মিশরে সামরিক অভ্যুত্থান । মুরসি সরকারের পতন। গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি মিশর !

লিখেছেন লিখেছেন এম আর মিলন ০৪ জুলাই, ২০১৩, ০৩:৩০:৩২ রাত

মিশরে সামরিক অভ্যূত্থানে মুরসি পদচ্যুত হয়েছেন । প্রধান বিচারপতিকে মিশরের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে দেশটির সংবিধান স্থগিত করা হয়েছে এবং সংসদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মুরসিকে উতখাতের ঘোষণা দিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল আল ফাত্তাহ আল সিসি বলেছেন, আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দেয়া হবে। প্রেসিডেন্ট মুরসি এখন কোথায় কি অবস্থায় আছেন,সে সম্পর্কে কিছু জানা যাচ্ছে না।

এদিকে ব্রাদারহুডের দপ্তর সেনা অভ্যুত্থানকে অবৈধ অ্যাখ্যা দিয়ে তা প্রতিরোধ করার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছে।সেই আহবানে সাড়া দিয়ে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকরা সমবেত হতে শুরু করেছে বলে খরব দিয়েছে মিশরের দৈনিক আল আহরাম।

এর আগে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে চলমান সংকটের ভয়াবহ পরিণতির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যারা জনগণের রক্ত ঝরাতে চায় এবং সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে চায়, সর্বশক্তি দিয়ে তাদের মোকাবিলা করা হবে।

মুরসি আরো বলেছেন, নিজের জীবনের মতোই ২৫ জানুয়ারির বিপ্লব এবং এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও সাফল্য রক্ষা করবো। অবশ্য সরকার বিরোধীরা মুরসির এ বক্তব্যকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মনে করছে।

হুগো শ্যাভেজ প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন ১৯৯৯ সালে মার্কিনপন্থী তৎকালীন শাসককে নির্বাচনে হারিয়ে । ২০০০ সালের দিকে ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছিল । সেই অভ্যুত্থানে হুগো শ্যাভেজকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেনাবাহিনী । হুগো শ্যাভেজে নির্বাসনে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত করেছিল সেনাবাহিনী কিন্তু হুগো শ্যাভেজের সমর্থনে জনতার ঢল নামে সারা ভেনেজুয়েলায় । সেনাবাহিনী দ্রুত হুগো শ্যাভেজকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে হুগো শ্যাভেজের প্রতি পুনরায় আনুগত্যের ঘোষনা দেন।অবশ্য সেখানে জনতার চাপে হুগো শ্যাভেজকে উৎখাত করা হয়নি । এখন মুরসি ও ব্রাদারহুডের কি সেরকম জনপ্রিয়তা আছে ? মুরসি ও ব্রাদারহুডের সমর্থকগণ কি বলবেন বা করবেন ? যদি জনপ্রিয়তা থাকে প্রমান দিন রাস্তায় নেমে ।

৯০ এর দশকে আলজেরিয়ার কথা স্মরণ করুন । সেখানে কিন্তু অনেকটা এরকম পরিস্থিতি হয়েছিল । নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরেও সেখানে শেষ পর্যন্ত ইসলামিক পার্টিকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি।উপরুন্ত পরবর্তীতে সেই ইসলামিক পার্টির হাজার হাজার নেতা কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। যারা ফলাফল দীর্ঘ মেয়াদে গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল আলজেরিয়া।

এখন সংঘর্ষের আশংকা ।মিশর এখন সরকার বিরোধী ও সরকার সমর্থকদের শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চে পরিণত হয়েছে। আসলে এই পরীক্ষায় দুই পক্ষের কারোরই জয় হবে না বরং এর মাধ্যমে দেশটিকে বিপদজ্জনক গন্তব্যের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। যারা মিশরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায় না, চলমান পরিস্থিতি তাদের স্বার্থই রক্ষা করবে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের হতাশা আরো বাড়বে।এর আগে যেটা বলেছিলাম এখন সেটাই হলো-সামরিক অভ্যূত্থান ও অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে মিশর .......

মিশরের সাম্প্রতিক সংকট নিয়ে আগের ব্লগ .

সেনা অভ্যূত্থান কি হতে যাচ্ছে নাকি অনিশ্চিত পথে মিশর ?

বিষয়: আন্তর্জাতিক

১৩১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File