কারা এই খারেজী ও শিয়া/রাফেজী সম্প্রদায়? শিয়াদের চোখে আল মাহদি (আঃ) ও শিয়া নেতৃত্বদানকারী ইরানের আসল লক্ষ্যই বা কি? শেষ পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ৩১ মার্চ, ২০১৫, ০১:৫৯:৩৯ রাত



প্রথম পর্বের লিংক: Click this link

সাবাই বা শিয়া সম্প্রদায়: ইবনে সাওদা নামে খ্যাত আবদুল্লাহ ইবনে সাবা এর অনুসারীরা শিয়া নামে পরিচিত। সে ছিল ইয়েমেনে জন্মগ্রহণকারী এক নারীর গর্ভজাত ইহুদি সন্তান। প্রত্যাবর্তনবাদী ধর্ম বা শিয়াইজম তার হাতেই গড়ে ওঠে। খলিফা উসমান (রাঃ) এর হত্যায় তার ভূমিকা ছিল প্রধান।

আব্বাস মাহমুদ আল আক্কাদের বর্ণনামতে, ইহুদি বিশ্বাস "দাউদ বংশে ত্রাণকর্তার আবির্ভাব হবে", মানব রূপে ভগবানের আবির্ভাব বিষয়ক ভারতীয় ধর্ম বিশ্বাস, যীশুর আবির্ভাব সংক্রান্ত খৃষ্টানদের বিশ্বাস এবং রাজ বংশীয় রাজপুরুষদের প্রতি পারসিকদের ধর্মীয় পবিত্রতা আরোপ ইত্যাদি বিভিন্ন চিন্তার সমন্বয়ে গড়ে ওঠে তার ধর্ম বিশ্বাস।(আল আবকারিয়াতুল ইসলামিয়্যাহ পৃ. ৯৭১)

"আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া", "আল-আবকারিয়াতুল ইসলামিয়াহ", "তারিখে তাবারী" সহ নির্ভরযোগ্য ইসলামি ইতিহাসের গ্রন্হগুলিতে তার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। এটি "আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া" গ্রন্হের পিডিএফ ডাউনলোড লিংক Click this link

তাই অনুরোধ থাকবে এসকল বইগুলো যেন আমরা সংগ্রহে রাখি। আমি মোটেও গোটা ইতিহাস লিখতে বসিনি কারণ তাতে সময়ক্ষেপন আর পাঠকদের বিরক্তি ছাড়া কিছুই বাড়বেনা। তাই তার সম্পর্কে আলোচনা যতটুকু আমার লেখার সাথে সংশ্লিষ্ট ও যুক্তিযুক্ত ঠিক ততটুকুই উল্লেখ করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

ইয়েমেন হল সাবাই ধর্ম বা শিয়া-রাফেজী ধর্মের জন্মস্হল।শিয়াদের নিকট নির্ভরযোগ্য রিজালশাস্ত্রীয় গ্রন্হরূপে বিবেচিত "রিজালকুশী" নামক গ্রন্হে আবদুল্লাহ ইবনে সাবা সম্পর্কে বলা হয়েছে:

"তিনিই সর্বপ্রথম আলী (রাঃ) এর ইমামতের অপরিহার্যতার ধারণা প্রচার করেন এবং তার শত্রুদের সাথে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেন এবং তাদের প্রতি কুফুরি আরোপ করেন। একারণেই শিয়া বিরোধীরা বলে থাকেন যে, ইয়াহুদী ধর্ম থেকেই শিয়া চিন্তাধারার উৎস। (রিজালকুশী, পৃষ্ঠা: ৭১)"

আবদুল্লাহ ইবনে সাবা ও তার নির্বোধ অনুসারীরা আলী (রাঃ) এর ব্যাপারে চুড়ান্ত অতিরঞ্জন করে ছেড়েছিল যেভাবে খৃষ্টানরা ঈসা (আঃ) ব্যাপারে করেছে। তারা প্রথমে আলী (রাঃ) এর নবুয়তের কথা প্রচার করে, শেষধাপে উপাস্য, রক্ষাকর্তা হিসেবেও তাকে সামনে আনে। সাহায্যের জন্য তারা ইয়া আলী! ইয়া আলী! বলে আলী (রাঃ) কে আহবান করে, যেভাবে খৃষ্টানরা রক্ষাকর্তা হিসেবে জিসাস! জিসাস বলে যিশুকে আহবান করে। তারা খিলাফতের ধারণাকে অস্বীকার করে। আয়েশা (রাঃ) এর উপর ব্যাভিচারের অভিযোগ আরোপ করে। আবু বকর(রাঃ), উমার(রাঃ), ওসমান(রাঃ) কে মিথ্যাবাদি, জাহান্নামি, কাফির, দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতালোভী ইত্যাদি বলে লোকজনের মাঝে প্রচার করতে লাগল। আত্বীয়তার দিক থেকে আলী (রাঃ) খিলাফত এর দায়িত্ব পাবার অধিক হকদার ছিলেন কিন্তু তা থেকে বঞ্চিত করে অবৈধভাবে পূর্ববর্তী খলিফারা খিলাফত দখল করেছিল বলেতারা দাবি করতে লাগলো। প্রথম সারির অনেক সাহাবীর নামে অপবাদ আরোপ করতে লাগল। শিয়াইজম ইয়েমেন, মিশর, সিরিয়া হয়ে ইরাকেও এসে পৌছালো এবং আলী (রাঃ) ঘটনা জানার পর রেগে গিয়ে বলেছিলেন, এসব লোকদের গর্তে ফেলে আগুনে পোড়াও

তিনি তড়িৎ ব্যাবস্হা নিলেন। আবদুল্লাহ ইবনে সাবাকে মাদায়েনে নির্বাসন দিলেন। কিন্তু খারেজীদের হাতে আলী (রাঃ) নিহত হলে সে আবার তার প্রচারণায় ফীরে আসে। নতুনভাবে প্রচার করতে শুরু করে, আলী (রাঃ) কখনো মরতে পারেননা, তিনি ঈসা (আঃ) এর মত আকাশে জীবিত আরোহণ করেছেন। পরবর্তীতে শিয়াদের মাঝে ১২ জন ইমামের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। যার ১ম ইমাম আলী (রাঃ) এবং সর্বশেষ ও ১২তম ইমাম হল ইমাম মাহদি।

রাসূল (সাঃ) শিয়াদের ব্যাপারে আলী (রাঃ) কে ভবিষ্যৎবাণী করে বলেছিলেন,

"হে আলী! তোমার মাঝে ঈসা ইবন মারিয়ামের উদাহরণ রয়েছে, ইয়াহুদীরা তার প্রতি এমনই বিদ্বেশ পোষণ করেছিল যে, তারা তার মা কে পর্যন্ত অপবাদ দিয়েছিল। পক্ষান্তরে নাসারাগণ তার প্রতি এমনই ভক্তিপোষণ করেছে যে, তারা তাকে ঐ মর্যাদায় সমাসীন করেছে করেছে যার উপযুক্ত তিনি নন।

হাদিসটি হারিস ইবনে হাসীরাহ হতে, তিনি আবু সাদিক হতে, তিনি বারীয়া ইবন নাজিদ হতে, তিনি হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন।


“হযরত আলী (রাঃ) মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বললেন: সাবধান! ২ শ্রেণীর লোক আমাকে কেন্দ্র করে হালাক হবে। সীমাতিরিক্ত ভক্তি পোষণকারী (শিয়া), যে আমার এমন প্রসংসা করবে যা আমার মাঝে নেই, দ্বিতীয়ত: এমন বিদ্বেশ পোষণকারী (খারেজী) যে আমার প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে। শুনে রাখ, আমি নবী নই, আমার প্রতি কোন ওহী নাজিল হয়না, তবে আমি আল্লাহর কোরান ও তার নবীর সুন্নতের উপর যথাসম্ভব আমল করি। সুতরাং আল্লাহর আনুগত্যের যে আদেশ আমি তোমাদের করি পছন্দ হোক বা না হোক সে ব্যাপারে আমার আনুগত্য করা তোমাদের কর্তব্য।(তথ্যসূত্র: গ্রন্হ "হযরত আলী রাঃ জীবন ও খিলাফত" লেখক: সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী। বইটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকেও প্রকাশ হয়েছে বাংলা অনুবাদ করেছেন মাওলানা আবূ তাহের মেসবাহ)”

পরবর্তীতে তাদের মাঝে নানান শিরক প্রথা, চরম সুন্নী বিদ্বেশি মনোভাব, কোরান হাদিসে স্পষ্টভাবে হারাম বলে ঘোষনাকৃত কাজগুলোকে নিজেদের জন্য হালাল করে নেয়া সহ তারা নানান বিকৃতি আসে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, শিয়াদের মাঝে অনেক দল, উপদল আছে। যাদের বিশ্বাস ও মতবাদের মাঝেও বিশাল পার্থক্য দেখা যায়। এদের মাঝে সবাই সুন্নী বিদ্বেশী মনোভাব প্রকাশ করেনা। তবে তাদের মাঝে সবচেয়ে বড় দলটি হল ইরান নেতৃত্বধীন ১২ ইমামে বিশ্বাসী শিয়া গোষ্ঠী।

নীচে তাদের মতবাদের কয়েকটি দিকের বর্ণনা দেয়া হল:

#মুতা বিবাহ: এটি ছিল জাহিলিয়াত আরবদের কালচার যা ৭ম হিজরীতে ইসলাম হারাম বলে ঘোষনা দেয় এবং বলা হয় মুতা বিবাহ নিকৃষ্ট কাজ, অথচ শিয়ারা মুতা বিয়েকে নিজেদের জন্য হালাল করে নিয়েছে।

#উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) এর উপর ব্যাভিচারের মিথ্যা অভিযোগ আরোপ এবং ৩ খলিফাসহ প্রথম সারির সাহাবীদেরকে ইসলাম থেকে বিচ্যুত দাবি করা: পবিত্র কোরানে মহান আল্লাহ নিজে আয়েশা (রাঃ) এর পবিত্রতার ব্যাপারে সাক্ষ দিয়েছেন। সাহাবীদের ব্যাপারে সমালোচনা করতে পবিত্র কোরানে নিষেধ করা হয়েছে কারণ, ইসলামের জন্য তারা যে পরিমাণ আত্বত্যাগ-কষ্ট স্বীকার করেছেন, বিপদে যেভাবে ধৈর্যধারণ করেছেন, তা আমাদের পক্ষে সম্ভব হতোনা। তাই যদিও তারা মানুষ হিসেবে ভুলের উর্দ্ধে ছিলেননা, কিন্তু মর্যাদায় তারা আমাদের অনেক উপরে এজন্য তাদের সমালোচনা করার মত কতটুকু অধিকার আমরা রাখি? কিন্তু দুঃখের বিষয় শিয়ারা আয়েশা (রাঃ) এর উপর ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করে এবং ৩ খলিফাকে কাফির ও অন্যান্য সাহাবীদের উপর কুফরের মত ভয়াবহ অভিযোগ আরোপ করে অথচ মহান আল্লাহ স্বয়ং পৃথিবীতেই ১০জন সাহাবীকে জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন।

# ধর্মের ভিত্তি ১২ ইমাম: প্রথম ইমাম আলী (রাঃ) ও শেষ ইমাম হচ্ছেন, মাহদি (আঃ)। তাদের বিশ্বাসমতে, ইমাম মাহদি (আঃ) অনেক আগেই জন্মগ্রহণ করেছেন এবং এখন জীবিত অবস্হায় আসমানে অবস্হান করছেন। খুব তাড়াতাড়ি তিনি ইরানে আবির্ভূত হবেন এবং শিয়া নেতৃত্ব গ্রহণ করবেন। শিয়া আর্মির সাহায্যে সুন্নী কাফিরদের কচুকাটা করে মক্কা-মদিনার দখল নেবেন এবং শিয়া ইমামত কায়েম করবেন। অথচ এই বিশ্বাসের কোরান-হাদিস ভিত্তিক কোন দলিল নেই।

সহীহ হাদিস গ্রহণে অস্বীকৃতি ও ৪০ পাড়া কোরানে বিশ্বাস: যেহেতু প্রথম সারির অনেক সাহাবী এমনকি উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) যিনি সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারীদের মাঝে ২য় (২২১০টি) তাই এসব হাদিস তাদের কাছে অসমর্থনযোগ্য। তাদের দাবি, আল্লাহর পক্ষ থেকে ১৭০০০ কোরানের আয়াত নাজিল হয়েছিল কিন্তু আয়েশা (রাঃ) সর্বপ্রথম কোরানের আয়াত গণনা করেন এবং ৬৬৬৬ আয়াতের কথা বলেন যা, সঠিক ছিলনা। তাদের দাবি, সাহাবীরা কোরানের কাট-ছাট করে ৪০ পারা কোরানকে ৩০ পারায় রূপান্তর করে। অথচ হযরত উসমান (রাঃ) যখন কোরানকে পূর্ণাঙ্গরূপে লিপিবদ্ধ করেন এবং বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা কোরানের বিকৃত কপি পুড়িয়ে দেয়ায় তার বিরুদ্ধে অনেকে সমালোচনা করেন তখন শিয়াদের চোখে নবী, আলী (রাঃ) উক্তি করেছিলেন উসমান (রাঃ) যা করছেন আমি আলীও সেই একই কাজ করতাম।

#ইতিহাসে শিয়াদের অবস্হান: ইতিহাসেও শিয়ারা সবসময় সুন্নীদের সাথে শত্রুতায় ছিল সবদিক থেকে এগিয়ে। তাতারী মঙ্গোলিয়ানরা যখন আক্রমণে-আক্রমণে, হত্যায়, লুন্ঠনে গোটা মধ্যপ্রাচ্য লন্ডভন্ড করে দিচ্ছিল, মুসলিম নারীদের যৌন সম্ভোগের জন্য বন্দী করছিল-তখন এক মহান আলেম তাদের প্রতিরোধে মুসলিমদের নেতৃত্ব দেন, ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রঃ)। ইসলামের ইতিহাসে তিনি ছিলেন অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম। শিয়াদের বড় একটা অংশ সুন্নী বিদ্বেশী মনোভাবের দরুণ তাতারীদের সমর্থন ও উস্কানি দিয়ে যেতে থাকে। তাই ইবনে তাইমিয়া (রঃ) কে এসব বিশ্বাসঘাতক শিয়াদের বিরুদ্ধে তরবারি ধরতে হয়। ক্রুশেডাররা যখন মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম ভূখন্ডগুলি একে একে দখল করে নিচ্ছিল, শুধুমাত্র বাইতুল মাকদিসেই ৭০,০০০ মুসলিমকে হত্যা, নারী ধর্ষণ, শিশুহত্যা, লুন্ঠন ইত্যাদিতে লিপ্ত ছিল তখনও শিয়াদের একটি অংশ ক্ষমতার লোভ, সুন্নী বিদ্বেশী মনোভাব ইত্যাদি কারণে ক্রুশেডারদের সহায়তা প্রদান করে। যার কারণে সালাহউদ্দিন আইয়ুবী (রঃ) কেও তার জীবনের প্রথম ১০ বছর এই শ্রেণীর শিয়া ও কিছু সুন্নী নামধারীদের সাথে যুদ্ধ করে কাটাতে হয়। অতঃপর সিরিয়ায় হিত্তিনের যুদ্ধে তিনি ক্রুশেডারদের পরাজিত করেন। উল্লেখ্য সালাহউদ্দিন আইয়ুবী (রঃ) ছিলেন কোরানের হাফেজ এবং শাফেয়ী মাজহাবের বড় আলেম। কাজেই যারা দাবি করবেন "আমি শিয়া-সুন্নী বিরোধ করছি, উম্মাহকে ভাগ করার অপচেষ্টা করছি"_ তাদের বলব আমি জাস্ট সত্যকেই তুলে ধরছি যা যে ইতিহাস রচিত হয়েছিল, সালাহউদ্দিন আইয়ুবী (রঃ) ও ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর মত ইসলামের মুজাহিদ আলেমদের হাতে। এরা হয়ত আপনাদের চোখেও হিরো।

বর্তমান ইরান নেতৃত্বাধীন শিয়া জোট জোটের অবস্হান কি? জানতে এই লেখাটা পড়ুন Click this link শিউরে উঠলেন নিশ্চয়ই? অবাক হলেও এটাই বাস্তবতা, তারা সুন্নীদেরকে অন্য যে কোন ধর্মের লোকদের থেকে বেশি ঘৃণা করে। অথচ ইরানের হাতে সুযোগ তৈরী হয়েছিল ইরাক ও সিরিয়া, ইয়েমেনে ভেদাভেদ ভুলে শিয়া-সুন্নী ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার। কিন্তু তারা নিজেদের মিথ্যে অহমিকা আর ভুল বিশ্বাসের দরুণ সুন্নী বিদ্বেশী মনোভাব নিয়েই দিন দিন শিয়া-সুন্নী রক্তপাতে ঘি ঢালছে। ইরান ব্যাকড শিয়ারা ইরাকের সুন্নীদের উপর কি পরিমাণ নির্যাতন, পাশবিকতা চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে তা বুঝতে এই ভিডিওটা দেখতে পারেন।Click this link

সাম্প্রতিক আলজাজিরার রিপোর্টগুলো দেখলে অবশ্যই জেনে থাকবেন, আইএসআইএস নিয়ন্ত্রিত যেসব এলাকা ইরাকি বাহিনী পুনরায় দখল করতে সক্ষম হয়েছে, শিয়া মিলিশিয়াদের প্রতি অভিযোগ উঠেছে সেসব এলাকার সুন্নীদের উপর তারা গণহত্যা চালিয়েছে। ইরাকি সরকার ও সেনাবাহিনী আশ্বাস দিয়েছে এসব ঘটনার তদন্ত হবে।

আল মাহদি (আঃ) সম্পর্কে শিয়াদের বর্তমান অবস্হান কি? ইরান নেতৃত্বাধীন শিয়া জোটের প্রধান লক্ষ্য কি??

#ইরান নেতৃত্বাধীন শিয়াদের বিশ্বাস তারা ইমাম মাহদির খুব নিকটবর্তী সময়ে বসবাস করছে। ইমাম মাহদি (আঃ) তাদের ১২ তম ও সর্বশেষ ইমাম। তাদের বিশ্বাস তিনি ঈসা (আঃ) এর মতই জীবিত এবং খুব তাড়াতাড়ি তিনি ইরানে আবির্ভূত হবেন এবং শিয়াদেরকে নিয়ে তিনি তার সেনাবাহিনী গঠন করবেন এবং মক্কা-মদিনা দখল করবেন। পৃথিবীতে শিয়া ইমামত কায়েম হবে। সাম্প্রতিক সময়কার ইরান নেতৃত্বাধীন শিয়াদের সামরিক কর্মকান্ড বিষয়ক ডকুমেন্টারি গুলোতে একটা জিনিস বেশ জোড়েই শোনা যাচ্ছে, তারা নামাজে ইমাম মাহদির জন্য দোয়া করছেন। তারা বিশ্বাস করছে সময় খুবই নিকটবর্তী। ইরানি সেনাবাহিনী পৃথিবীর শক্তিশালি সেনাবাহিনীর মাঝে অন্যতম। তারা লেবাননের শিয়া মিলিশিয়া হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনে হুতি, সিরিয়ার আসাদ, ইরাকে মুকতাদা আল সদরের শিয়া মিলিশিয়া গড়ে তুলেছে। তাদের ক্রমাগত সামরিক প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, অর্থ দিয়ে সহায়তা করছে। তাদের প্রধান টার্গেট হল মধ্যপ্রাচ্যে এক বিশাল শিয়া সেনাবাহিনী প্রস্তুত করা। যেহেতু ইমাম মাহদি (আঃ) শীঘ্রই আসছেন কাজেই ইরান তার জন্য সামরিক বাহিনী প্রস্তুত করছে যেন তিনি এসে এই সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব বুঝে নেন এবং সুন্নীদের হটিয়ে মক্কা-মদিনা দখল করে নেন। এটাই বর্তমান শিয়া নেতৃত্বদানকারী ইরানের প্রধান টার্গেট। আর এই ভয়ানক বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই পেছন থেকে সুন্নী বিদ্বেশী যুদ্ধের কলকাঠি নাড়ছে আমেরিকা লবি। তাই সিরিয়া ও ইরাকে টার্গেট করেই সুন্নীদের উপর গণহত্যা চালিয়ে তা সুন্নীমুক্ত করা করা হচ্ছে। আবার ভয়াবহ এক পরিস্হিতি তৈরী করে যেখানে আবার সুন্নীদেরও বাধ্য করা হচ্ছে শিয়াবিনাশী সর্বাত্নক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে। ইয়েমেনে ইরান নেতৃত্বাধীন শিয়া হুতি মিলিশিয়ারা ইয়েমেন দখলে নেয়ার পর একটু বেশিই ঝুকি নিয়ে ফেলেছিল। তারা ইয়েমেন দখল করেই ভেবেছিল ," বর্ডার পার হলেই মক্কা-মদিনা " আমেরিকা আরেক চালে বাধ্য করল তথাকথিত সুন্নি (আমেরিকার গেলমান বাহিনী) সৌদি কোয়ালিশনকে তাদের উপর বিমান হামলা শুরু করতে। যেখানে তারা নিরীহ, নিরস্ত্র শিয়া সম্প্রদায়কেও রেহাই দিচ্ছেনা। অর্থাৎ কুফফাররা লাভবান সবদিক দিয়েই।

শেষ কথা: আমি এখানে ইতিহাস ও বাস্তবতার আলোকে মূলত ইরান নেতৃত্বাধীন ১২ ইমামে বিশ্বাসী শিয়াদের অবস্হান তুলে ধরেছি আমি গোটা শিয়া সম্পদায়কে নিয়ে মোটেও কোন বিদ্বেশকে সমর্থন করিনা। শিয়াদের মাঝে সকলেই সুন্নী বিদ্বেশী মনোভাব পোষণ করেননা আর তাদের মাঝেও রয়েছে বহু মতবাদে বিশ্বাসী শিয়া গ্রুপ, যেমনি রয়েছে সুন্নী পরিচয় দানকারীদের মাঝেও (মাজারী, বিদাতী)। আমরা হাদিস ও মাজহাবের আলেমদের ইজতিহাদকে একজায়গায় জড়ো করলে দেখতে পাই তারা বলেছেন, তারা ইসলামের মূল আকিদা থেকে বিচ্ছিন্ন বা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আদর্শ বিচ্যুত।

কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের দায়িত্ব কি? তাদের উপর ঝাপিয়ে পরা?? নাহ! এটা ভুল, সীমালঙ্ঘন। মহান আল্লাহ বলেন:



(সুরা আনকাবুত: ৪৫)

অতএব, শিয়ারাও কিন্তু কিতাবপ্রাপ্ত বা আহলে কিতাব। তারা মহান আল্লাহ ও নবী (সঃ) কে স্বীকার করে, নিজেদের মুসলিম দাবি করে। এজন্য আমরা যদি আজ বাস্তবতা না বুঝে নিছক আক্রোশে ফেটে পরে শিয়া মতবাদে বিশ্বাসী সকলকে কাফির ফতোয়া দিয়ে তাদের উপরে ঝাপিয়ে পরি, তবে, তা অবশ্যই আত্নবিনাশী সিদ্ধান্ত ও সীমালঙ্ঘন বটে। এতে বরং কুফফাররাই লাভবান হবে। এজন্য সুন্নী নামধারী মাজারী-বেদাতিদের মাঝে যেমন আমরা কুরআনের দাওয়াহ পৌছে দেয়ার চেষ্টা করছি, তদ্রুপ শিয়া সম্প্রদায়ের মাঝেও অনুরূপ দাওয়াহ চালিয়ে যাওয়া মুসলিম উম্মাহ এর জন্য বৃহৎ ফরজ দায়িত্ব।

কিন্তু যারা সীমালঙ্ঘনকারী?

যারা ঈমানদার নর-নারীর উপর যুলুম-নির্যাতন করেছে এবং পরে তাওবাও করেনি, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব ও দহন যন্ত্রণা ।(বুরুজ;১০, ৩০ পারা)



জাঝাক আল্লাহ

আসসালামু আলাইকুম।

বিষয়: বিবিধ

৬১০৫ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

311926
৩১ মার্চ ২০১৫ রাত ০২:২৬
আফরা লিখেছেন : ঘুম ভাঙনিয়া ভাইয়া অনেক তথ্যপূর্ণ লেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ । লিংক গুলো পরে পড়ব তাই লেখাটা প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম । এগিয়ে যান ঘুম ভাঙানিয়া ভাইয়া সাথেই আছি ।ইনশা আল্লাহ ।
৩১ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৫৬
252987
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : হুম! আফরা সাইয়ারা আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আল্লাহ সুযোগ দিলে লেখাটা খুব তাড়াতাড়ি শেষ করে দিব।
311935
৩১ মার্চ ২০১৫ রাত ০৩:৫৮
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম!

এই মেহনত কে আল্লাহ কবুল করে নিন! উত্তম প্রতিদান দান করুন! আমিন!

পরের পর্বের অপেক্ষায়....

জাযাকাল্লাহু খাইর! Good Luck
৩১ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৫৮
252988
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ছোট ভাইটিকে উৎসাহমূলক মন্তব্যের জন্য তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ। আল্লাহ তোমাকেও পৃথিবী ও আখিরাতে উত্তম বিনিময় প্রদান করুক।Good Luck
311983
৩১ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:৫৫
ছালসাবিল লিখেছেন : দারুন তথ্য আছে, গুড ভাইয়া Thumbs Up
০১ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১০:০২
253331
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : হ্যা! ভাইয়া এসব কথা বলিয়া কিছু ব্লগারের ব্যাপুক গালাগালি হজম করিতেছি। ইরান নিয়া কিছু কহিলে তারা চেতিয়া যান। Crying Crying
০১ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১১:০৮
253348
আবু জান্নাত লিখেছেন : কি করবেন ভাই, তাদের মূত্রদোষ আছে বলতে হবে। @ঘুম।
311984
৩১ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:৫৭
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
ভাল লাগলো
০১ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১০:০৩
253332
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ভাইয়া ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
311993
৩১ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ভাই অত্যন্ত সুন্দর একটি বিষয়ে ধারাবাহিক লিখছেন, খুব ভালো লাগছে।
সাহাবীদের ব্যাপারে সমালোচনা করতে পবিত্র কোরানে নিষেধ করা হয়েছে কারণ, ইসলামের জন্য তারা যে পরিমাণ আত্বত্যাগ-কষ্ট স্বীকার করেছেন, বিপদে যেভাবে ধৈর্যধারণ করেছেন, তা আমাদের পক্ষে সম্ভব হতোনা। তাই যদিও তারা মানুষ হিসেবে ভুলের উর্দ্ধে ছিলেননা, কিন্তু মর্যাদায় তারা আমাদের অনেক উপরে এজন্য তাদের সমালোচনা করার মত কতটুকু অধিকার আমরা রাখি?

লিখাটি খুব ভালো লাগলো। সুন্নিদের মধ্যথেকেও অনেক শিয়াদের সাথে একটি বিষয়ে এক হয়ে হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ)এর সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে। তাদের জানা উচিৎ সাহাবায়ে কেরাম ভূল করলেও আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে মাফ করে দিয়েছেন, তাদের উপর সন্তুষ্ট। তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতের ঘোষনা ও দিয়েছেন। জাযাকাল্লাহ খাইর
০১ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১০:০৬
253334
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আবু জান্নাত ভাইয়া আপনার কথাগুলো একদমই সঠিক। কারণ সুন্নী দাবি করলেই তো আর আহলে সুন্নাহ হওয়া যায়না।
312063
৩১ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০৬
স্বপন২ লিখেছেন : আমেরিকান সরকার পর্যন্ত শিকার করেছে।
ইরাকে কয়েক ব্রিগেড ইরানী সেনাবাহিনী রয়েছে। কেউ ইরানে না গেলে বুঝতে পারবেন না। ওরা শিরকের সাথে জড়িত। আলী(রাHappy খোদা মনে করে।
০১ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১০:০৮
253335
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : কিন্তু দুঃখের বিষয় এদেশের ইরান প্রেমিরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে, ইরান ধোয়া তুলসি পাতা, সব তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। Worried Worried
313311
০৬ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৯:৫২
মৃনাল হাসান লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০৭ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১২:০০
254329
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া। Praying
317544
৩০ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১২:১৫
শেখের পোলা লিখেছেন : তথ্যবহুল লেখাটি অনেক কিছুই জানিয়ে গেল৷ ধন্যবাদ৷
৩০ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৯:৪৯
258688
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : জাঝাক আল্লাহ Good Luck Good Luck
317607
৩০ এপ্রিল ২০১৫ দুপুর ০২:০২
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : সত্যি অনেক উপকারী লেখা। কাজে লাগবে। দোয়া করি আপনার জন্য।
পজেটিভ কাজে আপনার মেধা ব্যবহার হবে ইনশাআল্লাহ।
৩০ এপ্রিল ২০১৫ বিকাল ০৫:০৭
258745
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ইনশাআল্লাহ পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই সবসময় লিখব অযথা দ্বন্দ করার জন্য যেন আমি ব্যাবহৃত না হই আল্লাহর কাছে সে দোয়া করবেন। জাঝাক আল্লাহ ভাইয়া। Good Luck Good Luck
১০
318396
০৬ মে ২০১৫ রাত ০৪:১৯
মোঃআয়নাল হক লিখেছেন : ভালো লাগলো
১৩ মে ২০১৫ রাত ১১:৫০
260956
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : Assalamu Alikum. Aynal vaiya thanks and jazhak Allah for reading my blog post. May Allah help you & have mercy on you. Happy
১১
319702
১৩ মে ২০১৫ সকাল ০৫:৫৯
সাদাচোখে লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম।
আমি আপনার লিখা ও অতগুলো প্রশংসাসূচক কমেন্ট দেখে - কিছু না লিখার সিদ্ধান্ত নিতে চাইলাম। পরে শুধু মাত্র বিবেক এর তাড়নায় কমেন্ট করতে বাধ্য হলাম। স্বল্প পরিসরের কমেন্ট করবো বলে - হয়তো আমি আমার অনুভব ও অনুভূতিকে যথাযথভাবে তুলে ধরতে পারবোনা - তারপর ও চেষ্টা।

১। শিয়া ও সুন্নীর মধ্যস্থিত আজকের লেভেল এর বিরোধ এর শুভ সূচনা ঠিক কখন শুরু হয়েছিল, কিভাবে হয়েছিল, কেন তা হয়েছিল - এটা নিয়ে চিন্তা ও ভাবনা করে - এ বিষয়ে লিখলে আমার মনে হয় উম্মাহ র উপকার হবে।

২। অন্যথায় যারা যে কারনে এ বিরোধীতার জন্ম দিয়েছে এবং একে অপরকে অপছন্দ করার লেভেল এ নিয়েছে এবং তারপর ঘৃনায় এবং তারপর দ্বন্ধে এবং সব শেষে খুনোখুনি এবং এখন যুদ্ধের লেভেল এ পৌছেছে - তাদের উদ্দেশ্যের সাথে এ লিখা সমূহ আরো ভাল জ্বালানী হিসাবে কাজ করবে।

৩। আমি ব্যাক্তিগতভাবে আপনার লিখায় বিভিন্ন শিয়া সম্প্রদায়ের, বিভিন্ন ইসলামবিরোধী আকিদাকে 'এক করে একটা আর্টিকেল এ - এভাবে উপস্থাপন করাকে' - একাডেমিক্যালী সাউন্ড মনে করি না - কারন তাতে সাধারন মানুষ - ওদের সবার প্রতি বাঁচবিচার না করে প্রচন্ড ঘৃনা বোধ করবে এবং বিভিন্ন নামে (কাফের ইত্যাদি) অভিহিত করে বসবে। অথচ আমার জানাশোনা মতে - ওদের মধ্যস্থিত বেশ কিছু সম্প্রদায় আছে - যারা মেইনস্ট্রীম সুন্নীদের সাথে আকিদা কিংবা শরীয়ায় লিটারেলী কোন পার্থক্য করে না। অনুরূপভাবে আমরা যদি সুন্নিদের মধ্যস্থিত বিভিন্ন গ্রুপ এর কোরান ও হাদীস বিরোধী আকিদা ও শরীয়াকে সামনে এনে এমন আর্টিকেল লিখি - তা নিশ্চয়ই এ্যাকাডেমিক্যালী সাউন্ড হবেনা। (দয়া করে ব্যাক্তিগতভাবে নিবেন না - আমি আপনাকে গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য এ পয়েন্টগুলো লিখছি।)

৪। আপনার কনক্লুশান এর পয়েন্ট টির ইন্ডিং (মক্কা মদীনা দখল তথা হিজাজ দখল) আমার কাছে সত্য বলে মনে হয় - কারন আমার লিমিটেড আন্ডারস্ট্যান্ডিং অনুযায়ী তা ইয়েমেন এর ফায়ার সংশ্লিষ্ট হাদীসকে সাপোর্ট করবে (আল্লাহ অবশ্যই ভাল জানেন)। কিন্তু আপনি যেভাবে ইয়েমেনবাসীকে (শিয়া অংশটুকুকে - যদিও তা ফ্যাক্টচুয়ালী রাইট না) আসামী সাজিয়েছেন ও সৌদীকে (বর্তমান সরকারকে - যদিও তা ফ্যাক্টচুয়ালী রাইট না) পুলিশ সাজিয়ে প্রিএ্যাম্পটিভ এ্যাকশানকে জাস্টিফাই করেছেন - তা না ইসলামিক যুদ্ধের বিধান অনুযায়ী সঠিক (নারী শিশু ও বৃদ্ধকে হত্যা করা হচ্ছে, ওয়ার্নিং ছাড়া হত্যা করা হচ্ছে, দূর্বলকে আক্রমন করা হচ্ছে, শত্রু দ্বারা আক্রমনের শিকার হয়নি আগে কিংবা হুমকিও পায় নি আগে ইত্যাদি) আর না স্যেকুলার বিধানানুযায়ী সঠিক (আক্রান্ত না হলে বর্ডার ক্রস করে আক্রমনের কোন আইন নাই, উৎখাত করা প্রেসিডেন্টকে রিইনস্টলেশান করার জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রকর্তৃক আক্রমনের কোন আইন নেই, প্রিএ্যাম্পটিভ আক্রমন করার কোন আইন নেই, ইউএন পারমিশান ছাড়া আক্রমন করার কোন আইন নাই ইত্যাদি।)

৫। আমার মতে এই উপসংহারটি মূলতঃ এমন যে, ঠিক যেভাবে সিরাজউদ্দোলা ব্যবহৃত হয়েছিল এবং পর্যাপ্ত ব্যবহারের পর যখন আর ব্যবহার করার মত কিছু ছিল না তখন মীরজাফর দিয়ে তাকে উৎখাত করা হয়েছিল আর মীরজাফরের ব্যবহার পর্যাপ্ত হলে তাকে উফড়ে ফেলা হয়েছিল - অনুরূপভাবে অটোম্যান এ্যাম্পায়ারকে ঐ একই শক্তি প্রায় সাড়ে চারশ বছর ব্যবহার করে হেজাজ এর গভর্নর শরীফ হোসেনকে দিয়ে উপড়ে ফেলেছিল, আবার শরীফ হোসেন এর পারপাস পূর্ন হলে ইবনে সৌদ কে দিয়ে তাকে শরীফ হোসেন কে উপড়ে ফেলেছিল আর এখন সময় হয়েছে শিয়া ইরান কে দিয়ে সৌদকে উপড়ে ফেলার। এক্ষেত্রে প্রতিটি ক্ষেত্রেই যাকে দিয়ে উফড়ে ফেলা হয়েছে তাকে প্রলোভন দেয়া হয়েছে ঠিক তাই ই যা সে মনে প্রানে চাইছে। মীরজাফরকে মসনদের, শরীফ হোসেনকে খেলাফত এর, সৌদকে মসনদ এর এবং আজকের ইরানকে হেজাজ নিয়ন্ত্রনের অধিকার।

সো ঐ একই শক্তি (ভিন্ন নামে) ইরান সাথে যে নেগোশিয়েশান চালাচ্ছে - তার মূল কন্ডিশান হল (প্রমান দিতে পারবো না এই মূহুর্তে কিন্তু সব সাইন তাই ইন্ডিকেট করছে - সো আগামী দিন তা প্রমান করবে বলে আমি বিশ্বাস করি - যদি আল্লাহ তা চান) ইরান ঐ শক্তির কথানুযায়ী চলবে ঠিক যেমন আর্লি মীরজাফর রাজী হয়েছিল। বিনিময়ে ইরানকে তথা শিয়াদেরকে হেজাজ তথা হজ্জ নিয়ন্ত্রন/ম্যানেজ করার তথা মক্কা ও মদীনা নিয়ন্ত্রনের অধিকার দেয়া হবে।

৬। এর পার্ট হিসাবে ইরাক, বাহরাইন, সিরিয়া, লেবানন ও সবশেষে ইয়েমেনকে ব্যাটেলগ্রাউন্ড বানানো হয়েছে যেখানে দেখানো হচ্ছে শিয়ারা সুন্নি দ্বারা নির্যাতিত, নিপীড়িত, এবং তার মেইন সাপোর্ট আসছে সুন্নিদের বড় শক্তি সৌদী ও মিশর হতে এবং তারা এমন কিছু কাজ কনটিনিউ করছে বা করতে আদিষ্ট হচ্ছে যাতে পৃথিবীর সুন্নি মুসলিমদের কাছে তারা নৈতিকভাবে দূর্বল হয় এবং তাদের প্রতি সিমপ্যাথী চলে যায়। স্বভাবতঃ একটা মোক্ষম সময়ে সৌদীরা হয় রাজনৈতিক আশ্রয়ে যাবে নতুবা তাদেরকে মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ কিংবা ওয়ার ক্রাইম এর অপরাধে কিংবা আগ্রাসনের অপরাধে হেগ এর বিচারক এর সামনে দাঁড়াতে হবে এবং সৌদী আরব এর সাধারন মানুষ তাদের মনোবল এতটাই হারাবে ঐ সব নিউজ ও এ্যানালাইসিস শুনে যে - শিয়াদের নিয়ন্ত্রন না মেনে উপায় থাকবে না।

সো স্যেকুলার দৃষ্টিতে আমরা উপরে নিউক্লিয়ার নেগোশিয়েশান দেখলে ও ভিতরে ভিতরে হেজাজ এর নিয়ন্ত্রনের বিনিময়ে - ওয়াশিংটন ও ইজরাইলের পলিসির বিরোধিতা না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। আর ইসলামের দৃষ্টিতে আখেরী জামানার আরো একটি সাইন ফুলফিলড হবে।

আপনি হয়তো বলতে পারেন কেন ইরান তা করবে? আমার উত্তর সেক্ষেত্রে হবে

সম্ভবতঃ ইরান বিশ্বাস করে হেজাজ নিয়ন্ত্রনে এলে ইমাম মেহেদীর আবির্ভাব হবে (যেভাবে শিয়া বইতে লিখা আছে) এবং অনলি দেন তারা আমেরিকাকে হারাতে পারবে ইমাম মেহেদীকে দিয়ে এবং ইসলামের বিজয় নিশ্চিত হবে।

আশা করি শিয়া বিষয়ে লিখার সময় আপনি নূন্যতম এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন - আসছে দিন গুলোতে শিয়া ও সুন্নির মধ্যে যে দাংগা হবে - তাতে কেউ আপনার এ লিখাকে উপজীব্য করে কোন শিয়া কিংবা সুন্নির নিরাপরাধ কোন বাচ্চা, বুড়া কিংবা মহিলাকে হত্যা না করে বসে - কে জানে কাল কেয়ামতের কঠিন দিন আমরা না এ প্রশ্নের সন্মুখিন হই

মোহাম্মদের সঃ উম্মতের ৭৩ ভাগের এক ভাগের কোন এক নিরাপরাধ শিশুকে আমি আমার কিবোর্ড ব্যবহার করে হত্যায় উৎসাহিত করেছি কেন।

দয়া করে আমার মন্তব্যটি এ ভাবে নিবেন যে - এটা সিম্পলী একজন অর্ডিনারী মুসলিমের একটা অর্ডিনারী প্রয়াস যাতে আপনি আপনার চিন্তা ও সচেতনতা আরো বিস্তৃত করেন। আর সে চেষ্টার নিয়তের কারনে আল্লাহ আমাকে যেন কিছু পূন্য দেন এ প্রত্যাশায়। শিয়া কিংবা সুন্নী প্রীতি কিংবা বিদ্বেষ কিংবা অন্য কোন কিছুর জন্য এ মন্তব্য নয়।

ধন্যবাদ-ভাল থাকবেন সবসময়।
১৪ মে ২০১৫ রাত ১২:০০
260959
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ভাইয়া আপনার সুচিন্তিত মতামত পাওয়া সবসময়ই প্রেরণাদায়ক। আপনার লেখার সবটুকু পড়েছি। সত্যি ভিন্নভাবে চিন্তা করতে উ?সাহ দেয় কথাগুলো। আমি ইনশাআল্লাহ আরো দায়িত্বশীল আচরণ করব।আর আমি কিন্তু মোটেও সৌদি জোট দ্বারা সাধারণ মানুষ হত্যাকে সম্থন করিনা। অনেকদিন হল ব্লগে আসতে পারিনা তাই অনেক কিছুই চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে।
১২
320857
১৮ মে ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৫
হোসাইন আহমাদ লিখেছেন : পড়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম, পড়লাম, অনেক ভাল লাগল। চেতনাহীন মসলিম জাতিকে সচেতন করার চেষ্টা করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
২৯ মে ২০১৫ রাত ০৯:৪৯
264692
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আহমাদ ভাইয়া আসসালামু আলাইকুম। আমন্ত্রণ রক্ষা করার জন্য আর সুন্দর মন্তব্য প্রদানের জন্য জাঝাক আল্লাহ। Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File