খন্দকার মোশতাকের ও মির্জা ফখরুলের মেকি কান্না এবং শেখ মুজিবর রহমান ও বেগম জিয়ার করুণ পরিণতি
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৯:৪৪:৪৩ সকাল
শেখ মুজিবর রহমানের জন্য যিনি সবচেয়ে বেশী কেঁদেছেন তিনি তাঁরই খুনের নেপথ্য নায়ক খন্দকার মোশতাক। শেখ মুজিবর রহমানের পিতা শেখ লুৎফর রহমানের মৃত্যুতে কবরে নেমে হাউমাউ করে কেঁদেছিলেন মোশতাক। শেখ মুজিবের মা সাহেরা খাতুনের মৃত্যুতে ঢাকা থেকে কাঁদতে কাঁদতে টুঙ্গিপাড়া গিয়েছিলেন শেখ মুজিব যাত্রা সঙ্গী খন্দকার মোশতাক। তিনি ছিলেন শেখ কামালের বিয়ের উকিল বাপ। অথচ এই লোকটিই ধ্বংশ ও নির্বংশ করে দিয়েছে শেখ মুজিবের গোটা পারিবার। শেখ মুজিবর রহমান সাহেবের প্রিয় খাবার ছিল চিতাই পিঠা ও হাসের গোস্ত। ফাঁসির আসামী বা মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তিকে মৃত্যুর আগে তার প্রিয় খাবার খাওয়ানো হয়। ১৪ আগস্ট দিবাগত রাতে শেখ মুজিবর রহমান দাওয়াতের অনুষ্ঠানে ছিলেন। তাঁর নিশ্চিত মৃত্যু জেনে সেদিন দাওয়াতের অনুষ্ঠানে বাসা থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন চিতাই পিঠা ও হাসের গোস্ত। শেখ সাহেব তা মজা করে খেয়েছিলেন। এতঃপর ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবর রহমান সাহেব ও উনার পরিবারের করুণ পরিণতি সবারই জানা।
সবাইকে আশ্চর্য করেই ২০মার্চ, ২০১১ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং ১৯ মার্চ, ২০১৬ পুর্ণাঙ্গ মহাসচিব করা হয়। এর আগে তিনি বিএনপির মুখপাত্র ছিলেন। বেচারা গুছিয়ে কথা বলতে পারলেও আন্দোলন, সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার ন্যুনতম যোগ্যতাও নেই। "ঈদের পরে আন্দোলন" এই বিবৃতি দিতে দিতে তিনি ভুয়া নেতার 'আইডল' এ পরিণত হয়েছেন। সিনিয়র নেতাদের বাদ দিয়ে কেন তারমত একজন অকর্মা বিএনপির মত একটি দলের মহাচিবের গুরুদায়িত্ব কিভাবে পেলেন তা সত্যিই বিষ্ময়।
২০১৪ একতরফা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ অসস্বস্থিতে ছিলেন। পৃথিবীর কেহই এই নির্বাচন স্বীকৃতি দেয় নাই। আওয়ামী লীগের প্রয়োজন ছিল অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন যেন অবৈধ সরকারের বৈধতা দেওয়া যায়। একমাত্র বাঁধা ২০ দলীয় জোট বিশেষ করে জোট নেত্রী খালেদা জিয়া ও জামায়াতে ইসলামী। এভাবে বেগম জিযাকে জেলে আর জামায়াত নেতাদের দৌড়েরর উপর রেখে মির্জা ফখরুলের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ নিজেদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের প্রয়াস পায়। ফখরুলের সাথে আঁতাতের মাধ্যমে সিলেট সিটি নির্বাচন 'টেস্ট কেস'।
সিলেট সিটির মেয়র নির্বাচনের পরই তাঁর স্বরূপ ফাঁস হয়ে যায়। তার সাথে পরামর্শ করেই ক্ষমতাসীনরা বয়োবৃদ্ধ ও পরিপক্ক রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন কামরানকে বলির পাঁঠা বানিয়ে আরিফুল ইসলামকে মেয়র বানিয়ে দেন। আর জামায়াতের এহসানুল মাহবুব জোবায়েরের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়। আরিফুল হয়ত এখনও জানে না তিনি কিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ নয়াপল্টনে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকির সভায় তিনি ঘোষনা করেন "বেগম জিয়া ছাড়া কোন নির্বাচন নয়"। এরপরই তিনি ফন্দি করতে থাকেন কিভাবে নির্বাচনে যাওয়া যায়। আগেই বলেছি আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ ২০ দলীয় জোট বিশেষ করে জামায়াত আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের বৈধতার প্রধান চ্যালেঞ্জ। এই বাঁধা দুর করতে তথাকথিত 'বৃহত্তর ঐক্য' নাম দিয়ে আওয়ামী লীগের বি টীম বদু কাকা, ডঃ কামাল হোসেন দের সাথে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ার কাজে হাত দেন। কৌশলগত কারণে বদু কাকা আওয়ামী লীগ এবং ডঃ কামাল বিএনপির সাথে ঐক্য করেন। মির্জা ফখরুল ২০ দলীয় জোটের সামান্তরাল 'ঐক্যজোট' গঠন করে ২০ দলীয় জোটের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়ে ডঃ কামাল সাহেবদের সাথে নিয়ে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে দেশের মানুষকে স্বপ্র দেখিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার পথ প্রশস্ত করলেন। গণভবনে তথাকথিত 'সংলাপ' এর মাধ্যমে একটি দাবী আদায় না করেও নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঐক্যজোট।বিগত ২০ বছরে ৪ দলীয় জোট থেকে শুরু করে ২০ দলীয় জোটের ঐক্য আওয়ামী লীগ ও ভারত নষ্ট করতে পারেনি ডঃ কামাল আর মির্জা ফখরুলগং তা অনেকটাই শিথীল করতে সক্ষম হয়। মির্জা ফখরুল ২০ দলীয় জোটকে কোনঠাসা করে, দলের সিনিয়র নেতাদের উপেক্ষা করে একাই ডঃ কামালদের সাথে লাফাতে থাকে। যার চোখে বারুদ জ্বলার কথা সে সংবাদ সম্মেলন করে বেগম জিযার জন্য মেকি কান্না করে সস্থা সহানুভুতি আদায় করে ২০ দলীয় জোটকে ভোটে অংশগ্রহণে সক্ষম হয়। শুধু তাইনয় সবাই যখন বুঝতে পারে প্রহসনের নির্বাচন হতে যাচ্ছে তখন মওদুদ সাহেবরা ৩০০ প্রার্থী নিয়েই লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরীর জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিলেও মির্জা ফখরুল তাঁদের ফোন পর্যন্ত ধরেননি। এমনকি তাঁর পিএসও না। ভোটের আগের রাত থেকেই সারাদেশে সীল মেরে ভোটের বাক্স ভর্তির খবর পাওয়া যাচ্ছিল অথচ সে ব্যাপারে বিবৃতি না দিয়ে ভোটের দিন সকালে মির্জা ফখরুল 'সুস্ঠ' নির্বাচন হচ্ছে বলে মিডিয়ার কাছে জানায়।
মুলত খন্দকার মোশতাকদের মেকি কান্নায় যেভাবে শেখ সাহেবের পরিবার ধ্বংশ হয়েছে মির্জা ফখরুলের মেকি কান্নায়ও খালেদা জিয়া জেলে পঁচে মরবে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন