দেশী-বিদেশী শক্তিকে ঘুষ/অবৈধ সুবিধা দিয়ে ক্ষমতা জবর দখল করে আছে শেখ হাসিনা। জনগনকেই গর্জে উঠতে হবে।

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৯:৪৮:০১ সকাল

দেশী শক্তি সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব-পুলিশ, কোর্ট আর বিদেশী শক্তি যুক্তরাষ্ট্র, ইন্ডিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ইত্যাদি দেশকে ঘুষ/অবৈধ সুবিধা দিয়ে ক্ষমতা জবর-দখল করে আছে শেখ হাসিনা। দেশের নিরীহ জনগনকে প্রতিনিয়ত হত্যা করছে শেখ হাসিনা আর এই অপকর্মে সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই, এনএসআই, র্যাবে সেনা বাহিনীর সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতা করছে। কারণ, শেখ হাসিনা সেনা বাহিনীকে 'টেন্ডারবাজ' বাহিনীতে পরিণত করেছে। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকার কন্সট্রাকশন কাজ বিনা টেন্ডারে সেনাবাহিনীকে প্রদান করছে। ঢাকা-ময়সনসিং হাইওয়ে, ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়ে, ফ্লাইওভার, হাতিরঝিলসহ বিভিন্ন কাজ সেনাবাহিনীকে দিয়েছে, এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা থেকে শুরু করে সর্বশেষ বাস-ট্যাক্সিক্যাবের ব্যবসাও শুরু করেছে সেনাবাহিনী। শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকে 'ভুমিদস্যু' বাহিনী বানাতে গিয়ে নারায়নগঞ্জে জনগনের লাঠিপিটা খাইয়েছে এই বাহিনীকে। 'State in state' অর্থাৎ রাষ্ট্রের ভিতর আরেক রাষ্ট্র তৈরী করার অবাধ সুযোগ দিয়েছে এই বাহিনীকে।

বিজিবিকে সীমান্তে চোরাচালানী, ফেনসিডিল, ইয়াবা, গরু চুরির মত হাজারও অপকর্ম করার সুযোগ দিয়েছে শেখ হাসিনা। যেসব ব্যবসায়ী বিজিবিকে ঘুষ না দিয়ে চোরাচালানী করছে তাদের মালামালই জব্দ হচ্ছে।

পুলিশকে তাদের বেতনের প্রায় দ্বিগুন বিভিন্ন ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়ও ১৯৯২ সাল থেকে সব টাইম স্কেল দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জনগনের পকেট লুণ্ঠন করার জন্য সব সুবিধা দিয়েছে পুলিশকে। এখন পুলিশ গুলি করলে গুলির হিসাব দিতে হয় না, সেজন্য চোরাই মার্কেটে গুলি বিক্রি করছে, জনগনকে গ্রেফতার করলে কৈফিয়ত দিতে হয় না সেজন্য যাকে-তাকে আটক করছে। আটক করলেই ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৫০ কোটি টাকা লুট করছে এই বাহিনী। এই টাকার ভাগ কনস্টেবল থেকে শুরু করে আইজি পর্যন্ত ভোগ করছে।

ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, জজ কোর্ট এর কথা বাদই দিলাম, বাদ দিলাম হাইকোর্টের 'ব্রিফকেস' নেওয়ার কথা সুপ্রিমকোের্টের বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমেদ মানিক যে একটা ঘুষখোর তাও না হয় না বললাম, প্রধান বিচারপতিতা এস কে সিনহা তো 'আসামীকে হত্যার জন্যও পদোন্নতি' প্রদান করেন। উনি চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে টাকার সাথে নিজের 'জাত' ও দ্যাখেন। সেজন্যই জুডিশিয়াল কর্ম কমিশনের চেয়্যারম্যান থাকা অবস্থায় হিন্দুদের 'জজ' হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা ক্ষমতা জবর-দখল করার জন্য বিদেশী শক্তিকে দেশের সম্পদ অবাধে লুটতরাজ করার সুযোগ দিয়েছে। ইন্ডিয়া-আমেরিকা গংদের কিভাবে লুটতরাজ করার সুযোগ দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর ভার্সিটির শিক্ষক আনু মুহাম্মদ এর লেখাটাই দিলাম, “সরকার বিদেশি কোম্পানিগুলোর ইচ্ছা অনুযায়ী উৎপাদন অংশীদারী চুক্তি মডেল বা ‘পিএসসি’ তাদের স্বার্থে আরও সংশোধন করে সেই অনুযায়ি ভারতের ওএনজিসির সাথে বঙ্গোপসাগরের ২টি গ্যাসব্লক, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরের দুই কোম্পানির সাথে ১টি ব্লক নিয়ে চুক্তি সই করবার পর গতকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কনকো-ফিলিপস নেতৃত্বাধীন যৌথ গ্রুপের সাথে গভীর সমুদ্রের তিনটি তেল-গ্যাস ব্লক (ব্লক ১২, ১৬ ও ২১) নিয়ে চুক্তি করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে।..সরকার এর আগে ঘোষণা দিয়েছিলো কোন কোম্পানিকে একটির বেশি ব্লক দেয়া হবে না, আবার বলা হয়েছিলো একসাথে দুটো ব্লকের বেশি চুক্তি করা হবে না। সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছিলো বঙ্গোপসাগরে আগে সাইজমিক সার্ভে করে তারপর চুক্তি করা হবে। গতকালের সিদ্ধান্ত এই সবগুলো ঘোষণারই লঙ্ঘন।.. প্রাথমিক জ্বালানীর সংকটের মুখে বঙ্গোপসাগরের গ্যাসসম্পদ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জ্বালানী নিরাপত্তার প্রধান অবলম্বন। অথচ একের পর এক এসব চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তাহীন করে, বিদেশি কোম্পানিকে এত বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে যে, নিজ দেশের গ্যাস সম্পদ বাংলাদেশের জন্য কোন কাজে লাগানো যাবে না, বরং অর্থনীতিতে বোঝা হয়ে অভিশাপে পরিণত হবে।...”

ইন্ডিয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মনের জানালা খুলে’ দেখলাম বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বের ধরন। দুদেশের সরকারগুলো যেভাবে বন্ধুত্ব জারি রেখেছে তা সারসংক্ষেপ করা যায় এভাবে। বাংলাদেশের দিক থেকে: (১) ভারত সরকারের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে ‘টিপাইমুখ বাঁধে কোন ক্ষতি হবে না’, ‘রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না’ বলতে থাকা। (২) ফারাক্কার ক্ষতি ও নদী সংযোগ পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ ভয়াবহতা সম্পর্কে নীরব থাকা। (৩) অভিন্ন নদী গুলোর ওপর বাংলাদেশের অধিকার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের কনভেনশন নিয়ে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজনীয় কাজ থেকে বিরত থাকা। (৪) ‘মানবিক কারণে’ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের চাল নিতে ট্রানজিট অধিকার দেওয়া। বিদ্যুৎ প্লান্টের জিনিষপত্র ভারতে নিতে নদী আড়াআড়ি বন্ধ করা। জনগণকে লাভক্ষতি কিছু না জানিয়ে ধীরে ধীরে ট্রানজিট চূড়ান্ত করা। (৫) সীমান্ত হত্যা নিয়ে নরম থাকা। কাঁটাতার সরানোর বিষয়ে কথা না বলা (৬) বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ, কর্ম সংস্থান, পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ করতে নানা প্রণোদনা। ইত্যাদি।

ভারতের দিক থেকে: (১) মাঝেমধ্যে পিঠ চাপড়ে দেয়া। (২) নদী, সীমান্ত, অসম বাণিজ্য সবকিছুই বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা। বেশিরভাগ নদীতে একতরফা বাঁধ দেয়া। (৩) ফেনসিডিলসহ সবরকম চোরাই পণ্য আনতে সীমান্তে উদার নীতি। অন্যদিকে নিয়মিতভাবে গুলি করে বাংলাদেশের নাগরিক এমনকি ভেতরে এসে কৃষক হত্যা। (৪) ভারতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ, পণ্য বাজারে নানা বাধা দেয়া। (৫) নেপাল ও ভূটানের সাথে সড়ক যোগাযোগ দশক দশক ধরে ঝুলিয়ে রাখা। (৬) নিজেদের ট্রানজিট পথের উন্নয়নে ঋণ প্রদান। (৭) সুন্দরবনধ্বংসী বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৎপরতা, নির্মাণকাজ ভারতীয় কোম্পানিকে দেয়া নিশ্চিত করবার জন্য দরপত্র সংশোধনের চাপ। (৮) কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রেখে বন্ধুত্বের আহবান। ইত্যাদি।

আমরা এই অপমানজনক অবস্থার পরিবর্তন চাই। আমরা দুদেশের মানুষের মধ্যে প্রকৃত বন্ধুত্ব চাই, যোগাযোগ চাই, গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক আধিপত্যমুক্ত দক্ষিণ এশিয়া চাই।

রংহেডেড শেখ হাসিনা দেশ, জনগন ও দেশের সম্পত্তি নিয়ে যে সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছেন তার মোকাবেলায় দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের বিকল্প নেই।

বিষয়: বিবিধ

১০৫২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

305427
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৩৪
হতভাগা লিখেছেন : জনগনই চায়ই আওয়ামী লীগকে , সেজন্যই ২০০৮ এর নির্বাচনে তাদেরকে ৮৭% ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠিয়েছে. যার ফলে তারা নিজেদের চাহিদা মোতাবেক সংবিধানে পরিবর্তন আনতে পারে ।

এখন তারা যদি বলে যে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন দল থাকতে পারবে না এবং এটা সংসদে পাশ করায় তাহলে সংবিধান মোতাবেক জন গনের কিছু করার থাকবে না ।

কারণ গণতন্ত্রের সংখ্যা গরিষ্টতার যে ইফেক্ট তা কোন সময় জন গনের ক্ষতিরও কারণ হতে পারে , মানুষ আগে থেকে তো সব কিছু জানে না ।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:২৪
247324
মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী লিখেছেন : ২০০৮ এ ছিল পাতানো নির্বাচন
305428
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৪৪
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ভারত মাতার সেবাদাসী হয়ে বেচে থাকতে চায় তারা,আমাদেরকে চন্ডাল বা শুদ্র হিসেবে বেচে থাকতে উৎসাহিত করছে। পাকিস্থান স্বাধীনতা হরন করাতে যারা লড়াকু মানুষিকতার পরিচয় দিয়েছিল,ভারতের ক্ষেত্রে তারা শুধু নিরবই নয়,বরং মদদ দাতা। নব্য রাজাকার তবে কারা !!
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:২৫
247325
মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী লিখেছেন : আওয়ামীরাই নব্য রাজাকার।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File