ক্ষণস্হায়ী অনুভূতিগুলো......
লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ২৬ আগস্ট, ২০১৪, ১১:৩০:১১ সকাল
-একটা সময় আমাদের টেবিলের সামনে কোন কম্পিউটার ছিলনা। কম্পিউটারে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমও ছিলনা, টেবিলটার সামনে ছোট একটা জানালা ছিল তবে তা দিয়ে চোখ মেললে দেখা যেত বিশাল নীল আকাশ আর পৃথিবীর বিশালত্ব।
-একটা সময় আমাদের ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য মোবাইল নামক অত্যাধুনিক কোন যন্ত্রও বালিশের পাশে থাকতোনা। তবে তাই বলে আমরা ঘুমিয়ে থাকতাম না, ভোরের পাখি সুমিষ্ট আওয়াজে আমাদের ডেকে তুলত।
-একটা সময় আমাদের হাতে ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপে,নিমবাজ,ভাইবার নামক কোন এ্যাপস ছিলনা, ফ্রেন্ডলিস্টে হাজার হাজার ফ্রেন্ড ছিলনা। আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে ছিল অল্প কিছু বন্ধু যারা ছিল জীবন্ত। যাদের ছোয়া যেত,তাদের দিকে চোখ বোলালে মন শান্ত হয়ে যেত।
-একটা সময়ে আমাদের পরিচিত মানুষ খুব কম ছিল কিন্তু তারা ছিল অনেক আপন। "আমার মন খারাপ" এটা বোঝানোর জন্য "ফিলিং স্যাড" লিখে ফেসবুকে পোস্ট করতে হতনা আপন মানুষগুলো মুখ দেখেই অনুভূতি বুঝে ফেলত। মাথায় হাত বুলিয়ে জিঙ্গেস করত, কি হয়েছে রে?
-কোন এক সময়ে আমরা চ্যাট করতে জানতামনা কিন্তু ভাইবোন, আত্বীয়-স্বজন একসাথে হলে আমরাও গল্পে মেতে উঠতাম, উজাড় করে দিতাম নিজেকে।
-আজকের মত তখনও বাবারা সন্ধায় ঘরে ফীরত তবে হাতের স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাব নিয়ে বসে পরত না_ সন্তানের দিকে চেয়ে তাদের চোখ স্নেহ-মমতায় চকচক করে উঠত। তারা সন্তানকে নিয়ে অন্য কোন জগতে হারিয়ে যেতেন, ফেসবুক-টুইটারে ডুব দিতেন না।
-সেদিনও পুরুষেরা ঘরে ফীরত দরজাটা খুললেই অর্ধাঙ্গীনীর উপর চোখ পরত,অর্ধাঙ্গীনীর মন জয়ের চেষ্টায় সে লিপ্ত হয়ে যেত। আজও পুরুষেরা ঘরে ফেরে পার্থক্য হল, পুরুষ তার হাতের স্মার্টফোনের ক্যামেরার চোখ দিয়ে স্ত্রীকে দেখে। স্ত্রীর মুখের সাথে নিজের সেলফি ফেসবুকে পোস্ট হয়। স্ত্রী আর আজ অর্ধাঙ্গর কথায় সন্তুষ্ট হয়না ফেসবুকে সেলফীর প্রসংসায় অর্ধাঙ্গীনী হেসে উঠে।
-আজ আমাদের আমাদের পকেটে মোবাইল,হাতে ট্যাব, বাসায় কম্পিউটার আর কত শত এ্যাপস_ ইচ্ছে হলেই মুহূর্তেই পৌছে যেতে পারি আপন মানুষগুলোর কাছে কিন্তু আজ আমরা অনেক ব্যাস্ত আপন মানুষগুলোর খোঁজ-খবর নেয়ার সময়ও আমাদের হাতে নেই।
-আমরা কি আজো মানুষ আছি? আমাদের অনুভূতি বলে আজো কি কিছু আছে? এত মানুষ তবুও আমরা এত একা কেন?
বিষয়: বিবিধ
১৪২২ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু এক কিছুর মাঝেও কেন জানি প্রাণ নেই, যার করণে আজ অহরহ ছড়িয়ে পড়ছে পরকিয়ার মত ভয়াভহ ভাইরাস।
কাজেই সমস্যা অন্য জায়গায় প্রযুক্তি হয়ত আরো সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে এই যা।
সত্যি বলতে কি! আমরা প্রবাসে থাকি, এসব কিছু নিজের চোখেই দেখতেছি, আমার এক রুমমেট একদিন কুকর্ম সেরে রুমে এসে গল্প করতেছে, ফিলিপাইনি, ইন্দোনেশিয়ান ও লেবাননী পতিতারা কেমন। এরই মধ্যে আমি রুমে আসলাম, হটাৎ যেন সবাই চুপচাপ নিরব, জিজ্ঞাস করলাম কি হল সবাই চুপচাপ বসে আসেন কেন? কিন্তু কোন সদুত্তর পেলাম না, আমি তো দরজার বাহিরে মুজা খূলতে খুলতে সবই শুনেছি। কিছুক্ষণ পর তাকে একান্তে বললাম, যদি আপনার বউ কারো সাথে এই কাজ করে আপনার প্রতিক্রিয়া কি হবে। তার যেন চোখ কপালে উঠল, বলল কি? সঙ্গে সঙ্গে তালাক দিবাে। আমি তাকে ঠান্ডা কথায় বুঝালাম, এমন কাজ সে করলে যেমন অপরাধ, আপনি করলেও একই অপরাধ, আরো অনেক যুক্তি দেখালাম, অতঃপর সে ওয়াদা করল আর কোন দিন ঐকাজে যাবে না।
আসলে ভাই প্রবাসে যিনা ব্যাভিচার একেবারে সহজ ব্যাপার, আর এ ক্ষেত্রে অনুসন্ধান করে দেখলাম, যারা প্রবাসে কূকর্মে জড়ায় তাদের স্ত্রীরাও কূ কর্মে জড়ায়, এটাই বাস্তবতা, কেউ বিশ্বাস করুক আর নাই করুক, আমি কিন্তু এটাই বিশ্বাস করি, কারণ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন : الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ وَالْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَاتِ ۖ وَالطَّيِّبَاتُ لِلطَّيِّبِينَ وَالطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَاتِ এ আয়াত থেকে ইহা স্পষ্টই বুঝা যায়। যদি আল্লাহর ভয় না থাকে, যে কেউ একাজে জড়িয়ে যাওয়া একেবারে সহজ ব্যাপার।
আল্লাহর কাছে ফানাহ চাই। আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে হেফাজত করেন। আমীন।
আমরা তো তাও বলতে পারি একটা সময় সুন্দর আবেসগঘন সময় কাটিয়েছি, দুঃখের সাথে বলতে হয় আমাদের ছেলেমেয়েরা জন্মের পর থেকেই যান্তিকতা দিয়েই আবেগ পার করছে!
সুন্দর লিখার জন্য শুকরিয়া
মন্তব্য করতে লগইন করুন