মেঘের রাজ্য সাজেক ঘুরবেন যেভাবে।
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৮:১৮:৪৬ রাত
বাংলার অপরূপ সৌন্দয্যের অন্যতম স্থান রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়ন। মুলত রুইলুই পাহাড় এবং কংলাক পাহাড় ঘিড়েই সাজেক ভ্যালী এখানকার রুইলুই পাহাড় সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১৭২০ ফুট উচ্চতায় এবং কংলাক পাহাড় ১৮০০ ফুট উচ্চতায়। এই পাহাড়ের উপরের ছোট ছোট ভিলা নিয়েই সাজেক পর্যটন কেন্দ্র।
ট্যুর প্লান:
সাজেক যেতে হলে ১২ (বার) জনের টীম হলে খুব কম খরচে সাজেক বেরিয়ে আসা যায়। কেননা খাগড়াছড়ি থেকে চাঁন্দের গাড়িতে ১২ জনের সীট থাকে। রাঙ্গামটির সাজেক ছাড়াও এই ট্যুরে খাগড়াছড়ির আলুটিলা গুহা, হাজারছড়া ঝর্ণা, জেলা পরিষদ পার্ক, তাড়েং দেখতে পারবেন।
কত টাকা খরচ হবে?
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি নন এসি বাসে ৫৫০ টাকা আর এসি বাসে ৯০০ টাকা। এরপর ২ দিনের জন্য চান্দের গাড়ি ভাড়া করবেন ১২ সীট বিশিষ্ট চান্দের গাড়ির ভাড়া ৬৫০০ থেকে ৭১০০ টাকা। এই চান্দের গাড়িরর সাথে কন্টাক থাকবে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক ভ্যালী, সাজেক ভ্যালী থেকে কংলাক পাহাড়, সেখান থেকে সাজেক ভ্যালী, সাজেক ভ্যালীতে রাত্রীযাপন করে পরদিন আবার খাগড়াছড়ির আলুটিলা গুহা, তাড়েং, হাজারছড়া ঝর্ণা, জেলা পরিষদ পার্ক ইত্যাদি ভ্রমন করাবে। এসব পর্যটন এলাকা পরিদর্শন শেষে রাতে চান্দের গাড়ি খাগড়াছড়িতে আপনাদের বাস কাউন্টারে নামিয়ে দেবেন। সাজেক ভ্যালীর ভিলা ভাড়া সিঙ্গেল রুম, সিঙ্গেল বেড ২০০০-৩০০০ আর সিঙ্গেল রুম ডবল বেড ৩৫০০-৪০০০। যেখানে একরুমে ৪জন থাকতে পারবেন। ছুটির দিনগুলোতে ভাড়া একটু বেশী হতে পারে। আগেই রুম ভাড়া করে রাখবেন। সাজেকের হোটেলের ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার ঢাকার বাস কাউন্টারগুলোতেই পাবেন। কাউন্টারগুলোতে ওদের লোক থাকে তাদের সাথে কন্টাক করেও গোটা ট্যুর প্লান করতে পারবেন। সেহিসেবে জনপ্রতি ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যাতায়াত, চান্দের গাড়ি ভাড়া, সাজেকে হোটেল ভাড়া ইত্যাদি মিলে মাথাপিছু ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা লাগবে । এরসাথে খাওয়া খরচ প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ টাকা।
যেভাবে সাজেক যাবেন:
সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও যেতে হবে খাগড়াছড়ি জেলা দিয়ে। সকালে খাগড়াছড়ি গিয়ে সকালের নাস্তা করবেন। এরপর চান্দের গাড়ি ভাড়া করে সাজেক যাবেন। সকাল ১০টার দিকে চান্দের গাড়ি সাজেকের দিকে যাত্রা করবে। সকাল ১০.৩০ মিনিটে বাঘাইহাট সেনা ক্যাম্প থেকে সকল পর্যটক গাড়ী সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় সাজেক রওনা দিবে। প্রায় ২-৩ ঘন্টা পাহাড়েরর আঁকা-বাঁকা পথ বেয়ে প্রায় ১৭০০ ফুট উপরে সাজেক ভ্যালীতে পৌছাবেন। পূর্ব থেকে বুককৃত হোটেলে ঢুকে গোসল করে ফ্রেস হবেন।
খাওয়া-দাওয়া:
প্রথমদিন সকালে খাগড়াছড়িতে গিয়ে নাস্তা করবেন। দুপুরের মধ্যে সাজেক পৌছবেন। সাজেকে অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। আগে গিয়ে আপনারা পছন্দ মত খাবারের অর্ডার দিলে রেস্টুরেন্টের লোকজন সেভাবে রান্না করে রাখবে। দুপুরে, রাত্রে ও পরদিন সকালে সময়মত গিয়ে খাবার গ্রহণ করবেন। দুপুরে ও রাত্রে খাগড়াছড়িতে হোটেলে খাবার গ্রহণ করবেন। সব রেস্টুরেন্টেই খাবারের দাম সহনীয়। এছাড়াও বাড়ীতে নিয়ে আসতে পারবেন খাগড়াছড়ির কলা, কমলা।
যা যা দেখবেন:
দুপুরে খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে চান্দের গাড়িতে করে কংলাক পাহাড়ের উদ্যেশে রওনা দিবেন। কংলাক হচ্ছে সাজেকের সর্বোচ্চ চুড়া। এরপর পাহাড়ে উঠে ভারত অংশের পাহাড় সহ পাহাড়েরর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করবেন। সন্ধায় সূর্যাস্তু দেখে আপনার হোটেলে ফিরবেন। রাত্রে হাটা-হাটি, গল্প করে ভোরে উঠে হেলিপ্যাডে যাবেন সূর্যোদয় দেখতে। এরপর শীতকালের পাহাড় থেকে নীচের দিকে তাকালে মনে হবে দুই পাহাড়েরর মধ্য দিয়ে নদী বয়ে গেছে আসলে এগুলো মেঘ এবং কুয়াশা। সকালের এই অপরূপ দুশ্যই সাজেকের অন্যতম আকর্ষন। এরপর হোটেলে ফিরে গোসল ও নাস্তা সেরে সকাল ১০ টার সময় চান্দের গাড়িতে করে খাগড়াছড়িরর উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন। যে কোন রেস্টুরেন্ট এ দুপুরের খাবার শেষে জেলাপরিষদ পার্কে যাবেন। এখানে ঝুলন্ত ব্রীজ দেখবেন, ঘোড়াঘুড়ি করে যাবেন আলুটিলা গুহায়। আলুটিলা গুহায় ঢুকবেন, দেখবেন এরপর যাবেন ঝর্ণা দেখতে। ঝর্ণা দেকে তাড়েং আসবেন। এখানে সন্ধার সৌন্দর্য দেখে খাগড়াছড়ি বাস কাউন্টারে যাবেন। রাতে যে কোন হোটেলে খেয়ে ফিরে আসবেন ঢাকায়।
বিষয়: বিবিধ
৭৭৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন