সফলতার 7P
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আশরাফ ২৭ অক্টোবর, ২০১৪, ১২:০৯:৫৬ দুপুর
জীবন চলার পথে আমরা সবাই সফল হতে চাই।নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই সমাজের একটি সম্মানজনক লেভেলে। কিন্তু জীবনের সফলতা তো আর মুড়ি-গুড়ে বানানো হাতের মোয়া নয় যে ঘরে বসে থাকলেই সফলতা নিজে এসে ধরা দিবে।
সফলতার পথে ছুটতে গিয়ে এমন অনেকে অভিযোগ করেন যে আমি তো খুব বেশি পড়াশোনার সুযোগ পাইনি তবে এই প্রতিযোগীতামূলক বাজারে আমি কিভাবে সফল হবো? এভাবে হতাশ হলে কি আর সফলতা পাওয়া যাবে? ফ্রোর্ড মোটরসের মালিক হেনরি ফোর্ড, মাইক্রোসফটের মালিক বিল গেডস, এ্যাপল এর মালিক স্টিভ জবস তারা কেউই কিন্তু উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ পাননি কিন্তু তাদের জীবনটা সফল।
হয়তো অনেকে অভিযোগ করতে পারে যে, আমি তো গরিব প্রতিযোগীতামূলক এই বাজারে আমি কিভাবে সফল হবো? হুমম একদম ঠিক কথা কিন্তু আমরা কি একটু ভেবে দেখেছি বিজ্ঞানী আবুল কালাম আজাদের কথা, দরিদ্র মাঝি পরিবারের ছেলে জগত বিখ্যাত বিজ্ঞানী কেমন করে হলেন।আব্রাহাম লিংকন মুচির দোকানে কাজ করতেন যে কিনা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তার মানে সফলতার পথে গরিব হওয়া বাধা নয়।
আচ্ছা, তাহলে একটু ভেবে দেখিতো - জীবনে সফলতার দৌড়ে হেনরি ফোর্ড,ষ্টিভ জবস,ডেল কার্নেগী কিংবা এডিসন, আবুল কালাম এদের মতো নাইবা হলাম, নিদেন পক্ষে মধ্যেবিত্ত-দরিদ্র সমাজে সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার মতোও কি সফল হতে পারবো না? এতটুকু আত্ববিশ্বাস থাকা উচিত নয় কি?
তাহলে জীবনে সফল হাবার জন্য কি করা যেতে পারে? কি কি নিয়ম মেনে চললে সফলতার পথে হাঁটা যাবে, হাঁটতে হাঁটতে কেউ কেউ সফলতার চূড়ায় চড়া যাবে? আসুন তাহলে দেখে নেই সফলতার মন্ত্র 7P সম্পর্কে -
P= Positivity(ইতিবাচক মনোভাব): সফলতার পথে ইতিবাচক মনোভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। চলার পথে যে কোন বাধাকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। আমি পারবোই এই দৃঢ় ইতিবাচক মনোবল সফল হতে সহায়তা করবে।
P=Perseverance (কঠোর অধ্যবসায়): এইটাকে আমি সফলতার পথে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। যে কোন কাজে সফল হতে চাইলে ঐ কাজে নিজের সবটুকু সক্ষমতা উজার করে দিয়ে কঠোর অধ্যাবসায় করতে হবে। সফলতা আসবেই গ্যারান্টি।
P= Passion (ভাল লাগা): যে কাজটি যে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করছে তা তার কাছে ভালো লাগতে হবে। ঐ কাজটিকে ভালবাসাতে হবে। আর ভাল লাগার কিছু করতে সবাই আগ্রহ ও উৎসাহ বোধ করে। সুতরাং সফলতার পথে যে কাজই করা হোক তা যেন ভাললাগার অবস্থান থেকে করা হয়।
P= Purpose (উদ্দেশ্য): শুধু মাত্র কঠোর পরিশ্রম করে লাগামহীন ঠিকানায় ছুটলেই হবে না একটি নির্দিষ্ট লক্ষ/উদ্দেশ্যে ঠিক করে নিতে হবে। বলা হয়ে থাকে একটি সুন্দর পরিকল্পনা সফলাতার অর্ধেক। তাই যে কাজটিই করা হোকনা কেন তার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য তা ঠিক করে নিতে হবে।
P= Persistence (লেগে থাকা): এমন হতে পারে প্রচেষ্টার প্রথম ধাপে সফলতা আসলো না তাহলে কি হাল ছেড়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ? তাই সফলতার পথে হতাশ হলে চলবে না। লেগে থাকতে হবে সুপার গ্লোর মতো। ইনশা-আল্লাহ সফলতা আসবেই।
P= Patience (ধৈর্য্য): সফলতার পথে এটাও আর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ন উপাদান। ধৈর্য্য না থাকলে জীবনের কোন কাজেই সফল হওয়া যাবেনা। আর চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটা আকট্য প্রমানিত অস্থির মস্তিষ্ক সঠিক সিদ্ধান্ত ও কাজ করতে পারেনা। তাই সফলাতার পথে ধৈর্য্যশীলতার সাথে সব সিদ্ধান্ত ও কাজ করলে সফলতা আসবেই।
P= People (মানুষ): হাতের পাঁচ আঙুল যেমন সমান নয় তেমনি আমাদের চারপাশের মানুষগুলোও এক একজন এক একরকম। অসমান আঙুলগুলোকে যেমন করে হাত সমান মর্যাদায় বহন করে ঠিক তেমনি চারপাশের লোকদেরও ম্যানেজ মানিয়ে করে চলতে হবে সফলতার পথে।
পরিশেষে, একটা কথাই বলবো সফলতার পথে যে কোন কাজই আন্তুরিকতার সাথে করা উচিত।
২৭.১০.২০১৪
বিষয়: বিবিধ
১৫৫১ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অসাধারণ উদ্দিপনাময় সুন্দর উপস্হাপনায় অনেক অনেক ধন্যবাদ উ শুভ কামনা।
একটা নেতিবাচক কথা শুনাই......
'ত্বাকদির'ই উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের সফলতার কারণ।এ ক্ষেত্রে তাদের চেষ্টা-একাগ্রতা-অধ্যবসায় কিছু টা মাত্রা যোগ করেছে শুধু। পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষদের মধ্যে দু'এক জন কে উদাহরণ হিসেবে পেশ করা নিজেকেই'মিথ্যা শান্তনা'দেয়া ছাড়া আর কী!
মন্তব্য করতে লগইন করুন