ব্লগীয় তর্ক কিভাবে এড়ানো যায়??
লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ২৫ জুলাই, ২০১৩, ১২:৫৬:০৪ দুপুর
ব্লগ জগতে ২০১১ থেকে বিচরণ করছি। শুরুতে বেশ কিছু ব্লগে ঘোরাঘুরি করলেও এখন আর সেটা হয়ে ওঠেনা। বিভিন্ন সময় দেখেছি ব্লগারদের মাঝে কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা শুরু হলে একটা সময় সেটা নিয়ে তুলকালাম কান্ড বেধে যায়। মূল বিষয়ের আলোচনা থেকে সরে এসে ব্লগাররা জোর করে নিজেদের মতকে প্রতিষ্ঠা করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। হটাৎ করেই ব্লগাররা মূল আলোচ্য বিষয়ের উপর আলোচনা বাদ দিয়ে একসময় পরস্পরের প্রতি গালাগালি বিনিময়ে লিপ্ত হন, একের পর এক চলে ব্যক্তিগত আক্রমন ও পাল্টা আক্রমণ। তাই নিজের কিছু অভিজ্ঞতার আলোকে কিছুটা সমাধান দেয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ এবং আশা করি ভাল লাগবে।
সৃষ্টিগতভাবেই প্রত্যেকটি মানুষের রয়েছে আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি, নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা ও স্বতন্ত্র মানষিকতা। তাই দৃষ্টিভঙ্গির এই ভিন্নতার জন্যই একজন মানুষ একটি নিদিষ্ট বিষয় নিয়ে যা ভাববে অন্য একজন ভাববে ঠিক তার বিপরীত কিছু। আর সেকারণেই হবে তর্কের সূত্রপাত কারণ মতের মিল হলে তর্ক অবান্তর। তাই ব্লগ জগতেও সর্বদা তর্ক বিতর্ক নিত্য ব্যাপার। যখন আপনি কোন বিষয়ে লিখছেন তখন কিছু লোক তা মেনে নিলেও অন্যরা সেটা মানতে চাইবে না। তারা তখন আপনাকে "বিশেষ কোন দলীয় সম্প্রদায়ের লোক" বলে বিবেচনা করবে এবং সে তখন তার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আপনার কথার প্রতিবাদ করতে থাকবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনিও তখন তাকে ব্যক্তি বিশেষ হিসেবে না দেখে "বিশেষ সম্প্রদায়ের লোক" হিসেবেই গ্রহণ করবেন। সমস্যাটা এখানেই ? ফলাফলস্বরূপ দুজনেই লিপ্ত হবেন অবান্তর তর্কে যা আপনাকে ও তাকে আসল আলোচনা থেকে দুরে সরিয়ে নিয়ে যাবে। তাই মনে রাখতে হবে যে, আপনি যেন কোন অবস্হাতেই আপনার লেখার বিষয়বস্তু থেকে যেন অন্য দিকে দৃষ্টি না ফেরান। রেফারেন্স দেয়ার সময় যা আপনার লেখার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ শুধুমাত্র তাই উল্লেখ করুন অযথা অপ্রয়োজনীয় কোন কথা থেকে বিরত থাকুন। ধৈর্যধারণ সবচেয়ে বড় কথা। আক্রমণাত্নক কোন কথা শুনেই রেগে যাবেন না বরং সেটাকে সহজ ভাবে গ্রহণ করুণ। আপনি যদি তার অবস্হানে থাকতেন তবে
"আপনি কি চিন্তা করতেন??"
"কোন ধরণের কথা আপনি আশা করতেন??"
সেসব বিবেচনা করুন, সে যেভাবে চিন্তা করে তাকে তার দৃষ্টিভঙ্গিতেই যথাসম্ভব বোঝানোর চেষ্টা করেন। কারণ অযথা রেগে গিয়ে আপনি যদি তার স্বভাবের ভিন্নতার জন্য তাকে দোষী মনে করে কোন কথা বলেন, তখন সে মূল আলোচনা থেকে সরে এসে আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করবে, ফলে আপনিও নিজের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কটুকথা শুনে রেগে যাবেন এবং অযথা বিতর্কে লিপ্ত হবেন। তাই আপনাকে উদার হতে হবে, অভিযোগ শুনতে হবে। আপনি যদি দেখেন আপনার কোন কথা "যেটা বলা সঠিক হয়নি" বরং আপনার নিজের চোখেই সেটা দৃষ্টিকটু বলে মনে হচ্ছে, তবে সহজভাবে নিজের ভুল স্বীকার করুন। তবে এতে করে আপনার প্রতিপক্ষ আপনার ভুল স্বীকার নিয়েও আপনাকে ছোট করার চেষ্টা করতে পারে, সেটি এড়িয়ে যান ও নিজের ভুল স্বীকারটিকে নিজের হার হিসেবে বিবেচনা না করে তার পক্ষে যথার্থ কিছু বুদ্ধিদীপ্ত যুক্তি উপস্হাপন করুন তবে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা সংযুক্ত করবেন না। কথা বলার সময় তাকে ব্যক্তি হিসেবে নিন, দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নিবেন না কারণ এমন হওয়াটা স্বাভাবিক, "সে নির্দিষ্ট কোন দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে কথা বললেও, হয়ত সেই দলের সমস্ত কর্মকান্ড তার কাছেও গ্রহণযোগ্য না" বা তাকে দায়ী করা চলেনা। তাই শুধুমাত্র তার কথার প্রতিবাদ করুন তবে আপাত দৃষ্টিতে তাকে যে সম্প্রদায়ের মনে হচ্ছে সে সম্প্রদায়ের কে কি বলেছে তা দিয়ে তাকে বিচার করতে যাবেন না , ও তাদের কথা তার উপর চাপানোর চেষ্টা করবেন না। একজন ভারতীয় মনে করতে পারে, তার কৃষ্টি-কালচার বেষ্ট ও একজন বাংলাদেশিও মনে করতে পারে, নাহ! বাংলাদেশি কালচারই বেষ্ট। এখানে দুজন ব্যক্তিই তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক। কারণ তাদের দৃষ্টিভঙ্গি একজায়গায় আটকে থাকে। ভারতীয় ব্যক্তিটি শুধুমাত্র তার নিজস্ব বিষয়গুলোর খোঁজ-খবর রাখেন সেটাকেই পর্যাক্ত মনে করেন অন্য কিছুকে অপ্রয়োজনীয় ভেবে তা সম্পর্কে কোন কৌতুহল রাখেন না আবার বাংলাদেশি ব্যক্তিটির ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। সীমাবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই দুজন ব্যক্তির এই বিপরীত অবস্হা। তাই আপনার উচিত হবে না এমনভাবে কোন নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আটকে থাকা বরং আপনার উচিত হবে সব দিক সম্পর্কে জানা ও সব দৃষ্টিভঙ্গিকেই গুরত্ব দিয়ে আলোচনা করা। আপনি যদি সেটা করতে পারেন, তবে আপনি দেখতে পারবেন আপনার প্রতিপক্ষের কোন সীমাব্দ্ধ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সে নিজেই তর্কে আটকে যাবে।
শুভ হোক আপনার ব্লগ যাত্রা।
বিষয়: বিবিধ
২৫৫৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ঘুম ভাঙানিয়া ভাইয়া ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন