এক শর্তে করতে পারি বিয়ে (অসাধারণ রোমান্টিক প্রেমের গল্প)
লিখেছেন লিখেছেন ছিঁচকে চোর ২৫ মে, ২০১৪, ০৬:৪৪:৪৫ সন্ধ্যা
- এক শর্তে করতে পারি বিয়ে।
বলেই মেয়ে মুখ ঝামটা দেয়। পাত্রী দেখতে এসেছে পাত্র পক্ষ। আলাপ চারিতার জন্য ছেলে মেয়েকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। মেয়ে সব দিক দিয়েই রাজি, কিন্তু হটাত আবার শর্ত দিচ্ছে।
মেয়ে একটু ঘাড় ত্যাড়া প্রকৃতির। কিন্তু, ছেলের একটু বেশী পছন্দ হয়েছে। এই মেয়েকেই তার বিয়ে করা চাই। তাই,যেই শর্তই দিচ্ছে হ্যা হু করে মেনে নিচ্ছে ছেলে। এখন আবার বিশেষ একটা শর্ত দিতে চাইছে। ছেলে জানতে চায়
- কি শর্ত!
- বিয়ে করতে পারি, কিন্তু অন্তত বিয়ের ২ বছর পর্যন্ত প্রেম করতে হবে। আমার কাছে ধারে আসতে পারবেন না। দূরে দূরে থাকবেন। রাজি থাকলে বলেন।
ছেলের মাথায় হাত। এই সিস্টেম সে কোথা থেকে আবিষ্কার করলো সেটা জানতে চাইলো ছেলে
- এটা আবার কেমন কথা! দূরে দূরে থাকলে বিয়ে করবো কেন?
- ও আপনি বুঝি অমুক হিন্দি সিরিয়াল দেখেন নি! ওরা বিয়ের ২ বছর পর্যন্ত একজন আরেকজনকে বুঝেছে। অমুক সিরিয়ালে ৫ বছর ও ছিল। সারাজীবনের জন্য এতো টুকু ত্যাগ তো করাই যায় তাইনা? নাইলে একজন আরেক জনকে বুঝবো কীভাবে?
পাঠক, এটা একটা সত্য ঘটনা। হিন্দি সিরিয়াল যে শুধু বস্তা পচা তাই ই না, হিন্দি সিরিয়াল চরম অবাস্তব একটা আবহ তৈরি করে নারীর মনে। যা মেয়েদের মধ্যে এই ধরনের মানসিকতা ও তৈরি করে দিচ্ছে। অবাক হচ্ছেন!
আর যারা সারাক্ষন সিরিয়াল দেখে তারা বাস্তব জগতে কমই বিচরন করে। কেউ কেউ নাকি জামার ডিজাইন শিখার জন্য ও সিরিয়াল দেখে, যদিও প্রতিদিন এতো এতো নতুন কাপড় বানিয়ে পড়া সম্ভব ও না।
জীবনটা আসলে সিরিয়াল ও না, সিনেমার গান ও না। গানে যেই আবেগ, সিরিয়ালের দূরে থাকায় যেই রোমান্স , বাস্তব জীবনে তা সুদূর পরাহত। এখানে , দূরে থাকলে, রাগ করলে, ঝগড়া ঝাটি হলে কেউ দুঃখের গান ছেড়ে দিবে না।
একটা কথা ভালোবাসার মানুষ বললে কেউ ষ্টীল পিকের মতো ৫ মিনিট তাকিয়েও থাকবে না। বিভিন্ন এঙ্গেলে ক্যামেরা আকিয়ে বাকিয়ে কেউ বিশেষ আবেগের উত্থানের প্রয়াস ও ঘটাবে না।
এটা বাস্তব জীবন, এখানে দিনে ৩ বেলা ভাত খাওয়ার জন্য মানুষকে কাজে যেতে হয়, রান্না বান্না করতে হয়, আর জীবনের প্রয়োজনেই এক সাথে থাকতে হয়।
সিরিয়ালের মতো সারাদিন একজন আরেকজনের চিন্তায় আকুল হয়ে থাকলে পেটে ভাত জুটবে না। আর সিরিয়ালের মতো বেশির ভাগ মানুষেরই নিশ্চয়ই নবাব জাদার সাথে বিয়ে হবেনা! যে সকালে অফিসে যেতে হবেনা, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবেনা।
বস্তায় বস্তায় টাকা লাগবে এমন লাইফ স্টাইলের জন্য। কিন্তু আপনার পারিবারিক জীবন সম্পর্কে যে জঘন্য আউট লুক, ঝগড়া ঝাটি, কানাকানি, চোগল খুরী ফ্রি শিখাচ্ছে, এমন অসভ্য সংস্কৃতি পৃথিবীতে কমই আছে। এরচেয়ে , একটা গল্পের পড়লেও সময়টা অপচয়ের হাত থেকে বেঁচে যায়।
বিশেষ করে অবিবাহিত মেয়েরা, যারা টুকটাক সিরিয়াল দেখা ছাড়তে পারছেন না, তাদের মানসিকতা বদলে দিতে পারে সিরিয়াল যে কোন সময়ই। সুতরাং
সাধু সাবধান (পোষ্টি মেরে দিয়েছি।
বিষয়: বিবিধ
৭৫২৭২ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাস্তব আর নাটক সিনেমা এক নয় ।ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাস্তব আর নাটক সিনেমা এক নয় ।ধন্যবাদ ভাইয়া।
চোর মশাই! এত্তোগুলান ভালা ভালা প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাগো বিডেদের জাতে তুইলবার মহান দায়িত্ব নিয়েছে হিন্দু সিরিয়ালওয়ালারা! আর আপনেরা আছেন হেতেরগোর বিরোধীতায়? যত্তসব গ্যাঞ্জাম!
সারাদিন বাইরের কাজে ইনভলভ স্বামী বাসায় এসে স্ত্রীর কূটনামীতে কোন ভাবেই সুবিধা করতে পারে না ।
কোন কথা কি এঙ্গেলে বললো , আবার কোন কথায় মাইন্ড করলো বা কি বলে কি বোঝাতে চাইলো , সংসারের কার সাথে কার ঝামেলা বাঁধিয়ে দিল বা স্বামীর সাথে তার আপনজনদের সম্পর্ক শীতল করে দিল - ভারতীয় সিরিয়াল দেখে এসব কূটনামী ও চুকলিবাজি স্ত্রীরা হর হামেশাই করে থাকে ।
ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট , দূর্দান্ত ক্যারিয়ার , পশ চাকরি এবং অঢেল টাকাও কোন ম্যাচ না স্ত্রীদের এইসব কূটনামীর কাছে । কারণ এসব কূটনামী করে স্ত্রী সংসারে তার ছড়ি ঘোরায় এবং সবসময়ই স্বামীর কাছে সংসারকে একটা অশান্তির জায়গা বানিয়ে রাখে । সংসারে যদি অশান্তি থাকে তাহলে তার আর কোন জায়গাতেই শান্তি আসে না ।
তাই স্বামীদের তাদের স্ত্রীদের এইসব কূটনামী ও চুকলিবাজী বুঝতে ও ধরতে অবশ্যই ভারতীয় সিরিয়াল দেখতে হবে ।
ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টের জন্য
ধন্যবাদ সত্যকে সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য
ভাল লেখা বেশি শেয়ার হলে সমস্যা কোথায়? অবশ্য আপনার নাম উল্লেখ করলে উত্তম হতো বৈকি!
এ নিয়ে আর কথা না বলাটাই কি সঙ্গত নয়?
মন্তব্য করতে লগইন করুন