ভুঁত কিলিয়ে সুখী হওয়ার কৌশল

লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আশরাফ ১১ জুন, ২০১৪, ০৮:০১:৩৯ রাত



সুখে থাকলে ভুঁতে কিলায়
একটি বহুল প্রচলিত-পরিচিত প্রবাদ বাক্য। সুখের ভুঁত কে বা কারা বোধ হয় আমরা সবাই কম বেশি জানি। আলোচনার সার্থে আবারো বলি। হিংসা/উচ্চ চাহিদা/উচ্চ আকাঙ্খা/খুঁতখুঁতে স্বভাব/অতুষ্টি/হতাশা/বিষন্নতা নামের ভুঁতগুলোই কিলিয়ে আমাদের কাছ থেকে সুখ কেড়ে নেয়।

সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে আমাদেরও উচিত এই ভু্ঁতগুলোকে ইচ্ছেমত কিলিয়ে নিজে সুখী হওয়া এবং চারপাশের প্রিয়জনদের সুখী করা। তাহলে আসুন জেনে নেই ভুঁতগুলোকে কিলানোর কিছু কৌশল -

=> ধরুন আপনি একটি ক্ষুধার্ত সিংহের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন আর ভাবছেন আমি সিংহের মাংস খাইনা অতএব সিংহ আমাকে খাবেনা। এটা কি সঠিক ভাবনা? নিশ্চই নয়, তাইনা? ঠিক তেমনি আপনি যত ভাল ব্যাবহারের অধিকারী হন কেন কেউ না কেউ আপনার সাথে খারাপ ব্যাবহার করবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং, কেউ খারাপ ব্যাবহার করলে বুদ্ধিমত্তার সাথে মোকাবেলা করতে হবে। নিজের মন-মেজাজ খারাপ করে নিজের ঘাড়ে ভুঁত চাপানো যাবেনা।

=> মনবিজ্ঞানীদের মতে অল্পতেই কষ্ট পাওয়া এক ধরনের মানসিক রোগ। এই ধরনের রোগীরা খুব সামান্য আঘাতেও কষ্ট পায়। তাই এই কষ্ট পাওয়ার ভুঁতটাকে তাড়ানোর চেষ্টা আমাদেরই করতে হবে। জীবন চলার পথে অন্য কারো দ্বারা কষ্ট পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। যাষ্ট মেডিটেশন করুন নিজের সাথে,নিজের কষ্টের কারন যাই হোক তার জন্য অন্যকে কষ্ট দেওয়া যাবেনা। যদি আপনি জীবনে বার বার আঘাত পেতে থাকেন তবে তার জন্য নিজেকে দোষী ভাববেন না। কষ্ট পাবেন না। শুধু মনে রাখবেন, ‘যে গাছটির ফল সবচেয়ে বেশি মিষ্টি, সেই গাছটিতেই সবচেয়ে বেশিবার পাথর ছুড়ে মারা হয়।

=> হাতের পাঁচ আঙুল যেমন সমান নয় কিন্তু তা আমাদের বহন করতে হয় ঠিক তেমনি আমাদের চারপাশের বিভিন্ন চরিত্রের মানুষগুলোকে সাথে নিয়ে চলতে হয়। সেক্ষেত্রে, নিজে পৃথিবীর সেরা ভাল মানুষ হলেও কেউ না কেউ ঘৃণাকারী থাকবে। তাদের কথা এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দিতে হবে।মন্দ সমালোচনাকারীর কথা মগজে গাঁথলে বিষন্নতার ভূঁত চেঁপে বসবে।

=> অর্থনীতিবিদ ম্যালথাসের মতে মানুষের চাহিদা স্তর পাঁচ ভাগে বিভক্ত। মানুষের একটি চাহিদা পূরন হবার সাথে সাথে উচ্চতর চাহিদা অনুভূত হয় আর তা পূরনে হন্য করে তুলে চাহিদা নামক ভূঁত। অস্থির চিত্তে হু হু করে চাহিদা পূরনের ভূঁতের পেছনে না ছুটে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করে কম চাহিদা সম্পন্ন হলেই সুখ ধরা দেবে।

=> দারুন একটি প্রবাদ বাক্য - হিংসা সকল পতনের মূল। হ্যাঁ ঠিকই, কোন বিষয়ে কারো সাথে হিংসা করলেন তো হিংসা নামক অসুখী ভুঁতটি সাথী করে নিলেন। আরে বাপু নিজের যা আছে তাতেই তুষ্ট থাকলেই তো হয়। অন্যর কি আছে তা নিয়ে আমি কেন হিংসে করে নিজেকে অসুখী করে নিচ্ছি? নিজেকে কেন অন্যর সাথে তুলনা করে নিজেকেই নিজে অসম্মান করছি? তাই হিংসা পরিত্যাগ করতে পারলে সুখের প্রায় সবটুকুই পায়ে লুটুপুটু খাবে।

- পোষ্ট বড় হয়ে যাচ্ছে এখানেই ইতি টানি না হলে বড় পোষ্ট পড়ে পাঠক সুখী নাও হতে পারেন। ;Winking

বিষয়: বিবিধ

১৮৮৯ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

233887
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:১৫
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আমি আগে অল্পতে কষ্ট পেতাম এখন বড় কষ্টতে ও আগের মত কষ্ট পাইনা।
আপনার লিখার বিষয় সত্যি প্রশংসনীয় ভাইয়া ,,অনেক ধন্যবাদ
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:২৮
180499
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : ছোট ছোট কষ্ট পাওয়াকে সহ্য ক্ষমতার মধ্যে আনতে আনতে বড় কষ্টকে আয়ত্বে আনার অনুশীলন করা যেতে পারে। আর প্রবাসীরা তো প্রিয়জন ত্যাগে এমনিতেই কষ্ট সহিষ্ণু মানবে পরিনত হয়ে যায়।
233888
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:১৫
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : এক যুবককে বাদশাহ প্রশ্ন করেছিলেন তুমিতো খুব সৎ এবং তোমার গুণ অনেক তারপড়ও তোমার নামে এত নালিশ কেন?
যুবক বলেছিলোঃ আমি সবার মনকে জয় করেছি কিন্তু হিংসুকদের মনকে জয় করতে পারিনি।
হে হিংসুক তুমি নিজের হিংসার অনলে নিজেকেই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দাও।
হিংসা কখনই মানুষকে সুখ দিতে পারেনা।
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:৩০
180500
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : ছোট্ট বাট শিক্ষনীয় গল্প। হিংসা নামক ভূঁত থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারলে সুখের পুরোটাই পায়ে লুটুপুটু খেতে বাধ্য।

অসংখ্য ধন্যবাদ অসাধারন সুন্দর মন্তব্যটির জন্য। Good Luck
233889
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:১৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক মূল্যবান একটি পোষ্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। এজন্যই ইসলাম ধর্ম বলে- হিংসুক অহংকারী কখনও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:৩৩
180502
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি ধর্মই মানুষকে হিংসা থেকে বাঁচতে শেখায়। ইসলাম তার অন্যতম। অহমিকা মানুষের মধ্যে বিবেধ সৃষ্টি করে তাই ভারসাম্য সম্পর্কের অন্যতম বাঁধা অহংকার নামক ভূঁতকে কিলিয়ে বিদায় করতে হবে জীবন থেকে।

মূল্যবান মতামত রেখে যাবার জন্য রক্তগোলাপ উপহার রইলো। Rose
233895
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:২৩
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:৩৪
180503
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : নামে দুষ্ট পোলা হলেও কাজে নিশ্চই ভালো। কষ্ট করে পড়ার জন্য অতপর ভালো লাগার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ রইলো। Good Luck
233927
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৪৯
পবিত্র লিখেছেন : চমৎকার পোস্ট!!! MOney Eyes MOney Eyes
খুব খুব ভালো লাগলো!!! Angel Angel
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:১৯
180694
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : চেষ্টা করেছি সুখের ব্যঘাতে নিয়জিত ভুঁতকে কিলাতে। কতটুকু পেরেছি জানিনা তবে আপনার ভাল লাগলো জেনে ভাল লাগলো। শুভেচ্ছা রইলো আপনা জন্য।
233928
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৮
আহ জীবন লিখেছেন : আশরাফ ভাই ধারাবাহিক ভাবে হলেও এই বিষয়ে আরও পোস্ট দিন। একটা কম্পিউটার চালাতে হলে হার্ডওয়্যার যেমন দরকার তেমন সফটওয়্যার দরকার। দৃশ্যমান বলে এগুলোর কোনটাই নষ্ট হলেই ডাক্তারের চেম্বারে যাইতে পারি। কিন্তু মানুষ এমন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার নষ্ট হইলে ডাক্তারের কাছে যাই শুধুমাত্র দৃশ্যমান বলে। রিপু ভাইরাসের কারনে কুরে কুরে ক্ষয়ে যাওয়া অদৃশ্য সফটওয়্যারের খোঁজ ও রাখিনা।

প্রচণ্ড ভাল লাগলো। যদি তথ্য উপাত্ত সহ আরও জানা থাকে তবে পোস্ট করুন।
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:২৪
180698
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : বাহ! ভাল বলেছেন তো আহ জীবন ভাই। ঠিক তাই, মনের রোগ হলে তার চিকিৎসা অতীব প্রয়োজন। দেহের কোথাও রোগ হলে আমরা পেরাশান হয়ে যাই রোগমুক্ত হতে কিন্তু মনের রোগের কোন খেয়াল না করাতে অনেক ক্ষেত্রেই অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটে। মনের কষ্টে আত্বহননের পূর্বে যদি কেউ তার মনের চিকিৎসা করে আশা করা যায় সে এই পথ থেকে ফিরে আসবে।

আন্তরিক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্য ও আহবানের জন্য ।Good Luck
১২ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩
180802
আহ জীবন লিখেছেন : মানসিক দিক থেকে ভাল কিন্তু এক্সট্রিমিষ্ট। পোস্ট টি পড়ে ভাল লাগা বা মন্দ লাগা রেখে গেলে ভাল লাগত। হয়ত চিন্তা করার কিছু খোরাক পাবেন।

http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/8691/Root/46599#.U5kyQJSSwko
১২ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:৫৮
180804
আহ জীবন লিখেছেন : লিঙ্কটি মন্তব্বের ঘরে।
233963
১১ জুন ২০১৪ রাত ১১:০২
আহ জীবন লিখেছেন : আর একটা ব্যাপার, পদার্থ বিজ্ঞানে একটা সুত্র আছে ফেটিগ'স ল নামে সূত্রটি হচ্ছে "কোন পদার্থের উপর একই জায়গায় বার বার একই পরিমান আঘাত করলে পদার্থটি একটা সময় ভেঙ্গে যাবে।" দেখেছি মানুষের মনের উপর এটি কার্যকর। রোধ করার কোন উপায় কি যদি কিছু জানেন তবে শেয়ার করলে ভাল লাগবে।
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:২৮
180700
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : আপনার মন্তব্যর সাথে একমত হয়ে বলছি, কাপড়ে যদি ছোট একটি ছিদ্র দেখা যায় তা সাথে সাথেই সিলাই করা উচিত তা না হলে তা ধীরে বড় হতে থাকবে। ঠিক তেমনি মনের রোগগুলো শুরুতেই সারিয়ে ফেলা উচিত না হলে তা ভয়াবহ আকার ধারন করতে পারে।

সত্যিই অভিভূত আপনার অসাধারন মন্তব্য পেয়ে। আপনার ভাললাগা-আহবানে অনুপ্রানিত না হয়ে উপায় নাই। কাজের চাপে চ্যাপ্টা থাকি প্রায়ই তবু্ও সময় বের করে এই বিষয়ের উপর আরো লেখনীর চিন্তা করছি। দোয়া করবেন।
233990
১২ জুন ২০১৪ রাত ১২:১৪
আবু জারীর লিখেছেন : এ পর্যন্ত পণ্ডিতি তো কম করলেন না? এখন বলেন দাদীর খবর কি? এ খনোকি বাপের বাড়ি? না কি নিজের বাড়ি? যদি বাপের বাড়িতে থাকে তাহলে আপনার হিডে হিছার বাড়ি।
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৩০
180701
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : হিডে হিছার বাড়ি স্বযত্নে সহ্য করা হইলো।Tongue
234147
১২ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭
১০
234229
১২ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:০২
আফরা লিখেছেন : হিংসা/উচ্চ চাহিদা/উচ্চ আকাঙ্খা/খুঁতখুঁতে স্বভাব/অতুষ্টি/হতাশা/বিষন্নতা নামের ভুঁতগুলো থেকে দুরে থাকি সুখী সুন্দর জীবন গড়ি ।অনেক অনেক ধন্যবাদ, খুব সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া ।
১২ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৮
180917
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : আপুমনি, সুখমিশ্রিত সাধুবাদ দশম সংখ্যায় সুন্দর মন্তব্য রেখে যাবার জন্য।

আ'ম্মাবাদ,
জীবন চলার পথে এই ভুঁত গুলো সবার ঘাড়েই কম-বেশি চেপে বসে। সচেতন মাত্রই ভূঁত কিলিয়ে বিদায় করতে পারে। নিয়মিত ভূঁত কিলাতে কিলাতে অভ্যস্থ হয়ে গেলে ছোট-খাট ভূঁত তো দূরের কথা বড় ভূঁতও কাছে আসতে ভয় পাবে, হুঁ।

আর একবার ভূঁত বসে আসলে জীবন হবে রঙিনময় সুখী। Happy>-

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File