শুধু একটি নারীর জন্য!!!
লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ২১ এপ্রিল, ২০১৫, ০১:৪৫:০৪ রাত
কিছু পুরুষের কথা শুনে সত্যি অবাক হচ্ছি। তারা বলছেন, টিএসসিতে নারীরা এত সেজেগুজে গিয়েছে কেন? চেতনাধারীদের অনুষ্ঠানে গিয়েছে তাই ধর্ষণের শিকার হয়েছে চেতনাধারীদের কাছে। ব্যাপারটা যৌক্তিক!! তারা পর্দা করেনা, ইসলাম মানেনা তাই তারা কোন সহানুভূতি পাবার যোগ্য না!!
হ্যা! যেসব নারীরা সেদিন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে তাদের অনেক দোষ-ত্রুটি আছে, অনেক ভুল আছে কিন্তু তাই বলে সেই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণরূপে তাদের দোষারোপ করা, "তারা সহানুভূতি পাবার যোগ্য না" এমন কথা বলা কতখানি যৌক্তিক?
আফ্রিকার গভর্ণর মুসা বিন নুসাইরের কাছে উপস্থিত হলেন স্পেনের আঞ্চলিক গভর্ণর কাউন্ট জুলিয়ান। তিনি ফরিয়াদ করে বললেন, স্পেনের জালিম সম্রাট রডারিক তার মেয়ে ফ্লোরিডার সম্ভ্রমহানি করেছে! তিনি প্রতিশোধ চান। মুসলিমদের তরবারিতে ধর্ষক রডারিকের পতন দেখতে চান।
ভেবে দেখুন, কাউন্ট জুলিয়ান একজন খৃষ্টান সে মুসলিমদের শত্রু বলে বিশ্বাস করে। তার মেয়ে ফ্লোরিডাও একজন খৃষ্টান, পর্দা পালন করেনা। কাজেই মুসলিম গভর্ণরের "কি জবাব দেয়া উচিত?"
মুসা বিন নুসাইর চুপ থাকেননি, নিজ বিশ্বস্ত সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদকে পাঠালেন স্পেন জয় করার জন্য। মুসলিম সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ যখন স্পেন সমুদ্র উপকূলে তার বিশাল নৌবহর নিয়ে পৌছালেন, তিনি মুসলিম সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিলেন, প্রত্যেকটি জাহাজে আগুন ধরিয়ে দাও। মুসলিম সেনাবাহিনী সেনাপতির নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন। সেনাপতি এবার মুসলিম সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে বলিষ্ঠ কন্ঠে বক্তৃতা দিলেন। হে মুসলিম সেনাবাহিনী! তোমরা ভাল করেই জান, "তোমরা কেন মাতৃভূতি আরব ত্যাগ করে এখানে এসেছ?" পেছনে তাকিয়ে দেখ তোমাদের জাহাজগুলো আগুনে পুড়ছে। সামনে তোমাদের জন্য ধর্ষক রডারিকের দুর্ধর্ষ বাহিনী অপেক্ষা করছে আর পেছনে সমুদ্র। হে মুসলিম সেনাবাহিনী! পালানোর পথ কি আছে? সুতরাং তোমরা যুদ্ধ করে শহীদ হও অথবা স্পেনের মাটিতে কালিমার পতাকা উড়াও।
হ্যা! মুসলিমরা যুদ্ধ করেছিল, অনেকে শহীদ হয়েছিল আর অবশেষে বিজয়ী মুসলিম সেনাবাহিনী স্পেনের মাটিতে কালিমার পতাকা উড়িয়েছিল। কিন্তু কার জন্য?????
এক নারীর জন্য! একজন খৃষ্টান নারীর জন্য, একজন বেপর্দা নারীর জন্য। কিন্তু কেন??
তোমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত, তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানবজাতির কল্যাণের জন্য, তোমরা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায়ের প্রতিরোধ কর এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্হাপন কর; আর যদি গ্রন্হ প্রাপ্তগণ বিশ্বাস স্হাপন করত, তবে অবশ্যই তা তাদের জন্য মঙ্গলজনক হত। তাদের মাঝে কেউ কেউ তো মুমিন এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই দুষ্কার্যকারী। (সূরা আল ইমরান: ১১০)
আমরা সেই সে জাতি, তাইনা? আমাদের মানষিকতা এত কলুষিত কেন? আপনারা ইসলামের দোহাই দিয়ে এমন সব কথা বলছেন অথচ কি অবাক কান্ড আল্লাহ নিজেই আপনাদের বিপক্ষে!!! তারিক বিন যিয়াদ, মুসা বিন নুসাইররা আপনাদের বিরুদ্ধে!!
আপনি নিজের ইচ্ছায় পুরুষ হয়ে পৃথিবীতে আসেননি বরং আল্লাহ আপনাকে পুরুষ আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, অথচ তিনি ইচ্ছা করলে আপনাকে নারী আকৃতিতে সৃষ্টি করতে পারতেন। কাজেই কিসের অহংকার আপনার??
আসুন মানষিকতা পরিবর্তন করি। সমস্যা সমাধানের কথা বলি, নতুন সমস্যা তৈরী করে আমরা কি নিজেরাই নিজেদেরকেই পিছিয়ে দিচ্ছিনা??
বিষয়: বিবিধ
১৭৮৯ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সেখানে কোন খৃস্টান নারী কি এগিয়ে এসেছিল মুসলমানদের কাবাব হওয়া থেকে রক্ষা করতে ?
একজন ভাই তার বোনকে কেউ টিজ করলে প্রতিবাদ + প্রতিরোধে এগিয়ে আসে । মাইর দেয় + মাইর খায় । আবার মারাও পড়ে।
কোন বোন কি তার ভাবী যখন তার ভাইকে যখন মানসিকভাবে কষ্ট দেয় + তার মায়ের সাথে দূর্ব্যবহার করে তখন কি ভাবীর বিরুদ্ধে এগিয়ে আসে ? প্রতিবাদ সমাবেশ করে ? জন সচেতনতা গড়ে তোলে ঠিক যেমন তার ভাইটি করে তার জন্য ?
সেন্টিমেন্ট দিয়ে কাজ হয় না । বাস্তবতা বুঝবার মানসিকতা অর্জন করুন ।
কেন মেয়েদের এসব সাফারিংস কখনই শেষ হয় না হাজার কাবযাব সত্ত্বেও , একটুও কি চিন্তা করেছেন কস্মিনকালেও ?
তোমাদিগকে কাবু করিতে পারিলে উহারা হইবে তোমাদের শত্রু এবং হস্ত ও রসনা দ্বারা তোমাদের অনিষ্ট সাধন করিবে এবং কামনা করিবে যে, তোমরাও কুফরী কর। (মুমতাহিনা:২) কিন্তু ঐ আল্লাহই আবার তারা কামনা করলে, আশ্রয়-নিরাপত্তা ও নিরাপদে পৌছে দিতে বলেছেন। মুসলিমরা তাদের দায়িত্বই পালন করেছেন।
আর ভাইয়া মানুষ হিসেবে নারীদের কিছু ত্রুটি রয়েছে আর পুরুষদেরও কিছু ত্রুটি রয়েছে। আল্লাহ নিজেই বলেছেন তাদেরকে এভাবে ত্রুটিযুক্তভাবেই সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষ হিসেবে নারী বা পুরুষ নিজেদের এসব দূর্বলতাগুলো ঠিক তখনি কাটিয়ে উঠতে পারেন, যখন তারা কোরান-হাদিসের অনুসরণে মনোনিবেশ করেন। আর একজন পুরুষ মানেই যেমন গোটা পুরুষ জাতি না, ঠিক তেমনি একজন নারী মানেই কিন্তু গোটা নারী জাতি না। তাই একজন পুরুষের কর্মকান্ডের ভিত্তিতে বা একজন নারীর কর্মকান্ডের ভিত্তিতে গোটা পুরুষ জাতিকে গালি দেয়া যায়না বা গোটা নারী জাতিকেও গালি দেয়া যায়না। কারণ আমরা জানি, প্রত্যেকটা মানুষ আলাদা কারণ সে ইউনিক ডিএনএ বহন করে চলেছে। ব্যক্তি হিসেবে সে নারী বা পুরুষ যাই হোন না কেন, বাবা(পুরুষ) ও মা(নারী) এর সমান সংখ্যক বৈশিষ্ট নিয়ে সে পূর্ণাঙ্গ মানুষ রূপেই পৃথিবীতে আসে। আল্লাহর রাসূল বলেছেন, তোমার স্ত্রীর মাঝে কোন একটা বিষয় খারাপ লাগলেও, তুমি দেখবে তার মাঝে এমন অনেক ভাল গুণ আছে যা তোমাকে সন্তুষ্ট করবে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ঘুম ঘুম ভাঙানিয়া ভাইয়া সুন্দর লেখার জন্য ।
আমরা কাকে পণ্ডিত বলবো সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। কোন বিষয়ে যার পাণ্ডিত্য আছে সেই তো পণ্ডিত হওয়ার যোগ্যতা রাখে কিন্তু আমাদের অবস্থা ঠিক তার বিপরীতে। তাই তো এই বেহাল করুণ দশা! একে অপরকে সন্মান ও শ্রদ্ধা করার পরিবর্তে উপহাস করছি। কোরআন ও হাদীসের আলোকে সমস্যা সমাধানের কথা না বলে বিদ্রুপাত্মক ও উস্কানিমূলক পরিবেশ সৃষ্টি করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছি!!
তোমার এই শাণিত কলম যেন কখনই থেমে না যায়। জাজাকাল্লাহু খাইর।
http://www.monitorbd.net/blog/blogdetail/detail/3557/warrior2013/64167#.VTYtgtjfSTo তুমি নেই কেন?
আপু এই ব্লগে আমার কলম বেশি শানিত না মানে আমি তোমাদের মত এত জনপ্রিয় না যে, আমি লিখলেই সবাই পড়বে। মানুষ দয়া করে দু-৪টা মন্তব্য করে এই যা। তাই আমার কলম অলরেডি ভো্ঁতা হতে শুরু করেছে। আল্লাহ তোমাকেও দুনিয়া ও আখিরাতে মঙ্গল দান করুক।
কার দোষ কার দোষ চিৎকার করতে করতে দোষী পালিয়েছে! শাস্তি আর কাকে দিবে ? আমাদের সমাজে তো আবার প্রভাবশালীদের শাস্তির আওতায় আনা যায় না!
তোমার কলমের শানিত, সুপ্রসারিত কল্যান কামনা করছি!
জাযাকাল্লাহু খাইর!
কিন্তু যে নারিরা নিজেদের নামিয়ে নিয়েছে পশুর কাতারে তাদের জন্য সেই আবেগ আসবে কি?
বুদ্ধিজিবি শহীদ মিনারে একবার সম্ভবত ১৬ ডিসেম্বর এ গিয়েছিলাম বাব্বাহ যে ভীড় ছিলো সেখানে দম ফেলার যায়গা নেই। এরকম অবস্থায় এ ধরনের ঘটনার জন্মনেয়া অনাকাঃক্ষিত নয়। এটা সচরাচর ঘটে। ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা আর "ক"যায়গায় বা থাকে? আপুরা এগুলো দেখা এবং জানাসত্বেও বারবার সেখানে যায়!!!!!!
যখন মানুষগুলো ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে গেলো, যখন মনুষত্ব্যের মুখ এর উপর পশুত্বের মুখোশ পড়লো তখন ওদের কার্যক্রম ও পশুর মত হয়ে গেলো।
সত্যিই ইমানের বীজ হৃদয়ে না থাকলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে। কি পুলিশ!? কি ক্যামেরা!? কি প্রশাসন!?
যখন ইমানের বীজ হৃদয়ে থাকবে এরকম কিছুই দরকার হবেনা সুদূর থেকে একবোন অলংকৃত অবস্থায় বায়তুল্লাহর সফর করবে আর লাখো পুরুষের কেউ তার দিকে তাকাবেনা। তাই এখনই প্রয়োজন একটি রেঁনেসা......
প্রতিবাদ করছি এই অমানবিক ঘটনার জন্য, ক্ষমা চাইছি সে বোনের কাছে যার ইজ্জত এ দেশ এ প্রশাসন বাঁচাতে পারেনি সত্যিই আমরা লজ্জিত যেখানে লাখো মানুষের ভীড়ে এহেন কর্মকান্ড হয়!!!!!!!!!!!!!!
ঘুম ভাঙাতে চাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ লিখাটির জন্য।
জাজাকাল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের দ্বীনের জন্য একত্রে কাজ করার তৌফিক দান করুন। আমিন
মন্তব্য করতে লগইন করুন