প্যারিস এট্যাক ও হলিউড মুভি "দ্যা ম্যাটরিক্স" অতঃপর ইলিমুনাতি-দাজ্জাল ও আধুনিক গ্লোবাল ভিলেজ বিশ্লেষণ।
লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ১৭ নভেম্বর, ২০১৫, ০৬:২৮:৫৫ সন্ধ্যা
The matrix Click this link মুভি সিরিজ কেউ দেখেছেন কিনা, তা আমি জানিনা। আপনি যদি নিছকই sci-fi হলিউড এ্যাকশন মুভি ভেবে এটি দেখে থাকেন, তবে এর মূল message বা বক্তব্য আপনি কিছুই বুঝবেননা। ইসলামী শরীয়তকে লাইটলি নেয়া মুসলিমরা নিছকই বিনোদন ভেবে এটি উপভোগ করার ব্যর্থ চেষ্টা করবেন আর যারা মুভির শরীয়ত সংক্রান্ত বিধান এর ব্যাপারে সিরিয়াস, স্বভাবতই সেসব মুসলিমগণ তা দেখা হতে বিরত থাকবেন। তবে আপনি যদি বাইবেল ও কুরআন-হাদিসের কিয়ামত সংক্রান্ত ভবিষ্যৎবাণী, দাজ্জাল বা Anti-Christ, ইয়াজুজ-মাজুজ বা Gog-Magog এর ব্যাপারগুলো জেনে থাকেন, তবে আপনি মুভিটি দেখার সাথে সাথে বাস্তবতার দেয়ালে প্রচন্ডরকম মানুষিক ধাক্কা খাবেন। মুভিটির প্রতিটি অংশই দেখবেন মিলে যাচ্ছে বাইবেল ও কুরআন-হাদিসের সাথে।
হটাৎ করেই সম্পূর্ণ নতুন এক বিশ্বের আত্নপ্রকাশ। বিজ্ঞান-তথ্য-প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্হার অভাবনীয় বিকাশ যা পৃথিবীকে পরিণত করল গ্লোবাল ভিলেজে। এক বিশ্ব, এক শাসন ব্যবস্হা-অর্থব্যবস্হা তথা একক ওয়াল্ড অর্ডার। আপনি বিশ্বাস করছেন ইন্টারনেট আপনাকে দিয়েছে মত প্রকাশের ও যোগাযোগের অবাধ স্বাধীনতা। কিন্তু আপনার চিন্তাচেতনা একটি জালের মাঝে আটকে আছে। আপনাকে সেই জালে বন্দী রেখে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, আপনার উপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। এটি বোঝার মত বুদ্ধি কি আপনার সত্যিই আছে? আপনার প্রতিটি ইমেইল, ইনবক্সের প্রতিটি ক্ষুদে বার্তা, প্রতিটি লিখা, প্রতিটি ভিডিও তথা, প্রতিটি তথ্যের রেকর্ড জমা আছে গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু, টুইটার, হোয়াটসএপ, ভাইবার সহ সব social media ও অন্যান্য ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলির হাতে। আর হ্যা! আপনার তথ্যের উপর সর্বদাই নজরদারী করা হচ্ছে। আর আপনি বোকার মত ভাবছেন আপনি স্বাধীন!!
যাইহোক, সিনেমায় ফীরে যাই। মূল চরিত্র নিও একজন তরুণ কম্পিউটার প্রোগ্রামার যার বন্ধুবান্ধব বলতে কেই নেই, নিত্যদিন একা একা কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে হ্যাকারদের সাথে তার অধিকাংশ সময় কাটে। এর জের ধরেই সে হটাৎ বুঝতে পারে, সে যে পৃথিবীতে বসবাস করছে, এখানে বড় রকমের কোন গোলমাল আছে, এটা স্বাভাবিক বিশ্ব না। "কিন্তু সমস্যাটা যে আসলে কি? সমাধানই বা কি?" এটা সে বুঝতে পারছিলনা আর তাই উদভ্রান্তের মত এলোমেলো জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পরে সে। হটাৎ ট্রিনিটি নামের একজন নারী হ্যাকার তাকে আত্নগোপনে থাকা Morpheus নামের এক ব্যক্তির গন্তব্যে পৌছে দেয়। এই ব্যক্তিই হল মানবজাতির মাঝে সেই সৌভাগ্যবান ও তীক্ষ্ণ মেধাসম্পন্ন মানুষ, যে এই এলোমেলো বিশ্বের গোলমাল বা ধোঁকাবাজির ব্যাপারটা স্পষ্টভাবে জানে এবং এর থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য সে বদ্ধ পরিকর। ফলাফলস্বরূপ সে বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সুপার পাওয়ারদের তালিকায় পৃথিবীর সব চাইতে ভয়ানক সন্ত্রাসী এবং আধুনিক সভ্যতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তাই তারা তাকে হণ্যে হয়ে খুঁজছে, হত্যার পরিকল্পনা করছে। সমস্ত পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ অথচ তার অনুসারী হাতে গোণা ৬-৭ জন যারা মানবসভ্যতার অন্তরালে Morpheus কর্তৃক নির্মিত (Nebuchadnezzar) নেবুচাঁদনেজার নামক বিশেষ এক জাহাজে গোপনে বসবাস করে। Morpheus নিওকে তার ল্যাবে বা জাহাজে তৈরী নানান কম্পিউটার প্রোগ্রাম ও বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দ্বারা জানিয়ে দেয় যে, মানুষ যেই পৃথিবীতে বসবাস করছে, সেটা আসলে একটা পরাবাস্তব ভার্চুয়াল জগত, বাস্তব না। এটা একটা কম্পিউটার প্রোগ্রাম আর প্রতিটা মানুষও কৃত্রিম। সমস্ত পৃথিবী আসলে নিয়ন্ত্রণ করছে এক সুপার কম্পিউটার সিস্টেম। প্রকৃত মানব সভ্যতা ও বাস্তব পৃথিবীকে সে ২১ শতকে ধ্বংশ করে দিয়েছে। আর সূর্যের বিকল্প এনার্জির সোর্স হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মূলত মানুষের শরীর। সমস্ত মানুষের শরীরগুলি রাসায়নিক প্লান্টের মত বিশাল এক এনার্জি প্লান্টে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে এবং তাদের বিশেষ ব্যবস্হায় অজ্ঞান করে তাদের শারিরিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়া সচল করে রেখে শরীরে উৎপাদিত এনার্জি দ্বারাই টোটাল সিস্টেম চালানো হচ্ছে। তাদের শারিরিক কাঠামো ও অন্যান্য বিষয়গুলোর যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে কম্পিউটার সিস্টেম একটি পরাবাস্তব কম্পিউটার জগত তৈরী করেছে এবং মানুষকে এই জগতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অধিকাংশ মানুষই এই সত্যটা জানেনা। কিন্তু ভয় থেকেই যায় কারণ মানুষ হল অবাধ্য প্রাণী তারা দাসত্ব মানতে চায়না, চায় স্বাধীনতা। সে বারবার বিপ্লবের দিকে ঝুকে পরে যার মূল কারণ সে চায় স্বাধীনতা, সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তা। অর্থ উপার্জন, জশ-খ্যাতি, বাড়ি-গাড়ির বাসনা সব কিছুর পেছনেই মূল কারণ একটাই, "সুখ-শান্তি অর্জন।" এসব প্রদান করলে, সে দাসত্ব মেনে নিতেও রাজি। কম্পিউটার সিস্টেম এই ব্যাপারটা বুঝে ফেলে তাই সে এই পরাবাস্তব জগতে মানুষকে অবারিত করে সব কিছু বিলিয়ে দিয়েছে তার সুখ-শান্তির জন্য। ফলাফলস্বরূপ অধিকাংশ মানুষেরই কোন অভিযোগ নেই। তারা এই সিস্টেমকে আরো মজবুত করার জন্য, সমৃদ্ধি আরো বাড়ানোর জন্য কাজ করে চলেছে। মানুষ ধন-সম্পদ, বাড়ি-গাড়ি, দামি খাবার সব কিছুর স্বাদই নিচ্ছে, অথচ এসব নিছকই ধোঁকাবাজি, ভার্চুয়াল, কোনটাই আসল না, এর কোন মূল্যই নেই। মানুষ মূলত পরাবাস্তব জগতে বন্দী এই কম্পিউটার সিস্টেমের দাস। এই সিস্টেম অদৃশ্য কিন্তু তারা এটাকেই নিজেদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছে এবং নিজের অজান্তেই তার সন্তুষ্টির জন্য তার সিস্টেম চালু রাখার জন্য রাতদিন নিরলসভাবে পরিশ্রম করে চলেছে। কম্পিউটার সিস্টেম হিউম্যান ফর্মে কিছু অতি মানবীয় শক্তিসম্পন্ন লোক তৈরী করেছে যারা এই সিস্টেমের নিরাপত্তা, শাসনব্যবস্হা ইত্যাদি ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। তারা যে কোন মানুষের শরীরে যাতায়াত করতে পারে এবং অন্য মানুষকে ধোঁকা দিতে পারে। ব্যাপারটা বোঝানোর জন্য Morpheus নিওকে একটা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা আরেকটা পরাবাস্তব জগতে নিয়ে যায়। রাস্তায় হাটার সময় নিও হটাৎ লক্ষ করে বিপরীত দিক থেকে আসা এক সুন্দরী যুবতী নারী আকর্ষণীয় লাল পোশাক পরে তার মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে। নিও তার প্রতি আকৃষ্ট হতেই Morpheus তাকে বলে, নিও তুমি সম্ভবত ঐ লাল ড্রেস পরা মেয়াটার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছ, তাইনা? নিও সম্মতি জানাতেই Morpheus বলে ওঠে, আবার তার দিকে তাকাও। নিও সুন্দরী মেয়েটার দিক তাকাতেই দেখে এক পুরুষ তার দিকে পিস্তল তাক করে আছে। Morpheus বলে আগে যেটা দেখেছ সেটা ধোঁকা আর এখন যা দেখছ এটাই সত্যি। এটাই হল Matrix. কিন্তু যারাই সত্যটা জেনে ফেলেছে বা Matrix বুঝে ফেলেছে কোনভাবে এবং মানুষকে জানানোর চেষ্টা করেছে, কম্পিউটার সিস্টেমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার চেষ্টা করেছে_ তাদেরকেই সন্ত্রাসী বা আতঙ্কবাদী হিসাবে বিবেচনা করে হত্যা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য মানুষও তাতে সমর্থন ও সাহায্য যুগিয়েছে। Morpheus তাকে জানায় এই সিস্টেম আসলে কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে রিমুভ করা সম্ভব না, যারা চেষ্টা করেছে, সবাই হত্যার শিকার হয়েছে। শুধুমাত্র একজন মাসীহা বা মানবসমাজের মুক্তিদাতা হিসাবে আগমণকারীর পক্ষেই শুধু সম্ভব এই সিস্টেম রিমুভ করা। আর Morpheus এর বিশ্বাস নিও-ই হচ্ছে সেই মাসিহা, প্রতিশ্রুত মুক্তিদাতা। কিন্তু দৃশ্যে পরিবর্তন আসে কারণ Morpheus এর অনুগত একজন ব্যক্তি ধৈর্যহারা হয়ে ওঠে। ৯ বছর সে Morpheus এর আধ্যাতিক নির্দেশনা অনুসারে মানবসভ্যতার বাইরে ছোট নেবুচাঁদনেজার জাহাজে, অতি সাদাসিধে সঙ্গীহীন জীবন-যাপনে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। সে আর Morpheus এর আধ্যাতিক বাণীর প্রতি আস্হা রাখতে পারেনা। সুস্বাদু খাবার-দাবার, ধন-সম্পদ, যশ-খ্যাতি ইত্যাদির লোভ তাকে পেয়ে বসে, যদিও সে জানে এসবের কোন মূল্য নেই, সব নকল-ভার্চুয়াল। কিন্তু জীবনটাও তো ফুরিয়ে আসছে তাই ভোগের জীবন তার কাছে বড় হয়ে ওঠে সে কম্পিউটার সিস্টেমের সাথে হাত মেলায় প্রতিশ্রুতি দেয় Morpheus কে ধরিয়ে দিবে, তার গোপন সব তথ্য তাদের হাতে তুলে দেবে আর বিনিময়ে দাবি করে তার ভোগ-বিলাসের যাবতীয় উপায়-উপকরণের বন্দোবস্ত করে দিতে হবে। সে বিশ্বাসঘাতকতা করে ফলাফলে Morpheus ধরা পরে, তার কিছু অনুসারী মারা যায়। তবে এই ক্ষতি ছিল সাময়িক কারণ নিও আধ্যাতিক শক্তি সম্পন্ন সে নিজের দায়িত্ব বুঝে নেয় এবং কম্পিউটার সিস্টেমকে চ্যালেজ্ঞ জানায়, সিস্টেমে কিছু ধ্বশ নামায় এবং সবশেষে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে................. সিনেমা এগিয়ে চলে তার আপন গতিতে।
কিন্তু আমি হটাৎ সিনেমা নিয়ে উঠেপরে লাগলাম কেন?
কারণ আমরাও এমন এক পরাবাস্তব জগতে বন্দী হয়ে আছি যার নিয়ন্ত্রণ মূলত এক অদৃশ্য সুপার পাওয়ারের হাতে। কিছু লোক ভয়াবহ সব মরনাস্ত্র, পারমানবিক যুদ্ধাস্ত্র, অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট, যোগাযোগ যান-মহাযান, নতুন অর্থব্যবস্হা, শাসন ব্যবস্হা ইত্যাদি নিয়ে মানবীয় শরীর নিয়ে পৃথিবীতে আত্নপ্রকাশ করেছে এবং সেই অদৃশ্য শক্তির নির্দেশনা অনুসারে গোটা ওয়াল্ড অর্ডার আর মানব জাতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আর অধিকাংশ মানুষই মূলত এই ব্যাপারে সম্পূর্ণ গাফেল। তারা নিজের অজান্তেই সেই অদৃশ্য শক্তিকেই প্রভু বানিয়ে তার কথায় উঠছে-বসছে, তাকে খুশি করার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। অর্থাৎ, সেই অদৃশ্য শক্তির নির্দেশ মাফিক আরো বেটার ওয়াল্ড তৈরীতে সাহায্য করছে। অথচ এই মহাবিশ্বের পরিণতি হল "Endless expansion অথবা Big crunch" নামক এক ভয়াবহ ধ্বংশযজ্ঞ। দাসত্বের বিনিময়ে অধিকাংশ মানুষ দামী খাবার-দাবার, ধন-সম্পদ, জশ-খ্যাতি, বাড়ি-গাড়ি দুনিয়ার সমস্ত রকম ভোগ-বিলাসে ডুব দিতে চাইছে, অথচ বাস্তবতা হল তাদেরও শেষ গন্তব্য মৃত্যু ছাড়া আর কিছুইনা। পৃথিবী ও তা হতে সৃষ্ট মানুষ, সবার শেষ দুর্ভাগ্য হল ধুলা-মাটিতে পরিনত হওয়া।
১৪০০ বছর আগের একজন মরুবাসী ব্যক্তির কিছু কথা স্বরণ করুন। তিনি আপনার নিকট "সন্মানিত, নাকি ঘৃণিত?" এটি নির্ভর করে " আপনি আপনার অদৃশ্য প্রভুর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বর্তমান সিস্টেমের দাসত্বে কত বেশি অগ্রগামী, নাকি বিরুদ্ধাচরণকারী?"
স্বরণ করুন, তিনি বলেছিলেন, ইরাক-সিরিয়ার মাঝ থেকে এক অতিপ্রাকৃত শক্তিমান ব্যক্তি বের হবে এবং ডানে-বামে বিশৃংক্ষলা সৃষ্টি করবে। তার গতি হবে বাতাসে ভেসে চলা মেঘের ন্যায়। সে এক সম্প্রদায়কে তার দিকে আহবান করবে এবং সে সম্প্রদায় তার প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করবে, তার নেতৃত্ব মেনে নেবে। খুশি হয়ে এই ব্যক্তি আকাশকে নির্দেশ দিবে বৃষ্টি বর্ষণ করতে এবং ভূমিকে হুকুম দিবে অধিক পরিমাণে শস্য-ফলাদি উৎপাদন করতে। তাদের গবাদিপশুগুলি অধিক হ্রষ্টপুষ্ট হয়ে উঠবে এবং অধিকহারে দুধ উৎপাদন করবে। সুখ-সমৃদ্ধি তাদের মাঝে নেমে আসবে। এই ব্যক্তি আরেক সম্প্রদায়ের নিকট আসবে এবং তার এই সমৃদ্ধির লোভ এই সম্প্রদায়ের সামনে তুলে ধরবে এবং তাকে মেনে নিতে আহবান জানাবে কিন্তু এই সম্প্রদায় তাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে ফলে সে যখন এই সম্প্রদায়কে পেছনে ফেলে চলে যাবে, তার পর পরই এই সম্প্রদায়ের মাঝে দারিদ্রতা নেমে আসবে। অর্থ ফুরিয়ে যাবে এবং খাদ্য-পানীয়ের অভাবে দুর্ভিক্ষে তারা নিঃশেষ হতে থাকবে। অতঃপর এই ব্যক্তি পতিত মরুভূমিতে গিয়ে হাজির হবে এবং তাকে নির্দেশ দিবে, তোমার সব গুপ্ত সম্পদ আমার সামনে জড় কর। মরুভূমি তার চারপাশে সম্পদ স্তুপ করতে থাকবে যেভাবে মৌমাছি সর্দারের চারপাশে একত্রিত হয়। ( মুসলিম, অধ্যায় ৫৪/ফিৎনা ও কিয়ামতের আলামত, হাদিস নং: ৭১০৬, ইফাবা) কে এই অতিপ্রাকৃত ব্যক্তি? উত্তর: আদ-দাজ্জাল।
প্রশ্ন হল: কারা আজ তার আহবানে সাড়া দিয়েছে? কারা আজ আকাশ ও ভূমির উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও কতৃত্ব স্হাপন করেছে? কারা আজ কৃষি-শিল্প ও সবদিক দিয়ে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে? কারা আজ মূল্যহীন পতিত আরব মরুভূমির গুপ্তসম্পদ তেল-গ্যাস আবিষ্কারের পর নিজেদের জন্য নিয়ে যাচ্ছে? কারা তাকে প্রত্যাখ্যান করে আজ অর্থাভাব, খাদ্য-পানীয়ের অভাব, দারিদ্রতা ও যুদ্ধে ধ্বংশ হচ্ছে? উত্তর আপনারাই বের করুন। এটা বাস্তব matrix এর কিছু ধাঁধা।
তার বয়স কতদিন হবে?
মাত্র ৪০ দিন।
কিন্তু প্রথম তিনদিন কেমন হবে?
১ম দিন ১ বছর, ২য় দিন ১ মাস ও ৩য় দিন ১ সপ্তাহের সমান। এই সময়ে কেউ তাকে দেখবেনা কারণ কি? কারণ সে অদৃশ্য থাকবে। কখন সে মানবিক শরীর (যুবক এবং কোঁকড়া চুল বিশিষ্ট, চক্ষু হবে স্ফীত আঙ্গূরের ন্যায়) নিয়ে পৃথিবীর মানুষের সামনে আসবে? মুসলিমদের নিকট কনস্টান্টিনোপল (বর্তমান তুরষ্ক) পদানত হবার পর। (মুসলিম অধ্যায় ৫৪, ইফাবা হাদিস নং: ৭০৬৯)
১বছর ১মাস ১ সপ্তাহ এর অর্থ কি? পৃথিবীর হিসাবে তিনটি সুদীর্ঘ সময় বা তার তিনটি ভিন্ন অবস্হান বা পর্যায়। প্রমাণ কি? স্বরণ করুন, সাহাবীগণ প্রশ্ন বললেন, আমরা কি তখন নামাজ একদিনে একবার করেই পড়ব? তিনি বললেন, নাহ! এখনকার সময়ের সাথে মিলিয়ে নিবে। (মুসলিম, অধ্যায় ৫৪, ইফাবা)
স্বরণ করুন, তিনি আমাদের জানিয়েছেন, দাজ্জাল, ইয়াজুজ-মাজুজ ও ইয়াহুদী বা বনী ইজরাইল একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং সকলেই আবার একটি নির্দিষ্ট ভূমির সাথে জড়িত, আল-আরদুল মুকাদ্দাসা বা ফিলিস্তিন, বর্তমান ইজরাইল।
মহান আল্লাহ বলেন, এরপর আমি বনী ইজরাইলকে বললাম, তোমরা জমীনের (ফিলিস্তিন) উপর বসবাস কর, অতঃপর যখন প্রতিশ্রুত কিয়ামত আসবে তখন আমি তোমাদেরকে সংমিশ্রিত দলবলে হাজির/একত্রিত করব (বনী ইজরাইল: ১০৪)
যে জনপদকে (ফিলিস্তিন/ জেরুজালেম) আমি ধ্বংশ করেছি তার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে যে, তার অধিবাসীগণ (বনী ইজরাইল বা ইহুদীজাতি) আর ফীরে আসবেনা, যতক্ষণনা ইয়াজুজ ও মাজুজকে মুক্তি দেয়া হবে এবং তারা প্রতি উচ্চভূমি হতে ছুটি আসবে। (সুরা আম্বিয়া: ৯৫-৬)
এখনো যারা ইউরোপ-আমেরিকায় স্বস্হির ঢেকুর তুলছেন, বসে বসে স্বপ্নের লিস্ট বানাচ্ছেন আর যারা সেখানে যাবার স্বপ্নে বিভোর, হয়ত কেউ কেউ IELTS_এ স্কোর ৭-৭.৫ করার জন্য জীবন বিলিয়ে দিচ্ছেন, ভিসা হাতে পেয়ে নিজেকে পৃথিবীর সেরা ভাগ্যবান ভাবছেন তাদের জন্য এই মহান বাণী উৎসর্গ করলাম।
এমন কোন জনপদ নেই যা আমি কিয়ামত পূববর্তী সময়ে ধ্বংশ করব না, অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দিবনা; এটা তো কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। (সুরা বনী ইজরাইল: আয়াত: ৫৮)
দুঃখিত matrix ভেদ করার সাহস আমার নেই কারণ আমি নিজেও এই পরাবাস্তব জগতের কোন জালে বন্দী আর Morpheus মত আমি দুঃসাহসী নই, কারণ এটা সিনেমা নয়, বাস্তব। যদি এই matrix ভেদ করতে পারেন তবে হয়ত হৃদয়ের অন্ধত্ব কেটে যাবে কিন্তু এই matrix বা মায়াজালের বাইরের জীবনপ্রণালী যে সুখকর হবেনা সেটি বলতে পারি কারণ তার জন্য দরকার চরম ধৈর্য, যে ধৈর্যের ভিত্তি আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ঈমান।
জাঝাক আল্লাহ
আসসালামু আলাইকুম।
বিষয়: বিবিধ
৩৭৬৭ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
thanks a lot...
অনেক দোয়া, ভালোবাসা ও শুভ কামনা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
খুব শিগ্রই আপনার ছোট ভাইকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলবেন ।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ভয়ের বিষয়।
আপনার এই বিশ্লেষণটি কিছুটা বায়েজিদখান পন্নির দাজ্জাল বিষয়ের সাথে মিল দেখা যাচ্ছে, যদিও আমি পন্নির বিশ্লেষনের সাথে একমত নই।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
অসম্ভব ভাল একটা লিখা হয়েছে। পড়ার পর আমার কাছে মনে হয়নি - এ লিখার কোন কিছু কাটছাট করার দরকার ছিল বা আছে।
দীর্ঘ ৪ শতাব্ধির ও বেশী সময় ধরে - মহানবী সঃ এর বলে যাওয়া যে দজ্জাল (মসীহ উদ দজ্জাল নয়) 'পুরোটাই ধোকা, পুরোটাই প্রতারনা'র মাধ্যমে পৃথিবীময় হিন্দু, বৌদ্ধ, ইয়াহুদী, খৃষ্টান ও মুসলমান ইত্যাকার মানুষকে একে একে আল্লাহর পরিবর্তে তাকে রব হিসাবে মেনে নিতে বাধ্য করলো - সেখানে আজকের ২০ - ৮০ বছর বয়সী মানুষকে (তা তিনি হাফেজ হোন কিংবা আলিম হোন কিংবা অক্সফোর্ড ক্যামব্রিজ এর স্কলার হোন - এক্সেপ্ট অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ বাদে) ঐ দজ্জাল কে চিনিয়ে দেওয়া, পরিচয় করিয়ে দেওয়া - যে কি কঠিন, কি কষ্টকর - তা আমি শতভাগ রিয়ালাইজ করি।
আপনি অসম্ভব সুন্দরভাবে মেট্রিক্স এর অবতারনা করলেন এবং আই ওপেনিং আকারে সাবলিল প্রেজেন্টেশান দিয়েছেন, মানুষের চিন্তার খোরাক উন্মোচন করার চেষ্টা করেছেন, লিখাটি চিন্তাশীল মানুষ - 'একমত নই' বলে ফেলে না দিয়ে এর উপর দজ্জালকে বিল্ড আপ করার চেষ্টা করলে, কিংবা কোথায়, কোন অংশে কি কারনে একমত হতে সমস্যা - তা উপস্থাপন করলে - ভাল ফলাফল পাওয়া যেত, মুসলমান রা উপকৃত হত। কিন্তু কেন যেন মুসলিম প্রজ্ঞা সম্পন্ন ভাই বোনরা তাতে যেতে চান না।
প্রায় সমরূপে আমরা অনেকেই পন্নিকে ফেলে দিয়েছিলাম। কিন্তু ইন্টারেস্টিং হলেও সত্য যে - ভদ্রলোক যে এ্যাফোর্ট দিয়েছেন - সে এ্যাফোর্ট এ কিছু ফ্যাক্টচুয়াল ইনফরমেশান ছিল - যা হয়তো ইলিমেন্টারী লেভেল এর জ্ঞান স্বরূপ। কিন্তু আমাদের উচিত তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করে - ফ্যাক্টচ্যুয়ালী যা রাইট - তা গ্রহন করা অবশিষ্টাংশ ফেলে দেওয়া এবং তারপর রাইট অংশটুকুর উপর কাজ করা। এতে করে দজ্জাল সম্পর্কে আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর যে অজ্ঞতা, যে অসারতা তা এতদিনে অনেক কমতো বলে আমার মনে হয়েছে।
এ্যানীওয়ে আপনাকে অসম্ভব রকমের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি - এ নিয়ে এমন লিখাটি আমাদেরকে উপহার দেবার জন্য।
আশা করি সূরা কাহাফের ১০ লাইন মুখস্থ জানা এবং প্রতি শুক্রবারে পড়া ভাইবোনরা লিখাটির মর্ম বুঝতে পারবেন এবং দজ্জালের মুখোশ উন্মোচনে এ দিকে অধিক মনোনিবেশ করবেন। এ লিখাটি আমি ব্যাক্তিগতভাবে ইসলামিক এ্যাক্টিভিস্ট ভাইদের খোলা মনে দুই তিনবার পড়ার জন্য বলবো এবং চিন্তা করতে বলবো এবং কোন অসংগতি পেলে প্রশ্ন তুলতে বলবো। তাতে একটা ইনফরমড আন্ডারস্ট্যান্ডিং হবে।
সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিখাটি প্রথম পেইজ এ স্থান পেলে খুবই ভাল হত।
ধন্যবাদ আবারো।
And We declared to the children of Isra’il in the Book: “You will surely spread mischief on the earth twice, and you will surely show utmost haughtiness. (4) So, when came the time appointed for the first of the two, We dispatched against you some servants belonging to us 2 having strong aggressive power, who combed through the houses; and it was a promise, bound to be fulfilled. 3 (5) Then We gave you your turn to overpower them, and increased your strength with wealth and sons, and made you greater in number, (6) Saying) ‘If you do good, you will do it for your own benefit, and if you do evil, it will be against yourselves’. Later, when came the time appointed for the second, (We sent others,) so that they spoil your faces, and so that they enter into the Mosque as the former ones entered it the first time, and utterly destroy whatever they prevail upon. (7)
-অনেক ধন্যবাদ..পুরোটাই মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় পড়েছি।সতর্ক হওয়া সবার জন্য জরুরী..জাযাকাল্লাহ...
১। সুরা কাহাফের প্রথম ১০টি লাইন বাচ্চা হতে শুরু করে সবাই ই মুখস্থ করতে পারে।
২। প্রতি জুম্মাবারে সামহাউ ৩০/৩৫ মিনিট ব্যায় করে সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করতে পারে।
৩। এতে করে লিখকের লিখাটি আরো বেশী করে বোধগম্য হবে এবং মিথ্যা, প্রতারনাসমূহ চোখের সামনে ধরা পড়বে।
৪। যে কতটুকু উপার্জন হলে বেসিক নিডস ফুলফিল হবে সে কতটুকু উপার্জন করা। তারচেয়ে বেশী কাজ করার ধান্ধা বাদ দিতে হবে।
৫। যদি আয় বেশী হয়ে যায় আর তা বন্ধ করার উপায় না থাকে তবে মিনিমাম ব্যায়ে জীবন যাপন করার প্রাকটিস করা এবং উদ্ধৃত্ব টাকা দিয়ে অজ পাড়াগায়ে ফসল উৎপাদন যোগ্য জমি কেনা, পুকুর কেনা ও গবাদি পশু কেনার ব্যবস্থা করা যায়। কারন খুব শিঘ্রই শহরে বসবাসকরা অসম্ভব হয়ে যাবে।
আবূ রাবী আল আতাকী ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ সমস্ত পৃথিবীকে ভাজ করে আমার সামনে রেখে দিয়েছেন। অতঃপর আমি এর পূর্ব দিগন্ত হতে পশ্চিম দিগন্ত পর্যন্ত দেখে নিয়েছি। পৃথিবীর যে পরিমাণ অংশ গুটিয়ে আমার সম্মুখে রাখা হয়েছিল সে পর্যন্ত আমার উম্মাতের রাজত্ব পৌছবে। আমাকে লাল ও সাদা দুটি ধনাগার দেয়া হয়েছে। আমি আমার উম্মাতের জন্য আমার প্রতিপালকের নিকট এ দুআ করেছি, যেন তিনি তাদেরকে সাধারণ দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস না করেন এবং যেন তিনি তাদের উপর নিজেদের ব্যতীত এমন কোন শক্রকে চাপিয়ে না দেন যারা তাদের দলকে ভেঙ্গে টুক্বরা টুকরা করে দিবে। এ কথা শুনে আমার প্রতিপালক বললেন, হে মুহাম্মদ! আমি যা সিদ্ধান্ত করি তা কখনো প্রতিহত হয় না। আমি তোমার দুআ কবুল করেছি। আমি তোমার উম্মাতকে সাধারণ দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস করবো না এবং তাদের উপর তাদের নিজেদের ব্যতীত অন্য এমন কোন শক্রকে চাপিয়ে দেবো না যারা তাদের সমষ্টিকে বিক্ষিপ্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। যদিও বিভিন্ন প্রান্ত হতে লোক সমবেত হয়ে চেষ্টা করে না কেন। তবে মুসলমানগণ পরস্পর একে অপরকে ধ্বংস করবে এবং একে অপরকে বন্দী করবে। (মুসলিম: ৬৯৯৪, পাবলিশার: ইফাবা)
আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (অন্য সনদে) ইবনু নুমায়র (রহঃ) সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা আলিয়া হতে এসে বনূ মু-আবিয়ায় অবস্হিত মসজিদের নিকট গেলেন। অতঃপর তিনি উক্ত মসজিদে প্রবেশ করে দুরাকআত সালাত আদায় করলেন। আমরাও তার সাথে সালাত আদায় করলাম। এ সময় তিনি তার প্রতিপালকের নিকট দীর্ঘ দুআ করলেন। এবং দুঁআ শেষে আমাদের নিকট ফিরে এলেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমি আমার প্রতিপালকের নিকট তিনটি জিনিস কামনা করেছি। তন্মধ্যে তিনি আমাকে দুটি প্রদান করেছেন এবং একটি প্রদান করেননি। আমি আমার প্রতিপালকের নিকট কামনা করেছিলাম, যেন তিনি আমার উম্মাতকে দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস না করেন। তিনি আমার এ দু’আ কবুল করেছেন। তাঁর নিকট এও প্রার্থনা করেছিলাম যে, তিনি যেন আমার উম্মাতকে পানিতে ডুবিয়ে ধ্বংস না করেন। তিনি আমার এ দু’আও কবুল করেছেন। আমি তাঁর নিকট এ মর্মেও দু’আ করেছিলাম যে, যেন মুসলমান পরস্পর একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত না হয়। তিনি আমার এ দুআ কবুল করেননি।(মুসলিম:৬৯৯৬)
অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, মুসলিমগণ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, একে অপরকে হত্যা ও বন্দী করবে।
আপু শিয়াদের ব্যাপারটা খুব জটিল। রাসূল (সাঃ) শিয়াদের ব্যাপারে আলী (রাঃ) কে ভবিষ্যৎবাণী করে বলেছিলেন,
"হে আলী! তোমার মাঝে ঈসা ইবন মারিয়ামের উদাহরণ রয়েছে, ইয়াহুদীরা তার প্রতি এমনই বিদ্বেশ পোষণ করেছিল যে, তারা তার মা কে পর্যন্ত অপবাদ দিয়েছিল। পক্ষান্তরে নাসারাগণ তার প্রতি এমনই ভক্তিপোষণ করেছে যে, তারা তাকে ঐ মর্যাদায় সমাসীন করেছে করেছে যার উপযুক্ত তিনি নন। হাদিসটি হারিস ইবনে হাসীরাহ হতে, তিনি আবু সাদিক হতে, তিনি বারীয়া ইবন নাজিদ হতে, তিনি হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন।
“হযরত আলী (রাঃ) মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বললেন: সাবধান! ২ শ্রেণীর লোক আমাকে কেন্দ্র করে হালাক হবে। সীমাতিরিক্ত ভক্তি পোষণকারী (শিয়া), যে আমার এমন প্রসংসা করবে যা আমার মাঝে নেই, দ্বিতীয়ত: এমন বিদ্বেশ পোষণকারী (খারেজী) যে আমার প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে। শুনে রাখ, আমি নবী নই, আমার প্রতি কোন ওহী নাজিল হয়না, তবে আমি আল্লাহর কোরান ও তার নবীর সুন্নতের উপর যথাসম্ভব আমল করি। সুতরাং আল্লাহর আনুগত্যের যে আদেশ আমি তোমাদের করি পছন্দ হোক বা না হোক সে ব্যাপারে আমার আনুগত্য করা তোমাদের কর্তব্য।(তথ্যসূত্র: গ্রন্হ "হযরত আলী রাঃ জীবন ও খিলাফত" লেখক: সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী। বইটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকেও প্রকাশ হয়েছে বাংলা অনুবাদ করেছেন মাওলানা আবূ তাহের মেসবাহ)”
শিয়াদের ব্যাপারটা খুব জটিল। তবে আমেরিকা-ইজরাইলের প্রধানতম টার্গেটই হল শিয়া সুন্নী দ্বন্দ আরো উস্কে দিয়ে পাকিস্তান, ইরান ও সিরিয়া-ইরাক ধ্বংশ করা। কারণ হাদিসে বর্ণিত যেই মহাযুদ্ধ খুব তাড়াতাড়ি আমাদের সামনে আসছে যা বাইবেল ও ইহুদীদের ঐশি কিতাবেও উল্লেখ আছে যাকে তারা আমেগেদান বলে অবিহিত করে, ইজরাইল এখানে তার প্রধান শত্রু মুসলিমদের সর্বাধিক দুর্বল হিসেবে দেখতে চায়। তাই ইরাক সিরিয়ায় ইজরাইল সৃষ্ট মিলিশিয়া এইএসকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা এই দ্বন্দকে পুজি করেই শত্রুতা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে এমনকি বাশার বিরোধী সুন্নী বিদ্রোহী গোষ্ঠী আলকায়েদা নুসরাহ, আহরার আশ শাম, ইসলামিক ফ্রন্ট, ফ্রি সিরিয়ান আর্মি তাদের সাথেও যুদ্ধে লিপ্ত আছে। নুসরাহ এর দাবি এইএস এর হাতে তাদের ৩০০০ সদস্য হত্যার শিকার হয়েছে। আপনাকে অনুরোধ করবো ডঃ আবদুল্লাহ আযযাম এর তাফসীরে সুরা তাওবা পড়বেন। ইমরান নজর হুসাইন এর লেকচার ও বইগুলিও সংগ্রহ করবেন।
রাসূল ﷺ বলেছেন, ইসলাম শুরু হয়েছে অপরিচিত অবস্থায়, পুনরায় অপরিচিত অবস্থায়ই ফিরে যাবে, সুতরাং সেই অপরিচিতদের (ব্যক্তিদের)জন্য ‘তুবাহ’”।(ইবনে মাজাহ, কিতাব আল ফিতান, ৩৯৮৬)
এখানে সেই অপরিচিত ব্যক্তি বলতে কি বুঝানো হয়েছে? অর্থাৎ খুব সামান্য কিছু লোক ইসলামের উপর টিকে থাকবে, তারা ইসলামকে সঠিকভাবে বুঝবে এবং তাদের দ্বারাই ইসলাম বিজয়ী হবে, যদিও পৃথিবীতে ইসলাম বিদ্যমান থাকবে এবং কোটি কোটি মুসলিম জীবিত থাকবে। কিন্তু তাদের মাঝে মুসলমানিত্ব থাকবেনা। শাসকদের কথা বলছেন??
শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) হাসান থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জনৈক সাহাবী আয়েব ইবনু আমর (রাঃ) একদা উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়ার (রহঃ)-এর কাছে গেলেন। তখন তিনি তাকে লক্ষ্য করে বললেন, বৎস! আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, নিকৃষ্টতম রাখাল হচ্ছে অত্যাচারী শাসক। তুমি তাদের অন্তর্তুক্ত হওয়া থেকে সাবধান থাকবে।( মুসলিম: ৪৫৮১,পাবলিশার: ইফাবা, মান: সহীহ)
ইরবায বিন সারিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ)বলেন, আর আমার পর তোমাদের কেউ জীবিত থাকলে সে বহূ (ইসলামে) মতভেদ দেখতে পাবে। তখন আমার সুন্নাহ এবং হেদায়াতপ্রাপ্ত (৩০ বছরের ৪জন খলিফা যথাক্রমে: আবূ বকর, উমার, উসমান ও আলী রাঃ) খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ অনুসরণ করা হবে তোমাদের অপরিহার্য কর্তব্য। এই সুন্নাহকে খুব মজবুত করে দাঁত দিয়ে চেপে ধরবে। আর দ্বীনে নতুন উদ্ভাবিত বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকবে। কেননা, (দ্বীনে)প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত জিনিসই হচ্ছে বিদ'আত।আর প্রত্যেক বিদ'আতই ভ্রষ্টতা।(আহমাদ, আবু দাউদ ৪৬০৭, তিরমিজি ২৮১৫, ইবনে মাজাহ, মিশকাত ১৬৫)
মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) হুযায়ফা ইবনু ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্নিত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা তো জাহিলিয়াতে ও অকল্যাণের মাঝে ছিলাম। এরপর আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ কল্যাণের মধ্যে নিয়ে আসলেন। এ কল্যাণের পর আবারও কি অকল্যান আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে অকল্যাণের পর আবার কি কোন কল্যাণ আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যা। তবে এর মধ্যে কিছুটা ধূম্রাচ্ছন্নতা থাকবে। আমি প্রশ্ন করলাম, এর ধূম্রাচ্ছন্নতা কিরূপ? তিনি বললেনঃ তখন এমন একদল লোকের উদ্ভব হবে-যারা আমার প্রবর্তিত পদ্ধতি ছাড়া অন্য পদ্ধতি- অবলম্বন করবে, আমার প্রদর্শিত হেদায়েতের পথ ছেড়ে অন্যত্র হেদায়েত ও পথের দিশা খুঁজবে। তাদের মধ্যে ভাল-মন্দ উভয়টিই থাকবে। তখন-আমি আরয করলাম, এ কল্যাণ পর কি কোন অকল্যাণ আছে? তিনি বললেন, হ্যা! জাহান্নামের দরজার দিকে আহবানকারীদের উদ্ভব হবে। যারা তাদের ডাকে সাড়া দেবে তাদেরকে তারা তাতে নিক্ষেপ করবে। আমি তখন বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তাদের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ তাদের বর্ণ বা ধরন-ধারণ হবে আমাদের মতো এবং তারা আমাদেরই ভাষায় কথা বলবে। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি আমরা সে পরিস্হিতির সম্মুর্খীন হই, তবে আমাদেরকে আপনি কি করতে বলেন? তিনি বললেনঃ তোমরা মুসলমানদের জামায়াত ও ইমামের সাথে আকড়ে থাকবে। আমি বললাম, যদি তাদের কোন জামায়াত বা ইমাম না থাকে? তিনি বললেনঃ তা হলে সে সব ফের্কা থেকে তুমি আলাদা থাকবে-যদিও তুমি একটি বৃক্ষকে দাত দিয়ে কামড়ে থাক এবং এ অবস্হায়ই মৃত্যু তোমার নাগাল পায়। ( মুসলিম: ৪৬৩১, বুখারী: ৬৬০৫ অর্থাৎ এটি মুত্তাফাকুন আলাইহ)
জাঝাক আল্লাহ আপি।
অ
নফস সেই জালে আটকা পড়ে থাকলে সুস্থ ভাবে বাঁচার সম্ভাবনা খুব ক্ষীন। প্রশ্ন রয়ে গেলো- এই ইন্টারনেট জগত আমাদের কন্ট্রল করছে, খেয়াল রাখছে কিন্তু ইন্টারনেট ছাড়াও আমরা অচল, শুধু ব্যবহার বন্ধ রাখাই কি সমাধান?
আমি মনে হয় বুঝতে পারি নি?
সাধারণ মুসলিম হিসেবে শুক্রুবারে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত, সালাতের তাশাহুদের পর চারটি বিষয় থেকে আশ্রয় চাওয়াকে রুটিনের মধ্যে রাখি- আল্লাহামাদের জন্য সহজ করে দিন। ভয় থেকে হিফাজত করুন।
জাযাক আল্লাহ খাইর।
সুরা কাহাফই হল সমাধান। সম্পূর্ণরূপে শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে রাকিমের অধিবাসীদের পালিয়ে গুহায় আশ্রহ নেয়া শুধুমাত্র নিজেদের ঈমান বাঁচানোর জন্য। চরম শক্তিধর মুশরিক জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্হান নিয়ে আল্লাহর কাছে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আকুতি। দুজন কৃষকের বর্ণনা একজন ধনী এবং অন্যজন গরীব অথচ ধন-সম্পদের গর্বে অহংকারে একজন কিয়ামতকেই অস্বীকার করে বসল এবং এই মিথ্যা বিশ্বাস তার মনে জন্ম নিল যে, যদি কিয়ামত থেকেও থাকে তবে তার ভাল অবস্হার জন্য আল্লাহ তাকেই প্রাধান্য দিবেন এবং জান্নাতে আরো ভাল কিছু দিবেন। দুনিয়াতে তার সীমালংঘন আল্লাহর কাছে বড় কোন ইস্যু হবেনা। অন্যদিকে গরীব কৃষক তার ঈমানে আটল রইল।
অপর দিকে চরম শক্তিমত্তার অর্জনকারী, সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত জুলকারনাইন নামক একজন শাসক তিনি সমস্ত পৃথিবীর সকল জাতিগোষ্ঠীর উপর বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি আল্লাহকে ভুলে যাননি। তিনি খুব স্পষ্ট বিচারক ছিলেন। যে ভাল কাজ করবে, আমরা তাকে পুরষ্কৃত করব দ্বিগুন-তিনগুণ দিয়ে আর যে খারাপ কাজ করবে আমরা তাকে শাস্তি প্রদান করব। এত শক্তিমত্তার পরেও আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি এসে থেমে গেলেন ইয়াজুজ-মাজুজ নামক দুটি মানব গোত্রের সামনে এবং তিনি তাদেরকে অবরুদ্ধ করলেন এবং বলেও দিলেন এটা চিরস্হায়ী নয় বরং আল্লাহর ইচ্ছাধীন। ইয়াজুজ মাজুজ ছিল ফিৎনাবাজ, কলুষিত এক সম্প্রদায়। খিজির (আঃ)আরেক ব্যক্তি যিনি সরাসরি আল্লাহর কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করেছেন তিনি সত্যকে সত্য হিসেবেই দেখতে পান এবং মিথ্যাকে মিথ্যা। তিনি একচোখা নন। তার হৃদয়ে অন্ধত্ব নেই। এসব ব্যাপারগুলোকে পাশাপাশি জড় করে বর্তমান পৃথিবীকে বিশ্লেষণ কর আপি। ইনশাআল্লাহ অনেক কিছুই দিবালোকের ন্যায় পরিষ্কার হয়ে যাবে।
https://www.facebook.com/alihusain.kaisar (ফেইসবুকে আমি)
আজ আপনার লিখাটা পড়ে বইটির কথা মনে পড়লো।
আপনার লিখার সারমর্মের সাথে ঐ বইটির সারমর্মের চরম মিল মনে হচ্ছিলো।
ধন্যবাদ, সুন্দর লিখার জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন