...মিচুয়াল মারামারি-মদ্যপান...
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আশরাফ ১৮ আগস্ট, ২০১৩, ০১:৫১:২৯ দুপুর
আমাদের কম্পানির কঠিন কঠিন সব নিয়মকানুনে বাধাঁ সবাই। পান থেকে চুন খসলেই ওয়ার্নিং লেটার উইথ ওয়ান ডে সেলারি ডিডাকশন। মারামারি-মদ্যপান করলে ডাইরেক্ট টার্মিনেশন। মাঝে-সাজে দুই একটা কেইস হায়ার ম্যানেজম্যান্ট কনসিডার করেছে কর্মীর অতীত সার্বিস বিবেচনা করে। কিন্তু এই কঠোর নিয়মেই প্রতিষ্ঠান চলে আসছে দীর্ঘ বাইশ-তেইশ বছর।
ইদানিং মজার একটা ব্যাপার ঘটছে শ্রীলংকান কর্মীদের দ্বারা যা আমার কাছে আশ্চার্য ও মজা লেগেছে। মধ্যেপ্রাচ্যে শ্রীলংকানদের ভিসা ডাল-ভাত ব্যাপার। চাইলেই পাওয়া যায় এমন। তাছড়া তাদের রিক্রুটিং কষ্ট নামে মাত্র তাই তারা ঐ খরচার কথা চিন্তাই করেনা। তাই ভাল কোন সুযোগ পেলেই ফুরোৎ করে উড়ে যেতে চায় অথবা বর্তমান মালিকের সাথে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে বাগ্রেনিং এ যায়।
ঐ যে আগেই বলেছি আমাদের কোম্পানি কঠিন নিয়মে বাধাঁ। কর্মী রিক্রুটের সময় যে চুক্তিপত্র করা হয় তার বাইরে এক চুল নরচড় করতে নারাজ। কোন কর্মী চুক্তির বাইরে চলে যেতে চাইলে তার কাছ থেকে তার পেছনে কোম্পানির খরচ করা রিক্রুটিং বাবদ খরচ +এজেন্সি কমিশন বাবদ খরচ +ওয়ার্কপার্মিট বাবদ খরচ + ইন্সুরেন্স বাবদ খরচ সব মিলিয়ে পাঁচ-ছয় হাজার রিয়াল আদায় করে অত:পর ওয়ান ওয়ে টিকিট হাতে ধরিয়ে দেয়।
এই যখন অবস্থা তখন শ্রীলংকান কর্মীরা ভিন্ন পথ বেছে নেয়। কোম্পানির নিয়ম সুত্র ধরেই নিজেকে টার্মিনেট করানোর ব্যাবস্থা করে। গত কয়েকদিন ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনা রিতিমতো হাইলাইটেড। তাই নিকট অতীতে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনাও বিবেচনায় আনতে এইচআর ম্যানেজম্যান্ট। দুই-তিন জন মিলে মিচুয়াল মারামারি করে আর কোম্পানি অপরাধের মাত্রা দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে তাৎক্ষনিক ডাইরেক্ট টার্মিনেট করে। টার্মিনেট হবার পর দেখা যায় দুইজনেই আনন্দে কোলাকুলি করে কারন বিনা জরিমানায় পার পেয়ে গেল। বাহ! কি মজা! মজা না!। দেখাদেখি বেশ কয়েকটা পার পেলেও এখন বিষয়টা এইচ আর ম্যানেজম্যান্টের কাছে ধরা পরে গেছে।
এইতো কিছুদিন আগে একটায় প্রকাশ্যে মদ খেয়ে ক্যাম্পে হামতাম করছে যাতে তার অপরাধ বিবেচনা করে টার্মিনেট করা হয়। কিন্তু কোম্পানি তাকে পুলিশের কাছে দেয় এবং বলে সাজা ভোগের পর পূনরায় কর্মেক্ষেত্রে ফিরে যেতে। মিউচুয়াল মারামারি করেও ইদানিং সুবিধা করতে পারছেনা। মাইরা একে অন্যের নাক ফাটিয়ে রক্তাক্ত করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। বরং মারামারি করলে সিকিউরিটি ধরে দুইটাকে আরো উত্তম-মাধ্যম দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দিচ্ছে।
এখন আবার নতুন চাল চালছে শ্রীলংকান কর্মীরা। দিনের পর দিন কাজে অনুপস্থিত থাকছে অথবা কর্মক্ষেত্রে ইচ্ছে করে এক্সিডেন্ট করছে যাতে কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয়-ফাইনাল-টার্মিনেশন ওয়ার্নিং লেটার অত:পর ওয়ান ওয়ে টিকেট। কয়েকজন সফলও হয়েছে। দেখা যাক এই বিষয়টা কিভাবে নিয়ন্ত্রন করে।
শ্রীলংকানদের এমন অবস্থা দেখে হায় আফসুস করি কারন যেখানে আমাদের বাংলাদেশী কর্মীদের ভিসা নাই বলে শত নির্যাতন সহ্য করেও মাটি কামড়ে পড়ে আছে সেখানে ভিসার অভাব নাই বলে কলিজা হাতে নিয়ে দম্ভ করে থোড়াই কেয়ার ভাব নিয়ে কাজ করে শ্রীলংকান কর্মীরা।
বিষয়: বিবিধ
১৯৪৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন