মীর জাফরের 'বিশ্বাসঘাতক' পরিচয় পেতে বাঙ্গালীর লেগেছে ১০০ বছর নব্য 'বিশ্বাসঘাতক' দের পরিচয় পেতে বাঙ্গালীর কত বছর লাগবে?
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী ২৩ জুন, ২০১৬, ০৩:৫২:৫১ দুপুর
'বিশ্বাসঘাতক' শব্দটির প্রতিশব্দ মীর জাফর আলী খাঁন। ভারতের মুর্শিদাবাদে মীর জাফরের প্রাসাদের মূল তোরণের নামকরণ করা হয়েছে 'নেমক হারাম দেউল' বা বিশ্বাসঘাতক গেট হিসেবে। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে মীর জাফর আলী খাঁনের কারণে নবাব সিরাজউদ্দোলার বাহিনী লর্ডক্লাইভের হাতে পরাজিত হয় এবং পরবর্তীতে নিহত হন। মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় বাংলা, বিহার, উড়িউষ্যার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। কিন্তু মীর জাফর আলী খাঁন 'বিশ্বাসঘাতক' এবং হিন্দু উর্মিচাঁদ, জগৎশেঠ, রায় দুর্লভ, রাজবল্লভদের বেঈমান ও ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে চিনতে বাঙ্গালীর প্রায় ১০০ বছর লেগেছে।
নবাবের মৃত্যুর পর ক্ষমতালোভী মীর জাফর ১৭৬০ সাল, মীর জাফরের জামাতা ১৭৬০-১৭৬৪ এবং মীর জাফরের ছেলের নাজিম উদ দোলা ১৭৬৫ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকেন। ১৭৬৫ সালে দিল্লির সম্রাট শাহ আলম ইংরেজদের বাংলা, বিহার, উড়িউষ্যার দেওয়ানী প্রদানের মাধ্যমে ইংরেজরা চুড়ান্ত ক্ষমতা অর্জন করেন। ইংরেজদের অপকর্ম, দুর্নীতি, দুঃশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে বাঙ্গালীরা বিদ্রোহ করেন। মীর নিসার আলী তিতুমীর, হাজী শরীয়তল্লাহর ফরায়েজী আন্দোলন, ফকির বিদ্রোহ সর্বশেষ ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ দমন ও ২১ সেপ্টেম্বর দিল্লির ৮২ বছর বয়স্ক সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ইংরেজদের কাছে আত্বসমর্পন এবং রেঙ্গুনে নির্বাসনের মাধ্যমে চুড়ান্তভাবে এই উপমহাদেশ ইংরেজদের কলোনীতে রুপান্তরিত হয়।
সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ
১৮৫৭ সনের পরই বাঙলার মানুষ মীর জাফর আলী খানকে 'বিশ্বাসঘাতক' হিসাবে চিহ্নিত করেন। যখন বাঙ্গালী বুঝতে পারে মীর জাফর আলী খাঁন 'বিশ্বাসঘাতক' তখন তাঁরা পরাধীনতার শৃংখলে আবদ্ধ।
এখনও বাঙ্গালীরা গভীর ঘোরের মধ্যে। কাশিম বাজার কুঠির মত ক্ষমতালোভীদের 'আগারতলা' ষড়যন্ত্র থেকে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল দেশ ভাগ হওয়ার পর আজও তা অব্যাহত রয়েছে। ইন্ডিয়া-আমেরিকা-ইজরাইলের এজেন্টরাই এখনও ক্ষমতায়। তবে এই বিশ্বাসঘতকদের চিনতে বাঙ্গালীর কতদিন লাগবে তা ইতিহাসই বলবে।
বিষয়: বিবিধ
২১৯৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন