কারা এই খারেজী ও শিয়া/রাফেজী সম্প্রদায়? শিয়াদের চোখে আল মাহদি (আঃ) ও শিয়া নেতৃত্বদানকারী ইরানের আসল লক্ষ্যই বা কি?১ম পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ২৯ মার্চ, ২০১৫, ০৮:১৩:২০ সকাল



ধারাবাহিক-১ম পর্ব

তারা যিলকাদ মাসের শেষভাগে মদিনা অবরোধ করল এবং জিলহজ্জ মাসের ১৮ তারিখ শুক্রবার পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত রাখলো। উসমান (রাঃ) কে তারা নিজ গৃহে আবদ্ধ করে ফেলল এবং তার বাড়িতে খাবার-পানির সরবরাহ বন্ধ করে দিল। এমনকি তার বাড়ির কতিপয় লোককে হত্যা করল। আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাঃ), হাসান বিন আলী (রাঃ), কানবার (রঃ) কে রক্তাক্ত করল। তারা উসমান (রাঃ) কে সাফ জানিয়ে দিল "খলিফার দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে" নতুবা তোমাকে খারাপ ভাগ্য বরণ করতে হবে। তোমাকে আর খলিফা হিসাবে মানিনা।"

কিন্তু উসমান (রাঃ)স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, এটা তোমাদের ব্যাপার। তোমাদের যাকে ইচ্ছা খলিফা হিসাবে নির্বাচন কর কিন্তু আল্লাহ আমাকে যে পোশাক পরিধান করিয়েছেন আমি কোনভাবেই সে পোশাক খুলবোনা। কারণ রাসূল (সাঃ) আগেই বলেছিলেন,"হে উসমান! আল্লাহ হয়তো তোমাকে একটি জামা পরিধান করাবেন। লোকেরা যদি তোমাকে তা খুলে ফেলতে চাপ দেয় তবে তুমি তা খুলবে না। (কিতাবুল মানাফিক, মুসনাদে আহমাদ, ৬ষ্ঠ খন্ড, হাদিস সংখ্যা:২৫৬৭৭, পৃষ্ঠা ১৪৯) (হাদিসটি তীরমিযী শরীফেও আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।)

৩৫ হিজরীর ১৮ জিলহজ্জ, শুক্রবার ভোরে অবরুদ্ধ খলিফার ঘুম ভাঙল। ইবনে উমার (রাঃ), স্ত্রী নায়েলা (রাঃ) ও কাছের মানুষদের জানালেন, আজ আমি রাসূল (সাঃ) কে স্বপ্ন দেখলাম। "তিনি আমাকে বলেছেন, হে উসমান! আমাদের কাছে এসে ইফতার করো।"

খলিফা তখনই রোজার নিয়ত করলেন এবং কোরান তেলাওয়াতে বসে গেলেন অবরোধকারীরা তার ঘরে প্রবেশ করল নির্মমভাবে তাকে হত্যা করল। তার রক্তে কোরানের পাতাগুলো ভিজে গেল। তিনি শহীদ হয়ে গেলেন ইন্নালিল্লাহ আল্লাহু আকবার!

কারা এই হত্যাকারী? কিই বা ছিল তাদের পরিচয়?

মিশর, কুফা, বসরার কিছু নির্বোধ লোক যারা আবদুল্লাহ ইবনে সাবা নামের এক ইয়াহুদি (সে তার ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে) প্রতারকের দ্বারা বিভ্রান্ত হয় আর তার চক্রান্ত বাস্তবায়নে ব্যাবহৃত হয়। আর মারওয়ান ইবনুল হাকাম (উসমান রাঃ এর আত্বীয়) নামক ব্যক্তির নির্বুদ্ধিতায় পরিস্হিতি আরো ভয়াবহ হয়ে ওঠে এবং বিভ্রান্ত লোকদের হাতে জঘন্য হত্যাকান্ড ঘটে। তাদের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০,০০০ তাই মদিনাবাসীর পক্ষে এত লোকের বিপক্ষে দাড়ানোও সম্ভব ছিলনা। তারা (বিশেষ করে মিশরিয়রা) আলী (রাঃ) কে খিলাফতের দায়িত্বভার নিতে চাপ প্রয়োগ করে। পৃথিবীতেই জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী তালহা (রাঃ), যুবায়ের (রাঃ) সহ বেশ কিছু সাহাবী আলী (রাঃ) এর কাছে উপস্হিত হয়ে উসমান (রাঃ) এর হত্যাকারীদের বিচার দাবি করলেন। কিন্তু নির্বোধ ১০,০০০ লোক বর্শা উচিয়ে সমস্বরে চিৎকার করে বলতে লাগলো, "আমরা সবাই তার হত্যাকারী সুতরাং যারা কিসাস নিতে চায় তারা যেন তাদের সকলের নিকট থেকে কিসাস গ্রহণ করে।"

আলী (রাঃ) ছিলেন নিরুপায় তিনি বললেন, আমি কিভাবে এত লোকের বিরুদ্ধে দাড়াব, যারা উল্টা আমাদেরকেই নিয়ন্ত্রণ করছে? অন্যদিকে উসমান (রাঃ) এর স্ত্রীকে হত্যাকারীদের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনিও বলেন, তারা যেহেতু মদিনার বাইরের লোক তাই আমি তাদের চিনতে পারিনি। হজ্জ উপলক্ষে আয়েশা (রাঃ) মক্কায় অবস্হান করছিলেন। তালহা (রাঃ), যুবায়ের (রাঃ) সহ বেশ কিছু সাহাবী তার সাথে গিয়ে দেখা করেন এবং দাবি তুলেন তারা আলী (রাঃ) কে বাধ্য করবেন উসমান (রাঃ) হত্যার বিচার করার জন্য। আলী (রাঃ) চাইলেন অবরোধকারীদের মদিনা থেকে বের করে নিয়ে যাবেন কারণ মদিনা আল্লাহর রাসূলের শহর এখানে আর কোন রক্তারক্তি হোক এটা তিনি চাননি তাই তিনি রওনা দিলেন ইরাকের দিকে। এবং ইরাকীদের নির্দেশ দিলেন তার অনুগামী হতে। উদ্দেশ্য রাজধানী মদিনা থেকে কুফায় স্হানান্তর। কিন্তু আয়েশা (রাঃ) এর সাথে বিভিন্ন এলাকার লোক এসে যোগ দিল উসমান (রাঃ) হত্যার বিচারের দাবিতে। তারা আলী (রাঃ) এর পথে বাঁধা হয়ে দাড়ালেন। উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্হানে তবে কিছু উত্তেজনাকর কালক্ষেপনের পর উভয় পক্ষের সাহাবীরা আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় পৌছে গেলেন যে, হত্যাকারীদের বিচার করা হবে। খবর পৌছে গেল আবদুল্লাহ ইবনে সাবার নির্বোধ অনুসারীদের কানে। তারা বাঁচার পথ হিসেবে গোপনে আয়েশা (রাঃ) এর শিবিরে হামলা করে বসে। ফলে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয় এবং প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে আয়েশা (রা) এর শিবিরও আলী (রাঃ) এর শিবিরে হামলা চালায়। সাবাইদের প্রতারণায় বেঁধে গেল যুদ্ধ শেষ হল প্রায় ১০,০০০ মুসলিমের জিবনের বিনিময়ে। তবে তা তাড়াতাড়িই মিটমাট হয়ে যায়।

ঘটনা শেষ না হতেই মুয়াবিয়া (রাঃ) ও একই যুক্তিতে আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন এবং ঘটনা গড়ায় সিফফিনের যুদ্ধে। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ, সমঝোতা ও খলিফা নির্বাচনের ব্যাপারে আলী (রাঃ) এর পক্ষে প্রতিনিধি আবু মুসা আশআরী (রাঃ) ও মুয়াবিয়া (রাঃ) এর পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে আমর ইবনুল আস (রাঃ) এর নিয়োগ প্রদান, পরবর্তীতে সমঝোতায় পৌছাতে ব্যার্থতা_ এসব ইতিহাস আমরা সকলেই কম বেশি জানি। আর মূল আলোচনা এখান থেকেই শুরু কারণ এঘটনা থেকেই ইসলামে জন্ম নেয় দুটি মতবাদ। তা হল: খারেজী ও শিয়া মতবাদ।

খারেজী: বনু তামিম গোত্রের লোকেরা যারা ছিল সিফফিনের যুদ্ধে আলী (রাঃ) এর পক্ষে, তারা আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে বসে। তারা সিফফিনের যুদ্ধ, প্রতিনিধির মাধ্যমে সালিশি সমঝোতা ইত্যাদি কর্মকান্ডের জন্য আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ আনে। খারেজীদের নিকট আলী (রাঃ) কর্তৃক প্রেরিত সাহাবী প্রতিনিধিদলের দ্বারা তাদের কিছু সংখ্যককে বুঝিয়ে ফীরিয়ে আনা এবং নাহরোয়ানের যুদ্ধে আলী (রাঃ) এর কাছে শোচনীয় পরাজয়ের কারণে তাদের মাঝে আলী (রাঃ) বিদ্বেশ আরো তীব্র হয়। তারা আলী (রাঃ) ও মুয়াবিয়া (রাঃ) উভয়কেই হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাদের হাতে আলী (রাঃ) শাহাদাত বরণ করেন এবং মুয়াবিয়া (রাঃ) আহত হন।

তাদের ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন:

"মূসা ইবনে ইসমাইল (রঃ)..ইউসায়ের ইবনে আমর (রাঃ)হতে বর্ণিত।তিনি বলেন,আমি সাহল ইবনে হুনায়েফ(রাঃ) কে জিঙ্গাসা করলাম,আপনি নবী (সাঃ)কে খারেজীদের সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন কি?তিনি বললেন,আমি তাকে বলতে শুনেছি, আর তখন তিনি তার হাত ইরাকের দিকে বাড়িয়েছিলেন যে,সেখান থেকে এমন একটি কওম বের হবে যারা কুরআন পড়বে সত্য,কিন্তু তা তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না, তারা ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। (বুখারী-৬৪৬৫)"

চলবে_____

বিষয়: বিবিধ

২৯৯৪ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

311594
২৯ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:১৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় ভাইয়া। মুসলমানদের শততাবিভক্তি আজ বিশ্বের রক্তক্ষয়ী পরিবেশের জন্য অনেকাংশে দায়ী। সমগ্র বিশ্বের মুসলিম ভাই ভাই আল্লাহ্‌র এই অমোঘ বাণী থেকে আমরা আজ অনেক অনেক দূরে তাই তো আমাদের আজ এতো দুর্দশা আর লাঞ্ছনা।

আপনার সুন্দর উপস্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।

আপনার জন্য প্রাণভরে দোয়া করি পরম করুণাময় অন্তর্যামী আপনাকে দ্বীনের পথে অবিচলিত রেখে চলার পথ সুগম ও দুনো জাহানের কামিয়াবী অর্জনের তৌফিক দান করুণ। আমীন।
২৯ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:২৬
252726
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আপি ওয়ালাইকুম আসসালাম। আমীন। আপি আমি বয়সে একটা পুচকে ছেলে, দেখতেও ছোটখাট তাই শ্রদ্ধেয় শব্দটা শুনতে কেমন জানি লাগে! আপু আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তো এটা আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে,ইসলাম এসেছে অল্প কিছু লোকের মাধ্যমে আর ইসলাম বিদায়ও নিবে অল্প কিছু লোকের মাধ্যমে। আল্লাহ যেন আমাদের সে দলের অন্তর্ভূক্ত করেন। আমার জন্য বেশি বেশি দোয়া করবে আপি যেন আমি দ্বীনের উপর থাকতে পারি। জাঝাক আল্লাহ আপি।
311596
২৯ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:২৭
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ইসলামের ইতিহাসে এটি ছিল একটি মারাত্মক কুচক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝি। যারা হযরত আলীকে(রাঃ) নেতা মানার জন্যে ওসমানকে(রাঃ)হত্যা করল,তারাই আবার আলীর(রাঃ)বিরোধীতা করল। আর তার পক্ষে ওসমান হত্যার বিচার করা সম্ভব ছিলনা। আর তার এর অপারগতায় কিছু সাহাবী আবার নাখোশ হল কিন্তু তারা সত্যের উপরই ছিলেন সর্বদা। আর এর ভেতরে খারেজী ঢুকে ঘটনা যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেল। তারা চেয়েছিল ইসলাম ধ্বংস হোক। এখনও তারা তাই চায়,খোলস ভিন্নভাবে বদলেছে। আর ইসলামের ইতিহাসে শিয়া বা রাফেজিরা কখনই পুরো উম্মাহর ঐরক্যর জন্যে এক হয়নি। বরং ওপরে কাফিরদের সাথে শত্রুতা পোষন করেছে আর ভেতরে বন্ধুত্ব। এখনও তাই
২৯ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:২৮
252727
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : প্রত্যেকটি কথাই একদম সঠিক। ভাইয়া অল্প কথায় পরিপূর্ণভাবে আপনি ইতিহাসকে তুলে ধরেছেন। ভাল লাগছে আমরা নিজেদের ইতিহাস জানার জন্য চেষ্টা করছি, শেকড়ের সন্ধানে বের হয়েছি। জাঝাক আল্লাহ ভাইয়া।Good Luck
311599
২৯ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:৪৬
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ
ইতিহাসকে স্মরন করার জন্য এবং লোকজনকে জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ
২৯ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:৩০
252729
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ভাইয়া আপনাকেও আমার ব্লগে সময় দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনাকে দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন।Good Luck
311608
২৯ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
আফরা লিখেছেন : ঘুম ভাঙনিয়া ভাইয়া আমি আশুরার উপর একটা আর্টিকেল পড়েছিলাম সেখানে খারেজী ও শিয়াদের ব্যাপারে হালকা কিছু পড়েছিলাম । আপনি যখন ধারাবাহিক লিখবেন আশা করছি এদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারব ।ইনশা আল্লাহ সাথেই থাকব আমার জানার পরিধিকে বাড়ানোর জন্য ।
ধন্যবাদ ঘুম ভাঙনিয়া ভাইয়া ।
২৯ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:৩৭
252730
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ব্লগ সেলিব্রেটি আফরা সাইয়ারা আসসালামু আলাইকুম। আমার ব্লগে সু স্বাগতম। হুম! আল্লাহ চাইলে আর আপনাদের আগ্রহ থাকলে ইনশাআল্লাহ লেখা চালিয়ে যাব। সমস্যা হল ৪ বছরের ব্লগীয় অভিজ্ঞতা বলে, লেখা বেশি বড় হয়ে গেলে পাঠক তা পড়ার আগ্রহ হারান। তাই ইতিহাস নিয়ে আলোচনা খুব সংক্ষেপ করা উচিত। এর ফলে পাঠকরা যখন কোন বিষয়ে অল্প কথা জানতে পারবে তখন বিস্তারিত জানার জন্য নিজেদের মাঝে আগ্রহ তৈরী হবে ফলশ্রুতিতে নিজেরাই এসব খুঁজে বের করে বিস্তারিত জানার জন্য চেষ্টা করবে। তাই এসব লেখা জাস্ট Reminder হিসেবেই লেখা উচিত। ধন্যবাদ আফরা সাইয়ারা।
311668
২৯ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৪
তিমির মুস্তাফা লিখেছেন : আপনার লেখার হাত ভাল, মাশাআল্লাহ্‌। অন্যদের ভুল ভাঙার আগে নিজেরই ভুল ভাঙানো দরকার। লেখার উদ্দেশ্য ঠিক না করে নিলে- হিতে বিপরীত হতে পারে। আপনার উদ্দেশ্য কি? শিয়া-সুন্নির বিভাজন বাড়ানো নাকি কমানো? খারেজীদের কথা হচ্ছে না – কারণ, তারা তো খারিজ হয়ে গেছে!
আপনার লেখায় ফিরে যাই।
কেন মিশর থেকে বা কূফা থেকে মুসলিম সৈনিক বা প্রতিবাদকারীদের মদিনায় আসা দরকার পড়ল – সেটা আপনি লেখেন নি! কেন? কারণগূলো লেখা কি জরুরী নয়? সে সময়ের আর্থ সামাজিক অবস্থা- পরিবর্তনের পট ভূমি, স্বজন বা গোত্র প্রীতি এগুলো লেখা দরকার নেই? উসমান ( রাঃ) এর বিরুদ্ধে যে গনরোষ ধুমায়িত হয় –আয়শা ( রাঃ) তাঁর শুরু করেন মদিনায়! তিনি তা কেন করলেন? কেনই বা আয়শা ( রাঃ) নিয়ে মসজিদে নববীতে উসমান (রাঃ) এর বিরুদ্ধে রাসূল (সাঃ) এর জুতা হাতে নিয়ে প্রতিবাদে মুখর হলেন তা লিখুন। লিখুন উসমান ( রাঃ) এর সময়ে ঊমাইয়া গোত্রের হাতে কিভাবে ‘ক্ষমতা কূক্ষীগত হয়ে পড়ল, মক্কা- ইরাক- কূফা- সিরিয়া- মিশর- সর্বত্র ঊমাঈয়া গভর্নর ! কেনই বা উসমান ( রাঃ) এর সৎ ভাই- গভর্নর ওয়ালীদ কূফার মসজিদে মাতাল অবস্থায় নামাজে ইমামতি করতে এসে বমি করে মীম্বর ভাসিয়ে দিল, কেন উসমান ( রাঃ) সেই অনাচারের বিচার করলেন না- কেন মানুষ এসব কারণে ক্ষিপ্ত হল- সে সব কথাও। কেন ইসলামের ‘ আধ্যাত্মিক আর রাষ্ট্রীয় শাসন ভার একই নেতার হাতে না থেকে (রাসূল (সাঃ) প্রতিষ্ঠিত সিস্টেম ), ঊমাঈয়া গোত্রের হাতে- বিশেষ করে মূয়াবীয়া ঈবণে আবূ সূফীয়াণ এর হাতে প্রাক -ইসলামিক ‘গোত্র তথা রাজতন্ত্রে পর্যবেষিত হল, কেনই শাসক শ্রেণী তাদের অধীনে বেতনভুক্ত ইমাম শ্রেণী তৈরি করল, তারই ধারাবাহিকতায় আজ ও, বেতনভুক্ত ইমাম শ্রেণী আল্লাহ্‌র হুকুমের চাইতে তাদের ‘বেতনদাতার হুকুমকে ‘প্রায়োরিটি’ মনে করেছে বা করছে ( যদিও ব্যতিক্রম আছে!) । সেটাই তারা প্রচার করছে, যা শাসক কূলের স্বার্থ রক্ষা করে!
বিষয় গূলো এত সহজ নয়! ইসলাম তো এক দিনে আজকের পরিস্থিতিতে আসে নি!
লিখলে ‘দু পক্ষের কথাই লিখুন- বাস্তব সত্য- যা ঘটেছিল- সেসময়ে । তা নাহলে, ১৪০০ বছর পরে আবার এক পেশে কাহিনী বলে শিয়া সুন্নি বিভাজনের আগুনে ঘী না ঢাললেই ভাল হয়। যে ঘটণা গূলো ঘটে গেছে- তা তো আমরা পরিবর্তন করতে পারব না, তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার, শিয়া সুন্নিদের বিভাজনে এখনো শুধু এক শ্রেণীর বা একই প্রকৃতির মানুষই লাভবাণ হবে- যারা ইসলামের শত্রু। আসুন, সেই পরিস্থিতিতে - বরং ঐক্যের মন্ত্র প্রচার করি, শিয়া সুন্নীদের ঐক্য হলে ইসলাম শক্তিশালী হবে। (যদিও ঐ সময়ের ‘নিরপেক্ষ তথ্য পাওয়া মুশকিল, ( তথ্য সমূহও – তথ্যদাতার ধর্মীয় সংযুক্তি বা AFFILIATION এর ভিত্তিতে ‘প্রভাবিত ) তবে - আল তাবারী কিম্বা সংক্ষেপে পড়তে চাইলে, অধুনা প্রকাশিত After the Prophet: The Epic Story of the Shia-Sunni Split in Islam , 2010 by Lesley Hazleton (Author) পড়তে পারেন)
ধন্যবাদ ।
২৯ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:৩৩
252760
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন আমি আমার লেখা শেষ করিনি। এটা এখনো অসম্পূর্ণ। আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া,আল-আবকারিয়াতুল ইসলামিয়াহ, তারিখে তাবারী সহ নির্ভরযোগ্য ইতিহাস বইগুলোতে ইতিহাস সুস্পষ্টভাবেই লেখা আছে। আপনি যেহেতু এসব নিয়ে কথা উঠাচ্ছেন তখন এসব নিয়ে আপনাকে লিখার আহবান জানাচ্ছি। আমাকে ইনশাল্লাহ আপনার লেখায় কমেন্টে পাবেন। আমি গোটা হিস্টরি লিখতে মোটেও বসিনি সেটা আমার টপিক না। লেখাটা শেষ করি ইনশাআল্লাহ অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। জাঝাক আল্লাহ।
311752
৩০ মার্চ ২০১৫ রাত ০৪:২১
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!
আশাকরি সামনের পর্বগুলো দ্রুত পাব ইনশা আল্লাহ!সুন্দর উদ্যোগ! জাযাকাল্লাহু খাইর! Good Luck
৩০ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:৪৬
252930
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম। সাদিয়া আপুর কমেন্ট পাওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার। ইনশাআল্লাহ দ্রুত শেয়ার করব সামনের পর্বগুলো। আল্লাহ তোমাকেও উত্তম বিনিময় প্রদান করুক আপি।Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File