ"।
আপনাকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারছিনা। এই প্যারাতে অনেক গুলো কথা চলে এসেছে। তাই আপনার প্রতিটি কথার সাথে শতভাগ একমত। আমিও ছাত্রজীবনে এই প্রকাশনী গুলোর প্রচুর বই পড়তাম। পড়তে পড়তে বইয়ের ঘাটতি পড়ে যেত, তবু্ও আমার পড়ার আগ্রহে ঘাটতি হত না। পড়ার বইয়ের অভাবে পুঁথি, কিসসা, কবিতা, তাবিজের বই, যাদুর বই, রামায়ন, মহাভারত কোনটাই বাদ রাখতাম না। যাক, এ নিয়ে হয়ত আরেকটি লিখা যাবে।
তবে আপনাদের পাশেই, (আপনার বর্ণনা অনুযায়ী ঠিকানার) ১৯৯১ সালে প্রায় ২৪ বছর আগে আমি ক্লাস সিক্সে পড়ুয়া এক অসম্ভব মেধাবী ছাত্রকে পড়াতাম। তাঁর বই পড়ার অসম্ভব আকর্ষন দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম! তাঁর পিতা সরকারী সিটি কলেজের প্রফেসর কে প্রশ্ন করে ছিলাম, সে এত তথ্য কোথায় পায়? তিনি বলেছিলেন, আমার পিতা মানে তাঁর দাদার বই পড়ার ঝোঁক ছিল, তাঁর একটি নিজস্ব লাইব্রেরীও ছিল, ছেলেটি স্কুল থেকে এসেই বুড়োদের সব বই পড়তে থাকে! এটাই হল তার একমাত্র 'হবি'। তিনি আরো জানালেন ছেলের জন্য মাষ্টার রেখে সুবিধা করতে পারিনা। তার মারাত্মক মারাত্মক প্রশ্ন গুলো স্যারদের বিব্রত করে, পরে সরকারী কলেজিয়েট স্কুলের গনিতের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে আপনার সন্ধান পেয়েছি।
আমার যতটুকু মনে পড়ে সে ছাত্রটির নামও হয়ত সবুজ হতে পারে। ইপিজেট এ চাকুরী থাকার কারণে পড়ানোতে আমার সমস্যা হত বিধায় পড়ানো ছেড়েছিলাম। তবে বিদেশ থেকে দেশে গিয়ে একবার খবর নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু পাইনি তাছাড়া ভাবলাম আমার কথা তাদেরও মতে থাকবে কিনা জানিনা!
আমার এখনও পরিষ্কার মনে আছে ছাত্রটি আমাকে প্রথম দিন দুটো প্রশ্ন করেছিল:
১. মুসোলী কে ছিলেন (মুসোলিনী নয়)?
২. স্ক্রু-ডাইভারের বাংলা নাম কি?
সম্পাদককে ধন্যবাদ অভিজ্ঞতালব্ধ পোষ্টটি ষ্টিকি করার জন্য।
ধন্যবাদ পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য।
ভাই দিন বদলেছে অনেক আলহামদুলিল্লাহ। এখন ইসলামিক বই হাজার হাজার কপি বের হয়। যেমন আবু তাহের মিছবাহ সাহেবের বই। যায়নুল আবেদিন সাহেবের বই।
এক কথায় বাংলায় ইসলামিক সাহিত্যের একটা গনজাগরণ শুরু হয়েছে বলা যায়।
আপনার অভিজ্ঞতা গুলো ভালো লাগলো।
একসময় হুমায়ুন স্যারের বইয়ের জন্য ঘুড়েছি এখন রেহনুমা আপুর বইয়ের জন্য ঘুড়ছি যদিও পাইনি।
ইসলামিক বইয়ের পাঠক সংখ্যা অনেক বাড়ছে।
দোয়া করি এ ধার্ অব্যাহত থাকুক।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
ইসলামিক বই বের হচ্ছে বেশি কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বিভিন্ন বইএর বক্তব্য পড়ে অনেক সময় পাঠক নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে যায়। আপনার অভিজ্ঞতাগুলিও যদি লিখতেন ভাল হতো। রেহনুমা আপুর প্রকাশক হলেন আমাদের প্রিয় ব্লগার মাই নেম ইজ খান ভাই। বাংলাবাজারে তার বই পাবেন।
তিন গোয়েন্দার সিরিজ এর কিছু বই আমি পড়ে ভীষন বিরক্ত।
মাসুদ রানার সিরিজ খ্রাপ লাগেনাই।
তবে হেজাজী আর আলতামাশ এর বই অনেক ভালো লেগেছে।
আমার আল্লামা সাইদি সাহেবের মাহফিল ও আরও কিছু ছোট-খাট বই মেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও বাংলা একাডেমীর অভিজ্ঞতা একদম নেই। তবে আমার বাবার বই কারনে আমাদের বাসায় যে পরিমান বই আছে সেজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে তেমন বই কিনিনি বললেই চলে।
ধন্যবাদ।
jati hishebe amader unnoti vul kore vul vabe hocche. Rongin kagoje murano fafa jati.
hope 1day it will be changed In Sha Allah
‘বই কিনে দেউলিয়া হওয়ার ভয়ে আমরা এখন জাতিগত ভাবেই দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছি বই না কিনে ও না পড়ে।’- সত্যিই দুঃশ্চিন্তার বিষয়।
আপাতত: ব্যস্ততার কারণে পরে পড়ার ইচ্ছা রইলো।
: :
তবুও আপনাকেও ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
আরো বেশি বই পড়ুন।
ধন্যবাদ।
আমি একুশে বই মেলায় জীবনে একবারই গিয়ে ছিলাম তাও ২০০৮ সালে।
যেহেতু চট্টগ্রামেই কেটেছে জীবনের অধিকাংশ সময় তাই খুব বেশি একটা সুযোগ পাইনি
সময়াভাবে মন্তব্য করা সম্ভব হয়নি ।
খবই ভাল মানে একটি লেখা । নতুনরা লেখা থেকে অনেক কিছুই জানতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস ।
সহজ কথায় বলতে গেলে প্রিয় ভাই নজরুল ইসলাম টিপু ভাইয়ের মন্তব্যের সাথে আমি একমত ।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ । আরো লিখুন ।
এতদিন পরে হলেও মন্তব্য করার জন্য!!!
আপনার ভ্রমন কাহিনী কই???
কিছুক্ষণের জন্য শৈশবে ফিরেছিলাম।
শৈশবে শুধু ফিরে গেলে চলবে না। বইকিনা এবং পড়ার অভ্যাস টা বজায় রাখতে হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন