মিলন মেলা সমাচার (৪)
লিখেছেন লিখেছেন মিলন মেলা ১৫ মে, ২০১৩, ০৩:৫৪:২২ দুপুর
আস্সালামু আলাইকুম।
১১ই মে ২০১৩, শনিবার, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা। টুডে ব্লগে শনিবারের আয়োজন মিলন মেলা। মেলা বসে ব্লগার "আধা শিক্ষিত মানুষ" এর ব্লগ বাড়ীতে। সরি ঐ মেলাটা বসার কথা ছিল সন্ধ্যা ৭টায়। কিন্তু আধা শিক্ষিত মানুষের একজন কলিগ ইনতিকাল করাতে মিলন মেলার পোষ্ট ২ঘন্টা আগে তথা ৫টায় দিয়ে জানাযার নামাযে চলে যান। আর পোষ্ট দেয়ার সাথে সাথে জমে উঠে মিলন মেলা।
সে দিনের মিলন মেলার বিষয় ছিলঃ মেরাজ। আধা শিক্ষিত মানুষের মতে রজব মাস বিবেচনায় রেখে তিনি এই বিষয় নির্বাচন করছেন। কিন্তু অধিকাংশ ব্লগার এই ধরণের কঠিন বিষয় মিলন মেলাতে না আনার পক্ষে। ঐ দিনের মিলন মেলায় হাজির ছিলেন মিলন মেলার প্রধান উপদেষ্টা "আবু জারীর", তিনি লিখেছেনঃ বিষয়টা কঠিণ হয়ে গেছে। এধরনের বিষয়ে উপযুক্ত এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত জানে এমন লোকের উপস্থিতি জরুরী।------এধরনের শিক্ষামূলক বিষয়ে পোস্ট দেয়ার পূর্বে বিস্তারিত লিখে একটা প্রবন্ধ প্রাক পোস্ট দেয়া যেতে পারে। পরে প্রবন্ধ পাঠের পরে কি কি বুঝল তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।------ সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে সবাই উৎসাহের সাথে অংশ গ্রহণ করবে বলে আমার বিশ্বাস।
পোষ্টদাতা ঐ মন্তব্য বা উপদেশের সাথে ঐকমত পোষণ করেছেন বলে মনে হয়েছে তার পরবর্তী কমেন্ট গুলো থেকে। মিলন মেলাও উপদ্ষ্টোর এই মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।
ও দিনের মিলন মেলাতে ১১০টি মন্তব্য এসেছে এবং পোষ্টটি ৩০২বার পঠিত হয়েছে। যারা ঐ দিন আসতে পারেননি, তাদের জন্য লিংকঃ মিলন মেলা পোষ্ট {৪} বিষয়ঃ মেরাজ। একবার বেড়িয়ে আসুন আধা শিক্ষিত মানুষের ব্লগ বাড়ী থেকে।
যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে বরাবরের মতো প্যারিস থেকে আমি, আবু আশফাক এবং বাকপ্রবাস মিলন মেলাকে মাতিয়ে রেখেছেন। আরো যারা এসেছিলেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আধা শিক্ষিত মানুষের পক্ষ থেকে মৌসুমী ফল আম আর লিচু সরবরাহ করা হয় আগত সকলের জন্য।
ঐ দিন মিরাজ সম্পর্কে আগত ব্লগারগন যেসব অভিমত উপস্থাপন করেন, তার সার নিম্নে উপস্থাপতি হলোঃ
ক. মেরাজের শিক্ষা তো অনেক। একটা হতে পারে- আল্লাহ পাকের সাথে থাকলে তিনি দরকার হলে আকাশে নিয়েও শান্তি দিতে পারেন যেমন দিয়েছিলেন তারঁ হাবীব (স)কে।
খ. আল্লাহর সাথেই থাকতে পারলে ইহকালী শান্তি ও পরকালীন মুক্তি সম্ভব।
গ. মিরাজ তথা উর্ধ্বগমনে বিশ্বাস স্থাপন প্রত্যেক মুসলমানেরই ঈমানের সাথে সম্পর্কীত।
ঘ. মেরাজ এ বিজ্ঞান এর বিশেষ একটা ক্ষেত্র আছে বলে মনে করি যদিও এমন রহস্য আদৌ উদ্ধার করা সম্ভব নয়, এখানে সময় এর দ্বিমাত্রিকা দেখতে পায়, দুনিয়ার সময় এবং পরকাল বা অন্যকালের সময় এর মাত্র এক নয় তা বুঝ গেল, আমাদের প্রিয় নবী অনেক গুলো ধাপ পেরিয়ে আবার চলে আসলেন কিন্তু এই জগতে দেখা গেল অজুর পানি এখনো গড়িয়ে যাচ্ছে। ২. বিছানা এখনো গরম রয়ে আছে। ৩. দরজার শিকল এখনো নড়াচড়া করছে।
ঙ. কুরআন মজীদ এবং সহীহ ও নির্ভরযোগ্য হাদীসে বলা হয়েছে যে, এই ঘটনাটি একটি রাতে সংঘটিত হয়েছিল। তাতে পুরো রাত লেগেছিল নাকি রাতের কিছু অংশ, না চোখের পলকেই ঘটে গিয়েছিল তা সহীহ হাদীসে নেই। হাদীসে এই কথাও নেই যে, আল্লাহ তাআলা তখন সময় ও সৃষ্টিজগতকে স্থির রেখেছিলেন কি না।
চ. মেরাজের রাতে নামায ফরজ হওয়া এবং অন্যান্য বিষয়ক ওহী আকাশে নাযিল হয়েছিলো। প্রিয় নবী তখন আকাশে ছিলেন।
ছ. নামায গুরুত্বপুর্ণ ইবাদাত আর সেটা প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষা দেওয়াটাই উদ্দেশ্য।
এখানেও প্রশ্ন আসতে পারে- জিবরাইল (আ)-এর মাধ্যমেইতো প্র্যাকটিক্যালভাবে শিক্ষা দেওয়া যেতো।
এর উত্তরে আমি আপনারটাই বলবো যে,নামাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি তাই।
জ. নামাজের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য একে আল্লাহ একটা বিশেষ উপায়ে প্রদান করেছেন যাত মানুষ বুঝতে পারে নামাজ এর গুরুত্ব।
ঝ. মিরাজ মহান আল্লাহর অপার মহিমা ও কুদরতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। মিরাজ রাসূলুল্লাহ সা:-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও উচ্চতম মর্যাদার সাক্ষ্য বহন করে।
মিরাজেও রাসূল সা: আমাদের কল্যাণের কথা ভেবেছেন। রাসূল সা:-এর এ উদারতা আমাদেরকে তাঁর ভালোবাসায় উজ্জীবিত করে।
ঞ. মিরাজ মহাকাশ গবেষণায় এক নবদিগন্ত উন্মোচিত করে।
ট. মিরাজের ঘটনার বিবরণ সংবলিত সূরা বনি ইসরাইলের তৃতীয় ও চতুর্থ রুকুতে বর্ণিত ১৪ দফার শিক্ষা ও মিরাজ-উত্তর রাসূল সা:-এর কর্মকৌশল আমাদেরকে একটি আদর্শ কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রেরণা জোগায়।
ঠ. মিরাজের সর্বোৎকৃষ্ট দান হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। নামাজের মাধ্যমে বান্দাহ আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। নামাজের মাধ্যমে চরিত্র সংশোধিত হয় এবং যথাযথভাবে নামাজ কায়েমের মাধ্যমে একটি ইসলামী সমাজের ভিত্তি রচিত হয়। তাই নামাজের ব্যাপারে সব গাফিলতি ঝেড়ে ফেলে নামাজে নিষ্ঠাবান হওয়া মিরাজের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।
ড. মিলন মেলার নির্দিষ্ট বিষয়ে এক কমেন্টে সকল সার কথা উপস্থাপন করেছেন ব্লগার "সূর্য চৌধুরী", যার মাধ্যমে মিরাজের শিক্ষা পুরোটাই এসে গেছে। তার দেয়া ৩০ নং কমেন্ট খানা মূল পোষ্টে গিয়ে সবাইকে পড়ে নিতে অনুরোধ করছি।( কলেবর বড় হয়ে যাওয়ার ভয়ে এখানে উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকছি)।
আমাদের একজন মুরব্বী (ড. আবুল কালাম আযাদ), যিনি ঐদিনের মিলন মেলায় প্রথম মন্তব্য করেন এবং তার একটি মন্তব্য-যা আমাদের ব্লগারদের জন্য অনুসরণীয় এবং অনুকরণী হতে পারে। তার মন্তব্যটি ছিলঃ এই ব্লগে আমি ছাড়া সবাইকে মনে অনেক বিনীত। আপনাদের আন্তরিকতা ও বিনয় দেখেই এখানে বারবার ফিরে আসি। আপনাদের সান্নিধ্যে এলে আনন্দ পাই ও উপকৃত হই।
আজ এ পর্যন্ত। দেখা হবে আগামী শনিবারে, টুডে ব্লগে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়।
বিশেষ জ্ঞাতব্যঃ মিলন মেলার ফেইস বুক আইডি হ্যাক হয়ে যাওয়াতে অপেন করা যাচ্ছেনা। কেউ আপাতত বার্তা না পাঠাতে অুনরোধ করছি। যাবতীয় যোগাযোগঃ ই-মেইলে। ধন্যবাদ।
বিষয়: বিবিধ
২১৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন