শিক্ষার মান
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আশরাফ ০৪ জুন, ২০১৪, ০১:৪৫:১২ দুপুর
গতকাল সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনির একটি পোষ্ট পড়লাম ফেইসবুকে। উনি তার যাদুকরি কথামালার মাধূরি মিশিয়ে অত্যন্ত চমৎকার ভাবে বর্তমান শিক্ষাব্যাবস্থার চিত্রটি তুলে ধরতে চেষ্টা করছেন।
এবারের এসএসসির ফলাফল দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ এ+। ডাইনে-বায়ে-উপরে-নীচে যেদিকে তাকাই শুধুই এ+ ছাত্র-ছাত্রীর ছড়াছড়ি। এতে সত্যিই খুশি হওয়ার কথা ছিল এই কারনে যে দেশে মেধাবী শিক্ষার্থীর হার বাড়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো আসলেই কি মেধাবী মেরুদন্ডের সংখ্যা বাড়ছে? যখন দেখি এসএসসি/এইচএসসিতে এ+ প্রাপ্ত কোন ছাত্র-ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষার পাশ নম্বর পাওয়ার মতোও যোগ্যতা রাখেনা তখন নিশ্চই সচেতন অভিবাভক হিসাবে আপনার মনেও এই প্রশ্ন জাগ্রত হবে আসলেই আমার ছেলে/মেয়ে এ+ পাওয়ার যোগ্য?
হ্যাঁ, আপনি আমার মতো ঠিকই অনুধাবন করছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের মেধার মূল্যায়ন ঠিকঠাক মতো হচ্ছেনা। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এর পেছনের সম্ভ্যব্য কারন ও সম্ভ্যাব্য সমাধান -
প্রথমেই দেখি কেন এতো এ+ এর ছড়াছড়ি -
১. প্রশ্নের মান নিন্মমানের মানে এতোটাই সহজ যে মোট শিক্ষার্থীর অধিকাংশর পক্ষেই এ+ পাওয়া সম্ভ্যব।
সমাধান: প্রশ্নের মান এমন হওয়া উচিত যাতে তিন স্তরে মেধার মূল্যায়ন হয়। ১. অতি মেধাবী ২. মধ্যেম মেধাবী ৩. মেধাবী।
২. শিক্ষাপদ্বতিও এ+ বেশি পাওয়ার অন্যতম কারন মনে হয়। সৃজনশীল পদ্বতিতে নকল করার প্রবনতা কমলেও পড়ে স্মৃতিধারন করার সক্ষমতা বোধ হয় কমে যাচ্ছে কারন প্রশ্নে নমুনায়ন থাকায় প্রায় সব লেভেলের পরীক্ষার্থী প্রায় সব উত্তরই সহজেই করতে পারছে।
সমাধান: শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে গিনিপিক গভেষনা বন্ধ করে মানসম্মত ও বাস্তবভিত্তিক শিক্ষাপদ্ধপি প্রনয়ন করা। যেখানে পরীক্ষার মাধ্যেমে প্রকৃত মেধাবীর সঠিক মূল্যায়ন করা সম্ভ্যব।
৩. প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া আরেকটি অন্যতম কারন। পূর্বেই যদি পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে পাওয়া যায় তবে তো হেমায়েতপুরের পাগল ছাত্রও এ+ এর স্বপ্ন দেখবে।
সমাধান: প্রশ্নপত্র যেন কোনভাবেই ফাঁস হতে না পারে সেদিক প্রসাশনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রশ্ন পত্র ফাঁসে জড়িতে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রচলিত শাস্তি কাঙ্খিত পর্যায়ে না হলে আরো কঠিন শাস্তির আইন সংসদে পাশ করতে হবে।
৪. পরীক্ষা কেন্দ্রের জালিয়াতিও আরেকটি অন্যতম কারন। এক স্কুলের শিক্ষার্থীদের অন্য স্কুলে পরীক্ষা নেওয়া হলেও এই জালিয়াতি রোধ করা যায়নি। স্কুলগুলো তাদের এমপিও ভর্তুকি ও সুনাম বৃদ্ধির জন্য নিজেদের মধ্যে একটি সমজোতা করে যে তোমার স্কুলের শিক্ষার্থীদের আমার স্কুলে সহযোগীতা করার হবে আর আমার স্কুলের শিক্ষার্থীদের তোমার স্কুলে। ব্যাস দুই স্কুলের স্যারদের মিউচ্যুয়াল মিলে শিক্ষার্থীরা একে-অপরকে সহযোগীতা করে পরীক্ষা দিয়ে এ+ এর ছড়াছড়ি করে।
সমাধান: শিক্ষকদের মানষিকতার পরিবর্তন করতে হবে। কর্তৃপক্ষকেও কঠোর হতে হবে। এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরোদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
সর্বোপরি, শিক্ষার মান যদি এভাবে দিনকে দিন অবনমিত হতে থাকে তবে একদিন আমরা মেধাশূন্য জাতিতে পরিনত হবো। গোলাম মাওলা রনির মতো আমিও প্রত্যাশা করবো মাননীয় শিক্ষমন্ত্রী শিক্ষার মান উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৮ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি ব্যাক্তিগতভাবে পাশের হার বৃদ্ধি নয় মেধাবীর হার বৃদ্ধি প্রত্যাশা করি।
শিক্ষা আর শিক্ষায় নাইরে ভাই ।এই শিক্ষা সার্টিফিকেট নামক তালপাতায় বন্ধি হয়ে আছে ।
ধন্যবাদ ।এই সরকারের আমলে এই সব স্বপ্ন দেখা থেকে বিরত থাকাই মঙ্গল মনে করি । ধন্যবাদ ভাইয়া ।
আর এ+ মানেই ভালো রেজাল্ট কিন্তু ভাল মেধাবী হওয়া গেল কি? শিক্ষার মান ভাল হলে এ+ এর ছড়াছড়ি হবেনা কিন্তু মেধাবীর সংখ্যা বাড়বে।
মেধা বৃদ্ধির মাধ্যেমে এ+ বৃদ্ধি পেলে অবশ্যই খুশির কথা কিন্তু যখন দেখি এসএসসি/এইচএসসিতে এ+ প্রাপ্তরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার পাশ নম্বরও পায়না তখন নিশ্চই প্রশ্ন জাগবে এ কেমন এ+। আসলে এ+ নয় মেধার মান বাড়ানো উচিত।
এইচ এস সি = গোল্ডেন এ প্লাস
ভার্সিটি ভর্তি পরিক্ষা = অনলি ৭ নম্বর পাওয়া বা ফেইল করা লজ্জিত ভাবে ।
এরকম এ প্লাস কাম্য নয় ভাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন