সুপ্রিম কোর্ট কি খেল-তামাশার জায়গা? জেএমবি এবং ওদের পার্থক্য কোথায়?
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী ০৬ মে, ২০১৬, ০৯:৫৯:৩০ সকাল
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক ও বর্তমান কিছু বিচারপতি এবং প্রথিতযশা কয়েকজন আইনজীবি সুপ্রিমকোর্ট কে খেল-তামাশার স্থানে নিয়ে গেছে। বিচারপতি বনাম বিচারপতি গন্ডগোল, সাবেক প্রধান বিচারপতি বনাম বর্তমান প্রধান বিচারপতি গন্ডগোল, বিচারপতি বনাম আইনজীবি গন্ডগোল, আইনজীবি বনাম আইনজীব গন্ডগোল, বিচারপতি বনাম বিমান বালার গন্ডগোল, বিচারপতি বনাম ট্রাফিক সার্জেন্টের গন্ডগোল, নিজদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর জন্য কর্মবিরতি, পদোন্নতি না হলে এজলাসে না বসা, পদোন্নতির জন্য ভিন্নমতের মানুষ খুন এসব যেন সুপ্রিমকোর্টের নিত্য দিনের খেলা।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরে সাবেক আইনমন্ত্রী ও আইনজীবি মওদূদ আহমেদ যে নোংরামির নজির স্থাপন করেছিলেন, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমদুদ গং সুপ্রিম কোর্টে আগুন জ্বালিয়ে আর প্রধান বিচারপতির এজলাস ভেঙ্গে তার পূর্ণতা দিয়েছেন। জেএমবি গংরাতো নিম্ন আদালতে বারুদের গন্ধ ছুটি বিলিয়েছে আর উচ্চ আদালতে আইনজীবি নামের এসব কুলাংগার আগুন জ্বলিয়েছে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস জেএমবি সদস্যদের বিচার হয়েছে, ফাঁসি হয়েছে আর ওরা আইনজীবি সেজন্য তাদের বিচারও হয়নি। ওদের আর জেএমবির মধ্যে পার্থক্য এটাই জেএমবি নিম্ন আদালতে হামলা চালিয়েছে আর ওরা সর্বোচ্চ আদালতে হামলা চালিয়েছে।
১/১১ সরকারের সময় ডিজিএফআই এর সফল এজেন্ট ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এএমএম রহুল আমিন। ডিজিএফআই যেভাবে বলতেন উনি সেভাবেই রায় দিতেন। তাঁর ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ফজলুল করিম। শ্রমিক নেতা বিএম বাকিরকে জামিন না দিয়ে হত্যা করেছেন, মাহমুদুর রহমানকে জেলে নিয়ে নির্যাতন করেছেন। সাবেক প্রধান বিচারপতিদের সব অপকর্ম হারিয়ে যায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের অপকর্মের মাধ্যমে। ত্রাণের টাকা নিয়ে রায় দেওয়া এই সাবেক প্রধান বিচারপতি 'র' এবং 'শেখ হাসিনা' এর কথামত রায় দিতে থাকেন। এসময় উদয় হয় আরেক বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মানিক ও গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর। এরা দেশের ডাক্তার, সরকারী আমলা, শিল্পোদ্যোক্তা সবাইকে লাঞ্ছিত করতে থাকেন। শামসুদ্দিন মানিকের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় শামসুদ্দিন আহমেদ মানিক আইনজীবি এমইউ আহমেদ কে পুলিশ দিয়ে হত্যা করেন। শামসুদ্দিন মানিক ইকোনোমি ক্লাসের টিকেট কেটে বিজনেস ক্লাসে ভ্রমন করতে গিয়ে বিমানবালাদের সাথে গন্ডগোল করেন, শুধু তাই নয় উনি বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সাথেও বদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। তবে 'র' এর এজেন্ট হওয়ায় তিনি হাজারও অপকর্ম করেও রেহায় পেয়ে যান। তবে, খেলা জমে দাদা এসকে সিনহার সাথে গন্ডগোলে জড়িয়ে তিনি বেকায়দায় পড়ে যান।
বর্তমান প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা আপিল বিভাগের বিচারপতি থাকা অবস্থায়ই স্কাইপি স্কান্ডালে জড়িয়ে পড়েন। তিনি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের চীফ বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে আসামীদের হত্যার জন্য রায় দেওয়ার কথা বলেন বিনিময়ে নিজামুল হক নাসিমকে আপিল বিভাগের বিচারপতি করার 'প্রলোভন' দেন। অবশ্য সিনহা বাবু তার কথা রেখেছেন এবং নিজামুল হক নাসিমকে প্রমোশন দিয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি বানিয়েছেন।
বিচারপতি এসকে সিনহা তার সহকর্মী শামসুদ্দিন আহমেদ মানিককে 'সাইজ' করতে গিয়ে তার দায়িত্বগ্রহণের প্রথম বার্ষিকীতে 'আবোল-তাবোল' বক্তব্য দেন এবং দেশে বিতর্ক সৃষ্টি করেন। তিনি বলেন, 'অবসরের পর রায় লেখা অবৈধ'। সুচতুর সিনহা এই বক্তব্য কোর্টে না দিয়ে পাবলিক প্লেসে এ কথা বলেন, কেননা কোর্টে বললে তা আইনে পরিণত হতো। প্রকৃত বিষয় হচ্ছে, 'অবসরের পর রায় লেখা অবৈধ' সিনহা বাবুর একথা একেবারেই অবাস্তব। কেননা সিনহা বাবু যেদিন সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিদায় নিবেন সেদিন যে রায়গুলো সিনহা বাবুর বাবাও ঐদিন ঐ রায়ের পুর্ণাঙ্গ রায় লিখতে পারবে না। শুধুমাত্র জেদ এবং হিংসার বশবর্তী হয়ে সিনহা বাবু এসব ফালতু বক্তব্য দিচ্ছেন। সিনহা বাবুর খুঁটির জোর কোথা তা সবারই জানা, সেজন্য তিনি আবার পাগলামী শুরু করেছেন। গত ২ মে হঠাৎ সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন এবং আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিনের বিচার করা মামলা গুলো শুনানির জন্য নিয়ে আসেন। এর মাধ্যমে তিনি মুলত বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন ও বিচারপতি মানিকের উপর তার আক্রোশ দেখান। সিনহা বাবুর এই অপকর্মের কোন ভিত্তি আছে কিনা জানিনা তবে এটা আইনে থাকলেও তিনি আইনের আওতায় অনৈতিক কাজ করতেছিলেন। হঠাৎ আবার ২ দিন পার সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকা থেকে মামলা গুলো উধাও হয়ে যায়। জানা যায় এসব মামলার শুনানি হবে না রায় হবে। আসলে সিনহা বাবু কি করতে কি করছেন তা তিনি নিজেই হয়ত জানেন না নতুবা তিনি কোন অদৃশ্য ইশারায় সুপ্রিম কোর্টের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তার তার বর্তমান ও সাবেক সহকর্মীদের খাম-খেয়ালিপনা দেখে মনে হচ্ছে, উনারা সুপ্রিম কোর্টকে হাসি-তামাশার স্থানে পরিণত করেছেন।
নির্ভিক সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে আদালত অবমাননার সময় তাকে বিচারপতিরা জেরার সময় তার শিক্ষা, সাংবাদিকতার বিষয়ে যখন প্রশ্ন করছিল তখন মনে হয়েছিল, মিঃ বিচারপতিবৃন্দ, মাহমুদুর রহমান যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছে তোমরা সে বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ভর্তি ফরম' তোলার যোগ্যতাও নেই। সত্যিই যাদের সাধারণ 'ম্যাজিস্ট্রেট' হওয়ার যোগ্যতা নেই তারাই সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি।
বিষয়: বিবিধ
১৪৭০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন