বিএনপির বন্ধু বলল,"আমরা আন্দোলন করব, আর তারেক আইয়া মাক্কু মারব"। বিএনপি কর্মীরা যে কারণে মাঠে নাই।

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী ২৪ অক্টোবর, ২০১৩, ০৭:৫৯:৩৯ সকাল



বেগম জিয়ার একজন উপদেষ্টা, ছাত্রদলের সাবেক জানবাজ কর্মীর সাথে বিএনপি কর্মীদের আন্দোলনে অনুপস্থিতির কথা জিজ্ঞেস করতে বলল," আমরা আন্দোলন করমু আর তারেক্কা বিদেশ থাইকা আইয়া মাক্কু মারব"।

রাজধানী ঢাকাতে আন্দোলন জমাতে না পারলে সরকারের পতন ঘটানো কষ্টকর। জামাত-শিবির থাকলেও ঢাকাতে বিএনপির জনশক্তি ছাড়া আন্দোলন জমানো যাবে না। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড ও ক্যাডারদের মধ্যে ৭০% বিএনপির নেতারা নিয়ন্ত্রন করে আর ৩০% আওয়ামী লীগ। এখনও বিএনপির নেতারা যদি তাদের সমর্থকদের সাথে নিয়ে রাস্তায় নামে আওয়ামী লীগ আর পুলিশলীগের টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, বাড্ডা-রামপুরা-খিলখেত এলাকায় মেজর কামরুল আর আঃ কাইয়ুম এর লোকজন নামলে রহমত উল্লাহর লোকজন কচুরীপানার মত ভেসে যাবে, একইভাবে খিলগাঁও-মতিঝিল-বাসাবো এলাকায় মির্জা আব্বাস আর মির্জা খোকন এর লোকজন, যাত্রাবাড়ী-জুরাইন-শ্যামপুর এলাকায় সালাউদ্দিন এবং নবী উল্লাহ নবী, গেন্ডারিয়া-কোতয়ালী এলাকায় সাদেক হোসেন খোকা, লালবাগ-হাজারীবাগ এলাকায় নাসিরউদ্দিন পিন্টু, গাবতলী-মিরপুর এলাকায় এসএ খালেক, ডিপজল; টঙ্গী এলাকায় হাসান সরকার, সালউদ্দিন সরকার, নারায়নগঞ্জ এলাকায় তৈমুর আলম খন্দকার এর লোকজন নামলে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ, পুলিশ লীগ পালানোর গর্ত খুঁজে পাওয়ার কথা নয। কিন্তু বিএনপি নেতারা ঢাকার বাইরে খালেদা জিয়ার সমাবেশের মঞ্চে মুখ দেখানো, গুলশান কার্যালয়ে মুখ দেখানো ছাড়া আন্দোলনের ময়দানে অনুপস্থিত। অনেকে আবার লীগের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। নেতা-কর্মীদের আন্দোলন বিমুখতার একমাত্র কারণ খালেদা-তারেক পরিবারের স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বার্থবাদিতা।

বিএনপিসহ বর্তমান বিরোধীদলকে বিপদের মধ্যে ফেলার অন্যতম নায়ক তারেক রহমান এখন লন্ডনে আয়েশি জীবনযাপন করছেন। সেখান থেকেই দল চালাচ্ছেন অথচ দেশে মার খাচ্ছে জনগন। দেশের জনগন আন্দোলন করবে, জেল খাটবে, মামলা খাবে, আহত-নিহত হবে আর তারেক জিয়া বিদেশ থেকে এসে তাদের উপর ছড়ি ঘুরাবে, এটা মনে হয় বাঙ্গালী আর মেনে নিবে না। ৯৬- ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদল নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধূরী এ্যানি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। পুলিশ তাকে সরাসরি মাথায় গুলি করেছে। অথচ ২০০১ নির্বাচনে এই এ্যানি নমিনেশন জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত তারেক কে টাকা দিতে না পারার কারণে অপেক্ষা করতে হয়েছে। শ্বশুরবাড়ী থেকে টাকা এনে তারেক কে টাকা দিয়েই তাকে নমিনেশন পেতে হয়েছে।

আওয়ামী লীগ দেশবাসির উপর মহা যুলুম করেছে, শেয়ার বাজার লুট করেছে, শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীদের পুলিশ পিটিয়েছে, শিক্ষকদের বেতন চাওয়ার অপরাধে পিটিয়েছে, বিদ্যুৎ-তেল এর দাম বাড়িয়েছে, সাংবাদিক হত্যা করেছে, ব্যাংক লুট করেছে, গার্মেন্টস এ আগুন দিয়ে শ্রমিক হত্যা করেছে, শ্রমিক পিটিয়েছে, হিন্দু সুরঞ্জিত সংবিধান কাটাছেড়া করেছে, আইনজীবি হত্যা করেছে, শত শত নেতা গুম, হাজার হাজার নেতা-কর্মী বাড়ী ছাড়া হয়েছে কিন্তু খালেদা বা বিএনপি বা জোট নাগরিক সমস্যার সমাধানে তেমন জোড়ালো কোন প্রতিবাদ করেনি কিন্তু খালেদা জিয়াকে আইনী প্রক্রিয়ায় ঘাড় ধরে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ী থেকে বের করে দিলে উনি হরতার দেন। খালেদা ও তার পরিবারের খামখেয়ালী এবং স্বার্থবাদিতা তার কর্মী বাহিনী ও দেশের জনগন বুঝে। সেজন্যই হেফাজতে ইসলামের কাঁধে ভর করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর খালেদা ৫ তারিখে শাপলা চত্বরে ঢাকাবাসী ও তার কর্মীদের নামতে বললেও জনগন স্বার্থবাদী এই মহিলার কথায় রাজপথে নামে নাই আর বলির পাঠা হয়েছে এতিম-অসহায় নিরপরাধ মাদ্রাসার ছাত্ররা।

খালেদা জিয়া যদি সত্যিই দেশ ও জনগনের জন্য কাজ করতে চান তবে এই মুহুর্তে সব বিপদ উপেক্ষা করে তারেক জিয়াকে দেশে নিয়ে আসুন। আপনি গুলশানে আয়েশি জীবন ত্যাগ করে রাজপথে নামুন। তারেক দুর্নীতি করবেনা এই নিশ্চয়তা দিন, দেশবাসীর প্রতি সুস্পষ্ট অঙ্গীকার করুন। নিজের দলের নেতা-কর্মীদের পাশে দাড়ান, মামলা-চিকিৎসার খরচ দিন, শরীকদের সাথে সঠিক আচরণ করুন। ২০০১ নির্বাচনে জয়লাভে আপনার শরীকদের অবদান ছিল ৪০% কিন্তু শরীকদের মধ্য থেকে মন্ত্রী বানাইছেন ৬০ জনের মধ্যে মাত্র ২ জন আর ২০০৮ এর নির্বাচনে হাসিনার শরীকদের অবদান ১৫% ছিলনা কিন্তু শরীকদের মন্ত্রী বানাইছে ৩৭ জনে ৬ জন। বেইনসাফী আচরণ বন্ধ করুন। তাহলেই হয়ত জনগন রাস্তায় নামনে অন্যথায় আপনার কর্মীরাই বলবে,'' আমরা আন্দোলন করমু, আর তারেক বিদেশ থাইকা আইয়া মাক্কু মারব"।

বিষয়: বিবিধ

১৪৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File