...শিউলি ফুলের ভালবাসা...
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আশরাফ ২২ নভেম্বর, ২০১৪, ০২:৩৩:৩৯ দুপুর
অফিস শুক্র-শনি দুইদিন ছুটি। প্রবাসে একাকী দুইদিন ছুটি কাটানো বিশাল ঝামেলার ব্যাপার। কিছুতেই সময় গড়াতে চায়না।আবার কোন কাজে ব্যাস্ত থাকলে দেখবেন সময়কে থামাতে পারছেননা, কেমন যেন তরতর করে শেষ হয়ে যায় দিন তবু কাজ শেষ হচ্ছে না। আবার অলস সময় ঘড়ির কাটা যেন স্থির হয়ে থাকে। চোখ বন্ধ করে অলসভাবে শুয়ে আছেন, রাত্রে বেশ ভালো ঘুম হয়েছে তাই ঘুম বাবাজিও নাই এখন, অনেকক্ষন শুয়ে আছেন ভাবছেন হয়তো ঘন্টা খানেক পার হয়েছে কিন্তু ঘড়ির কাটা মাত্র দশ মিনিটা অতিক্রম করেছে তখন কেমন লাগে বলেন।
এইরকম বিরক্তিকর ক্ষনের মাঝেও স্মৃতি আওড়াতে অনেক মজা লাগে। চোখ বন্ধ করে টাইম মেশিনে চড়ে অতীতে ফিরে যাই। সুখকর স্মৃতিগুলোর পরতে পরতে হেঁটে বেড়াই। এক অন্যরকম ভাললাগা স্পর্শ করে যায় হিয়ার মাঝে। সময় তখন বেশ ভালোই কাটতে থাকে।
এইরকমই একটা ছোট্ট বেলার মজার স্মৃতি "শিউলি ফুলের ভালবাসা" বয়স তখন কত হবে সাত/আট/দশ কিংবা এগারো। আমাদের পরিবার তখন তেঁজকুনিপাড়াতে সরকারী কোয়ার্টারে ভাড়া থাকতো। ভাবছেন সরকারী কোয়ার্টারে আবার ভাড়া থাকে কেমনে? কারন সরকারী কোয়ার্টার তো ভাড়া দেওয়া নিষেধ। হুম নিষেধ তো কি হয়েছে, সরকারী কাজের কোথায় দূর্নীতি নাই বলেন তো। ঘর ভাড়াতেও আছে।সরকারী কর্মকর্তা সেই ভাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়াদের তার আত্বীয় পরিচয় দিতেন বড়কর্তাদের কাছে।
যাইহোক কথা বলছিলাম শিউলি ফুলের ভালবাসা নিয়ে। আমাদের বাসা থেকে শিউলি ফুল সংগ্রহের কয়েকটি উৎস ছিল। ফার্মগেটের কাছেই খ্রিষ্টানদের একটা বড় গির্জা ছিল এবং সেটা ছিল সবচেয়ে বেশি শিউলি ফুল সংগ্রহের উৎস। তাছাড়াও তেঁজগাও পোষ্ট অফিস, রাস্তার ধারে একটি বাড়ি। আর একটা ছিল খ্রিষ্টান সিস্টারদের আবাসস্থল।
সেই কাক ডাকা ভোরে মানে ফজরের নামাজের পরপরই কয়েকজন মিলে দল বেঁধে ফুল কুড়াতে ছুটতাম। প্রথমেই কাছের পোষ্ট অফিসের কাছে যেতাম। পরে সোজা রাস্তা ধরে গির্জার দিকে যেতাম যাত্রা পথেই সেই বাড়ির বাউন্ডারি ঘেষে শিউলি ফুলের গাছ থেকে ঝরে পড়া ফুল কুড়িয়ে নিতাম। তার পর সিষ্টারদের আবাসস্থলে ঢুকার চেষ্টা দিতাম। কারন ওখানে একবার ঢুকতে পারলেই হলো, এক্কেবারে ফুলে ভরপুর। আর শুধুকি শিউলি, বকুল ফুলও পাওয়া যেত অনেক। ওদিন আর গির্জার দিকে যাবার চাহিদা থাকতো না। যাইহোক দরজা বন্ধ থাকলে গির্জাই ভরসা। ওখানে যা ফুল পাওয়া যেত তাতে মিনিমাম দুইটা মালা গাঁথা যেত।
ফুল বেশি থাকলে বোটা ছাড়া মালা গাঁথতাম আর কম থাকলে বোটা সহ। এই মালাগুলো আবার পড়ার ঘরে টাঙিয়ে রাখতাম। বলতে গেলে ঐ সময়টাতে শিউলি ফুলের প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া অবস্থাতে ছিলাম।
বাহ! ভালো তো, শিউলি ফুলের ভালবাসার স্মৃতি বলতে বলতে অনেক সময় পার হয়েছে তো। যোহরের আজানও দিয়ে দিয়েছে। যাই অজু করে নামাজ পড়তে যাই দিনের আরো কিছু সময় পার হবে ইবাদতের মাধ্যেমে।
বিষয়: বিবিধ
২৯৭৪ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাহ ভালই তো! কি ভাবে আমিও ডিউটির শাষ প্রান্তে চলে আসলাম!এখন আমারও নামাজ ও রুমে যাওয়ার প্রস্তুতি!
আপনার আজকের লেখনীতে পুর্ণ সহমত পোষণ করে অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহু খাইরান জানালাম!
নিজের জোড়া মিলিয়ে নেয়ার পর সব কিছুতেই জোড়া-জোড়া! দশটি ফুলের রিটার্ণ শুভেচ্ছা!!
ফুলই তো নাই মালা গাঁথবো কি দিয়ে
মন্তব্য করতে লগইন করুন