রাসূল (সাঃ)এর বহুবিবাহের কারণ কি? যৌনতা নাকি সত্যের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা?

লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০২:১৬:২৪ দুপুর

গত বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি আমাদের প্রাণপ্রিয় রাসূল (সাঃ) এর চরিত্র নিয়ে বেশ কিছু উগ্র হিন্দুবাদী একজোট হয়ে ফেসবুক, টুইটারে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহকে অকথ্য ও নোংরা ভাষায় গালাগালি ও কোরানকে অপমান করার মত ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করছে। আর তাদের ইন্ধন যোগাচ্ছে কিছু উগ্র ইসলাম বিদ্বেশি নাস্তিক ও অতি প্রগতিশীল বাক স্বাধীনতার এজেন্টরা। যাইহোক বিদ্বেশ ও মিথ্যাচারেরও একটা সীমা থাকা উচিত কিন্তু কিছুদিন আগে দেখলাম উজ্জা নামের একজন হিন্দু দাবি করছে, রাসূল (সাঃ) এর ৫০ জন যৌনদাসী ছিল যাদেরকে তিনি তার সাথে যৌনকাজে বাধ্য করতেন (নাউযুবিল্লাহ) ( বল, তোমরা আমার প্রতিপালককে না ডাকিলে তাহার কিছুই আসে যায় না। তোমরা অস্বীকার করিয়াছ, ফলে অচিরেই তোমাদের উপর নামিয়া আসিবে অপরিহার্য শাস্তি। সূরা ফুরকান:৭৭)।

উগ্র হিন্দু ও নাস্তিক ,

ইসলাম কোন পৌরাণিক দ্বীন (জীবন ব্যাবস্হা) নয় যে, কেউ মিথ্যাচার করল আর মুসলিমরা লজ্জায় চুপ করে মাথা নীচু করে ফেলল। হ্যা! পবিত্র কোরআন, হাদিসের বিশুদ্ধ ৬টি গ্রন্হ ও তৎকালীন মুসলিম ইতিহাসবিদগণের লিখিত ইসলামের ইতিহাস গ্রন্থসমূহ দ্বারা এটা প্রমাণিত যে, রাসূল (সাঃ) এর ঘরে ১২ জন স্ত্রী (মুমিনদের মা) ছিলেন তার মৃত্যুর সময়ে ৯জন জীবিত ছিলেন। কাজেই ব্যাপারটা নিয়ে লুকোচুরির কিছুই নেই কারণ তার পেছনে যথার্থ কারণ ছিল। আর তৎকালীন সময়ে মদিনাতে ২ টি মুসলিম বিদ্বেশী ইয়াহুদি গোত্রের বসবাস ছিল (যারা মুহাম্মাদ সাঃ কে একাধিকবার হত্যা চেষ্টা ও খন্দক যুদ্ধের সময় মদিনা আক্রমণ, বিভিন্ন সময়ে কুরাইশদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা দান এমনকি কয়েকজন সাহাবীকে তারা হত্যা, অবশেষে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল) এছাড়াও মদিনাতে ছিল খৃষ্টান ও অমুসলিম গোত্র। আর গোটা আরব জুড়েই মুসলিম বিদ্বেশি উগ্র মুর্তি পুজারকদের অসংখ্য গোত্রের বসবাস ছিল। যারা রাসূল (সাঃ) কে হত্যা ও মুসলিমদের ধ্বংশ করার জন্য একের পর এক বদর, ওহুদ, খন্দক সহ নানা যুদ্ধ মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালনা করেছে। ওহুদ যুদ্ধে তারা রাসূল (সাঃ) এর রক্ত ঝরিয়েছে ও প্রায় ৭০ বা ততোধিক মুসলিমকে হত্যা করেছে। হ্যা এটাই ছিল আরবের তখনকার চিত্র। আর রাসূল (সাঃ) যে ১২ জন নারীকে (উম্মুল মুমিনীন/মুমিনদের মাতা) বিয়ে করেছিলেন সেটা গোপনে নয় বরং এসব সেই আরবেই প্রকাশ্যে, সব গোত্রগুলোর সামনেই। অথচ তৎকালীন সময়ে ক্ষুদ্র মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা ও ছোট্ট এলাকার শাসক মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর চরিত্র নিয়ে কেউ কখনো কোন প্রশ্ন তোলেনি, তাকে কখনো দুঃচরিত্র বলে গালাগালি করেনি। এমনকি রাসূল (সাঃ) যখন তৎকালীন মুসলিমদের প্রধান শত্রু চরম মুসলিম বিদ্বেশী কুরাইশদের প্রধান নেতা আবূ সুফিয়ানের বিধবা মেয়ে রমলা বিনতে আবূ সুফিয়ান (রাঃ)-কে বিয়ে করেন, তখন একজন আবূ সুফিয়ানকে বলেছিল: তুমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছ আর সেই ব্যক্তিই তোমার মেয়েকে বিপদে বিয়ে করলেন!! আবূ সুফিয়ানের উক্তি ছিল, মুহাম্মাদ তো এমন ব্যাক্তি যে সন্মানিত, মহান চরিত্রের অধিকারী তাই তাকে ও তার অনুসারীদের অপদস্ত করা সত্যিই কঠিন কাজ।

অর্থাৎ সে সময়কার পেক্ষাপটে তার সেই বিয়ের ঘটনা প্রবাহ যে অযৌক্তিক ছিলনা এটাই প্রমাণ হয়। আর এজন্যই তৎকালীন মুহাম্মাদ (সাঃ) বিদ্বেশী কাফের, ইয়াহুদি, খৃষ্টান কেউই তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি কারণ ব্যাপারটি তাদের চোখেও ছিল যৌক্তিক। আসুন এবার মূল আলোচনায় মনোনিবেশ করি।

১. হযরত খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রাঃ): তিনি একজন সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশীয়া ধনী নারী ছিলেন। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ইতিপূর্বে তার দুজন স্বামী মারা গিয়েছিল। যুবক মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর সত্যবাদিতা, বিশ্বস্ততা ও চারিত্রিক সৌন্দর্যের কথা জানতে পেরে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে তার ব্যবসার জন্য নির্বাচন করেন। যুবক মুহাম্মাদ (সাঃ) খাদিজা (রাঃ)-এর ব্যবসায়িক কাফেলা নিয়ে সিরিয়া ও মক্কার দক্ষিনে হাবশায় সফর করেন এবং ব্যবসায় প্রচুর লাভ করেন ও লভ্যাংশ নিয়ে মক্কায় ফীরে আসেন। খাদিজা (রাঃ)-এর গোলাম মায়সারা সে সময়ে তার সফরসঙ্গী ছিলেন। তিনি সফরকালীন সময়ে যুবক মুহাম্মাদ (সাঃ) এর অসাধারণ চরিত্র, সত্যবাদিতা, আমানতদারী ও বিশ্বস্ততা প্রত্যক্ষ করেন এবং খাদিজা (রাঃ)-এর কাছে মুহাম্মাদ (সাঃ) সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। সব শুনে খাদিজা (রাঃ) মুগ্ধ হন এবং তাকে বিয়ে করার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি রাসূল (সাঃ) এর কাছে দূত প্রেরণ করেন। দূত রাসূল (সাঃ) এর তৎকালীন অভিভাবক তার দুই চাচা হামযা ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) ও আবূ তালিব এর কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে তারা রাজি হন। আর এভাবেই ২৫ বছরের যুবক মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সাথে ৪০ বছরের খাদিজা (রাঃ) এর বিবাহ কার্য সুসম্পন্ন হয়। হযরত খাদিজা (রাঃ) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম। তিনিই সর্বপ্রথম রাসূল (সাঃ) এর উপর ঈমান আনেন। তার মর্যাদা হল, স্বয়ং আল্লাহ জিবরাইল (আঃ)- এর মাধ্যমে খাদিজা (রাঃ) কে সালাম জানিয়েছেন ও জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। তিনি দীর্ঘ ২৪ বছর রাসূল (সাঃ)-এর সাথে ঘর-সংসার করেছেন। অতঃপর মক্কায় তিনি ইনতিকাল করেন।

২. উম্মুল মুমিনীন সওদা (রাঃ): তিনি বয়স্কা নারী ছিলেন। তিনি ও তার স্বামী সাকরান ইবনে উমার (রাঃ) সেই প্রথম দিককার মুসলিমদের মাঝে অন্যতম যারা ইসলাম গ্রহণের জন্য মক্কার মুর্তি পুজারকদের দ্বারা সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে মক্কায় ঘর বাড়ি ফেলে হাবশায় হিজরত করতে বাধ্য হয়েছিলেন। হাবশায় হিজরতের কিছুদিন পর আবার মক্কায় ফীরে আসলে সাকরান (রাঃ) মারা যান। বিধবা সওদা স্বামীকে হারিয়ে ও কাফেরদের নির্যাতনের সামনে অসহায় অবস্হার সম্মুখীন হন। রাসূল (সাঃ) তার বিষয়ে জেনে ব্যাথিত হন। তিনি সওদা (রাঃ) এর পিতার নিকট তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন অবশেষে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই বিয়ের কারণ ছিল প্রধানত ২টি__

ক. খাদিজা (রাঃ) এর মৃত্যুর পর তার ছোট শিশু ছেলে-মেয়েদের লালন-পালনের দায়িত্ব পালন অন্যদিকে নির্যাতনের মুখে ইসলাম প্রচারের কাজ রাসূল (সাঃ)-এর জন্য কষ্টকর হয়ে ওঠে। তাই তিনি ঘরের সন্তানদের লালন-পালন ও ঘরের দায়িত্ব সওদা (রাঃ) এর উপর অর্পন করার সুযোগ পেলেন।

খ. ইসলাম গ্রহণ করে নির্যাতনের শিকার ও স্বামীকে হারিয়ে অসহায় হয়ে যাওয়া সওদা (রাঃ) কে বিপদে সাহায্য ও নিজ ঘরে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দান করে নিরাপত্তা প্রদান।

### রাসূল (সাঃ)-এর ৩য় স্ত্রী হযরত আয়েশা (রাঃ) সম্পর্কে আলোচনার আগে কিছু কথা বলে নেয়া গুরত্বপূর্ণ।

নাস্তিক ও উগ্র হিন্দুরা সর্বদা একটা কথা বলে, আয়েশা (রাঃ) বাদে ( যায়নাব বিনতে জাহাশ ছিলেন তালাকপ্রাপ্তা) রাসূল (সাঃ) এর সব স্ত্রী যেহেতু বিধবা ও অধিকাংশই বয়স্কা ছিলেন কাজেই মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজ ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবূ বকর (রাঃ)-এর কিশোরী মেয়ের উপর কুনজর দিয়েছিল। আয়েশার সুন্দর চেহারা তাকে পাগল করে দেয় তাই বিয়ের নামে ৯ বছরের কিশোরীকে ঘরে তুলে যৌন কামনা চরিতার্থ করাই ছিল তার আসল উদ্দেশ্য। (নাউযুবিল্লাহ)

# আমার উত্তর: নাস্তিক ও উগ্র হিন্দুদের কাছে একজন স্ত্রী মানে শুধুমাত্র একজন সেক্স পার্টনার ছাড়া আর কিছুই না। যাকে যেভাবে ইচ্ছা ভোগ করা যায়। তাদের পূর্বপুরুষ মার্কস, এঙ্গেলস, নিৎসে, দুরখেইম, ফ্রয়েড রা যেমন পরিবার প্রথার বিলোপের পক্ষে বলেছেন, পরিবারের বদলে মানব বংশবৃদ্ধির উপায় হিসেবে কমিউন কালচার চালুর পক্ষে বলেছেন, আজ ঠিক তাদের উত্তরাধিকারী বর্তমান নাস্তিকেরা যৌন স্বাধীনতা বা আবাধ যৌনতায় বিশ্বাস করেন, পরিবার প্রথার বিলোপের কথা বলেন। সমকাম, লিভ টুগেদারকে promote করেন। আবার নাস্তিকেরা বলেন, মোহরানা হল পতিতা ভাড়া করার ইসলামিক সিষ্টেম। (নাউযুবিল্লাহ) পতিতাকে যেমন যৌন চাহিদা পুরণের জন্য টাকা পরিশোধ করতে হয় তেমনি মুসলিম পুরুষরাও স্ত্রীকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি যৌন চাহিদা পুরণের জন্য মোহরাণার অর্থ পরিশোধ করেন। (নাউযুবিল্লাহ) অথচ আমরা মুসলিমরা ভাল করেই জানি, একজন মুসলিম নারীর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই মুসলিম স্বামীর উপর মোহরাণার অর্থ প্রদান করাকে আল্লাহ ফরজ করেছেন। যেন তার মৃত্যু বা আকস্মিক কোন বিপদে তার স্ত্রীকে অন্যের কাছে হাত পাততে না হয়। তার মানে এটা প্রমাণিত তারা নারী-পুরুষের সম্পর্ককে যৌনতা ছাড়া অন্য কিছুর ভিত্তিতে বিচার করেনা। অথচ আমরা কোরআন থেকে জানি, আল্লাহ নারী-পুরুষকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন, স্বামী-স্ত্রী হল একে অন্যের পোশাক স্বরূপ, মুমিনের জন্য বিয়ে মানে তার ঈমানের অর্ধেক পুরণ হওয়া, মুমিন পুরুষকে চরিত্রবান হতে গেলে তার স্ত্রীর সার্টিফিকেট লাগবে আবার একজন মুমিন স্ত্রীর জান্নাত লাভের সহজ পথ মুমিন স্বামীর সন্তুষ্টি এবং মুমিন স্ত্রী- মুমিন স্বামীর বৈবাহিক সম্পর্ক জান্নাতেও অটুট থাকবে।

# আর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে যৌনতা বলবেন? কিভাবে? আমাদের আদি পিতা আদম (আঃ) এর সাথি হিসেবে আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাতা হাওয়া (আঃ) কে সৃষ্টি করেছিলেন, আল্লাহ নিজেই তাদের বিয়ে দিয়েছিলেন এবং জান্নাতের একটা অংশে তারা দীর্ঘদিন অবস্হান করেছেন। আচ্ছা জান্নাতে থাকাকালীন সময়ে কি মানব ইতিহাসের প্রথম স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কোন যৌন সম্পর্ক ছিল?? নাহ! কোরান বলে, ছিলনা। পৃথিবীতে আসার পরই তাদের সেটা দরকার হয়েছে কারণ সন্তানের প্রয়োজনে। কাজেই ইসলামে স্বামী-স্ত্রী মানে সেক্স পার্টনার না। আবার স্বামী-স্ত্রীর যৌন ক্রিয়াতেও ইসলাম স্পষ্টভাবে হালাল-হারামের বিধান জানিয়ে দিয়েছে। রাসূল (সাঃ) বলেন:-

ক. আল্লাহ ঐ ব্যক্তির প্রতি ফীরে তাকাবেন না, যে ব্যক্তি কোন নারী (স্ত্রী) বা পুরুষের মলদ্বারে মৈথুন করে।

খ. অভিশপ্ত ঐ ব্যক্তি যে লুতের কওমের মত কুকর্ম করে।

# নাস্তিকরা আয়েশা (রাঃ) এর ৯বছর বয়সের কথা বলে তার প্রতি মায়াকান্না দেখায়। তিনি নাবালিকা ছিলেন পরিস্হিতির শিকার ছিলেন ইত্যাদি জঘন্য কথাবার্তা বলে রাসূল (সাঃ) এর চরিত্র নিয়ে মিথ্যাচার করে। কারণ তাদের কাছে বিয়ের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য সেক্স পার্টনার অর্জন করা। যাকে মোহরাণা প্রদান করা লাগবে না, সে পুরুষের সমান তাই তাকেই কামাই করে নিজের ভরণপোষনের দায়িত্ব পালন করতে হবে কারণ স্বামীর টাকা তার জন্য অসন্মানজনক। সে স্বামীর সাথে থাকবে শুধুমাত্র নিজ যৌন চাহিদার জন্য, এটাই নাস্তিক্য থিওরি।

# উত্তর:-

১৮ বছর বয়সে সাবালক-সাবালিকা হয় এমন ধারণা আমাদের মাঝে এসেছে ব্রিটিশ আইনের কারণে একটা সময় পৃথিবীময় ছিল ব্রিটিশ শাসন আমরাও ছিলাম ব্রিটিশ কলোনি। সম্প্রতি ভারতে আলোচিত মেডিকেল ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ১৭ বছরের তরুণ। তার বিচার হলে সাজা হবে মাত্র ৩ বছর কারণ সে শিশু!!!! আচ্ছা যেই ছেলে তার থেকে ৬ বছরের বড় একজন নারীকে ধর্ষণ করা শিখে গেছে সে কি নাবালক? সাধারণভাবে বললে ছেলে-মেয়েদের প্রাপ্ত বয়স্ক হবার বিষয়টা অনেকাংশে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ভৌগলিক আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে, কোন আইনের উপর নির্ভর করেনা। আবার জেনেটিক্স এর ভাষাতেও যথার্থ ব্যাখ্যা আছে। বাংলাদেশ এর মত দেশগুলোতে ছেলে মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক হয় ১১-১২ বছরের মাঝে। আবার ইউরোপের শীত প্রধান এলাকাগুলোতে ১৬,১৭ বা ১৮ বছর লাগতে পারে আবার আরবের মরুভূমির গরম আবহাওয়ার জন্য সেখানে সাধারণত ৯ বছরেই প্রাপ্তবয়স্ক হবার ব্যাপারটা ঘটে থাকে। খৃষ্টান পাদ্রিদের মতে, যখন মারিয়াম (আঃ) এর গর্ভে ঈসা (আঃ) (জেসাস/যিশু) এর জন্ম হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৩-১৫ বছরের মধ্যে, যা কিনা ঐতিহাসিক ভাবে সত্য। তাহলে কি খৃষ্টানদের ইশ্বর যিশুর মা ও নাবালিকা ছিলেন? কাজেই রাসূল (সাঃ) কোন নাবালিকাকে ঘরে তোলেননি। আর আগেও বলেছি নাস্তিক বা উগ্র হিন্দুদের কাছে যেহেতু বিবাহিতা স্ত্রী মানে শুধুমাত্র সেক্স পার্টনার কাজেই তাদের মাথায় জঘন্য সব চিন্তার উদয় হবে সেটাই স্বাভাবিক।

তাহলে এবার আসুন আমরা হযরত আয়েশা (রাঃ) কে বিয়ের কারণগুলো ব্যাখ্যা করি।

৩. আয়েশা বিনতে আবূ বকর (রাঃ): হিজরতের পূর্বে মক্কায় অবস্হানের শেষ সময়ে রাসূল (সাঃ) তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবূ বকরের কণ্যা আয়েশা (রাঃ) কে বিয়ে করেন যখন তার বয়স ছিল ৭ মতান্তরে ৬। এই বিয়ের সিদ্ধান্ত স্বয়ং আল্লাহ জিবরাঈল (আঃ) এর মাধ্যমে প্রদান করেন তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, যদি তা আল্লাহর পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে, তবে তা বাস্তবায়ন করুন। হযরত আয়েশা (রাঃ) মদিনায় হিজরতের পরে ৯ বছর বয়সে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে রাসূল (সাঃ) এর গৃহে শিক্ষার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেন।

শিক্ষার উদ্দেশ্যে??? অবাক হচ্ছেন? আমরা ছোট বয়সে স্কুলে ভর্তি হই শিক্ষার উদ্দেশ্যে তারপর কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। আবার অনেকে গবেষণা নির্ভর পড়ালেখা চালিয়ে যান পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। আয়েশা (রাঃ) ও রাসূলের গৃহে প্রবেশ করেছিলেন এই শিক্ষা অর্জনের জন্যই। তিনিই সেই আয়েশা (রাঃ) যিনি সাহাবীগণ (রাঃ), কোরানের প্রসিদ্ধ তাফসীরকারক, মুহাদ্দিস(হাদিস বিশেষজ্ঞ), ফকীহ( ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ) সহ ইসলামের বড় বড় আলেমদের শিক্ষক। রাসূল (সাঃ) যখন ইন্তেকাল করেন তখন তার বয়স ছিল ১৮ বছর। ফাতিমা (রাঃ) ছাড়া রাসূল (সাঃ)-এর কোন সন্তান জীবিত অবস্হায় ছিলেন না। হযরত ফাতিমা (রাঃ) নিজেও রাসূল (সাঃ)-এর ইন্তেকালের মাত্র ৬মাস পরেই ইন্তেকাল করেন। এ অবস্হায় নবী পরিবার হিসেবে ইসলামের প্রসার ও শিক্ষার দিক থেকে রাসূল (সাঃ) পরিবারের প্রতিনিধিত্ব গ্রহণ করেন হযরত আয়েশা (রাঃ) ও যয়নাব (রাঃ)। তিনি ছিলেন কোরানের হাফেজ এবং সর্বপ্রথম তিনিই কোরানের আয়াতসমূহ গণনা করেন এবং কোরআনের লিপিবদ্ধকরণেও তার ভূমিকা ছিল। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী মুসলিমদের মধ্যে তার অবস্হান ছিল দ্বিতীয়। তিনি ২২১০ টি বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণনা করেন যা ছিল আবূ হুরায়রা (রাঃ) (পাচ হাজারের অধিক) এর পরে সর্বাধিক। ইসলামি ফিকহ বা শরীয়তের এক-চতুর্থাংশ এসেছে সম্পূর্ণরূপে তার গবেষণা থেকে। আরব জাতীর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে তার জানার পরিধি ছিল বিশাল এবং তিনি কথা বলতেন আরবের সবচেয়ে বিশুদ্ধতম ভাষায় এবং কবিতা চর্চাও করতেন। তৎকালীন সময়কার চিকিৎসা বিদ্যা সম্পর্কেও তার জ্ঞান ছিল। রাসূল (সাঃ) মৃত্যুর পর ৫৮ হিজরীতে নিজ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইসলামি শিক্ষা প্রচার ও প্রসারে কাজ করে গেছেন। তার নিজস্ব একটি ইসলামী শিক্ষালয় ছিল যেখানে ছাত্রসংখ্যা ছিল প্রায় ২০০ । মুসলিম খলিফাদের দরবারে তিনি ফতোয়া প্রদান করতেন। সাহাবী ও তাবেয়িরা দ্বীনের ব্যাপারে কোন বিষয়ে সমস্যায় পতিত হলে সাথে সাথে ছুটে যেতেন তার কাছে সমাধানের আশায়। হ্যা! তিনিই সেই নারী যাকে ছাড়া তৎকালীন মুসলিম সমাজ কল্পনা করা অসম্ভব।

#ওহে! মুসলিম ভাই-বোনেরা এই মহিয়সী নারী কোথা থেকে এত জ্ঞান অর্জন করলেন?

উত্তর একটাই: তার শিক্ষক ও নারী-পুরুষ গোটা মানবজাতির শিক্ষক মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর কাছ থেকেই এই জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। নবী (সাঃ)-এর গৃহেই তিনি তার শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেছেন আর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেই শিক্ষা বিস্তারেই জীবন ব্যায় করেছেন।

#যার বিয়ে হয়েছে ছোটকালে সে কিভাবে এত গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠল? কার হাত ছিল?

উত্তর: ফেরেশতারা যখন মানবসৃষ্টি নিয়ে আল্লাহর সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছিলেন তখন আল্লাহ তাদের বলেছিলেন, হে! ফেরেশতারা আমি যা জানি তোমরা তা জান না। সবজান্তা আল্লাহই এই নারীকে সৃষ্টি করেছিলেন, তিনিই রাসূল (সাঃ) এর সাথে তাকে সরাসরি সিদ্ধান্তের দ্বারা বিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ আল্লাহ তায়ালা জানতেন, তিনি আয়েশা (রাঃ) কে ভবিষ্যতে কোন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন, যা কিনা রাসূল (সাঃ) ও হয়ত জানতেন না। তাই তিনি জিবরাইল (আঃ) কে বলেছিলেন, আমার সাথে আয়েশার বিয়ের সিদ্ধান্ত যদি আল্লাহর হয়ে থাকে তবে বাস্তবায়ন করুন (আমার নিজস্ব কোন মতামত নেই) ।

(লেখাটা ধারাবাহিক ভাবে চালিয়ে যেতে চাই আশা করি সবাই সাথেই থাকবেন)

বিঃদ্রঃ সবার প্রতি আমার অনুরোধ, কাউকে বলছিনা রাস্তায় নামতে অন্তত সবাই এই লেখাগুলো ফেসবুক, টুইটার যেভাবে পারেন বন্ধুদের কাছে শেয়ার করুন, সত্যিটা তুলে ধরুন সবার সামনে। (তবে প্লিজ নিজের নামে চালাবেন না উৎস উল্লেখ করবেন। ফেসবুকের ইসলামিক পেজে আমার লেখাকে তাদের নামে চালিয়ে দিতে দেখেছি যাদের ৫০০০০ ফ্যান।) যেই নবীর শেষ বাক্য ছিল, "আমার উম্মত, আমার উম্মত" তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারকে মেনে নিবেন না।

বিষয়: বিবিধ

৫৮১৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

319922
১৪ মে ২০১৫ রাত ০২:০৯
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ভালো লাগলো, ধন্যবাদ, অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File