কথায় ছিলে আপোষহীন নেত্রী,তোমার জন্য এখনো বসে আছি???

লিখেছেন লিখেছেন মাইর এর নাম বাবাজি ০১ মার্চ, ২০১৩, ০৬:১৭:২৮ সন্ধ্যা

সংবাদ সম্মেলনে দেশনেত্রী বেগম

খালেদা জিয়ার ভাষণ

তারিখ : ০১ মার্চ ২০১৩ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম। আমি স্তম্ভিত। আমি ক্ষুব্ধ।

আমি গভীরভাবে মর্মাহত। নিন্দা ও প্রতিবাদ

জানাবার কোনো ভাষা আমার নেই। আমাদের

এই দেশে আবার চলছে পৈশাচিক গণহত্যা।

পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা চলছে।

গণহত্যার পৈশাচিক তা- বে মেতে উঠেছে সরকার। ফ্যাসিবাদের নগ্ন

থাবায় রক্ত ঝরছে, প্রাণ যাচ্ছে দেশের

শান্তিপ্রিয় নিরস্ত্র নাগরিকদের। বৃদ্ধ,

শিশু-কিশোর এমনকি কুলবধূরা পর্যন্ত রেহাই

পাচ্ছে না এই নির্মম হত্যাকা- থেকে।

মনে হচ্ছে, কোনো ভিনদেশী হানাদারেরা যেন

বাংলাদেশের মানুষের উপর পৈশাচিক

হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। কোনো একটি সরকার

নিজের দেশের নাগরিকদের উপর

এমনভাবে গণহত্যা চালাতে পারে তা আমাদের

কল্পনারও অতীত। এধরণের গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই আমরা ১৯৭১

সালে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করেছিলাম। সেই

স্বাধীন দেশে আবার অন্য

কোনো অজুহাতে কখনো কোনো সরকার গণহত্যার

পথ

বেছে নেবে তা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমি এই মুহূর্তে এই গণহত্যা বন্ধের

দাবি জানাচ্ছি। আমি সরকারকে হুঁশিয়ার

করে বলতে চাই, এর পরিণাম হবে ভয়াবহ।

পুলিশ, আধা-সামরিক বাহিনীসহ, আইন-

শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের

প্রতি আমার আহ্বান, বাংলাদেশের মানুষের টাকায় যে অস্ত্র কেনা হয়, সেই অস্ত্র

নির্বিচারে জনগণের উপর ব্যবহার করবেন

না। আপনাদের পবিত্র কর্তব্য হচ্ছে, দেশের

জনগণের জীবন রক্ষা করা।

নির্বিচারে তাদের জীবন কেড়ে নেয়া নয়।

একটি গণবিচ্ছিন্ন ব্যর্থ সরকারের অন্যায় হুকুমে আপনারা গণহত্যাকারীর ভূমিকায়

অবতীর্ণ হবেন না। বরং জনগণের মৌলিক

মানবিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায়

তাদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আপনাদের

প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। গত কয়েক দিনের

ভয়াবহ সংঘাতে যারা জীবন দিয়েছে, আমি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

তাদের স্বজনদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর

সমবেদনা। এই সব নিষ্ঠুর হত্যাকা-ের

সুবিচারের দাবিতে জনগণকে সোচ্চার হবার

আহ্বান জানাচ্ছি। ফ্যাসিবাদের

বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করছি। গণতন্ত্র ও

জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবল

সরকার সৃষ্ট নৈরাজ্যের হাত থেকে দেশ ও

জাতিকে রক্ষা করা সম্ভব

বলে আমরা মনে করি। প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

দেশ আজ এক ভয়াবহ সংকটে। এমন ভয়ঙ্কর

অবস্থা স্বাধীনতার পর আর

কখনো সৃষ্টি হয়নি। গোটা জাতিকে আজ বিভক্ত

করে ফেলা হয়েছে। দেশের বিপুল

সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম পবিত্র ইসলাম এবং আমাদের মহান স্বাধীনতাকে আজ

পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ

বানিয়ে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের মানুষ যেমন স্বাধীনতা-প্রিয়

তেমনি ধর্মপরায়ন। ধর্ম

কিংবা স্বাধীনতা কোনোটির উপর আঘাতই তারা সহ্য করে না। ইসলাম এবং স্বাধীনতায়

কোনো বিরোধ নেই। অথচ একটি কুচক্রি মহল

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের

নামে পবিত্র ইসলাম, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন

এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর

বিরুদ্ধে নোংরা কুৎসা রটনায় লিপ্ত হয়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ

মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি দারুণভাবে আহত

হয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, ধর্মপ্রাণ মানুষ

এর বিরুদ্ধে যখন শান্তিপূর্ণ পন্থায় প্রতিবাদ

জানাবার উদ্যোগ নিয়েছে, অপরাধীদের

সনাক্ত করে বিচারের দাবি তুলেছে তখন সরকার তাদের উপর চালিয়েছে নির্মম

হত্যাযজ্ঞ। শুধু তাই নয়, এইসব ধর্মপ্রাণ

সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতা বিরোধী,

যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসর হিসাবে চিত্রিত

করে সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে।

সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা মসজিদে ঢুকে মুসল্লি, খতিব ও

ইমামদেরকে পর্যন্ত হেনস্তা করেছে।

প্রতিবাদ মিছিল থেকে কিশোর-তরুণদের

ধরে নিয়ে তাদের গায়ে বন্দুক

ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যার মতো পৈশাচিক

ঘটনা ঘটিয়েছে। নিজ গৃহে গৃহবধূকে পর্যন্ত গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

এইসব হত্যাকা-ে আইন-

শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর

সঙ্গে সরকারি দলের সশস্ত্র

সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অংশ নিচ্ছে।

সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এইসব হত্যাকা-ে তাদেরকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

একটি হত্যার ঘটনারও কোনো তদন্ত, প্রতিকার

কিংবা বিচারের উদ্যোগ সরকার নেয়নি। অপর

দিকে একটি গোষ্ঠীকে সরকার উস্কানিমূলক ও

বেআইনি কর্মকা- সংঘটনে প্রতিনিয়ত

আস্কারা ও সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে।

জাতীয় জীবনে বিভেদ-

বিভাজনকে উস্কে দিচ্ছে। স্বাধীন মত

প্রকাশের কারণে সম্মানিত নাগরিকদের নাম

ধরে হুমকি দিচ্ছে। সরকার-

বিরোধী সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেলগুলো বন্ধ করার

হুমকি দিচ্ছে। নির্যাতিত সাহসী সম্পাদক

মাহমুদুর রহমানকে বেআইনীভাবে গ্রেফতারের

জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। ভিন্ন মতাবলম্বীদের

ধরে ধরে জবাই করার আওয়াজ তুলছে। বিভিন্ন

ব্যাংক, বীমা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও

ভাংচুরে উৎসাহিত করছে। এসব তৎপরতার

মাধ্যমে আমাদের জনজীবনে শান্তি,

স্থিতিশীলতা ও জাতীয়

অর্থনীতিকে যারা নৈরাজ্যের

দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার তাদেরকে বাঁধা দেওয়ার পরিবর্তে সার্বিক

সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সরকারের

মন্ত্রীরা তাদের কাছে গিয়ে এসব

কর্মকা-ে সমর্থন যোগাচ্ছে। প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,

বর্তমানে সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায়

বাংলাদেশে ন্যায়বিচারের পরিবেশ সম্পূর্ণ

ধ্বংস করে দিয়েছে। এখানে রাষ্ট্রীয় ও

সরকারি নিবর্তনে নিগৃহীত কোনো নাগরিকের

ন্যায়বিচার পাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারের

ক্ষেত্রেও এই কথা সমভাবে প্রযোজ্য।

আমরা বার বার পরিষ্কারভাবে বলেছি,

মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার

আমরা চাই। সেই বিচার হতে হবে স্বচ্ছ

এবং দেশী ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে। আমরা বিচারের নামে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য

হাসিলের পক্ষপাতি নই। আপনারা জানেন, এই

বিচার প্রক্রিয়া, ট্র্যাইবুনাল ও আইন

নিয়ে শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক পরিম-লেও

ব্যাপক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।

সে কারণে আমরা বার বার সরকারকে সতর্ক করে বলেছি যে, প্রশ্নবিদ্ধ কোনো বিচার

জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার বদলে বিভক্তির

দিকেই ঠেলে দিবে।

কাজেই এব্যাপারে একটি জাতীয় ঐক্যমত গঠন

খুবই প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু সরকার আমাদের

কথায় কান দেয়নি। কারও সঙ্গে কোনো আলাপ- আলোচনাও করেনি।

বরং যারা বিচার প্রক্রিয়ার ত্রুটিগুলো দুর

করার কথা বলেছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত

করার কথা বলেছে, তাদেরকে বিচার-

বিরোধী এবং স্বাধীনতা বিরোধী হিসাবে চিত্রিত

করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। এই বিচারের ট্র্যাইবুনাল গঠন, বিচারক

নিয়োগ, প্রসিকিউশন গঠন, তদন্ত পরিচালনা ও

আইনজীবী নিয়োগ সবকিছুই এই সরকার করেছে।

অথচ ট্র্যাইবুনালের একটি রায়ের

বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়,

সরকার তার সঙ্গেও একাত্মতা ঘোষণা করে। শাহবাগের বিক্ষোভ সমাবেশ

থেকে প্রতিটি অভিযুক্তকে ফাঁসি দেওয়ার

যে দাবি জানানো হয়

প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে তার প্রতি শুধু

সমর্থনই ব্যক্ত করেননি বরং ট্র্যাইবুনালের

বিচারকদের প্রতি বিক্ষোভকারীদের দাবি বিবেচনায় রেখে রায় দেওয়ার আহ্বান

জানান।

কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এ ধরণের

ঘটনা নজিরবিহীন। এইসব ঘটনার

মাধ্যমে ন্যায়বিচারের সর্বশেষ আশাটুকুও

সম্পূর্ণ তিরোহিত হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ট্র্যাইবুনালের

কোনো বিচারকের পক্ষেই স্বাধীন

এবং নিরপেক্ষভাবে বিচার কার্য্য

পরিচালনা কিংবা রায় দেয়া সম্ভব নয়। তাই

এই ট্র্যাইবুনালের যে-কোনো রায়ই এখন

প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, সরকার বিচার

প্রক্রিয়ার উপর চাপ প্রয়োগের উদ্দেশ্যেই

ন্যায়বিচারের পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়েছে।

শুধু তাই নয় তারা জনগোষ্ঠীকে বিভক্ত করে এক

ভয়ংকর সংঘাত ও সহিংসতার পরিবেশ

সৃষ্টি করেছে। প্রতিটি নাগরিক আজ উৎকণ্ঠিত। সকলের নিরাপত্তা আজ বিপন্ন। এই

অনৈক্য ও সংঘাত আমাদের জাতীয়

নিরাপত্তাকেও আজ গুরুতর হুমকির

মুখে ঠেলে দিয়েছে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টির সমস্ত দায়-

দায়িত্ব এই সরকারকেই বহন করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ার ওপর বিক্ষোভের চাপ

প্রয়োগকে সমর্থন করে, জাতিকে বিভক্ত

করে সংঘাতের পথে ঠেলে দিয়ে এবং নিজের

দেশের নাগরিকদের ওপর বর্বর হত্যাকা-

চালিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় থাকার সকল

নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। তারা ক্ষমতায় থাকলে দেশ আরো ভয়ংকর

বিপর্যয়ে দিকে ধাবিত হবে।

সে কারণে আমরা অনতিবিলম্বে এই রক্তপিপাসু

খুনী সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

জনগণের গণতান্ত্রিক

আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার ইতিমধ্যেই

পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি-

ঘরে আক্রমণ চালিয়ে দেশে বিরাজমান

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের

অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এরা একই উদ্দেশ্যে শান্তিপ্রিয়

বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের উপরও

হামলা চালিয়েছিল। আমি সরকারকে এমন

আত্মঘাতি ষড়যন্ত্র থেকে বিরত হওয়ার

পরামর্শ দিচ্ছি।

দেশবাসীকে আমি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে কোন অপচেষ্টার

বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

আমি গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক

ভাইবোনদের প্রতি আহ্বান জানাই Ñ

অতীতে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও জনগণের

স্বার্থ রক্ষায় আপনারা যেমন সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছিলেন আজ দেশ ও জাতির এই

দুঃসময়ে ঠিক সেভাবেই জনগণের প্রকৃত আশা-

আকাঙ্খা ও সংগ্রামকে প্রচার ও প্রকাশ

করে চলমান গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশ নিন।

আমরা শান্তির পক্ষে। আমরা সংঘাত-সংঘর্ষ-

হানাহানির বিপক্ষে। আমরা গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পক্ষে। দলমত

নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের শান্তি ও

নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পক্ষে আমাদের দৃঢ়

অবস্থান। কাজেই সরকার যে ভয়াবহ অবস্থার

দিকে দেশকে ঠেলে দিচ্ছে, গণহত্যায়

মেতে উঠেছে, তাতে দেশের দায়িত্বশীল সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসাবে আমরা নিশ্চুপ

দর্শক হয়ে থাকতে পারি না।

আমি সারা দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষকে এই

সরকারের ঘৃণ্য ও গণবিরোধী কার্যকলাপের

বিরুদ্ধে সচেতন ও সোচ্চার হবার আহ্বান

জানাচ্ছি। উদাত্ত্ব আহ্বান জানাচ্ছি, যে- কোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বজায়

রাখার জন্য। আমি দেশবাসীকে এই সংকটের

মুহূর্তে রাজপথে নেমে আসার ডাক দিচ্ছি।

আগামীকাল শনিবার ঢাকার

নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের

সামনে থেকে বিকাল তিনটায় প্রতিবাদ মিছিল হবে। একই সঙ্গে একই

সময়ে সারা দেশে মহানগর ও

জেলা সদরগুলোতে বের হবে প্রতিবাদ মিছিল।

সরকারি সন্ত্রাস ও গণহত্যার

প্রতিবাদে আয়োজিত এইসব

মিছিলে আমি সকলকে শরীক হবার আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন,

নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণহত্যার

প্রতিবাদে আগামী ৫ মার্চ মঙ্গলবার

সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল

পালনের জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত

আহ্বান জানাচ্ছি। আমি সরকার ও প্রশাসনকে বলবো, জনগণের

শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-বিক্ষো­

ভে কোনো বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না।

আমি বলবো, আর একটি গুলিও যেন

চালানো না হয়। জুলুম-নির্যাতনের পথ

বেছে নিলে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

আপনারা জানেন, এই সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ

সরকার। অযোগ্যতা, সন্ত্রাস ও নৃসংশতায়

তারা নিজেদের অতীত রেকর্ডও এবার ভঙ্গ

করেছে। এরা সম্পূর্ণ গণবিচ্ছিন্ন

হয়ে পড়েছে। ছলে-বলে-কলে-কৌশলে প্রচার মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে এরা প্রকৃত

জনমতকে আড়াল করতে চাইছে। কিন্তু প্রকৃত

অবস্থা তারা নিজেরাও জানে। তাই ক্ষমতায়

থেকে নির্বাচনী প্রহসন করে আবার

গদিতে বসতে চায়।

নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গণদাবি, জাতীয় সংকট

এবং তাদের সীমাহীন ব্যর্থতা ও

দুর্নীতি থেকে জনগণের

দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অসৎ

উদ্দেশ্যে তারা দেশকে চরম অনিশ্চয়তা ও

অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গুম, খুন, সন্ত্রাস, গণহত্যা, হামলা-মামলা ও

মিথ্যাচারের আশ্রয় গ্রহণ করেছে।

আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে, রক্তার্জিত

গণতন্ত্রকে এভাবে ধ্বংস

হতে দিতে পারি না।

তাই সব ধর্মমতের এবং পাহাড় ও সমতলবাসী প্রতিটি গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক

নাগরিকের প্রতি আমার আহ্বান, দল-মত-

শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সকলে মিলে আসুন

দেশ বাঁচাই, মানুষ বাঁচাই।

আসুন, ফ্যাসিবাদকে মোকাবিলা করে মহান

মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্রকে রক্ষা করি।

জনগণের জানমালের হেফাজত করি।

মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে শ্রদ্ধা জানাই।

জাতীয় ঐক্য, সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও

শান্তি নিশ্চিত করি।

আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ-জিন্দাবাদ।

বিষয়: বিবিধ

৯১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File