নস্টালজিয়া বাল্যকাল
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আশরাফ ২৭ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:৫৯:০২ দুপুর
এই মূহুর্তে যদি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাকে ডাক দিয়ে বলে, "হে আমার গোলাম আমি তোর অমুক কাজে সন্তুষ্ট হয়েছি, তুই আমার কাছে কি চাও বল" কোন প্রকার দিকবিধিক না ভেবে বলতাম চিরস্থায়ী বাল্যকাল চাই।
চোখ গোল করে তাকানোর কিচ্ছু নাই ভাই। সোনা-দানা-সম্পত্তিতে সুখ নাই। বাল্যকালটা কেন চাইতাম তা চোখ বন্ধ করে একবার আপনার বাল্যকালে ঘুরে আসেন। দেখেন সকাল-সন্ধা বাল্যকালের প্রতিটি ক্ষনে কি সুখ বিছানো আছে পরতে পরতে।
কি বড় হয়ে অস্থ্যির চিন্তা জগতে বিচরনের কারনে নিউরন অতীতের স্মৃতি খুঁজে পেতে কষ্ট পাচ্ছে? তাহলে থাকুন আমার সাথে আমার স্মৃতি বলতে থাকি দেখুন তার আপনার স্মৃতির সাথে মিলে কিনা। যা মিলে মিলান বাকি গুলো স্মৃতি হাতরে বের করে আনুন।
খেলাধূলা:
বাল্যকালের সবচাইতে বেশি উপভোগ করতাম খেলাকে। গ্রাম্য এমন কোন খেলা নাই যে খেলি নাই। সকাল-সন্ধা সুযোগ পেলেই মাঠে-জঙ্গলে-গাছের ডালে-পুকুর/বিলে। খেলার কোন শেষ নাইরে ভাই। পোলাপাইনের যখন যেইটা মনে উঠতো ঐটাই খেলা শুরু করে দিতাম। সব খেলার কথা বইলা শেষ করতে পারুম না। উল্লেখযোগ্য কয়েকটা না বললেই নয়।
মার্বেল খেলা, লাড্ডু খেলা, সাত চারা, বউছি,দাড়িয়াবান্ধা, ফুলটবল, ক্রিকেট, বরফ পানি, টিলো এসেপ্রস, ঘুড়ি ওড়ানো, পানির নীচে ডুব দিয়ে থাকা। আর বৃষ্টির দিনেও খেলা থেমে থাকতো না। চোর-পুলিশ, ষোল গুটি, লুডু, খেজুরের চারগুটি, বাঘবন্ধি, দাবা খেলা।
বন্ধুদের সাথে স্মৃতির ডায়লগ:
> দোস্ত বিকলে মাঠে আহিস কিন্তু
> ওই কয়টা মার্বেল হাওলাত দে, জিত্তা দিয়া দিমুনে
> দোস্ত আমি তোর দলে খেলুম কইলাম
> ওই কাইন্ঠামি করবিনা কইলাম
> অইবোনা, দানে দানে তিন দান। আবার টস দে।
> সন্ধার পর আইতারুম না দোস্ত, মায় এক্কেবারে মাইরা ফালাইবো।
পড়াশোনা:
এইটার কথা মনে পড়লে আবার বাল্যকালে ফেরত যাইতে মন চায় না। চিরতার চাইতেও বিরক্তিকর লাগতো খেলার টাইমে পড়তে বসা যদিও পড়ার টাইমে খেলতে বিরক্ত তো দূরের কথা মজাই মজা। স্কুল থেকে পলায়ন অনেকে উপভোগ করলেও আমি কখনো স্কুল পালাইনি। তবে অনেক বন্ধুকেই দেখছি টিফিনের সময় বাথরুমের ওয়াল টপকে স্কুল পালাতে। এতে তারা কি মজা পেত কে জানে।মাঝে মধ্যে পরের দিন টিফিনে পালানোর অপরাধে ওরা ধুমতারাক্কা মাইর খাইতো। তারপরও পালাইতো। নিশ্চই কোন মজা আছে তাতে। আবার বাল্যকালে ফিরে গেলে ট্রাই দিয়ে দেখবো কি মজা তাতে।
মজার কিছু স্মৃতিময় ডায়লগ:
> ওই মামা ২ টাকার ঝালমুড়ি দেন/একটা আইসক্রীম দেন/দুইটা আলু দেন...
> স্যার পেট ব্যাথা করতাছে ছুটি দেন...
> মা আজ স্কুলে যাইতে ভাল্লাগতাছেনা/মা মাথা ব্যাথা করছে স্কুলে যাইতে পারবোনা/এতো বৃষ্টির মধ্যে স্কুলে কেউ আইবোন খামোখা আমি যাইয়া কোন লাভ নাই।
> দোস্ত তোর শার্টের পেছনে কে জানি কলমের কালি লাগইয়া দিছে।
> এক এক স্যারের এক এক নাম রেখে তা নিয়ে মজা করা
> স্কুলের ঘন্টা পরলে কার আগে কে ক্লাস থেকে বের হবে হইহুল্লুর করা। একসাথে চিল্লাইয়া গান গাওয়া - “ স্কুল ছুটি...গরম গরম রুটি...এক কাপ চা...সবাই মিলে খা’’
আহ! লিখতে লিখতে হয়রান হইয়া গেলাম। আজ আর না।
২৭.১১.২০১৪
বিষয়: বিবিধ
১৭৬২ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কেন গো ভাই,এতো তাড়াতাড়ি নতুন জীবন পানসে হয়ে গেল.......!!
"নদীর এ পাড় কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস!
ওপাড়েতে যত সুখ আমার বিশ্বাস!!!"
প্রযোজনে ছিনিয়ে নাও আমার এই যেীবন।
কিন্তু ফিরিয়ে দাও সেই ফেলে আসা বর্ষা,
সেই কাগজের নেীকা আর বৃষ্টির জল।
আমায় যদি জিজ্ঞেস করত, কি চাই, বলতাম, ছোটকালের সেই বিয়ে করা, দিনে আটটা দশটা, কোন কাবিন লাগতনা, আর এখন কাবিনের ভয়ে বিয়ে করার কথা মুখে এসে বাহির হওয়ার আগেই ভিতরে চলে যায়।
যাই হোক বাল্যকালের স্মৃতিচারণ করেছেন অত্যন্ত দরদ ও ভালবাসা দিয়ে তাই ভাল লেগেছে।
ধন্যোবাদ নিবেন।
অনেক স্মৃতি স্বরন করিয়ে দিলেন।অনেক অনেক ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন