অসহায়ে সহায়তার প্রত্যাবর্তন

লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আশরাফ ২৩ জুন, ২০১৪, ০১:৫২:৪৯ দুপুর




লেখার প্রথম প্রান্তেই যে ভিডিওটা এড করলাম তার সম্পর্কে আগে বলি। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক ছোট ছেলে টাকা না দিয়েই অসুধ নিয়ে যাচ্ছিল। বিক্রেতা তাকে ধরে বকাঝকা করে অসুধগুলো তার হাত থেকে কেড়ে নিল। ছোট ছেলেটিকে বকাঝকা করা দেখে পাশের খাবারের দোকানের ভদ্রলোক এগিয়ে এলো বিষয়টা কি দেখার জন্য। ছেলেটা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ভদ্রলোক তাকে জিজ্ঞেস করলো, "তোমার মা অসুস্থ্য?" ছেলেটি হ্যাঁ সুচক মাথা নাড়লো। ভদ্রলোক বিক্রেতাকে অসুধ মূল্য পরিশোধ করে দিল। ছেলেটি অসুধ নিয়ে চলে গেল। ৩০ বছর পর ঐ ভদ্রলোক স্ট্রোক করে হাসপাতালে। চিকিৎসা খরচ আকাশচুম্বি। হাসপাতালের বিল হাতে নিয়ে ভদ্রলোকের স্বজন পেরেশান। বিল পরিশোধ করতে দোকান+বাড়ি বিক্রির নোটিশ দেয়। পরদিন সকালে তার হাতে হাসপাতাল থেকে নতুন বিল আসে যেখানে লেখা এই ভদ্রলোকের বিল ৩০ বছর আগেই পরিশোধ করা হয়েছে। ভদ্রলোকের চিকিৎসা করছেন যে ডাক্তার সে ঐ ছেলেটি যাকে আজ থেকে ৩০ বছর আগে অসুধের অর্থ নিয়ে সহায়তা করেছিলেন এই ভদ্রলোক।

এই দৃশ্যপট থেকে যে শিক্ষাটা পেলাম তা হলো আজ যদি আমি কাওকে নিস্বার্থ ভাবে সহায়তা করি কোন একদিন হয়তো আল্লাহ তাকে দিয়ে আমাকে সহায়তা করাবেন।

ঘটনা ১.

এক ভাই প্রবাস থেকে তার সামর্থ্যমতো পরিবারের সবাইকে সহায়তা করে। তার বড় ভাইয়ের পরিবার দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে দিনাতিপাত করছিল। সে তার বড় ভাতিজাকে দুই লাখ টাকা পুঁজি দেয় ব্যাবসা করার জন্য যাতে তাদের পরিবারে কিছুটা সচ্ছলতা আসে। তার কয়েক বছর পর সে প্রবাস থেকে দেশে চলে আসে। গার্মেন্টেসের ঝুটের ব্যাবসা করতে গিয়ে প্রবাস থেকে আনা প্রায় সব টাকাই লোকসান দিয়ে পথের ফকির। এদিকে ভাতিজা চাউলের ব্যাবসা করে সফল এবং সচ্ছল। চাচার এই অবস্থায় সেই ভাতিজা সহায়তার আর্জি নিয়ে নতশীর দাঁড়িয়ে। অশ্রুশিক্ত চাচা ভাতিজার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে পূনরায় ব্যাবসা শুরু করে।

ঘটনা ২.

এক ভাই ব্রিটিশ এক ভদ্রমহিলার গাড়ির ড্রাইভার ছিল। তার ভাষ্যমতে ঐ মহিলা হাঁড় কিপ্টা। কোন প্রকার বকশিশ তো দেয়ই না বরং নিজেও প্রচুর কাজ করে তার অধীনস্ত সবাইকে প্রচুর কাজ করান। মহিলা কৃপন হলেও তাকে ভালো লাগতো পরিশ্রমী বলে। অফিসের সবাই যেখানে ম্যাডামের প্রতি বিরক্ত সেখানে সে হাসিমুখে কাজ করে। তো একদিন ড্রাইভার ভাইয়ের ছোট মেয়েটি মোমবাতি দিয়ে জন্মদিন জন্মদিন খেলার সময় আগুন তার সিল্কের জামায় গেলে নিমিশেই শরীর পুড়ে যায়। ঐ কৃপন ম্যাডামই তার মেয়ের সমস্ত চিকিৎসা খরচ দিয়েছে। শুধুমাত্র ভাল ব্যাবহার আর হাসিমুখ ছাড়া ম্যাডামকে কিছুই দিতে পারেনাই। তার বিনিময়ে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে আদরের মেয়েকে সুস্থ্য করে তারে কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন।

আমি ব্যাক্তিগত ভাবে যা শিখলাম তা আপনাদের সাথে শেয়ার করি -

=> সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে অসহায়কে নি:স্বার্থ সহায়তা করা হয়তো রব আমার অসহায়ের সময় কাউকে আমার পাশে দাঁড় করাবেন।

=> সবার সাথেই ভাল ব্যাবহার করা।

=> উপকারীর উপকার সমসময় মনে রাখা এবং এর উত্তম প্রতিদান দেবার চেষ্টা করা।

=> গরীব বলে কাউকে অবহেলা/ঘৃণা/অবজ্ঞা না করা।

=> সবসময় একজন সাদা মনের মানুষ হবার অনুশীলন করা।

বিষয়: বিবিধ

১১৬২ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

237882
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:০৪
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:২৪
184441
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : ভাল লাগা রেখে যাবার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ
237885
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:০৮
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : খুব ভালো লাগল
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:২৫
184444
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : ভাল লাগার অবস্থান থেকে মন্তব্যটির জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
237886
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:১২
রাইয়ান লিখেছেন : মন ছুঁয়ে গেল ....অনেক ধন্যবাদ ।
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:২৬
184445
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : ছোট কিন্তু অসাধারন মন্তব্যটির জন্য আন্তুরিক ধন্যবাদ।
237888
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:১৭
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক অনেক সুন্দর পোষ্ট। ধন্যবাদ।
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:২৭
184447
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : আপনার মন্তব্য পেয়ে প্রীত হলাম।
237903
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০৩:০১
রঙের মানুষ লিখেছেন : ভালো লাগলো।
২৩ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:২৮
184477
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : রঙের মানুষের জন্য রঙিন ধন্যবাদ।
237906
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০৩:০৮
সন্ধাতারা লিখেছেন : We should learn and practise everyday after reading this heart touching story. As a human being we need to realise deeply. Thanks a lot. Jajakalla khairan.
২৩ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:৫০
184488
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : হুমম...যথার্থই বলেছেন, আমাদের সবাইকে গভীর ভাবে ভাবতে হবে। অসহায়ের অসহাত্যকে উপলব্ধি করতে হবে হৃদয় দিয়ে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
237916
২৩ জুন ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৫
আফরা লিখেছেন : অনেক সুন্দর উদাহরনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শিক্ষাটা আর বেশী সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন ।অনেক বেশী ভাল লাগল ।ধন্যবাদ ।
২৩ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৩
184489
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : আফরাপু, আলফ শুকরান সুন্দর মন্তব্যটির জন্য। ভাল মনের কাছেই যা কিছু ভাল তা সবই ভাল লাগে। ডিজিটাল রক্তগোলাপ রইলো ব্লগ তটে Rose
266160
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:২০
অয়ন খান লিখেছেন : ভালো লাগলো, অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File