শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলো ব্লাকমেইল করে রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। পর্ব-১ বিচারবিভাগ
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী ০১ নভেম্বর, ২০১৩, ০৮:২৪:০৭ সকাল
শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যেমন বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, সংসদ, সেনাবাহিনী এবং গণতন্ত্রের স্তম্ভ বিরোধী দল, মিডিয়া ইত্যাদিকে ব্লাকমেইল করে রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। শেখ হাসিনা 'র' এর পরামর্শে চলেন এবং 'র' হাসিনাকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখার জন্য সুদুরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে শেখ হাসিনার খুন, গুম, গণহত্যা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন ইত্যাদি অপকর্মের সাথে সফলভাবে সবাইকে জড়িত করতে পেরেছেন। সেজন্য এসব প্রতিষ্ঠান ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস রাখে না। এছাড়াও কাউকে অর্থ দিয়ে, কাউকে অনৈতিক পদোন্নতি দিয়ে, কাউকে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা দিয়ে, কাউকে ভয় দেখিয়ে, কাউকে গুম করে, কাউকে বিভিন্ন স্কান্ডালে জড়িয়ে শেখ হাসিনা সবকিছু নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন। এসব প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনার অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই হাসিনা তাকে ভারতের সহায়তায় বিপদে ফেলবেন। এজন্যই সবাই মুখ বন্ধ করে আছেন। হাসিনা কিভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রন করছেন সেটা আমরা দেখব-
০১। বিচার বিভাগঃ
একসময় বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অত্যন্ত শক্তিশালী, নিরপেক্ষ এবং সরকারের অপকর্মের প্রধান প্রতিবন্ধক ছিল। আগে একজন ম্যাজিস্ট্রটকে লোকজন যেভাবে শ্রদ্ধা করত এখন প্রধান বিচারপতিকেও করে না।
কয়েকবছর পূর্বেও সাবেক প্রধান বিচারপতি এএমএম রুহুল আমিন সরকারের অপকর্মের সহযোগী হলেও বিচার বিভাগের আবু নঈম মোমিনুর রহমান সহ কয়েকজন বিচারপতি মইনুদ্দিন-ফকরুদ্দিনের অপকর্ম নস্যাত করেছেন।
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই প্রথমে বিচার বিভাগ নিজের কব্জায় আনার চেষ্টা করেন এবং সফল হন। উনি অনৈতিকভাবে 'ত্রান তহবিল' এর টাকা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক গংকে প্রদান করেন। যা প্রকৃতপক্ষে ছিল ঘুষ। খায়রুল হক, শামসুদ্দিন মানিকসহ শেখ হাসিনার অনুগত কয়েকজন বিচারপতি নির্লজ্জভাবে কিছু জনস্বার্থ ও গণবিরোধী রায় প্রদান করে দেশ ও জাতিকে বিপদের মুখে ঠেলে দেন। এগুলোর মধ্যে আছে, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের রায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মাচারীদের চাকরিচ্যুতির রায়, খালেদাকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ী থেকে উচ্ছেদের রায়, দেশে উদীয়মান স্বাস্থ্য সেক্টরকে ধ্বংশ হওয়া সংক্রান্ত রায়, পর্দা সংক্রান্ত রায়, খুনী তাহেরকে নায়ক এবং জিয়াকে খলনায়ক বানানোর রায়, জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক স্বীকার সংক্রান্ত রায় ইত্যাদি প্রদান করে যা বিএনপির বিপক্ষে যায়। অপরদিকে শেখ হাসিনার দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস, আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস, ৩০ নবেম্বর,০৬ হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট ভাংচুর মামলা খারিজ করে রায় প্রদান করেন কয়েকজন বিচারপতি যার দোষ পরে সমস্ত বিচার বিভাগরে উপর। এছাড়ও শেখ হাসিনা বিচারপতিদের দিয়ে খুন হত্যায় মেতে উঠেন। বিচারপতি মানিক সাবেক ডেপুটি এটর্নী জেনারেল এমইউ আহমদ কে হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট হন, বিচারপতি এস কে সিনহা যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারপতি নাসিম কে জামাত-বিএনপি নেতাদের হত্যার রায় প্রদান করে আপিল বিভাগে পদোন্নতির প্রলোভন প্রদান করেন, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারপতিরা বিভিন্ন স্কান্ডালে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়াও শেখ হাসিনা খুনের মামলার আসামী রুহুল কুদ্দুস বাবু, হাইকোর্ট সুপ্রিমকোর্ট ভাংচুরকারী খসরুজ্জামানকে বিচারপতি নিয়োগ করেন। এভাবেই শেখ হাসিনা কাউকে ঘুষ দিয়ে, কাউকো পদোন্নতির প্রলোভন প্রদান করিয়ে, কাউকে বিভিন্ন স্কান্ডালে জড়িত করে, খুনী-সন্ত্রাসীদের বিচারপতি বানিয়ে, বিএনপি-জামাত বিরোধী রায় প্রদানকারীদের বিএনপি ক্ষমতায় আসলে করুণ পরিণতির ভয় দেখিয়ে তার পক্ষে রেখেছেন।
এসব বিচারপতি যদি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধাচারণ করেন তাহলে শেখ হাসিনা তাদের বিচারপতি জাভেদের মত ফেনসিডিলের মামলার আসানী বানিয়ে শাস্তি দিতে পারেন, বিচারপতি জহিরের মত পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে পারেন, বিচারপতিদের সব অপকর্মের রেকর্ড আইনমন্ত্রনালয় রয়েছে সেগুলো মিডিয়া ফাঁস করে দিয়ে তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন, কাউকে খুনের মামলা, কাউকে দুর্নীতির মামলায় জড়িয়ে ফেলতে পারেন, কাউকে স্কাইপ কেলেংকারী, কাউকে কোর্টে পুলিশ ডাকার কারণে, কাউকে গরীবের ত্রাণ নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করে ইমপিচমেন্ট করতে পারেন। জুনিয়র বিচারপতিকে পদোন্নতি প্রদান করার কারণে
বিচারপতি মোমিনুর রহমানের মত অনেকেই পদত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। সেজন্যই বিচারপতিরা ব্লাকমেইল হওয়ার ভয়ে হাসিনার বিরুদ্ধাচারণ করছেন না। যারা সৎ তাদের বেঞ্চে সংখ্যালঘু করে রাখা হয়েছে অথবা গুরুত্বহীন বেঞ্চে দিয়ে রাখা হয়েছে।
চলবে.........
বিষয়: বিবিধ
৩০০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন